১। বাংলাদেশের বেশির ভাগ মানুষজন ইতর শ্রেনীর। সুযোগ পেলেই এরা গীবত করে, অন্যায় করে। নোংরা পলিটিক্স করে। চেনে না, জানে না এরকম মানুষ সম্পর্কেও একটা খারাপ মন্তব্য করে দেয়। বাসে কোনোদিনই সিট পাওয়া যায় না। বাসে উঠাই মুশকিল। তারপরও যারা বাসে উঠতে পারে তাঁরা বাসের গেটের কাছে দাঁড়িয়ে থাকে, অন্য কাউকে উঠতে দেয় না।
২। আহাম্মকের মতো ব্যস্ত ও চিপা রাস্তায় গাড়ি পার্ক করে রাখে। আর ড্রাইভার গাড়ির ভিতরে বসে মোবাইল টিপতে থাকে। বাইরে জ্যাম লেগে গেছে সেদিকে তার হুশ নেই। ব্যস্ত রাস্তার মাঝখানে মাজার। লোকজন মাজারে টাকা দেয়। অনেকে সেজদা দেয়। বাংলাদেশের সমস্ত মাজার গুলোতে অসাধু লোকজন দিয়ে ভরা। বাংলাদেশের লোকজন ধার্মিক। অথচ প্রত্যেকে বদমাশ। চোর, দূর্নীতিবাজ এবং মিথ্যাবাদী।
৩। ব্যবসার নাম দিয়ে লোকজন প্রতারণা করে। আসল বলে নকল পণ্য ধরিয়ে দেয়। কাউকে ঠকাতে পারলেই যেন জিতে গেলাম- এরকম ব্যবসায়ীদের মন মানসিকতা। মাঝরাতে কোনো হাসপাতালে দরিদ্র লোক গেলে ডাক্তারেরা চিকিৎসা করেন না। বলে দেয়, ঢাকা মেডিকেল যান। এ রোগের চিকিৎসা এখানে হয় না। ডাক্তারা কসাই। তাদের মায়া দয়া কম। এরা বাংলাদেশের মতো একটা দরিদ্র দেশে এক হাজার টাকা ভিজিট রাখেন।
৪। বাংলাদেশের মানুষজন ব্যবসা করতে পছন্দ করে। শিক্ষা, চিকিৎসা সব কিছু নিয়েই তাদের ব্যবসা। হুজুরেরা আজকাল ভালো ব্যবসা ফেঁদে বসেছেন। গ্রামে গিয়ে ওয়াজ করে লাখ টাকা নিয়ে নেন। এই ওয়াজ শুনে গ্রামের মানুষের কি উপকার হয়? অথচ এই টাকা দিয়ে দশজন কৃষককে সহযোগিতা করা যেতো। দরিদ্র পিতা মাতারা সন্তানের স্কুলের লেখাপড়ার খরচ চালানো যেতো।
৫। দূর্নীতি করে সীমাহীন টাকার মালিক হয়েছে। টিভি চ্যানেল খুলেছে, দৈনিক পত্রিকা বের করেছে। কিন্তু দুদক তাদের গ্রেফতার করছে না। লোকটা দূর্নীতিবাজ জেনেও পুলিশ তাকে ধরে না। সরকারও চুপ। এই সমাজের সব মানুষ তাদের তোষামোদ করতেই থাকে। সরকার চেয়েছে বলেই দেশে নব্যধনীদের সংখ্যা বেড়েছে। নব্যধনীরা এত এত টাকা হাতে পেয়ে পাগলের মতো আচরন করছে।
৬। বাংলাদেশে এক শ্রেণীর মানুষ চাটুকারিতা, দালালি করতে লজ্জা পায় না। অনেক শিক্ষিত লোককে দেখেছি, দূর্নীতিবাজের বাসায় গিয়ে পা টিপে দিচ্ছে। অনেক দুষ্টলোক ঢাকা এসে দূর্নীতিবাজদের সাথে তাল মিলিয়ে গাড়ি বাড়ী করে ফেলেছে। দুদকের লোকজনদের বাসায় নিয়মিত মিষ্টি মন্ডা যাচ্ছে। দেশে শিক্ষার মান তলানিতে ঠেকেছে। একটা অনার্স পাশ করা ছেলে একটা দরখাস্ত লিখতে পারে না ইংরেজিতে। অযোগ্য ও অদক্ষ লোকেরা মামা চাচার জোরে ভালো চাকরী পেয়ে যাচ্ছে।
৭। অনেক মহিলা স্বামীর কল্যানে বিদেশ গিয়ে মাথা নষ্ট হয়ে যায়। তখন সে নোংরামী করে বেড়ায়। দেশে অনেক মেয়ে দরিদ্র পিতার ঘরে জন্ম নেয়। দরিদ্র পিতা মেয়েকে সামান্য লেখাপড়া শেখায় এবং ডাল ভাত খাইয়ে বড় করে। বিয়ে দেয়। সেই মেয়ে ধনীলোককে বিয়ে করে। তারপর সে বদলে যায়। আশেপাশের লোকজনকে দেখায় তার বিলাসিতা। অথচ অতীতের দরিদ্রতার ছাপ সে লুকাতে পারে না।
৮। প্রতি সপ্তাহে জিনিসপত্রের দাম বাড়ে। বেড়েই চলেছে। গত সপ্তাহে বাজার থেকে যেটা ৮০০ শ' টাকা কিনেছি। পরের সপ্তাহে সেটা ৯শ' টাকা। সরকার লেখাপড়া ও বাজার নিয়ন্ত্রনে সম্পূর্ন ব্যর্থ। অথচ সরকারের লোকেরা সমানে গলাবাজি করেই যাচ্ছে। আমাদের দেশে পদ্মাসেতু আরো চল্লিশ বছর তৈরি করা উচিৎ ছিলো। মেট্রোরেল আরো ত্রিশ বছর আগে করা দরকার ছিলো। কিন্তু যারা এতদিন দেশ চালিয়েছে তাঁরা অযোগ্য ও অদক্ষ বলে দেশের উন্নতি হয়নি।
৯। ফুটপাত দিয়ে আরাম করে হাঁটা যায় না। নানান রকম হকাররা বসে থাকে। এমনকি দোকানদাররা তাদের দোকানের জিনিস ফুটপাতে রাখে। পুলিশ নিয়মিত ফুটপাত থেকে চাঁদা পাচ্ছে। পুলিশ চায় না ফুটপাত দখল মুক্ত হোক। আমাদের এলাকায় দেখি, পুলিশ গাড়ি নিয়ে আসে। গাড়ি থেকে একজন পুলিশ নেমে চাঁদা নিয়ে যায়। আর গাড়িতে সিনিয়র পুলিশ ভাব নিয়ে বসে থাকে, মোবাইল টিপে। এইভাবে টাকা নিতে তাদের কোনো লজ্জা করে না। আমাদের দেশের পুলিশ গুলো সৎ হলে অনেক সমস্যার সমাধান অটো হয়ে যেতো।
১০। দুই মেয়র আজ পর্যন্ত ঢাকার ফুটপাত দখলমুক্ত করতে পারলো না। পারবেও না কোনোদিন। হিট অফিসার নিয়ে কত কথা। কই হিট অফিসার? সে কি কি কাজ করলো? কি কি পদক্ষেপ নিলো? গরমে তো জীবন যায় যায়। বাংলাদেশের লোকজন গুলো এত বেশি অসভ্য যে তাঁরা ফুটপাত দিয়ে বাইক চালাতে লজ্জা বোধ করে না। বাইকওলাদের খুব তাড়া। খুব অস্থির তাঁরা। দেশের সাধারন মানুষ গুলোর অনেক কষ্ট। তাদের যদি একটু সুযোগ থাকতো তাহলে তাঁরা এই উন্নয়নের মহাসড়কের দেশে একমিনিটও থাকতো না। নো নেভার।
১১। সদরঘাট, কমলাপুর রেলস্টেশন, সায়দাবাদ, গুলিস্তান, যাত্রাবাড়ি, মিরপুর-১, এবং সায়দাবাদ এলাকায় চোর, ছিনতাইকারী ও পকেটমার দিয়ে ভরা। যুগ যুগ ধরে এরা আছে। অথচ পুলিশ এদের চিরতরে বিনাশ করে দিচ্ছে না। যেসব জায়গায় ছিনতাই হয়, সেখানে টহল পুলিশ দেখা যায় না। যেখানে ছিনতাই হয় না, সেখানে টহল পুলিশ আরাম করে বসে থাকে। তাঁরা বসে বসে মোবাইল চালায়।
১২। প্রতিদিন ফার্মগেট, সায়দাবাদ, মিরপুর, মহাখালি ইত্যাদি এলাকায় চলন্ত বাস থেকে জানালা দিয়ে মোবাইল নিয়ে যাচ্ছে। পুলিশ স্থায়ী কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। অথচ এরকম চোরদের ধরা খুব সহজ। বাংলাদেশে কেউ কোনো নিয়ম মানে না। আইনের তোয়াক্কা করে না। ক্ষমতাবানরা যা মন চায় তাই করছে। কলকাতা থেকে বাইজি এনে গ্রামে নিয়ে গিয়ে নাচাচ্ছে। সহজ সরল মানুষদের কাছ থেকে জমি কেড়ে নিচ্ছে।
১৩। প্রতিটা এলাকায় রাস্তার মোড়ে বখাটেরা আড্ডা দেয়। মেয়েদের দেখলে কুৎসিত শব্দ ব্যবহার করে। স্থানীয় পুলিশ এদের ধরে না। কিছু বলে না। এবং এসব বখাটেদের যারা জন্ম দিয়েছেন, তারাও তাদের ছেলের খোঁজ করে না। জন্ম দিয়েই যেন তাদের দায়িত্ব শেষ। এই প্রজন্ম মানসিকভাবে অসুস্থ। এদের লজ্জা শরম কম। এরা ব্যস্ত ফেসবুক আর টিকটক নিয়ে। এই দেশের মানুষ মসজিদের জন্য টাকা দেয়, কিন্তু তার পাশের বাসায় কেউ না থাকলে খোঁজ নেয় না। কেউ টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে না পারলে ফিরেও তাকায় না।
১৪। প্রতিদিন ময়লার গাড়ি আসে। তবুও কিছু লোকজন রাস্তায় ময়লা ফেলে। রাস্তা নোংরা করে। কুকুর বিড়াল সেই ময়লা সারা রাস্তায় ছড়িয়ে দেয়। আরেক শ্রেনী আছে ব্যস্ত রাস্তায় সকলের সামনে দাঁড়িয়ে চেন খুলে মুতে দেয়। পানের পিক ফেলে। বিশ্রী শব্দ করে নাক ঝারে। রাস্তায় মেয়ে দেখলে কুৎসিত ভাবে তাকিয়ে থাকে। বন্ধু বান্ধব নিয়ে ফুটপাতে দাঁড়িয়ে চা খায়। পথচারীদের যাতায়াতের সুযোগ দেয় না।
১৫। অনলাইনে কতিপয় নোংরা লোকজন নোংরা ভিডিও ছাড়ে। এবং এইসব নোংরা ভিডিওতে লাখ লাখ লাইক পড়ে। কিছু মেয়ে খ্যাতি পাওয়ার আশায়- নিজের শরীর দেখিয়ে বেড়ায়। আমাদের দেশে মিডিয়ার অভাব নেই। সাংবাদিকের অভাব নেই। কিন্তু একজন সৎ ও সাহসী সাংবাদিক নেই। বর্তমানে আমাদের দেশে কোনো ভালো লেখক নেই। যা আছে, তাঁরা মূলত দালাল এবং চাটুকার।
১৬। বাংলাদেশের কোথাও বেড়াতে গেলে শান্তি নাই। চারিদিকে দালাল, আর নোংরা মানসিকতার লোকজন দিয়ে ভরা। বান্দরবান গেলে টাইলের উপর দাঁড়িয়ে মেঘ দেখতে হয়, প্রাকৃতিক পরিবেশ দেখতে হয়। বান্ধরবান খুব বেশি কৃত্রিম করে ফেলেছেন তাঁরা। রমনা পার্কে গেলেও শান্তি নেই। একটু পরপর হকার এসে বিরক্ত করতেই থাকবে। এরপর আসবে ভিক্ষুক। আছে অনেক রকমের বখাটে।
১৭। রাস্তায় বের হলেই ভিক্ষুক। সিগনালে গাড়ি থামলেই একের পর এক ভিক্ষুক এসে হাজির হয়। যে দেশ উন্নয়নের মহাসড়কে সে দেশে এত ভিক্ষুক থাকবে কেন? বাজারে ভিক্ষুক, মসজিদের সামনে ভিক্ষুক, ফুটপাতে ভিক্ষুক। বাসা থেকে হেঁটে দশ মিনিট দূরত্বে গেলে ৫ জন ভিক্ষুক এসে হাত পাতবে। আজ থেকে পাঁচ-সাত বছর আগেও দেশে এত এত ভিক্ষুক ছিলো না।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জুন, ২০২৩ রাত ৯:২১