
পুরুষ মানুষ একটি মাত্র নারীর দ্বারা সম্পূর্ণ সুখী হতে পারে না।
বহু নারীর প্রতি তার আকর্ষণ থাকাটাই স্বাভাবিক ও প্রকৃতি-অনুমোদিত। কিন্তু এটা সম্ভব নয় বলেই পুরুষেরা নিজেকে ব্যস্ত রাখে- কাজ, রাজনীতি, আড্ডা, ক্রিকেট, লেখালেখি ইত্যাদি দিয়ে। কোনো পুরুষই এই মোহ থেকে বের হতে পারেননি। মহান পুরুষেরাও যেমন নবী রাসূল থেকে শুরু করে রবার্ট ফ্রস্ট, ওয়ার্ডসওয়ার্থ, রবীন্দ্রনাথ, শেকসপিয়ার বা আইন্সটাইনসহ সমস্ত জ্ঞানীগুনীরা এই মোহ থেকে বের হতে পারেননি। মায়ামোহ মানুষের জন্মগত অভিশাপ। এজন্যই মানুষ বিড়াল পোষে, কুকুর পোষে। বাগান করে। ইচ্ছা থাকলেও চক্ষু লজ্জার কারনে পুরুষেরা মনের স্বাদ মেটাতে পারেন না। অবশ্য সাহসীরা একাধিক বিয়ে করেন অথবা পরকীয়া।
ঠিক সন্ধ্যার আগ মুহুর্তে গীর্জায় ঘন্টা বেজে ওঠে, মন্দিরে শঙ্খধ্বনি, আর মসজিদে আযান।
ভরসন্ধ্যা সময়টা বেশ রহস্যময়। কথিত আছে এই সময় মৃত মানুষদের খাবার দেওয়া হয়। ভালো করে খেয়াল করলে এই সময় তাদের দেখতে পাওয়া যায়। কাদের? মৃত মানুষদের। আমি প্রায়ই দেখি। দেবযানি খালের পাড়ে বসলেই তারা আসেন। আমি টের পাই। তারা ইশারায় আমাকে কাছে ডাকেন। ওদের আমি ভয় পাই না। ওরা কারো ক্ষতি করে না। চুপচাপ আমি শুধু ওদের দেখি। ওরা কেউ কেউ আমার কাছে আসে। চুপ করে আমার কাছে বসে থাকে। তখন চারদিক কুয়াশা দিয়ে ভরে যায়, শিয়াল ডাকে। হাওয়া বয়ে যায়। এগুলো নিতান্তই আবেগের কথা নহে। তাই হাসিয়া উড়াইয়া দেওয়া সমীচিন হবে না।
মানুষকে বুঝতে হলে তার অতীত জানতে হয়। এটা আমি জানি।
কিন্তু মৃত্যুকে কিভাবে বুঝা যাবে? একজন মৃত মানুষকে জিজ্ঞেস করলাম, তোমার মৃত্যুর কথা আমাকে বলো। মৃত মানুষটি দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল, মনে হলো যেন গড়িয়ে মাটিতে পড়ে গেলাম। তারপর অনেক দূরে চলে গেলাম। এত দূরে আগে কখনো যাইনি। খুব কষ্ট হচ্ছিল। আমি বললাম, কি রকম কষ্ট? মৃত মানুষটি বলল, অপেক্ষা করো। একদিন তোমারও তো ওরকম হবে। মৃত্যু চিন্তা মানুষকে কাবু করে ফেলে। বড় দুর্বল করে দেয়। কেউ যদি দিনের পর দিন মনে করে তার ঘরের খাটের নিচে ভূত থাকে। তাহলে সে একদিন ঠিকই তার ঘরের খাটের নিচে ভূত দেখতে পায়। অবশ্য অন্যরা সে ভূত দেখবে না। ক্ষয় ও পূরণ প্রকৃতিরই নিয়ম। মৃত লোকটা চলে গেল। জীবনটা উপভোগ করতে চাইলে, মৃত্যু চিন্তা মাথায় রাখতে হয় না।
মৃত্যু চিন্তা বাদ দিতে গিয়ে একটা বই হাতে তুলে নিলাম,
তৃতীয় বিশ্বের অর্থনীতি। রসকষহীন বই ভালো লাগে না। বই বাদ, দেশের কথা ভাবতে হবে। ৭১ এ যারা যুদ্ধ করেছিলেন তাদের একটা পজেটিভ লক্ষ্য ছিলো। দেশকে স্বাধীন করতে হবে। এখনকার তরুনদের সামনে কিছু নেই। তারা কোনো রকমে একটা চাকরি পেলেই খুশি। অবশ্য দেশ স্বাধীন হওয়ার পর অনেকের চরিত্র বদলে গেছে। অনেকের কপাল খুলে গেছে। দেশভাগের সময় অনেকের এরকম অবস্থা হয়েছিলো। রাজনীতি করতে গেলে মানুষের চরিত্র বদলে যায়। আমাদের দেশের রাজনীতি মানেই তো মিথ্যে কথা, মিথ্যা আশ্বাস, দূর্নীতি, জবর দখল, বিদেশে গাড়ি বাড়ি আর চৌদ্দগুষ্ঠির ক্যারিয়ার। অসৎ লোকেরা মনে হয় গান্ধী, মেন্ডেলা, চে গুয়েভারা এদের নাম শুনে নাই। লোকজনের চিন্তা ভাবনা আজকজাল এরকম- টাকা দিয়ে পুলিশে চাকরি নিবো না বিদেশ চলে যাবো?
দুপুরে ভাতঘুম দিতে গিয়ে একটা স্বপ্ন দেখে ফেললাম।
দশজন দূর্নীতিবাজকে বোমা মেরে উড়িয়ে দিয়েছি। তিনজন ধর্ষককে ছাদ থেকে ফেলে দিয়েছি। বিচারে আমার ফাসির হুকুম দেওয়া হলো। রাত আট টায় আমাকে জানানো হলো- আগামীকাল ভোরে আমার ফাসি হবে। আমাকে জিজ্ঞেস করা হলো- তুমি কি কিছু খেতে চাও? আমি বললাম, একটা বার্গার আর কোক দিন। সেই সাথে বেনসন সিগারেট এক প্যাকেট। আর একটা সাদা কাগজ ও কলম। যা যা বললাম, তা তা আমাকে দেওয়া হলো। আরাম করে বার্গার আর কোক খেলাম। তারপর একটা চিঠি লিখতে বসলাম। ভোরে আমাকে নিয়ে যাওয়া হলো। জল্লাদ জমটুপি পরাতে চেয়েছিল আমি মানা করলাম। বললাম, আমাকে জুলানোর আগে একটা কোরআন শরীফ দেন। সূরা বাকারা পড়তে চাই। আয়াত নং ৩৪/৩৫। জেলার সাহেব আমার এই ইচ্ছাটাও পূরন করলেন।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই জুলাই, ২০২৩ দুপুর ১২:৩৬

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


