
বর্তমানে পৃথিবীতে কোনো ডোডো পাখি নেই।
১৬৬২ সাল পর্যন্ত পৃথিবীতে ডোডো পাখি ছিলো। ডোডো পাখি আকাশে উড়তে পারতো না। ভারত মহাসাগরের তীরে অবস্থিত মরিশাস দ্বীপ। সেখানে পশুপাখিদের নিশ্চিত থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা ছিলো। মরিশাস দ্বীপে ডোডো পাখিদের বিবর্তন হয়। ডোডো প্রচুর খেতো আর নিজের ওজন ভাড়াতো। তাই হয়তো উড়তে পারতো না। এজন্য অনেক বিজ্ঞানীর ধারনা এই ডোডো পাখি উট পাখির বংশের। ১৫৯৮ সালে ডাচ বা ওলন্দাজদরা মরিশাস দ্বীপটি দখল করে। তারপর বিশ্ববাসী ডোডো পাখি সম্পর্কে জানতে পারে।

একটি ডোডো পাখির ওজন প্রায় ১২ থেজে ১৮ কেজি হয়ে থাকে।
ওলন্দাজদরা এই নিরীহ শান্ত স্বভাবের পাখিটিকে ধরতে শুরু করলো, আর আগুনে পুড়িয়ে খেতে শুরু করলো। যদিও অনেকে বলে, ডোডো পাখির মাংস স্বাদ না। স্বাদ না হলে মানুষ খায় কি করে? পুরো মরিশাস জুড়ে ডোডো পাখি ধরার উৎসব শুরু হয়ে গেলো। এরকম সহজ সরল পাখি ওলন্দাজদরা আগে কখনও দেখেনি। ডোডো শব্দের অর্থ হলো বোকা বা নির্বোধ। ওলন্দাজদরা ডোডো পাখি ধরে বিশ্বের বিভিন্ন চিড়িয়াখানায় বিক্রি করে দিতে শুরু করলো। ওলন্দাজদরা মাত্র ৬০ বছরের মধ্যে ডোডো পাখিদের অস্বতিত্ব বিলীন করে দিলো মরিশাস থেকে।

ডোডো পাখি উড়তে না পারলেও সাঁতার কাটতে পারতো।
মরিশাস যাদুঘরে ডোডো পাখির কংকাল আছে। ডিম থেকে বের হওয়ার পর ডোডো পাখি অতিদ্রুত প্রাপ্তবয়স্ক আকার ধারণ করে। কারন তাদের খেতে ক্লান্তি নেই। ১৭০০ সালের মধ্যে পৃথিবী থেকে হারিয়ে গেলো পেটুক পাখি ডোডো। কী অদ্ভূত ব্যাপার দেখেন, যারা নিজেরাই বেশি বেশি খাওয়ার জন্য ছিলো বিখ্যাত, মানুষ তাদেরকেই বেশি বেশি করে খেয়ে একেবারে নিঃশেষ করে ফেললো মানুষ! একটা সময় মানুষের ধারণা ছিল ফিনিক্স এর মতো ডোডোপাখিও বুঝি মানুষের কল্পনামাত্র।

ইংরিজিতে একটা প্রবাদ আছে, ‘ডেথ অ্যাজ ডোডো’।
একসময় মরিশাস ছিল ঘন সবুজ জঙ্গলে ঢাকা। বসতির জন্য জঙ্গল কাটতে কাটতে এখন তার খুব সামান্যই অবশিষ্ট আছে। যেসব গাছের ফল খেয়ে বেঁচে থাকত ডোডোরা, সেসব জংলি ফলগাছ কেটে আখের চাষ শুরু হয়। ফলে রোজকার খাবারেও টান পড়েছিল ডোডোদের। ডোডো পাখির বিলুপ্তির কাহিনী সত্যি খুব দুঃখজনক। সেই ১৭ শতাব্দী থেকে আজ পর্যন্ত হাজারো প্রজাতির পশুপাখি ডোডোর মতো মানুষের হাতে বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে।
(ছবি ও তথ্যসুত্রঃ গুগল।)
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে জুলাই, ২০২৩ দুপুর ২:০৮

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


