
কেউ আমাকে একটু কষ্ট করে বোঝাবেন, জীবনের উদ্দেশ্য কি?
সত্যি বলছি, এই ব্যাপারে বিশেষ অজ্ঞ আমি। বিশেষ সন্দিহান। এই দুনিয়াতে একজন নতুন শিশুকে নিয়ে এসে বাবা মা আসলে তাকে বিপদে ফেলে দেন। প্রতিটা পদে পদে আছে বিপদ। মা বাবারা একবার ভাবেন না তাদের আদরের সন্তানকে কোথায় রেখে যাচ্ছেন! দুনিয়াটা তো ভালো জায়গা নয়। চলার পথ মসৃন নয়। যাদের একটা সন্তান আছে, তাঁরা থেমে থাকে না, তাঁরা আরো সন্তান চায়। দেশের মানুষ এটা চিন্তা করে না, একে তো দরিদ্র দেশ, তারপর দরিদ্র পরিবার গুলোতে সদস্য সংখ্যা বেশি।
আদিম সমাজের কথা ভাবলে আমি অবাক হয়ে যাই।
আদিম সমাজে মানুষ সারাদিন মাইলের পর মাইল চষে বেড়িয়েছে খাবারের সন্ধানে, সারা জীবনই থেকেছে আধপেটা খেয়ে। অধিকাংশ সময়ই কেটেছে হিংস্র প্রাণীদের মোকাবেলায়। জীবনের উদ্দেশ্য খোঁজার মত অবসর ও মস্তিষ্কের বিকাশ তাদের ছিল না। বিবর্তনীয় দৃষ্টিতে যদি দেখি তবে আমাদের জীবনের আসলে উদ্দেশ্য একটিই, তা হচ্ছে নিজের জিনকে রক্ষা করা এবং এর বংশবৃদ্ধি নিশ্চিত করা। মানুষ বংশ রক্ষা করতে গিয়ে, আসলে দেশের ক্ষতি করছে। মানুষের কপালে দুঃখ আছে।
ধর্ম বলে মানুষকে বিভিন্ন কাজ দিয়ে পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছে!
কারো জীবনের উদ্দেশ্য রাজা হয়ে রাজ্য শাসন করা। কারো জীবনের উদ্দেশ্য সারাজীবন মাছ মেরে অন্যদের খাওয়ানো। কারো জীবনের উদ্দেশ্য স্বামীর সেবা করা ইত্যাদি। ধর্মের উদ্দ্যেশ মানুষকে নির্বোধ করে রাখা। মানুষকে জানতে হয় দর্শন, ধর্ম নয়। ধর্ম তো নালা। আর দর্শন হচ্ছে বিশাল সমুদ্র। আমাদের নবীজি কি ধর্ম ব্যবসায়ী ছিলেন না? তার দেখাদেখি আজও মানুষ ধর্ম নিয়ে ব্যবসা করে যাচ্ছে। সঠিক জ্ঞানের অভাবে মানুষ ধর্ম নিয়ে মেতে আছে। ধর্ম মানুষকে কিছু দিতে পারে না। ধর্ম নয় কর্মই মানুষকে এগিয়ে নেয়। ধর্ম মানুষকে পেছনে টেনে নিয়ে যায়।
জীবনের কোন অর্থ বা যৌক্তিকতা নাই।
তাই বলে জীবন উপভোগ না করারও কোন কারণ নাই। যারা জীবনের অর্থ পেয়েছে বলে দাবী করে তারা হয় মিথ্যে বলছে অথবা কোন মিথ্যা ভূয়া বিষয়ে বিশ্বাস করছে। দুটো ক্ষেত্রেই তারা মানব জীবনের কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হতে বিফল হয়। আপনি রাস্তার উপর দেখতে পেলেন একটা কুকুর গভীর নিদ্রায় মগ্ন, তার পেটটা স্বাস প্রশ্বাস নেওয়ার জন্য উঠছে আর নামছে। এই দৃশ্যটি আপনি গভীর মনোযোগের সাথে দেখ্তে দেখতে যদি প্রশ্ন করেন এই কুকুরটার পৃথিবীতে কি উদ্দেশ্য এসেছে? এর উত্তর আপনি কি দেবেন আমি জানিনা, কিন্তু আমি বলব ওই সময়ের জন্য কুকুরটির উদ্দেশ্য ঘুমানো এবং সেটাই তার ওই সময়ের পরম উদ্দেশ্য। ঘুম ভাঙ্গলে সে আরেকটি কাজে নিয়জিত হবে এবং সেটাই হবে তার ওই সময়ের পরম উদ্দেশ্য।
আইনস্টাইন মরে গিয়েও তার চিন্তার মাধ্যমে জীবন্ত আছেন আমাদের কাছে।
বস্তুত এই যে আইনস্টাইনকে নিয়ে আমরা এত মাতামাতি করছি, রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে মাতামাতি করছি, তাকে শ্রদ্ধা জানানোর কথা বলছি, এতে ঐ মহামানবদের আসলেই কিছু এসে যায় না, কারণ তারা এই সন্মান দেখতেও পাচ্ছেন না, ভোগ করতেও পারছেন না! তাই আইনস্টাইনের বা রবীন্দ্রনাথের বেঁচে থাকা বলতে তাদের নিজেদের বেঁচে থাকা বোঝায় বলে মনে হয় না, বরং জীবিত মানুষের নিকট তাদের চিন্তার বেঁচে থাকা বোঝায় সম্ভবত! আইনস্টাইন বা রবীন্দ্রনাথ কি প্রত্যহ আমাদের সাথে কথা বলছেন না, বা তাদের চিন্তাগুলো কি আমাদের ভাবনার সাথে মিথস্ক্রিয়া করছে না? এইজন্যই তারা জীবিত, এইজন্যই তারা সচল!
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই আগস্ট, ২০২৩ দুপুর ১:৪৬

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



