somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় কাল্পনিক গোয়েন্দা কে?

১৬ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১২:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



হুমায়ুন আহমেদের মিসির আলী।
মিসির আলীর তুলনা হয় না। চমৎকার একটা চরিত্র। বয়স তার ৫০ থেকে ৬০ এর মধ্যে। বিয়ে করেননি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্ট টাইম শিক্ষক। ঢাকার ঝিগাতলায় একটা ছোট বাসা ভাড়া নিয়ে একা থাকেন। মনস্তাত্ত্বিক বিষয়ে তার অনেক জ্ঞান। মিসির আলি সৎ মানুষ। সহজ সরল জীবনযাপন তার। জটিলতা কুটিলতা মুক্ত একজন মানুষ। মানবিক এবং হৃদয়বান মানুষ মিসির আলি। চোখে তার কালো মোটা ফ্রেমের চশমা। মাথা ভরতি চুল। তার চোখের সমস্যা দিন দিন বাড়ছে। মিসির আলি মনে মনে ভাবেন, কত ভালো ভালো বই আছে। সেগুলো না পড়েই একদিন মরে যেতে হবে। আফসোস। মিসির আলির খারাপ একটা অভ্যাস হলো- তিনি প্রচুর সিগারেট খান।

বাংলা সাহিত্যে অনেক গোয়েন্দা চরিত্র আছে।
ফেলুদা থেকে শুরু করে বোমকেশ। কিন্তু বাংলাদেশের লেখক হুমায়ুন আহমেদ দারুণ এক চরিত্র সৃষ্টি করেছেন। অনেক জ্ঞানীগুনী মানুষরা বলেছেন, হুমায়ুন আহমেদের সব লেখা ভেসে গেলেও মিসির আলি আজীবন টিকে থাকবে। মিসির আলীকে নিয়ে লেখা হুমায়ুন আহমেদের অনেক গুলো বই আছে। প্রথম বইটার নাম- 'দেবী'। দ্বিতীয় বইটার নাম- 'নিশীথিনী'। 'নিশীথিনী' বইটা অসাধারণ একটা বই। এই বইটা আমি প্রতি বছর একবার করে পড়ি। নিশীথিনী উপন্যাসটা নিয়ে সিনেমা তৈরি করা হয়েছে। সিনেমার মেকিং সুন্দর হয় নাই। 'বাঘবন্দি' মিসির আলি নামে চমৎকার একটা বই আছে। আসলে মিসির আলিকে নিয়ে লেখা প্রতিটা বইই অসাধারন।

বাংলাদেশের অন্য কোনো লেখক মিসির আলীর মতো একটা চরিত্র তৈরি করতে পারেনি।
বাংলাদেশ এবং কলকাতাতে মিসির আলি দারুণ জনপ্রিয়। 'বৃহন্নলা' নামে একটা বই আছে। দারুন এক বই। রহস্য উন্মোচন করেন মিসির আলি। মিসির আলিকে নিয়ে শেষ বইটা হচ্ছে- 'যখন নামিবে আধার'। মিসির আলি প্রচুর পড়াশোনা করেন। লোড শেডিং হলে মোমবাতি জ্বালিয়ে পড়েন। এমনকি তিনি রান্না করার সময়ও বই পড়েন। অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভরতি হলেও বই পড়েন। মিসির আলির বাসায় কেউ ঘরের কাজ করতে এলে, মিসির আলি তাকে লেখাপড়া শেখান। কিন্তু কাজের ছেলেটা ঘরের জিনিস নিয়ে পালিয়ে যায়। মিসির আলিকে নিয়ে লেখা আরেকটা বইয়ের নাম বলতে চাই- 'তন্দ্রা বিলাস' দারুণ এক বই।

মিসির আলি মানুষের সমস্যার সমাধান করেন।
তার জন্য তিনি কোনো টাকা নেন না। মিসির আলি বড় অদ্ভুত এক চরিত্র। তার পিস্তল নেই। অন্য গোয়েন্দাদের মতো মাথায় ওয়েস্টার্ন হেট পরেন না। মিসির আলির আছে শুধু বুদ্ধি। স্বচ্ছ তীক্ষ্ণ বুদ্ধি। মিসির আলি অতি তুচ্ছ জিনিসও মন দিয়ে দেখেন। তার দেখার ক্ষমতা অসাধারণ। আমরা চোখ খুলে যা দেখি না, মিসির আলি চোখ বন্ধ করে তার চেয়ে অনেক বেশি দেখেন। উনার মতো এরকম মানবিক, ধারালো বুদ্ধির মানুষ সচারাচর দেখা যায় না। লোভহীণ একজন মানুষ। শিক্ষক হিসেবে মিসির আলি অনেক জনপ্রিয়তা। মিসির আলি ছোট ছোট ছেলেমেয়ে দেখলে ভাবেন- বিয়ে করলে তারও ছেলেমেয়ে থাকতো।

একবার আমেরিকা থেকে এক দাওয়াত আসে।
দাওয়াতের সাথে তারা প্লেনের টিকিট পর্যন্ত পাঠিয়ে দেয়। কিন্তু মিসির আলি আমেরিকায় সেই দাওয়াতে যাননি। কারণ তার কাজের মেয়েটা অসুস্থ। এদিকে আমেরিকার সেই অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকেরা তোড়জোড় শুরু করেছেন। মাঝে মাঝে মিসির আলি রহস্যের সমাধানের জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চিঠি লিখে পাঠান। যাদের কাছে চিঠি লিখেন, তাদের সাথে মিসির আলি পিএইচডি করেছেন। আমাদের হুমায়ুন আহমেদ বেচে নেই। বেচে থাকলে প্রতি বছর মিসির আলিকে নিয়ে লেখা একটা করে বই পেতাম। মিসির আলিকে নিয়ে লেখা গুলো বাংলা সাহিত্যের সম্পদ হয়ে থাকবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১২:৪৯
১১টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তারেক ৩০০০ কোটী টাকার লোভেই দেশে ফিরেছে

লিখেছেন জেন একাত্তর, ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:১০



তারেক এসেছে, বলেছে, I have a plan; তারেকের প্ল্যানটা কি? এই মহুর্তে তার প্ল্যান হতে পারে, নমিনেশন বাণিজ্য করে কমপক্ষে ৩০০০ কোটি টাকা আয়। ৩০০ সীটে গড়ে ১০... ...বাকিটুকু পড়ুন

বই : টক অব দ্য টাউন

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:০৮

বই : টক অব দ্য টাউন



একটি বই হঠাৎ করে এতটা আলোচনায় আসবে আমরা কি ভাবতে পেরেছি ?
বাংলাদেশের মানুষ অতি আবেগপ্রবন , বর্তমান রাজনৈতিক অস্হিরতার মধ্যে ও
বাঙালীর স্বভাবসুলভ অনুসন্ধানী... ...বাকিটুকু পড়ুন

মাদ্রাসা শিক্ষা, বৈশ্বিক রাজনীতি, সহিংসতা ও জঙ্গিবাদ

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৪:৪৫


লেখাটির শুরুতে একটি ভূমিকা দেওয়া যাক। সর্বশেষ দেশে গিয়ে কয়েকদিন গ্রামের বাড়িতে ছিলাম। উত্তরবঙ্গে, নিতান্ত অনুন্নত আমাদের সেই গ্রামে এতগুলো কওমি মাদ্রাসা হয়েছে দেখে অবাক হয়েছিলাম। আগে গ্রামে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকার মানুষের জীবন

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১৪


ঢাকাতে মানুষ বড় বিচিত্র ভাবে বেঁচে থাকে। নিয়মিত ঢাকার রাস্তার ঘুরে বেড়ানোর কারণে এই রকম অনেক কিছু আমার চোখে পড়ে। সেগুলো দেখে মনে হয় মানুষ কত ভাবেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশ কখনো এমন করে বলতে পেরেছে কি?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৫


ভারতে গরু ও গোমাংস নিয়ে হত্যা বা সহিংসতার নির্দিষ্ট সংখ্যা বলা কঠিন কারণ এটি রাজ্য, সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং 'গরু রক্ষা' বাহিনী ইত্যাদীর কারণে একেক যায়গাতে একেক রকম। ভারত গোমাংস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×