somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

হরতাল/অবরোধ

০৫ ই নভেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৩:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



চলছে অবরোধ। তবে কিছুই থেমে নেই।
ঢাকার রাস্তায় গাড়ি বাসের সংখ্যা অনেক কম। সাধারন মানুষকে বেগ পেতে হচ্ছে। তবে হরতাল অবরোধের একটা বড় সুবিধা হচ্ছে- রাস্তায় জ্যাম থাকে না। খুব অল্প সময়েই এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় চলে যাওয়া যায়। আমি খুশি। অটো রিকশা গুলো রাস্তা ফাঁকা পেয়ে মেইন রাস্তায় চলে এসেছে। আর ট্রাফিক পুলিশের কাছে ধরা খেয়েছে। আজ সকালে রাজারবাগ মোড়ে দেখলাম- অনেক গুলো অটো রিকশা আটক করা হয়েছে। রিকশা চালক রিকশার মালিককে ফোন দিয়েছে। মালিক এসে পুলিশকে টাকা দিয়ে রিকশা ছাড়িয়ে নিচ্ছে। গাড়ি বাস কম হওয়াতে পুলিশের নজর রিকশার দিকে। অটো রিকশা আটক করে পুলিশ পকেট ভরতি করে টাকা নিয়ে বাসায় যেতে পারছে। তেমন কোনো আন্দোলন, মিটিং মিছিল সমাবেশ চোখে পড়ছে না। তবে গার্মেন্স শ্রমিকরা বিএনপির চেয়ে ভালো আন্দোলন করেছে।

রাস্তায় ব্যাক্তিগত গাড়ির সংখ্যা একদম কম।
ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল গুলো বন্ধ। তারা অনলাইনে ক্লাশ নিচ্ছে। কারন সিলেবাস তো শেষ করতে হবে। আমার কাজে যেতে বেশ সমস্যা হচ্ছে। আমি গাড়ি ব্যবহার করি না। কারন আমি হিসাবি মানুষ। গাড়ি নিয়ে বের হলে আমার ৪ শ' টাকার গ্যাস নিতে হবে। চারশ' টাকা খরচ না করে আমি ৩৫ টাকা দিয়ে বাসে করে চলে যাই। তাছাড়া এখন জ্যাম নেই। তাই কোনো কষ্ট হচ্ছে না। তাছাড়া এই অবরোধের মধ্যে গাড়ি নিয়ে বের হলে সারাক্ষন টেনশন কাজ করবে, এই বুঝি গণ্ডগোল লেগে গেলো। আমার গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিলো অথবা গাড়ি ভেঙ্গে দিলো। গাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় আমাকে দিবে না। একজন পুলিশকে পিটিয়ে মেরে ফেলল। আন্দোলন মানেই কি একজন জীবন্ত মানুষকে পিটিয়ে মেরে ফেলতে হবে? কি লাভ হলো মির্জা ফখরুলের? কি ক্ষতি হলো শেখ হাসিনার? কিন্তু যে মায়ের সন্তান বা যে স্ত্রীর স্বামী অথবা যে বাচ্চার বাবাকে মেরে ফেলা হলো- তাদের 'ক্ষত' কেউ দেখবে না।

সেদিন আমি মিরপুর দশ নম্বর এলাকায় ছিলাম।
রাত তখন এগারোটা। বাসের জন্য দাঁড়িয়ে আছি। কোনো বাস নেই। টানা এক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকলাম। দুই কাপ চা খেলাম। দুটা সিগারেত শেষ করলাম। কোনো বাস নেই। কারন অবরোধ। সারা রাত তো আর রাস্তায় থাকতে পারি না। ছোট মেয়েটা আমার অপেক্ষায় আছে। এখন উপায় দুটা। এক, পাঠাও। দুই সিএনজি। পাঠাও নিবে ২৫০ টাকা। সিএনজি নেবে ৩০০ শ' টাকা। বাস থাকলে লাগতো মাত্র ৩৫ টাকা। যাইহোক, মনে মনে ঠিক করলাম। ৩০০ শ' টাকা দিয়ে সিএনজি দিয়ে চলে যাই। পাঠাও চালক গুলো অদক্ষ, রাস্তাও ভালো চিনে না। অথচ বাইক নিয়ে রাস্তায় নেমে পোড়েছে। এক সিএনজি পেয়ে গেলাম। সেই সিএনজি চালক বলল, আমি যাত্রাবাড়ী যাবো। উঠে বসেন আপনাকে নামিয়ে দিব। যা খুশি আমায় দিয়েন। আমি আমার গন্তব্যে নেমে ১০০ টাকা দিয়ে দিলাম। সিএনজি চালক খুশি। আমিও খুশি। আমার দুই শ' টাকা বেচে গেলো।

হরতাল অবরোধে সাধারন মানুষের কষ্ট সবচেয়ে বেশি।
যারা ধনী সারা বছর অবরোধ থাকলেও তাদের কিছুই যায় আসে না। দরিদ্র অসহায় মানুষের মুখের দিকে তাকানো যায় না। গতকাল পত্রিকায় পড়লাম ঢাকায় ভিক্ষুকের সংখ্যা বেড়েছে। মূলত করোনার সময় থেকেই ভিক্ষুকের সংখ্যা বেড়েছে। সেই সাথে লাগামহীন ভাবে বেড়েছে প্রতিটা দ্রব্যের দাম। করোনার আগে ৫ হাজার টাকা দিয়ে যে বাজার করতাম, এখন সেই বাজার করতে দশ হাজার টাকা লাগে। শেখ হাসিনার দেশের দরিদ্র মানুষ নিয়ে কোনো চিন্তা ভাবনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। উনি ব্যস্ত রাস্তাঘাট নিয়ে। আর চিবিয়ে চিবিয়ে বিএনপিকে কটাক্ষ্য করে কথা বলা। আমাদের দেশে মিটিং মিছিল আর সমাবেশে যদি মানুষ না মারা যায় তাহলে সেই মিটিং মিছিল সমাবেশ অসফল বলে ধরে নেওয়া হয়। কাজেই আন্দোলনে কাউকে না কাউকে মরতেই হবে। হোক পুলিশ, কর্মী বা রিকশা চালক অথবা পথচারী। কেউ মারা গেলে আওয়ামীলীগ বা বিএনপির কিছুই যায় আসে না।

হরতাল অবরোধে সাধারন মানুষের কষ্ট হলেও শেখ হাসিনার কিছুই যায় আসে না।
তিনি টার্নেল উদ্ববোধন করছেন, মেট্রোরেল উদ্ববোধন করছেন। এর আগে বিমান বন্দরের টার্মিনাল উদ্ববোধন করলেন। যদিও এগুলোর কাজ পুরোপুরি শেষ হয়নি। টার্মিনালের কাজ পুরোপুরি শেষ হবে আগামী বছরের শেষের দিকে। কাজ শেষ হবার আগেই কেন তাড়াহুড়া করে উদ্ববোধন করতে হবে? শেখ হাসিনার মনোভাব এরকম- এই দেশ আমার বাপের। এই দেশের সব কিছুতে বঙ্গবন্ধুর নাম থাকতেই হবে। তাজউদ্দিন, ভাসানীসহ হাজার হাজার মুক্তিযোদ্ধা দুধভাত। সব তার বাবা করেছেন। আর তিনি করে যাচ্ছেন। এদিকে যে দেশে দুর্নীতি হচ্ছে, ছাত্রলীগ নানান অন্যায় করে বেড়াচ্ছে। তার দলের নেতাদের ছত্রছায়ায় থাকা লোকজন শত অন্যায় করছে, জিনিসপত্রের দাম হুহু করে বাড়ছে, শিক্ষার মান কমেছে, বেকার বেড়েছে সেদিকে তার কোনো নজর নেই।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৩:১২
৯টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কবে হবে ভোর?

লিখেছেন পাজী-পোলা, ৩০ শে নভেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:৩৫

আর কত অন্ধকার গাঢ় হলে ভোর হবে?
আর কত শলাকা পুড়ালে বুকের দহন মিটবে?
আর কত নিকোটিন পূর্ণ হলে এই হৃদয়ে তোমার মৃত্যু হবে?

বিকলাঙ্গ ফুসফুস, তোমার আশায় কেবল দম বাড়ে
আর কত নিরাশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি আমার আমিতে আমিময়

লিখেছেন জেরী, ৩০ শে নভেম্বর, ২০২৩ রাত ৯:৩৮

করোনাকালীন সময়ে যখন মুখে মাস্ক পড়া লাগত তখন থেকেই এই অদ্ভুত অভ্যাস দেখা দিল।মাস্ক পড়ে রাস্তা দিয়ে হেটে যাই পরিচিত মানুষরা,রিলেটিভরা এমনিকি আমার কাছের একবান্ধবী ও দেখি আমাকে চিনে না।বান্ধবী... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাঙন গগনে ঘোর ঘনঘটা || একটা অদ্ভুত ও বিচিত্র সুরের রবীন্দ্রসঙ্গীত || বেশ কিছুদিন পর আবার ফিরে এলাম গানে

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ৩০ শে নভেম্বর, ২০২৩ রাত ৯:৫০

শাঙনগগনে ঘোর ঘনঘটা, নিশীথযামিনী রে।
কুঞ্জপথে, সখি, কৈসে যাওব অবলা কামিনী রে।
উন্মদ পবনে যমুনা তর্জিত, ঘন ঘন গর্জিত মেহ।
দমকত... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেউ কথা রাখেনি। না, রাখার ক্ষমতা নেই ?

লিখেছেন স্প্যানকড, ০১ লা ডিসেম্বর, ২০২৩ ভোর ৪:২৪

ছবি নেট ।

ন হন্যতে বইটি মৈত্রীয় দেবীর যা উনি লিখেছিলেন ফরাসি লেখক মির্চা এলিয়াদের লা নুই বেংগলীর জবাব স্বরুপ।মৈত্রীয় দেবীর দাবি তিনি মির্চার প্রেমে পড়েন নি তিনি প্রেমে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসলেই কি সরকার এবার পারবে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০১ লা ডিসেম্বর, ২০২৩ ভোর ৬:৫৫




সরকারী দলের কোন প্রার্থী হারতে চাইবে না। অত:পর যারা হারবে তাদের সবাই যদি বলে নির্বাচন সুষ্ঠ হয় নাই। যারা নির্বাচনে আসে নাই তারা তো বলবেই নির্বাচন সুষ্ঠ হয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×