somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

আজ ঢাকায় একটি বৃষ্টির দিন!

১৭ ই নভেম্বর, ২০২৩ রাত ৯:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আজ শুক্রবার। গতকাল থেকেই আকাশ মেঘলা।
মেঘলা আকাশ মানেই বিষন্নতা। মেঘলা আকাশ মানুষকে বিষন্ন করে দেয়। চারিদিকে খুবই শীতল আবহাওয়া। আবহাওয়া অফিস বলেছে শুক্রবার-শনিবার আকাশ মেঘলা থাকবে, বৃষ্টিও হবে। মিধিল নামে এক ঝড় হবার সম্ভবনা আছে। আজ ছুটির দিন। কিন্তু আমার কাজ আছে। ধানমন্ডি ভুতের গলি যেতে হবে। তারপর শ্যাওড়া পাড়া যেতে। আমি সকালে বাসা থেকে বের হই। বৃষ্টি হচ্ছে দেখে ছাতা সাথে করে নিয়ে নিলাম। সুরভি বলল- ছাতা হারিয়ে এসো না। এর আগে চারটা ছাতা হারিয়েছো। আমার কন্যা ফারাজা বলল- বাবা আমিও তোমার সাথে বাইরে যাবো। মেয়েকে বললাম, বাইরে বৃষ্টি হচ্ছে তুমি ভিজে যাবে। জ্বর আসছে, ঠান্ডা লাগবে। তুমি বাসায় থাকো। অন্য একদিন তোমাকে নিয়ে যাবো। মেয়ে রাগ করে বলল, ঠিক আছে যাও। আমি নানা বাড়ি চলে যাবো।

সকালে ভরপুর নাস্তা করলাম রেস্টুরেন্টে।
নেহারি, তেল ছাড়া পরোটা আর ডিম ভাজা। শেষে এক কাপ চা। ক্ষুধা থাকলে আমার মেজাজ খারাপ থাকে। এজন্য আমি সব সময় আগে খেয়ে নিই। নইলে মেজাজ অল্পতেই চড়ে যায়। মুখ ফসকে সত্য কথা বেড়িয়ে যায়। সেদিন এক কবিকে স্পষ্ট বলে দিলাম- আরে মিয়া 'কবিতা' নাম কি বালছাল লিখেন। এই বালছাল লেখা বন্ধ করেন। কবি আমার উপর বেজায় ক্ষেপে গেলেন। ক্ষেপে গেলেন আরো কয়েকজন। তারা কবিকে উস্কে দিচ্ছে। মেজাজ এমন খারাপ হলো, শেষমেশ অকথ্য ভাষায় সব গুলোকে গালাগালি করলাম। মা মাসি এক করে দিলাম। অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে বেশ শান্তি পেলাম। শরীরটা একদম হালকা হয়ে গেলো। আমি কাউকে কখনও লাথথি দেইনি, এই মানে এই না যে আমি লাথথি দিতে জানি না।

ধানমন্ডি থেকে শ্যাওড়া পাড়া যাচ্ছি বাসে করে।
রাস্তা খালি। বাসে যাত্রীদের ভিড় নেই। হালকা বৃষ্টি হচ্ছে। বেশ বাতাস। দুঃখজনক কথা হলো- আমার সাথে ছাতাটা নেই। কোথায় রেখে এসেছি কিছুই মনে করতে পারছি না। বাসায় গেলে সুরভি সবার আগে জানতে চাইবে ছাতা কই? কিছু একটা বানিয়ে বলে দিবো। যাইহোক, ছাতার চিন্তা বাদ দিয়ে আমি বাইরে তাকিয়ে আছি। রোমান্টিক একটা পরিবেশ। বাসের জানালা দিয়েই দেখলাম- একটা ছেলেমেয়ে হাত ধরাধরি করে হাটছে। বৃষ্টির তোয়াক্কা তারা করছে। হালকা বৃষ্টির মধ্যে ছেলেমেয়ে দুইজন হেটে যাচ্ছে। তাদের চোখে মুখে আনন্দ খেলা করছে। তারা রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে চিন্তিত নয়, ইজরাইল ফিলিস্তিন নিয়ে চিন্তিত নয়, চিন্তিত নয় জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি নিয়ে। তারা হেসে হেসে গল্প করছে। দূর থেকে দৃশ্যটা দেখে ভালো লাগলো। আমি ওদের জন্য প্রার্থনা করলাম।

একদিন এরকম বৃষ্টির দিনে আমি আর সুরভি হেঁটে ছিলাম অনেকখানি পথ!
সেদিন এরকম সকাল থেকেই বৃষ্টি ছিলো। সুরভি আর আমি দেখা করলাম বঙ্গবন্ধুর ৩২ নম্বর বাড়ির সামনে। তখন আমাদের তুমুল প্রেম। যাইহোক, আমাদের সাথে ছাতা নেই। গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। আমরা হাত ধরাধরি করে হাটছি। প্রচুর বাতাস। চারপাশে দেখার কত কি! অথচ আমরা দুজন দুজনের মধ্যে ডুবে ছিলাম। হাঁটতে হাঁটতে আমরা স্টার রেস্টুরেন্টে গেলাম। দুজনেরই অনেক ক্ষুধা পেয়েছিলো। আমরা গরম গরম খিচুড়ি খেলাম। সেই থেকে আমরা আজও একসাথে আছি। ভাল আছি। সুখে আছি। বেশ আছি। যাইহোক, এক আমেরিকান কবি এরকম এক বৃষ্টির দিনে একটা কবিতা লিখেছিলেন- ''আজ নিউ ইয়র্কে একটি বৃষ্টির দিন! কোথাও কেউ কেউ ছেড়া ছাতার নিচে''! বড় সুন্দর কবিতা। অতি মনোরম কবিতা। কবিতাটি আমি পড়েছি। সুন্দর ঝরঝরে অনুবাদ। এরকম বৃষ্টির দিনে সেই কবিতার কথাটা মনে পড়ে। সেই সাথে আমার আর সুরভির তুমুল ভালোবাসাবাসি।

রাতে সাথী আপার বাসায় দাওয়াত।
কোনো অনুষ্ঠান না, এমনি এমনি দাওয়াত। কারো বাসায় তো আর খালি হাতে যাওয়া যায় না। এজন্য সুরভি মিষ্টি বানাচ্ছে। তাকে ১৬ কেজি মিল্কভিটা দুধ এনে দিয়েছি। সাথী আপাদের বাসাটা দোতলা। সাথী আপাদের বাসার ছাদ পুরোটা গাছপালা দিয়ে ভরা। এখন নাকি দেশী মূরগী পালছেন। প্রতিদিন দেশি ডিম পাচ্ছেন। ঢাকায় তো দেশী মূরগীর ডিম পাওয়াই যায় না। সোনালী মূরগীর ডিমকে দেশী মূরগীর ডিম বলে বিক্রি করে। সাথী আপার বাসায় গেলে সবার প্রথমে তারা ডাব কেটে দেন। একসময় গ্রামে অতিথি এলে সবার আগে ডাব দেন। আমার মনে হয়- পুরো ঢাকা শহরে শুধু মাত্র সাথী আপাদের বাসায় অতিথিকে প্রথমে ডাব দেওয়া হয়। সাথী আপার স্বামী নিজে দা দিয়ে ডাব কেটে দেন। বিষয়টা আমার ভালো লাগে। এই সাথী আপার বিয়েটা আমি আর সুরভি দিয়েছিলাম। এখন সাথী আপা ভালো আছেন। সুখে আছেন।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই নভেম্বর, ২০২৩ রাত ৯:০৬
১৮টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=স্মৃতির মায়ায় জড়িয়ে আছে মন=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:০৯


ঘাস লতা পাতা আমার গাঁয়ের মেঠো পথ, ধানের ক্ষেত
জংলী গাছ জড়ানো লতাবতী - আহা নিউরণে পাই স্মৃতির সংকেত,
রান্নাবাটির খেলাঘরে ফুলের পাপড়িতে তরকারী রান্না
এখন স্মৃতিগুলো পড়লে মনে, বুক ফুঁড়ে বেরোয় কান্না।

ফিরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

'জুলাই যোদ্ধারা' কার বিপক্ষে যুদ্ধ করলো, হ্তাহতের পরিমাণ কত?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৫১



সর্বশেষ আমেরিকান ক্যু'কে অনেক ব্লগার "জুলাই বিপ্লব" ও তাতে যারা যুদ্ধ করেছে, তাদেরকে "জুলাই যোদ্ধা" ডাকছে; জুলাই যোদ্ধাদের প্রতিপক্ষ ছিলো পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, ছাত্রলীগ; জুলাই বিপ্লবে টোটেল হতাহতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×