রাত নয়টা। দুই বন্ধু রাস্তা দিয়ে হাটছে। আকাশে মেঘ জমেছে। এক বন্ধু বলল, আমার আর বেচে থাকতে ইচ্ছা করে না।
কেন ভাই?
আমি কেন বেচে থাকবো, তার একটি কারন বল।
বেচে থাকার জন্যই বেচে থাকবে।
একটু বুঝিয়ে বলো।
বুঝিয়ে বলার কিছু নেই, অতি সাধারণ কথা।
এমন সাধারণ কথার উপর নির্ভর করে, এমন সাধারণ ভাবে আমি বাচার ইচ্ছা করি না। পশুর জীবন নাকি যে কোনো উদ্দেশ্য ছাড়াই বেচে থাকবো!
এসব কথা ছাড়ো বন্ধু। নতুন কোনো কবিতা লিখেছো নাকি?
কবিতা লেখা ছেড়ে দিয়েছি। বেচে থাকার মতো কবিতা লেখাও অর্থহীন। কবিতা জিনিসটা সম্পূর্ণ একটা যুক্তিহীন ব্যাপার।
বন্ধু অই মেয়েটাকে দেখো।
একমেয়ে ল্যাম্পপোস্টের নীচে দাড়িয়ে আছে। মুখটা কি মায়াময়! সাজ বলতে শুধু চোখে মোটা করে কাজল দিয়েছে। তাতেই কি অপরুপ লাগছে। বয়স কত আর হবে একুশ, বাইশ। যে কোনো সময় বৃষ্টি নামবে, মেয়েটা ভিজে যাবে। মেয়েটা কেন দাঁড়িয়ে আছে সেটা স্পষ্ট বুঝা যায়।
দেখো, মেয়েটার মধ্যে কোনো ভয় ডর নেই। কেমন দাড়িয়ে আছে দেবী প্রতিমার মতো। মেয়েটা বেচে থাকার জন্য এই ঝড় বৃষ্টির রাতে দাড়িয়ে আছে। বেচে তো থাকতে হবেই। মরে যাওয়া মানেই তো সব শেষ। আর কিছু নেই। মৃত্যুর পর সবই যুক্তিহীন।
মেয়েটা দুই বন্ধুর কাছে এগিয়ে এলো। বলব, আজ তোমাদের সাথে আমায় নেবে? নাও না, তোমাদের যেখানে খুশি। যতক্ষন খুশি।
এক বন্ধু ধমক দিয়ে বলল, যা এখান থেকে বিরক্ত করিস না।
মেয়েটা বলল, দুজন মিলে ভাগাভাগি করে নাও। বিনিময়ে কিছু টাকা দিও আমায়।
বললাম না যা এখান থেকে।
মেয়েটা বলল, আজ রাতে খাওয়ার মতো কিছু টাকা দিয়ে দাও। আমি চলে যাই। যে কোনো সময় বৃষ্টি নামবে। বৃষ্টির পানি মাথায় পড়লেই আমার জ্বর আসে।
যা এখান থেকে। ভাগ নষ্টা মেয়ে কোথাকার।
তখন কবি পকেট থেকে দশটা টাকা বের করে মেয়েটার হাতে দিলো। মেয়েটা রেগে গেলো, বলল- আমি কি ভিক্ষুক নাকি রে শালা?
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে নভেম্বর, ২০২৩ রাত ১:১৯