আগামীকাল থেকে রোজা। রমজান। রমাদান।
আজ মুসলিমরা প্রথম তারাবী পড়বেন। চারিদিকে রমজানের আমেজ! বাজারে প্রচন্ড ভিড়। রাস্তায় জ্যাম। অবশ্য জ্যাম সারা বছরই থাকে। আমি রোজা রাখি না। কারন, সারা দিন না খেয়ে থাকার কোনো কারন নাই। আমি না খেয়ে থাকলে কার কি লাভ? অথবা আমি প্রচুর খেলে কার কি ক্ষতি? টানা একমাস সকাল সন্ধ্যা না খেয়ে থাকলে আল্লাহ কেন খুশি হবেন? আমার বুঝে আসে না। ক্ষুধা কি আমি জানি। ক্ষুধার কষ্ট কি রকম সেটাও আমি খুব ভালো করে জানি। আমি না খেয়ে থেকে আল্লাহকে খুশি করতে পারবো না ভাই। নো নেভার। দরিদ্র দেশে বাস করি। এমনতেই কষ্টের শেষ নাই।
রমজানের বাজার আমি এখনও করি নাই।
দু'বার বাজারে গিয়ে ফিরে এসেছি। প্রচন্ড ভিড়। ভিড় আমার ভালো লাগে না। আমি ছাড়া আমাদের বাসার সবাই'ই রোজা রাখে। আমি রোজা না রাখলেও রমজানে ভালো ভালো খাবার খেতে পছন্দ করি। এটা আমার ছোটবেলার অভ্যাস। এমনকি আমাদের বাসার যারা রোজা রাখে, সকালের ঘুম নষ্ট করে তাদের সঙ্গ দেওয়ার জন্য আমি ভোরবেলা উঠে তাদের সাথে সেহেরি করি। আবার সন্ধ্যায় টেবিল ভরতি খাবার সামনে নিয়ে ইফতারী করতে আমি খুব ভালোবাসি। সুরভির হাতের রান্না ভালো। যা রান্না করে সেটাই খেতে মজা লাগে। সামান্য ডিম চপ সুরভি এত সুন্দর করে তৈরি করে, যেন ডিম চপ একটা শিল্প।
আমাদের প্রধানমন্ত্রী ইফতার পার্টি করতে নিষেধ করেছেন।
গত বছরও প্রধানমন্ত্রী ইফতার পার্টি করতে নিষেধ করেছিলেন। কেউ তার কথা শুনে নাই। রমজানে লোকজন আগ্রহ নিয়ে ইফতার পার্টি করে। যাইহোক, খেজুরের অনেক দাম। এক মন্ত্রী বলেছেন, খেজুরের বদলে বড়ই দিয়ে ইফতার করতে। এই কথা শুনে ইনু সাহেব অনেক রেগে গেছেন। খুবই রেগেছেন। উনি মন্ত্রীকে তুই তুকারি পর্যন্ত করেছেন। মন্ত্রী এমপিরা আমাদের অনেক বিনোদন দেন। হাজার দুঃখ কষ্টের মধ্যেও হাসি পায়। আমাদের দেশে জায়েদ খান নামে একজন নায়ক আছেন। সিনেমা খুব বেশি করেন নাই। মানের দিক থেকে হির আলম টাইপ। সেই জায়েদ খান ডিগবাজি খান। এবং উনি গর্ব করে বলেন, যখন তখন ডিগবাজি দিয়ে যে কোনো জায়গায় চলে যাবো। মূলত আমাদের দেশে মগজহীনদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে।
রমজান এলে আমাদের দেশে জিনিসপত্রের দাম বাড়ে।
ছোটবেলা থেকে দেখতে দেখতে আমরা এখন অভ্যস্ত হয়ে গেছি। চারটা ছোট দেশী মূরগীর দাম নিচ্ছে- ২৪ শ' টাকা। অন্য সময় চারটা ছোট দেশী মূরগীর দাম নিতো- দুই হাজার টাকা। চারশ' টাকা বেড়েছে। যে খেজুর অন্য সময় কিনি ১ হাজার টাকা কেজি। সেই খেজুর এখন ১৩ শ' টাকা। তিন শ' টাকা বেশি। ফলের দাম অনেক বেশি। যে যেভাবে পারছে টাকা বেশি নিয়ে নিচ্ছে। দাম বেশি এই নিয়ে আমি আফসোস করা ছেড়ে দিয়েছি। কারন, দাম বেশি হলে তো আর না খেয়ে থাকবো না। খেতে হবেই। তাছাড়া আমি এখন অন্য সময়ের চেয়ে বেশি বাজার করি। পরিবারের জন্য দুই হাত ভরতি করে বাজার করাতে আনন্দ আছে। চিল্লাইয়া কন কথা সঠিক কিনা?
বড় বড় আবাসিক হোটেল গুলো রমজান উপলক্ষ্যে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে।
সোনার গা হোটেল- এ দেখলাম রমজান উলক্ষ্যে বিশাল ব্যানার ঝুলিয়ে দিয়েছে। সাথে খাবারের ছবি ও দাম। তারা এক কেজি জিলাপির দাম নিচ্ছে ২৯৫০ টাকা। সোনার গা হোটেলওয়ালারা বোকা। তারা এক কেজি জিলাপির দাম ৬ হাজার টাকা অতি সহজেই নিতে পারতো। ঢাকা শহরে এক কেজি জিলাপী ৬ হাজার টাকা দিয়ে নেওয়ার মতো প্রচুর লোক আছে। এদিকে বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট হোটেলের সামনে (ফুটপাতে) বাশ ও ত্রিপল দিয়ে সাজিয়েছে। লাইটিং করেছে। ধুমছে ইফতারী বিক্রি হবে। শহরের লোকজন প্রয়োজনের তুলনায় বেশি খায়। ইদ উপলক্ষ্যে মার্কেটে গুলো বিজলি বাতি দিয়ে আলোক সজ্জা করা হয়েছে।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই মার্চ, ২০২৪ সকাল ১১:৩৩