
আমি একবার মরিসাস গিয়েছি।
গিয়ে বিরাট বিপদে পড়েছি। সমুদ্রের পাড়ে শুয়ে থাকা নারী পুরুষের শরীর ম্যাসাজ করি। ইনকাম ভালো। কিন্তু কাজটা করতে আমার লজ্জা লজ্জা লাগতো। মুসলমানের ছেলে আমি। আর বিধর্মীদের হাত পা টিপে দিচ্ছি, তেল মালিশ করে দিচ্ছি। একবার এক আমেরিকানের শরীর টিপে দিচ্ছি। সেই আমেরিকান বলল, তোমার দেশ কোথায়? আমি বললাম, বাংলাদেশ। আমেরিকান বলল, বাংডেশ টা কোথায়? আমি বললাম, ইন্ডিয়ার পাশে। এবার আমেরিকান লোকটা আমার দেশটা চিনতে পারলো। আমাদের দেশটা না চেনার কি আমি। ৫৩ বছর হয়ে গেছে দেশ স্বাধীন হয়েছে।
আরেকবার সমুদ্রের পাড়ে দাড়িয়ে চিৎকার করে বলছি, তেল মালিশ, তেল মালিশ।
এক মেয়ে বলল, এই ছেলে আমার হাত পা ভালো করে টিপে দাও। এরপর ভালো করে শরীরে তেল মালিশ করে দাও। কয়েকদিন ধরে অনেক হেটেছি। হাটতে হাটতে পুরো শরীর ব্যথা। আমি মুগ্ধ হয়ে মেয়েটাকে দেখছি। মনে হচ্ছে মেয়েটা বেহেশত থেকে আসছে। যাইহোক, আমি চুপচাপ থাকতে পারি না। তেল মালিশ করতে করতে মেয়েটাকে বললাম, তোমার দেশ কোথায়? মেয়েটা বলল, নেদারল্যান্ড। আমি বললাম, সুন্দর দেশ তোমাদের। মেয়েটা বলল, তোমার দেশ কোথায়? বললাম, বাংলাদেশ। মেয়েটা বলল, সেটা কোথায়? আমি বললাম এশিয়াতে। মেয়েটা বলল, চিনতে পারছি না। তখন আমি বলতে বাধ্য হলাম, ইন্ডিয়ার পাশে। মেয়েটা বলল, ও।
বাংলাদেশ কে কেউ না চিনলে আমার ভীষণ রাগ হয়।
আরেহ ভাই আমাদের সুন্দরবন আছে। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত আছে। অসংখ্য নদী আছে। পাহাড় আছে। কি নেই আমাদের দেশে! মেট্রোরেল আছে। পদ্মাসেতু আছে। অসংখ্য মসজিদ আছে। আমরা বিদেশে জামা কাপড় পাঠাই, চিনি পাঠাই, চা-পাতি পাঠাই, জুতো, ওষুধ, মধু, আম, ইলিশ মাছ, কাকড়া পাঠাই। পাকিস্তানের মতো দেশে চোরাই পথে আমাদের দেশ থেকে নারকেল যায়, খেজুরের গুড় যায়, শাড়ি যায়, মাছ যায়। বিশ্বের বহু দেশের বিপদেআপদে আমরা খাদ্য সামগ্রী পাঠাই। বাংলাদেশের ছেলেমেয়েরা বিশ্বের বহু দেশে দাপটের সাথে চাকরি করছে। নামী দামী ইউনিভার্সিটিতে বাংলাদেশের শিক্ষক আছে। আমাদের ইউনূস সাহেব তো নোবেল প্রাইজ পেয়েছেন। কে না চিনে তাকে!
ভারত এবং বাংলাদেশের সম্পর্ক ভবিষ্যতে ডাল-ভাতের মতো হবে।
ভবিষ্যতে ভারত যেতে আমাদের ভিসা লাগবে না। ইমিগ্রেশ থেকে জাস্ট একটা পাস দেওয়া হবে। ব্যস আর কিছু লাগবে না। পশ্চিম বঙ্গের লোকজন সহজেই আমাদের দেশে আসবেন। আমরা যাবো। কোনো প্রকার জটিলতা থাকবে না। লম্বা লাইন ধরে ইমিগ্রেশন পার হতে হবে না। যাতায়াত খরচ কমবে। হোটেল ভাড়া কমবে। বাংলাদেশীদের জন্য সব কিছুতে থাকবে ডিসকাউন্ট। ভারত বাংলাদেশ কখনই আলাদা কিছু নয়। একই বৃন্তে দুটি ফুল আমরা। ভারতের অনেক ছেলে মেয়ে আমাদের দেশে ডাক্তারী পড়তে আসে। এদের সংখ্যা আরো বাড়বে ভবিষ্যতে।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


