somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

আজকের ডায়েরি-১৪৫

২৬ শে জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ১০:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আজকাল ঘুমটাই সবচেয়ে আনন্দময় মনে হয়।
আর ঘুমের মধ্যে স্বপ্ন দেখলে আরো বেশি ভালো লাগে। ঘুমের মধ্যে স্বপ্ন দেখতে আমার ভালো লাগে। এমনিতে আমাকে অনেক ভোরে ঘুম থেকে উঠতে হয়। সপ্তাহে একদিন আমি দেরী করে ঘুম থেকে উঠি। আজ ঘুম থেকে উঠেছি ১১ টায়। ঘুম থেকে উঠে দেখি সুরভি বাসায় নেই। অর্থাৎ সে ফারাজাকে নিয়ে স্কুলে গিয়েছে। মাকে নিয়ে আজ হাসপাতালে যাওয়ার কথা ছিলো সকাল আট টায়। হায় কপাল! আমি লক্ষ্মী ছেলের মতো স্নান করলাম। গোছল করতে করতে দুই লাইন গানও গেয়ে নিলাম। আগুনের পরশমণি...। বুয়া নাস্তা দিলো। নাস্তা খেলাম। নাস্তা শেষে বুয়া চা দিলো, চা তো নয় যেন চিনির সিরাপ। আজ আমার কোনো কাজ নেই। সুরভি হোয়াটসঅ্যাপে ম্যাসেজ দিয়ে রেখেছে, বাজারে যেতে হবে। লম্বা একটা লিস্ট। ফ্রিজ খালি। আমি বাইরে বের হলাম। শুধু কন্যার জন্য আপেল আর কমলা নিয়ে বাসায় ফিরলাম। বাসায় এসে দেখি ফারাজা স্কুল থেকে চলে আসছে। কন্যা আমাকে বাসায় দেখলেই জিজ্ঞেস করে, বাবা আজকে তোমার ছুটি? আমাকে বলতে হয়, হ্যা আজ আমার ছুটি। সন্ধ্যায় তোমাকে নিয়ে বাইরে যাবো।

দুপুরবেলা আমি বই পড়ছিলাম।
হঠাৎ ঘুম পেলো। অনেক ঘুম। তাকিয়ে থাকতে পারছিলাম না। অথচ গতকাল রাতে অনেক ঘুমিয়েছি। আমি ঘুমিয়ে গেলাম। শীতকালে মনে হয় মানুষের ঘুম বেশি হয়। ঘুমের মধ্যে স্বপ্নে দেখলাম, আমি রবীন্দ্রনাথের বাড়ি বেড়াতে গিয়েছি। কিন্তু রবীন্দ্রনাথ বাসায় নেই। কোথায় গেছেন? নদীতে মাছ ধরতে গেছেন। রবীন্দ্রনাথের স্ত্রী আমার খুব সেবা যত্ন করলেন। বড় রুই মাছ রান্না করলেন। আমি বললাম, এত ঝোল কেন? রবীন্দ্রনাথের স্ত্রী বললেন, বাংলাদেশের মানুষেররা মাছের ঝোল দারুণ পছন্দ করে। আমি ঝোল দিয়ে ভাত মাখিয়ে মুখে দিলাম। মেজাজ খুব খারাপ হলো। ঝোলের মধ্যে পাচফোড়ন দিয়েছে! আজিব! স্বপ্ন এই টুকুই। বিকাল চারটায় ঘুম থেকে উঠলাম। সুরভি ভাত দিলো। আজিব ব্যাপার! সুরভি রুই মাছ রান্না করেছে এক পাতিল ঝোল দিয়ে। আমি বললাম, মাছে আবার পাচফোড়ন দাওনি তো? সুরভি বললো, মাছে পাচফোড়ন দিবো কেন? কি আজিব কথা! তুমি কি আমার রান্না নতুন খাচ্ছো নাকি!!

সেদিন ভোরবেলা আমি মিরপুর দশ নম্বর মেট্রোরেল থেকে নামলাম।
রোদ উঠেনি। বেশ ঠান্ডা বাতাস। তখনও নয়টা বাজেনি। একজন লোকের সাথে দেখা করতে এসেছি। হাতে পনের মিনিট সময় আছে। রাস্তায় দাড়িয়ে আছি। এমন সময় এক অপরিচিত ছেলে এসে বলল, কেমন আছেন? ছেলেটাকে আমি চিনি না। কোনোদিন দেখি নাই। ছেলেটা হাসিমুখে হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। হ্যান্ডশেক করলাম। ছেলেটা বলল, আমি আপনাকে চিনি। সামুতে আপনার লেখা পড়েছি। ইত্যাদি ইত্যাদি। এরকম আজকাল প্রায়ই হচ্ছে। গুলশান এক অফিসে গিয়েছি। একজন মেয়ে এসে বলল, আপনাকে চেনা চেনা লাগছে কেন? বললাম, আমার চেহারা অতি সাধারণ। এজন্য মানুষজন তাদের পরিচিতদের সাথে আমার চেহারার মিল পায়। মেয়েটা বলল, না। এরকম কিছু না। তবে আপনাকে চেনা পরিচিত বলেই মনে হচ্ছে। গত শনিবার এক বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়েছি। একজন বয়স্ক মহিলা বলল, তুমি কি নাখালপাড়া থাকো? গ্রামের বাড়ি কি চাঁদপুর? বললাম, না। মহিলা বললেন, তুমি দেখতে একদম আমাদের সুমির জামাইয়ের মতো। আমার বলতে ইচ্ছে করলো, সুমি কে? সুমির জামাই কি মারা গেছেন? না হারিয়ে গেছেন?

সেদিন এক দোকানে কেনাকাটা করতে গিয়েছি।
ঘুরে ঘুরে নানান জিনিসপত্র কিনছি। হঠাৎ দেখি বাচ্চা একটা মেয়ে। ঠিক আমার কন্যা ফারাজার মতো। আমি মেয়েটাকে বললাম, তুমি কি কিনতে এসেছো? মেয়েটা অনেক ভয় পেলো। এবং কান্না করতে করতে তার বাবা মায়ের কাছে চলে গেলো। বিষয়টা আমার খুবই খারাপ লাগলো। একটা বাচ্চা মেয়ে আমাকে কেন ভয় পাবে? একটু পর ঘুরে ঘুরে বাচ্চা মেয়েটির সাথে আবার দেখা হলো। মেয়েটা আবার ভয় পেলো। মেয়েটার বাবা বলল, আপনি অন্যদিকে যান। আমার মেয়ে আপনাকে দেখলেই ভয় পাচ্ছে। মেয়েটার মা এক আকাশ রাগ নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। বিষয়টা আমার ভালো লাগলো। আমাকে ভয় পাওয়ার কি আছে? আমার কন্যা তো আমাকে ভয় পায় না। আমি ঘরে পা রাখা মাত্রই চিৎকার করে বাবা বাবা বলে ছুটে আসে আমার কাছে। খুশিতে নাচতে নাচতে বলতেই থাকে, বাবা এসেছে। আমার বাবা এসেছে। সব মানুষ আসলে সবার কাছে প্রিয় হয় না। একজন দেখলেই ভয় পাবে। আরেকজন দেখলে, ছুটে এসে জড়িয়ে ধরবে।

অপ্রত্যাশিত ভাবে সেদিন কিছু টাকা পেয়ে গেছি।
গ্রামে আমাদের জমির উপর এক পরিবার থাকতো। আমার দাদা বেচে থাকতে তাদের থাকতে দিয়েছিল। সেই পরিবারটির আর্থিক অবস্থা এখন ভালো হয়েছে। পরিবারটি দাদার দেওয়া জায়গাটা আমাদের কাছ থেকে কিনে নিতে চায়। বড় ফুপুর বাসায় আমরা সবাই গেলাম। চাচারা দলিলে দস্তখত করলো, যেহেতু আব্বা নাই, তাই আমি আর বড় ভাই দলিলে সাইন করলাম। সরকারি লোক আঙুলের টিপসই নিলো। জমি বিক্রির সেই টাকার ভাগ বাটোয়ারা হলো। আমি কিছু নগদ টাকা পেলাম। এর আগেও চাচারা জমি বিক্রি করেছেন, কোনো দিন টাকা পয়সা পাই নাই। চাচারা বদলে গেছে। এখন খোজ খবর নেয়। ডেকে নিয়ে জমি বিক্রির টাকাও দিচ্ছে। ভালো কিছু ঘটতে শুরু করলে, একের পর এক ভালো কিছুই ঘটতে থাকে। আবার মন্দ কিছু ঘটতে থাকলে, একের পর এক মন্দ ঘটনাই ঘটতে থাকে। ইদানিং আমার মনে হচ্ছে সামনে আরো অনেক কিছু ভালো ঘটবে।

সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ১০:৪৬
১০টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

নিশ্চিত থাকেন জামায়েত ইসলাম এবার সরকার গঠন করবে

লিখেছেন সূচরিতা সেন, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৪২


আমাদের বুঝ হওয়ার পর থেকেই শুনে এসেছি জামায়েত ইসলাম,রাজাকার আলবদর ছিল,এবং সেই সূত্র ধরে বিগত সরকারদের আমলে
জামায়েত ইসলামের উপরে নানান ধরনের বিচার কার্য এমন কি জামায়েতের অনেক নেতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রকৌশলী এবং অসততা

লিখেছেন ফাহমিদা বারী, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:৫৭


যখন নব্বইয়ের দশকে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সিদ্ধান্ত নিলাম এবং পছন্দ করলাম পুরকৌশল, তখন পরিচিত অপরিচিত অনেকেই অনেকরকম জ্ঞান দিলেন। জানেন তো, বাঙালির ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ডাক্তারিতে পিএইচডি করা আছে। জেনারেল পিএইচডি। সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি ভারতকে যাহা দিয়াছি, ভারত উহা সারা জীবন মনে রাখিবে… :) =p~

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:১৫

আমি ভারতকে যাহা দিয়াছি, ভারত উহা সারা জীবন মনে রাখিবে… :) =p~

ছবি, এআই জেনারেটেড।

ইহা আর মানিয়া নেওয়া যাইতেছে না। একের পর এক মামলায় তাহাকে সাজা দেওয়া... ...বাকিটুকু পড়ুন

এমন রাজনীতি কে কবে দেখেছে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:২০


জেনজিরা আওয়ামী লীগের ১৬ বছরের শাসনামল দেখেছে। মোটামুটি বীতশ্রদ্ধ তারা। হওয়াটাও স্বাভাবিক। এক দল আর কত? টানা ১৬ বছর এক জিনিস দেখতে কার ভালো লাগে? ভালো জিনিসও একসময় বিরক্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযুদ্ধের কবিতাঃ আমি বীরাঙ্গনা বলছি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১৫


এখনো রক্তের দাগ লেগে আছে আমার অত্যাচারিত সারা শরীরে।
এখনো চামড়া পোড়া কটু গন্ধের ক্ষতে মাছিরা বসে মাঝে মাঝে।

এখনো চামড়ার বেল্টের বিভৎস কারুকাজ খচিত দাগ
আমার তীব্র কষ্টের দিনগুলোর কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×