somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

ফাস্ট রামাদান ডান। আলহামদুলিল্লাহ এভ্রিথিং।

০৪ ঠা মার্চ, ২০২৫ দুপুর ১২:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আজ তৃতীয় রামাদান।
ওস্তাদ যে বলেছেন, রমজান মাস ডাকাতদের ব্যবসা করার মাস। কথাটা একদম সঠিক। প্রতি বছররের মতো এবারও জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। প্রতিটা জিনিসের দাম বেড়েছে। জিনিসপত্রের দাম আরো বাড়বে, এটা নিয়ে আমি চিন্তিত নই। আমি যতটুকু খাওয়ার ততটুকু খাবোই। যাইহোক, আমি সারা জীবন সিয়াম সাধনার মাসকে, রোজার মাসকে- 'রমজান' বলেছি। আমার কন্যা ফারাজা তার স্কুল থেকে 'রমাদান' শব্দটা শিখেছে। সত্যি কথা বলি- তার মুখে 'রামাদান' শব্দ শুনতে আমার ভালো লাগছে। স্কুল থেকে রামাদান সম্পর্কে সে অনেক কিছু শিখেছে। আমার কেন রোজা রাখতে হবে এবং তার কেন রোজা রাখতে হবে না- সে বিষয়ে সে আমাকে বুঝিয়ে বলেছে। আপাতত কন্যার স্কুল বন্ধ। ইদের পর স্কুল খুলবে।

আমাদের বাসায় নিয়ম করা হয়েছে-
বাইরে থেকে ইফতারি কেনা নিষেধ। সব, সব ঘরে বানানো হবে। হালিম, কাবাব, দইবড়া, গ্রীল চিকেন সব ঘরে বানানো হচ্ছে। পারলে বাসার লোকজন তরমুজ, খেজুর, আপেল ঘরে তৈরি করবে এমন অবস্থা। আমাদের একান্নবর্তী পরিবার। এর মধ্যে বাসায় কমপক্ষে দুজন বাইরের মানুষ থাকেই। গেস্ট দুইজন গেলে আরো দুইজন এসে হাজির হন। কাজের মানুষ আছে চারজন। চারজনের মধ্যে দুইজন আমাদের সাথেই থাকে। যাইহোক, প্রথম রোজা ভালো ভাবেই কেটেছে। তবে তরমুজটা ভালো হয়নি। আমরা সবাই ইফতারি করছিলাম, তখন আমার ভাইয়ের ছেলে, দেড় বছর বয়স সে খেজুর খেতে গিয়ে খেজুরের বিচি খেয়ে ফেলেছে, তারপর বমি করেছে।

সেদিন আমি একটা অন্যায় করেছি।
আমি টিভির রিমোট টা আছাড় দিয়ে ভেঙ্গে ফেলেছি। ভাঙ্গাভাঙ্গির স্বভাব আমার কোনো কালেই ছিলো না। ঘটনা হয়েছে, বাসায় ফিরেছি। দেখি ফারাজা টিভি দেখছে। ফারাজা যতক্ষন টিভি দেখে ততক্ষন রিমোট তার হাতেই রাখে। যেন কেউ টিভির চ্যানেল বদলে দিতে না পারে। আমি ফ্রেশ হয়ে ফারাজার পাশে বসলাম। বললাম, রিমোট দাও আমি নিউজ দেখবো। ফারাজা রিমোট দিবে না। আবার বললাম, অনেকক্ষন ধরে তুমি টিভি দেখছো। এখন রিমোট আমাকে দাও। ফারাজা রিমোট দিবে না। এমন রাগ লাগলো। রিমোট টা আছাড় দিয়ে ভেঙ্গে ফেললাম। আমার এমন আচরন দেখে- ফারাজা হতবাক! সুরভিও হতবাক!

আমি নিজেও অবাক! রিমোট ভেঙ্গে ফেললাম!
রিমোট ভেঙ্গে ফেলার মতো কিছু হয় নাই। নিজের উপর নিজের প্রচণ্ড রাগ হলো। ফারাজা কান্না করছে। তার মাকে জড়িয়ে ধরে বলছে, বাবা এমন করলো কেন? রিমোট ভাঙ্গলো কেন? আমার উচিৎ মেয়েকেটা জড়িয়ে ধরা, তাকে স্যরি বলা। কিন্তু আমি সেটা না করে বিছানায় শুয়ে পড়লাম। পাশের ঘর থেকে আমি ফারাজার কান্নার শব্দ শুনতে পাচ্ছি। আমার ভীষন কষ্ট হচ্ছে। আমার এমন আচরনে সুরভি মর্মাহত। রাতে না খেয়েই ঘুমিয়ে পড়েছি। সুরভি বেশ কয়েকবার ডাক দিলো। আমি আবারও রাগ তেজ দেখালাম। সেদিন রাতে আমি না খেয়ে ঘুমালাম। সুরভিও, এমনকি ফারাজাও। অত্যন্ত দুঃখজনক।

পরের দিন ভোরে আমি বাসা থেকে বের হই।
তখন সুরভি, ফারাজা দুজনেই গভীর ঘুমে। আসলে আমার মধ্যে অপরাধ বোধ হচ্ছিলো তীব্র। সারাদিন বাসায় ফোন করলাম না। সুরভি কয়েকবার ফোন করলো। আমি ফোন ধরলাম না। একসময় ব্যস্ততায় রিমোট ভাঙ্গার কথা ভুলেই গেলাম। রাতে বাসায় ঢুকার আগে মনে পড়লো, টিভির রিমোট ভেঙ্গেছি। মেয়ে কান্না করেছে, আমরা সবাই না খেয়ে ঘুমিয়েছি। রাত তখন নয়টা। আমি বাসায় না গিয়ে দোকানে গেলাম। একটা রিমোট কিনলাম। আসল রিমোট তো আর পাওয়া যাবে না। দুটা ব্যাটারী কিনলাম। ফারাজা আইসক্রিম পছন্দ করে। তার জন্য আইসক্রিম কিনলাম। রাতে সুরভি কি রান্না করেছে জানি না, আমি তিন প্যাকেট খাবার কিনে নিলাম।

কন্যাকে 'স্যরি' বললাম।
নতুন রিমোট তার হাতে তুলে দিলাম। আইসক্রিম পেয়ে তো কন্যা মহাখুশি। কন্যা আমাকে জড়িয়ে ধরে বলল- বাবা তোমাকে অনেক ভালোবাসি। সুরভি বলল, বাইরে থেকে যখন খাবার আনলে তাহলে আমাকে আগেই বলতে, আমি রান্না করতাম না। রাতে তিনজন একসাথে খেতে বসলাম। টিভির রিমোট ফারাজার হাতে। টিভিতে ইউটিউব চ্যানেল Nastya চলছে। আমার কন্যার প্রিয় চ্যানেল। আগে সে ডায়না এন্ড রোমা দেখতো। এখন দেখে Nastya। Nastya একটা মেয়ের নাম। সে সারা দিন যা যা করে সেটা নিয়েই ব্লগ। আজকে Nastya তার বাবা মায়ের সাথে যাদুঘরে গেছে।

সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা মার্চ, ২০২৫ দুপুর ১২:০১
১২টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

'জুলাই যোদ্ধারা' কার বিপক্ষে যুদ্ধ করলো, হ্তাহতের পরিমাণ কত?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৫১



সর্বশেষ আমেরিকান ক্যু'কে অনেক ব্লগার "জুলাই বিপ্লব" ও তাতে যারা যুদ্ধ করেছে, তাদেরকে "জুলাই যোদ্ধা" ডাকছে; জুলাই যোদ্ধাদের প্রতিপক্ষ ছিলো পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, ছাত্রলীগ; জুলাই বিপ্লবে টোটেল হতাহতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!

লিখেছেন আহলান, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১

হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×