১৯৭১ সালে যুদ্ধের সময় দেশের সমস্ত মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
কিন্তু তারা সকলে যুদ্ধ করেনি। ঘরের ভেতর লুকিয়ে ছিলো। তার মানে এই না যে- তারা দেশকে ভালোবাসে না। নানান কারণে তারা যুদ্ধ করেনি। কিন্তু নানান ভাবে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যুদ্ধ শেষে তাদের কোনো খোজ খবর কেউ নেয়নি। তাদের ঘরবাড়ি লুট করা হয়েছে। আগুন দেওয়া হয়েছে। নারীদের ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ক্যাম্পে। এদের হিসাব কেউ জানে না। জানার চেষ্টাও করেনি। বিহারীরা যুদ্ধের সময় প্রচুর চুরী-ডাকাতি করেছে। পাকিস্তানীদের পথ চিনিয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা ও কবি সাহিত্যিকদের ধরিয়ে দিয়েছে। যুদ্ধ মানেই যেন- খুন, হত্যা, লুটপাট, জ্বালাও পোড়াও আর ধর্ষন। ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধ হচ্ছে- তারাও কি লুটপাট করছে? জ্বালাও পোড়াও করছে? ধর্ষন করছে? যুবতী মেয়েদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে?
গত বছর জুলাইতে জামাত শিবির দেশে অরাজকতা করলো।
অসংখ্য মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাতে। একজন রিকশাওলার রিকশা আগুন ধরিয়ে দেওয়া হলো। একজন সিএনজিওলার সিএনজিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হলো। রাস্তার পাশে ফুটপাতে একলোকের কাপড়ের দোকান- সেই দোকান লুটপাট হলো। জনৈক ব্যাক্তির গাড়ি ভাঙচুর করা হলো। জুলাই মাসে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হলো- তাদের হিসাব কি কারো কাছে আছে? জামাত শিবির কঠিন এক প্লান করেছে। সেই প্লানে আওয়ামীলীগ ধরাশয়ী হয়েছে। মূলত জামাত শিবির পুরো দেশের মানুষের সাথে প্রতারনা করেছে। তাদের কাজই জাতির ক্ষতি করা। ১৯৭১ পার হয়েছে ৫৪ বছর হয়েছে। কিন্তু তারা বদলায়নি। জামাত শিবির জুলাইতে অরাজকতা করার জন্য বিহারীদের ভাড়া করেছে। টাকা পেলে বিহারীরা সব করতে রাজী।
শাহেদ জামাল রাজনীতি করে না।
আওয়ামীলীগ বা বিএনপি নিয়ে সে চিন্তিত নয়। সে কোনো রকমে দুটো ডাল ভাত খেয়ে বেঁচে থাকলে পারলেই খুশি। সহজ সরল জীবনযাপন করা শাহেদ জামালের মতো মানুষ এই বাংলায় অনেক। তারা কোনো ঝামেলা পছন্দ করে না। কোনো ঝামেলায় অংশ গ্রহন করে না। তারা চায় শান্তি। যারা দেশে অরাজকতা করে তারা দেশের শান্তি প্রিয় মানুষের কথা ভাবে না। শাহেদ জামালের কথা হলো- আমি কারো ক্ষতি করি নাই, কাজেই আমারও কোনো ক্ষতি হবে না। কিন্তু জুলাই মাসে আন্দোলনে শাহেদ জামাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাকে হাসপাতালে যেতে হয়েছে। শাহেদ জামালের মতো বহু মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জামাত শিবিরের কারণে। এইসব ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের দায়ভার কে নেবে? জুলাই নিয়ে কতিপয় লোক আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়েছে।
গত বছরের জুলাই মাস!
জুলাই মাসে জামাত শিবিরের অরাজকতার সময় শাহেদ জামাল মিরপুর-১২ গিয়েছিল জরুরী কাজে। কাজ শেষ করে- বাস রিকশা না থাকাতে শাহেদ জামাল হেটে দশ নম্বর আসে। মিরপুর দশ আসতেই শাহেদ জামাল দেখতে পায়- রাস্তায় কোনো বাস নেই, রিকশা নেই। কেমন থমথমে পরিবেশ চারেইদিকে। অনেক গুলো ছেলে জলটলা পাকিয়ে আছে। তাদের হাতে লাঠি। রাস্তায় অসংখ্য বড় বড় ইটের টুকরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। রাস্তার উত্তর ও দক্ষিন দিকে অনেক ছেলে দলে দলে ভাগ হয়ে আছে। কে কোন দল কিছুই বুঝা যাচ্ছে না। হঠাত শুরু হলো ধাওয়া। পালটা ধাওয়া। শাহেদ জামাল দুই দলের মাঝখানে পড়ে গেলো। ভিড়ের মধ্যে দুইজন শাহেদ জামালকে পিটালো গজারি দিয়ে। শাহেদ জামাল বুঝতে পারলো না তার অপরাধ কি?
শাহেদ জামাল খুড়িয়ে খুড়িয়ে দশ নম্বর পার হয়ে কাজীপাড়া এলো।
হঠাত পুলিশের আগমন। পুলিশ এসে শাহেদ জামালকে এলোপাথাড়ি মারলো। শাহেদ তো আন্দোলনকারীদের একজন না। তাকে কেন মাইর খেতে হলো? কি তার অপরাধ? তিন দিন তাকে হাসপাতালে থাকতে হয়েছে। সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। অথচ সে আওয়ামীলীগ বিএনপি করে না। একজন অতি সাধারন জনগন। শাহেদের মতো এরকম অনেককে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। এমনকি এখন কমপক্ষে পাচ হাজার ছেলে কারাগারে। বিনা অপরাধে তারা অপরাধী। তাদের জামিন হচ্ছে না। পরিবারে নেমে এসেছে সীমহীন কষ্ট ও অভাব। এদের দেখার কেউ নেই।
এই সমাজে অনেককে বিনা দোষে শাস্তি পেতে হয়।
আবার অনেককে অপরাধ করেও শাস্তি পেতে হয় না। যারা থানায় আগুন দিলো- তাদের গ্রেফতার করা হয়নি। যারা পুলিশ হত্যা করলো তাদের গ্রেফতার করা হয়নি। যারা মেট্রোরেল ভাঙল, ৫০টা সরকারি গাড়ি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিলো- তাদের শাস্তি পেতে হয়নি। যারা শেখ মুজিবের বাড়ি ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিলো- তাদের শাস্তি পেতে হয়নি, যারা আওয়ামীলীগের পার্টি অফিসে আগুন দিয়ে শেষ করে দিলো তাদের শাস্তি পেতে হয়নি। যারা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভেঙ্গে দিলো, তাদের শাস্তি পেতে হয়নি। বরং কারাগার থেকে সাজাপ্রাপ্ত আসামীদের খালাস করে দিচ্ছে একের পর এক। ইউনুস সাহেব নিরপেক্ষ হলে- এইসব অন্যায়ের বিচার করতেন।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা জুন, ২০২৫ দুপুর ২:১৫