
আজ শনিবার, ২৩শে কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, হেমন্ত-কাল।
শাহেদ জামাল রমনা পার্কে বসে আছে। তার হাতে দৈনিক পত্রিকা। সে অনেকদিন পর রমনা পার্কে এসেছে। আজকের সকালটা অন্য রকম সুন্দর। অতি মনোরম। আকাশ মেঘ মুক্ত। রাস্তায় তুলনামূলক জ্যাম কম। বাতাস আছে। পত্রিকায় লিখেছে- গত এক বছরে সারা দেশে ৬ হাজার মানুষ সড়ক দূর্ঘটনায় মারা গেছে। বুড়িগঙ্গায় লঞ্চের ধাক্কায় নৌকা ডুবে গেছে। নৌকায় দশ জন জগন্নাথ কলেজের ছাত্র ছিলো। না কেউ মারা যায়নি। সবাই ভালো আছে। ছেলে গুলো লঞ্চের সাথে নৌকার ধাক্কা লাগার আগেই নদীতে ঝাঁপ দেয়। সময় তখন রাত নয়টা। আমার কথা হচ্ছে- ছাগল গুলো এত রাতে নদী ভ্রমনে গেলো কেন? গাঁজা খেতে? রাতে বুড়িগঙ্গায় যখন নৌকা ডুবে তখন রমনা পার্কের সামনে কে বা কারা যেন গির্জায় ককটেল ছুড়ে মারে। রমনা পার্কের কাছেই একটা গির্জা আছে। গির্জাটা সুন্দর। গির্জাতে ককটেল মেরে কি হবে? কারা এই কাজ করলো? জামাত নাকি এনসিপি?
জেমস ওয়াটসন নামে একজন বিজ্ঞানী আছেন।
তিনি গতকাল মারা গেছেন। তার ভাগ্য ভালো- তিনি লম্বা হায়াত পেয়েছেন। ৯৭ বছর হায়াত পেয়েছেন। অনেক বিজ্ঞানী ৯৭ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারেননি। যাইহোক, জেমস ওয়াটসন ২০১৪ সালে নিজের নোবেল পদকের সোনার অংশটুকু ৪৮ লাখ ডলারে বিক্রি করে দিয়েছিলেন। শাহেদ জামাল খেয়াল করে দেখেছে, চট্রগ্রামে জিনিসপত্রের দাম বাড়লেই, ঢাকায় জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যায়। চট্রগ্রামে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে, বলেই আজ ঢাকায় পেঁয়াজের দাম চড়া। রোদ বাড়ছে, শাহেদ জামালের মেজাজ খারাপ হচ্ছে। শাহেদ পত্রিকা ছুড়ে ফেলে দিলো। মনে মনে বলল- পত্রিকার মায়রে বাপ। পত্রিকা শাহেদ জামাল কেন কিনলো? ঢাকা শহরে একসময় বড় বড় রাস্তায় মোড়ে সিটি করপোরেশনের ছোট ছোট দোকান ছিলো। সেখানে লেখা থাকতো 'সংবাদ পত্র বিক্রয় কেন্দ্র'। এইসব সংবাদপত্র বিক্রয় কেন্দ্র গুলো আজকাল আর দেখা যায় না। যা-ও দুই একটা আছে, সেখানে চা বিক্রি হয়। উত্তরা ওভার ব্রীজের নিচে একলোক সব রকমের পত্রিকা বিক্রি করে।
বিখ্যাত চাঁদগাজী ঢাকায় এসেছেন।
আজ শাহেদ জামালের সাথে চাঁদগাজীর দেখা হবে। জরুরী কিছু বিষয় নিয়ে তার সাথে আলোচনা আছে। তিনি হয়তো আজ শাহেদ জামালকে কিছু দিকনির্দেশনা দেবেন। শাহেদ জামাল বিশ্বাস করে চাঁদগাজীর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার যোগ্যতা রাখে। উনি পরিশ্রমী মানুষ। খেটে খাওয়া মানুষ। জ্ঞানী মানুষ। ছায়া দেখেও উনি ভবিষ্যৎ বলে দিতে পারেন। কাউন্সিলিং উনি দারুন পাবেন। উনি সৎ মানুষ। সৎ মানুষদের সাহস বেশি থাকে। এজন্য উনি বিনা দ্বিধায় একজন ক্রিমিনালকে ক্রিমিনাল বলে দেন। অথচ এই ক্রিমিনাল সমাজের চোখে সম্মানিত। চাঁদগাজির সাথে দাদাগিরি বা ভন্ডামি করে কেউ পার পায় না। দ্বিতীয় মুক্তিযোদ্ধা অর্থ্যাত ২৪ এর যোদ্ধাদের উনি সময় সুযোগ পেলেই সাইজ করে দেন। ভন্ড ধার্মিকদের উনি সাইজ করে দেন। উনার বিচক্ষনতা ও ব্যাক্তিত্বের কারনে অগা, মগা, জগা'রা তারা সামনে দাঁড়াতে ভয় পায়। কোনো এক বিশেষ কারণে চাঁদগাজী শাহেদ জামালকে স্নেহ করেন।
আজ মিরপুরে এক বাসায় শাহেদ জামালের দাওয়াত আছে।
দাওয়াত দেওয়ার আগে জানতে চেয়েছে, শাহেদ কি কি খেতে চায়? শাহেদ তাকে জানিয়েছে- সে ইলিশ মাছ খাবে। ভাজা ইলিশ মাছ। দেশী মূরগী। আজকাল শাহেদ জামাল ফার্মের মূরগী বা সোনালী মূরগী খেতে পারে না। দেশী মূরগীর স্বাদই আলাদা। শাহেদ জামালের প্রথম পছন্দ গরুর মাংস। আর সাদা ভাত। শাহেদ জামাল দরিদ্র হলেও খাবার দাবার নিয়ে সে সৌখিন। অনেকে আছে কিছু একটা হলেই হলো। খেয়ে নেয়। স্বাদ টাদ কিচ্ছু বুঝে না। শাহেদ জামাল অন্য রকম মানুষ। খাবার স্বাদ না হলে সে ছুঁয়েও দেখবে না। শাহেদ জামাল সুরভিদের বাসার খেয়ে আরাম পায়। সুরভি ভাবীর হাতের রান্না ভালো। সুরভি ভাবী একদিন ইলিশ পোলাউ খাইয়েছিলো। যা স্বাদ হয়েছিলো না! যে মেয়ের হাতের রান্না ভালো না তাকে বিয়ে না করাই ভালো। নীলা ভালো রান্না করতে জানতো না। তার জন্যই কি নীলার সাথে শাহেদের বিয়ে হলো না? সম্প্রতি চাঁদগাজীর সাথে নীলার দেখা হয়েছে আমেরিকায়।
মিজানুর রহমান আজহারি বই লিখেছেন- 'এক নজরে কুরআন'।
বইটার দাম ১৮০০ শ' টাকা। সত্যায়ন প্রকাশন থেকে প্রকাশিত। লেখক চেয়েছেন- কুরআনের বিশাল জ্ঞানভাণ্ডারকে একটি সংক্ষিপ্ত কিন্তু বোধগম্য আকারে পাঠকদের কাছে পৌঁছে দেওয়া। এনসিপির সারজিস আলম (পল্টিবাজ) বইটি পড়েছে। বইটি পড়ে সে মুগ্ধ হয়েছে। সে বলেছে, প্রতিটি ঘরে এই বইয়ের একটি কপি থাকা আবশ্যক। গতকাল রাতে শাহেদ জামাল এই বইটি পড়েছে। বইটিতে নতুন কিছু নেই। সব আগে কোনো না কোনো বইতে লেখা আছে। শাহেদ জামালের স্কুলে একটা বই ছিলো- 'আব্দুল্লাহ' নামে। চমৎকার একটা বই। পুরো বইটা শাহেদ জামাল তিনবার বার পড়েছিলো। এরপর যখন পরীক্ষায় সেই বই থেকে প্রশ্ন আসে, শাহেদ জামাল মন ভরে সেই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছিলো। ভালো নম্বর পেয়েছিলো। শাহেদ কোরআন পড়েছে। ভালো ভাবে বুঝে উচ্চারণ ও বাংলা অর্থ সহ পড়েছে। এরপরও বহু মানুষ কোরআন নিয়ে লাখ লাখ বই লিখেছেন। মূল বই ভালো করে পড়লে, আর কিছু পড়ার প্রয়োজন পড়ে না। ভাত রান্না করতে গেলে সব ভাত টিপে দেখতে হয় না।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৫৮

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




