somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রাজিন রিভিউ: Sanju

১০ ই জুলাই, ২০১৮ দুপুর ২:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


এইবার সম্ভব না। এই মুভি ভালো হতেই পারে না। রাজু হীরানির কি সব কিছুই ভালো হতে হবে? সন্জয় দত্ত নিয়ে মুভি বানানো সম্ভব না। -- এইসব ভেবেই মুভি দেখতে গেলাম। পুরাই হা হয়ে বাসা ফেরত আসলাম। কীভাবে সম্ভব? রণবীর কাপুর কি আসলেই অভিনয় করেছে নাকি সন্জয় দত্তের জীবনের ধারণ করা কিছু ভিডিও দেখে আসলাম?

এই মুভি নিয়ে কথা বলার আগেই রণবীর কাপুরের কথা না বললে পাপ হবে। কীভাবে করে এমন অসাধারণ অভিনয়? মুভির ২-৩ দৃশ্যের পরেই ভুলে গিয়েছিলাম পর্দায় রণবীর কাপুর। এই দৃশ্যে বলি “বেচারা সন্জয় দত্ত!”, ঐ দৃশ্যে বলি “সন্জয় দত্ত দেখি ভালোই বদ!”। রণবীর কাপুরের অভিনয় দেখার পর এখন মনে হচ্ছে যে ভারতের নামি দামি নায়কেরা কেউই অভিনয় পারে না। শালা একটা আইটেম। অনেকে বলতে পারে সন্জয় দত্তের নকল করা কী আর এমন অভিনয়? কিন্তু রণবীর যে কী দারুন অভিনয় করেছে সেটা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব না। অবশেষে “খান” দের পেছনে ফেলে রণবীর কাপুরের রাজত্ব শুরু হলো।

মুভিটির কাহিনী নিয়ে বলার কিছু নেই। সন্জয় দত্তের জীবন অনেকের কাছেই জানা। তবে মুভিটি জীবনীর আড়ালে দুটি সম্পর্কের কাহিনী। বাপ-ছেলে এবং দুই বন্ধুর সম্পর্ক। হিন্দী মুভি হলেই যে নায়ক-নায়িকার প্রেম দেখাতে হবে এমন কোন কথা নেই। আইটেম সং, সস্তা রসিকতা, প্রেম পীড়িতি ছাড়াও যে এই রকম মনোরঞ্জক মুভি বানানো সম্ভব সেটা প্রমাণ করলেন রাজু হীরানি।

মুভিটি নিয়ে যেটা ভয় পাচ্ছিলাম সেটা হলো সন্জয় দত্তের জীবনে এতধরণের ঘটনা ঘটেছে যে সব দেখালে তো আর মুভি হবে না। সেটা বেশ সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। মূলত সন্জয় দত্তের মাদকাসক্তি এবং অস্ত্র মামলাটি নিয়েই কাহিনী সাজানো হয়েছে। সন্জয় দত্তের জীবনের অনেক ধরণের ভুল এবং দুঃখ দেখানো হয়েছে। কিন্তু তার পরেও মুভিটি ভয়ংকর হাসির। চিত্রনাট্য এবং সংলাপ আসলেই দারুন। সব সময়ই দর্শকদের মুখি একটি হাসি লেগে থাকবে। হয়তো সাথে চোখে কিছুটা পানিও থাকবে।

রণবীর কাপুর ছাড়াও অনেক গুরুত্বপূর্ণ দুটি চরিত্রে আছেন পরেশ রাওয়াল (সুনীল দত্ত) এবং ভিকি কৌশল ( দত্তের বন্ধু কামলেশ)। আমি পুরাই অবাক হয়ে গেছি এই দুজনের অভিনয় দেখে। মুভির অনেক দৃশ্যেই শুধুমাত্র এরা দুজনেই টেনে নিয়ে গেছে। অনেক সময় তো মনে হয় মুভির নায়ক এরা দুজনই। এছাড়া অল্প কয়েকটি দৃশ্যে নার্গিস চরিত্রে মনীষা কৌরালা পুরা ফাটায় ফেলসে। “কার হার মায়দান ফাতেহ” গানটির দৃশ্যগুলি এতটা ভালো লাগসে যে চিন্তার বাইরে।

মুভিটিতে কোন দিক দিয়েই সন্জয় দত্তকে মহৎ দেখানো হয়নি। আমি ব্যক্তিগত ভাবে সন্জয় দত্তের ভক্ত তবে এই মুভি দেখে তার প্রতি আমার সম্মান কিঞ্চিৎ কমে গেছে। তবে মুভিতে সুনীল দত্তের কষ্টের জীবন মনে দাগ কেটে যায়।

মুভিটির খারাপ দিক বলতে গেলে সেটা “ হ!... কিছু খারাপ খুঁইজা না পাইয়া যা-তা কইতেসস” টাইপ কথা বলতে হয়। মুভিতে কিছুক্ষণ পরপর অট্টহাসি দেবার মত দৃশ্য মাঝে মাঝে মুভির গভীরতা কমিয়ে হাসির মুভি বানিয়ে ফেলে। মুভির সমাপ্তিটাও তেমন দারুণ কিছু হয়নি। এইসব কারণে কেন জানি এটিকে রাজু হীরানির সেরা মুভি বলতে পারবো না। আমার মতে “থ্রি ইডিয়টস” এবং “মুন্নাভাই এম বি বি এস”, এখনো “সান্জু”র ঊর্ধ্বে। তাই বলে এই মুভি কোন দিক দিয়েই অসাধারনের থেকে কম নয়।

সন্জয় দত্তকে পছন্দ করুন আর না করুন শুধুমাত্র রণবীর কাপুরের অভিনয়ের জন্য এই মুভি সবারই দেখা উচিত। এক কথায় অসাধারণ।

রেটিং – ৪.৫ / ৫.০
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই জুলাই, ২০১৮ দুপুর ২:২৫
৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×