somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ফিরে আসা

২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ব্যাস্ত শহরের ব্যাস্ত রাস্তায় হাটছে আবির......কানে এয়ারফোন ঘুজে দিয়ে জহুরুল হক সিটির রাস্তা দিয়ে......
হাটতে হাটতে একসময় কাশবন পরবে তার পাশে বসেই......একা একা কিছুক্ষণ রঙ্গিন আকাশটার দিকে তাকি থাকবে সাথে ত নিকোটিন আছেই......

এইত কিছুদিন আগেও আবীর নিকটিনের ধুয়াও সহ্য করতে পারতনা......বেসম্ভব ভাল ছেলে ছিল বলা যায়.
.....
আবীর গ্রামের একটা স্কুল থেকে গোল্ডেন এ+ পেয়ে ঢাকার একটা ভাল কলেজে ভর্তি হয়...কলেজ লাইফের পাট চুকিয়ে সে এখন বেসরকারি ভার্সিটির সেকেন্ড সেমিস্টার এ পরে......
প্রেম নামক বস্তুটার সাথে তার পরিচয় হয়নি আগে......

আবির হাটতে হাটতে অনেকটা পথ চলে এশেছে হটাত তার চোখ পরল পাশের চটপটির দোকানটায়......
হ্যালো...কই তুমি???
জাহান্নামে... তোমাকে না বলছি আমাকে আর কখনও কল না দিতে......
সরি...ভুল হয়ে গেছে...আর হ্যাঁ তোমার মিথ্যে কথা গুলো সত্যিই অনেক সুন্দর ভাল থেকো......

লাইনটা কেটে গেলো...... রঙ্গিন আকাশটা আজ আর দেখা হল না তার......অন্ধকার জগতটাই ভাল তার দুঃখ নেই চিন্তাও নেই... মোবাইলটা বের করেই পরশকে কল দিল......
ঐ কই তুই???
এই ত বাসায়।কেন???
একটা পুটলার(গাজা)বেবস্থা করতে পারবি???
আচ্ছা তুই বাসায় আয়... আমি আন্তেছি।
রিক্সায় চেপে বসে আনমনে তাকিয়ে আছে আকাশটার দিকে......মাথায় গুরপাক খাচ্ছে কয়েকটা কথা...

কেনই বা এলে তুমি !!!
ভাসালে আমায়...
তোমার ভালবাসায়...
পাশে যদি নাই বা থাকবে
কেন এই মিছে অভিনয়...!!!

হটাত মনে পরল তার ফেলে আসা দিন গুলোর কথা...ভার্সিটিতে ভর্তি হয়েই ১ম সেমিস্টার এ ভাল রেজাল্ট করে...আরিশা ও পরত আবীর এর ব্যাচ এ...
এই আবীর শোন...
আমাকে বলছেন???
হুম...আমাদের সেকশন এ ত আবীর একটাই...
জী বলেন.
ঐ তুমি আপনি আপনি করছ কেন???তুমি করে বলবা,মনে থাকবে???
আচ্ছা...।
তোমার সেলফোন নাম্বারটা দাও ত...
০১৯২১_৫৫*৯৯*

রাত দশটার সময় অপরিচিত নাম্বার থেকে আবির এর ফোন এ একটা কল আসে...

আবিরঃ হ্যালো আসসালাম আলাইকুম...
আরিশাঃ কি কর???
পরছি আপনি কে??
আরিশা......
ও আচ্ছা।জি বলেন...
ঐ গাধা তোমাকে না বলছি তুমি করে বলতে......
বল...কি বলবে???
প্রেম ট্রেম কর নাকি???এত তারা কেনও??
না করিনা... পড়া আছে তাই...
কাল ভার্সিটির পর অপেক্ষা কইরও... কথা আছে...

পরের দিন ভার্সিটি শেষে আবীর গেট দিয়ে আবীর বের হয়ে যাবে ...পিছন থেকে আরিশা ডাকল..

এই,এই আবীর শোন...
জি বল...
তোমাকে না বলছি ক্লাস শেষে আমার জন্য অপেক্ষা করতে।।??
না কালকে এক্সাম আছে তো তাই বাসায় যেতে হবে...কি বলবা বল...
সামনে একটা চটপটির দোকান আছে চলো ...

চটপটি খেতে খেতে আরিশা আবীর একে অপরের সম্পরকে জেনে নেয়... আরিশাই আবিরকে প্রথম ভালবাসার কথা বলে... আবীরও মানা করতে পারেনি কারন ভার্সিটির প্রথম দিন থেকেই আরিশাকে ভালো লাগতো...
অল্প কদিনেই আরিশা আবিরকে প্রেমের শহর গুরিয়ে দেখিএছিল।আর আবীর এর অবুঝ মনটাও বেসম্ভব ভালবেসে ফেলেছিল আরিশাকে...
আস্তে আস্তে কেমন যেন বদলে যেতে লাগল আরিশা…আগের মত মেসেজের রিপ্লে দেয়না,কল ধরেনা আবীর এর।
ঐ দিন রাত একটার সময় আবীর আরিশাকে কল করেই যাচ্ছে এক ঘন্ঠা যাবত…কিন্তু কল ধরার কোন নাম নেই…কিছুক্ষন পর কল ধরলেও আবীর কে ঝাড়ি মারে এত কল করার জন্য … ঐ দিন-ই প্রথম নিকটিনের ধুয়া পান করল আবীর… এইদিকে আরিশাও বদলে যাচ্ছে আর আবীর ও নেশার জগতে বিচরন করে বেরাচ্ছে…সে এখন আর আলো দেখেনা,দেখেনা অস্ত যাওয়া বিকেল… বাবা মার সাথেও আগের মত কথা হয়না…

জিজ্ঞেস করেনা মাকে “ মা লতা ভালো আছে তো ” লতা তার আদরের ছোট বোন ।নাম প্রীতি লতা...ও-ই রেখেছিল নামটা...

সেকেন্ড সেমিস্টার এ আবীর দুই সাব্জেক্টে অকৃতকার্য হয়…আর আরিশা ভাল রেসাল্ট করে… আবীর রাতে আরিশাকে কল করে মন খারাপটাকে ভাগ করার জন্য... কিন্তু আরিশা সাফ জানিয়ে দেয় ওর মত নষ্ট ছেলের সাথে আরিশা সম্পর্ক রাখতে পারবেনা...আবিরকে কিছু বলার সুজুগ না দিয়েই লাইনটা কেটে দেয়. অনেক কেঁদেছিল সেই রাতে আবির...
পরে জানতে পারে আরিশা আর একজনকে ভালবাসত ...আবীর এর থেকে ভালো রেসাল্ট করবে...বাজি ধরেছিল অর ফ্রেন্ডদের সাথে তাই আবীর এর সাথে এই অভিনয়......
দিনটা ছিল বৃহস্পতিবার আজ ও বৃহস্পতিবার...।।সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠেই দেখে বাবার নাম্বার থেকে অনেকগুলা মিসড কল...আবির কল বেক করে শুনে, ওর মা অসুস্থ...ওকে এক্ষনি যেতে হবে গ্রামের বাড়ি ...
আবীর বিকেল ৩টার দিকে বাড়িতে গিয়ে দেখে মা রান্না করে বসে আছে...এখনও খায়নি ছেলে আসবে বলে...
না মা তো ঠিক-ই আছে... !!!ওই তুই ফ্রেশ হয়ে খেতে আয়,দুজন একসাথেই খাব...
তুমি না অসুস্থ??? বললে আমাকে...মিথ্যে বললে কেন???
তুই বাড়িতে আসিস না দুই মাস তাই মিথ্যে বলছি...
হুম ঠিক-ই তো আবীর বাড়িতে আসেনা দুই মাস...আগে তো প্রতি মাসেই দুই বার আসত মাকে দেখার জন্য...
ভাইয়া আমার জন্য চকলেটে আনসিস???
নারে আপু ভুলে গেছি... এই নে টাকা তুই পরে কিনে নিস...
ভাইয়া তুই বাড়িতে আসিস না কেন???আম্মুর কল ধরিস না...এই জন্য আম্মু শুধু কাদে...তর কি হইছে ভাইয়া???
না কিছু হয়নি রে আপু...আর এমন হবেনা...
আবীর বিকেলে তার চিরচেনা সেই মাঠে বসে আছে ভাবছে...কি দরকার এই মিছে ভালবাসার পিছনে ছুটে চলার... পক্রিত ভালবাসা-ই তো পাচ্ছে অফুরন্ত... এত আলো থাকতে কেন সে পরে আছে অন্ধকার জগতে???

(যারা এই মিছে ভালবাসার জন্য অন্ধকার জগতে পরে আছে বা এগিয়ে যাচ্ছে তাদেরকে আবীর এর মত আমিও বলতে চাই কি দরকার এই মিছে ভালবাসার পিছনে ছুটে চলার...এক বার চেয়েই দেখেন না মার মুখটা... বাবার দিকে তাকিয়েই দেখেন না কত অফুরন্ত ভালবাসা আছে আপনার জন্য...কত আশা,স্বপ্ন তাদের দু চোখে আপনাকে নিয়ে...)


০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×