আমি যে দ্বীপটায় বাস করি সেটা একটা বিচ্ছিন্ন দ্বীপ চারপাশে সমুদ্র মাঝখানে আমাদের সুন্দর দ্বীপ! অপরূপ সৌন্দর্যের নীলাভূমি আমাদের হাতিয়া দ্বীপটি। কেবলই সুন্দরই নই এখানে কিছু অসুন্দর কিছু জিনিসও আছে..!!
.
বিচ্ছিন্ন দ্বীপ বলে এখানে আশ্রয় নেই ডাকাতরা যারা তাদের সুবিধাময় স্থান হিসেবে বহুকাল থেকে বেছে নিয়েছে। প্রতি সপ্তাহে পনের বিশজন ডাকাত ধরা পড়ে, কখনো সামনা সামনি দেখতে পাইনি! পত্রিকার পাতায় আর খবরে দেখেছি ডাকাতদের..!!
.
আজ বাজারে গেলাম আমার সব সময় বাজারে যাওয়া হয়না। বাজারের পাশে একটা কোস্ট গার্ড়দের ক্যাম্প আছে। হঠাৎ করে বাজারে হৈ চৈ, জানার আগ্রহ হলো বিষয়টা... একজন বলছে... ডাকাইত ধরা খাইছেরে ডাকাইত! সে হলো ছোট ভাই আফসার বিষটা বুঝলাম। এবং তাদের দেখতে আগ্রহ হলো..!!
.
বিনে পয়সায় এমন একটা নাম পাওয়া মানুষদের দেখার ইচ্ছে হলো! কিন্তু ভিতরে না গেলে দেখতে পাবোনা! হাজার খানেক মানুষের ভিড়, সেখানে আমি এমন কেউ নই যে আমাকে এমনি এমনি ডুকতে দিবে! কিন্তু আমাকে দেখতে হবে... না হয় একটু মিথ্যের আশ্রয় নিয়ে দেখি..!!
.
বুদ্ধিখানা মজবুত রেখে ভয়ে ভয়ে সেখানে গেলাম। একজন বললো এখানে কি? কি চান? স্যার আমি অনলাইন ভিত্তিক একটা পেইজে লিখি... খবর পেয়ে আসলাম বিষয়টা জানার জন্য। লোকটা আমাদের দিকে তাকিয়ে ভাবছে এইটুকু ছেলে আবার কি সব জেনে লিখবে..!!
.
আচ্ছা আসুন... স্যার আমিকি ওদের সাথে কথা বলতে পারি? হ্যাঁ... আমি ডাকাত দেখে ভাবছি এরাই ডাকাত? বিশ্বাস হচ্ছেনা ডাকাত বলে। আমি কিছুক্ষণ তাদের চেহারা গুলো দেখছি, একটা ছেলের বয়স ২০ নাম আফসার বাকী গুলোর ২৪ করে নাম বাবুল আর বোরহান। প্রথমে নাম জেনে নিয়ে কথা বলা ভদ্রতা, সেটা রক্ষা করা আমার কর্তব্য..!!
.
২০বছর বয়সী ছেলেটাকে সাংবাদিক ঢ়েং বললাম নামকি? ভাই আফসার.. বাবা নেই মা আছে। খুব গরিব আগে শহরে রিক্সা চালাতাম! আমি জানতে চাওয়ার আগেই সে সব বলে দিচ্ছে, খুব মেরেছে চোখে পানি। ছেলেটার চেহারা দেখে মনে হয়না ও নয়জন মানুষকে জিম্মি করতে পারে..!!
.
তা... এই পথে আসলে কেনো? ভাই খুব গরিব বাবা নেই তাই কিছু টাকা দেবে লিড়ার তাই আইছিলাম।
নিজের জীবনের কথা ভাবোনি?
ভেবে কি করবো? টাকা না থাকলে ভাবনা আসেনা ভাই!
রিক্সায় তো ভালো ছিলো!
না ভাই যা রোজগার পোষায়না....
.
ছেলেটা শরীরে আমার মতো দশ কেজি মাংশও নেই! কিন্তু ১৫কেজি একটা চুরি নিয়ে ডাকাতি করতে আসছে। ভাবা যায়? আমি আরো কিছুক্ষণ নির্বাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম! এরপর বাকী দু'জনকে জানতে যাবো ঠিক তখনই প্রকৃত সাংবাদিক চলে আসলেন, তখন আমি কেটে পড়লাম! সাংবাদিকতো কখন আবার ওদের বাদ দিয়ে আমাকে জেরা করে... আমার তো আর কুকৃর্তির অভাব নাই.... :-D
.
পরিশেষে বলবো.... জীবনে প্রথমবার কোনো ডাকাতের সামনে গিয়ে ব্যক্তিত্বেন উরাধুরা প্রকাশ করলাম। তাদের জানতে পারলাম। আসলে কেউ ডাকাত হয়ে জন্মায় না, পরিস্থিতি তাদের ডাকাত রূপে কনর্ভাট করে। তবুও তারা ডাকাত তারা অপরাধী তাদের মায়ার চোখে দেখা উচিত নই! আমি কেনো জানি সবার মায়ায় পড়ে যায়... তাই আশা করি ইচ্ছে করলে সুস্হ জীবনে থেকে বাঁচা যায়, একটু সৎ ইচ্ছা থাকলেই সম্ভব..!!
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:৪৪