ও ভাই যাবেন?? এক'শ দিলে হবে। সময় আপনার ইচ্ছে..
কি?
আরে ভাইকি বাচ্চা ছেলে? বুঝেননা কিছু? আরে ভাই আমার লগে শুয়বেন, এক'শ টাকা আর সময় আপনার যতক্ষণ লাগে...
না! আমি এরকম মানুষ নই...
কত দেখলাম এমন... ভদ্দর লোক। শুয়ে বুঝছি কেমন ভদ্দর লোক..!!
.
কথা গুলো রুবিনা বেগম নামের চাঁদ পুরের এক ২৩ বছর বয়সি মেয়ের। যার ক্ষুদার্থ চেহারা আর কঠোরতার পিছনে এক অসহায়ত্বের গল্প লুকানো। শহরটাকে তার খুব ভালো করে চেনা। কথায় আছে রাতের বেশ্যা জানে এই শহরটা কেমন..!!
.
মেয়েটার চেহারায় বলে দিচ্ছে তার অসহায়ত্বের গল্প। আপনারা যারা শহরে থাকেন দেখবেন, সিনেমা হলের সামনে রেল লাইন ওভার ব্রিজের উপরে এরকম অসংখ্য সমাজ আক্ষায়িত নামের বেশ্যাদের দেখতে পাবেন। এই সমাজের সবচেয়ে নিকৃষ্টতম একটি বাক্য বেশ্যা..!!
.
ও হ্যাঁ.... খুব জানার ইচ্ছে মেয়েটার সর্ম্পকে। মেয়েটি আমার প্রিয় শহরের একটি খুব পরিচিত বস্তিতে থাকে। বিয়ে হয়েছে দেড় বছর। বড় দুমদাম করে বিয়েটি হয়েছে গ্রামের বাড়ীতে, স্বামী শহরে থাকে বলে তার সাথে সূখের রাজ্য গড়ার স্বপ্ন নিয়ে রুবিনার শহর যাত্রা..!!
.
কথায় আছেনা !! প্রকৃতি মাঝে মাঝে কষাই লাথ্থি মারে। রুবিনার ক্ষেত্রেও ঠিক তেমন। যে ঘরটায় থাকে তার ভাড়া ৪হাজার, যে মানুষটাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখেছে সে একজন নেশা খোর। নেশা করে রাতে এসে মারে। রোজগার করেনা। আর নেশার টাকা গুলো রুবিনাকেই দিতে হয়..!!
.
ওহ্ একটা কথাতো বলা হয়নি রুবিনা ১বছরের একটা মেয়েও আছে, নাম শেলি খুব সুন্দর না নামটা?? মেয়েটার হাঁসি দেখলে দুনিয়ার সব কষ্ট গুলো যেনো নিমিষেয় হাওয়া হয়ে যায়। একদম পুতুলের মতো মেয়েটা তার। বস্তির একটা খালার কাছে রাতের বেলা মেয়ে রেখে রুবিনা তৈরি করে প্রতিদিনকার রাতের শহরের রূপকে..!!
.
সাদা কালো পোষাকের আড়ালে কিছু বিবস্র মানুষকে রুবিনা প্রতিদিন আবিষ্কার করে। রাতে বেশ্যা জানে হে শহর তুমি কেমন? পতিতা, বেশ্যা এই শব্দ গুলো যেনো কেবল মানুষের অস্তিত্বে ঠিক ঝাপসা বর্ণের কিছু প্রতিচ্ছবি। যে শব্দ গুলো শুনলে সমাজের দাঁতের গোড়ায় বোমি এসে জমা হয়..!!
.
কিন্তু কখনো একটি বার তাদের এই পথ আর বেশ্যার শব্দদের আড়ালে গিয়ে এই সমাজ তাদের দেখেনা। বেশ্যার কোনো জাত হয়না। এরা নাকি মায়ের জাতের বাহিরে। তবে একজন রুবিনারা জানে সাদা কালো ফ্রেমে চশমাওয়ালা ভদ্দর লোকের বিবস্র কুকুরের চেহারা। এই অন্ধ মাতাল সমাজ সেটা দেখেনা..!!
.
পরিশেষে বলবো... কেউ বেশ্যা হয়ে জন্ম নেইনা। বেশ্যা এই মাতাল সমাজ আর কিছু ভদ্দর লোকেরা তৈরি করে। নিজেদের চাহিদার অপর প্রান্তে যে মানুষ গুলো অসহায়ত্ব বিক্রি করে খায় তারা বেশ্যা। যারা সন্তানের মুখে দু'চামচ দুধ তুলে দেবার জন্য নিজের শরীরকে কালো চশমার আড়ালে হিংস লোভি চোখের হাতে তুলে দেই তারা বেশ্যা..?? ভদ্দর লোকরা নীতি বেছে খায় আর কেউ শরীর বেছে পার্থক্যটা শুধু এখানেই !!
.
প্রশ্ন..... আমরা কি? উত্তর হবে? জাতি তুমি বেশ্যা তৈরি করো কিন্তু বেশ্যা শব্দ শুনলে নাক চিটকাও... আসলে তুমি কি..??
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ১২:৪৯