somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর জন্য যা জানা একান্ত কর্তব্য

২৭ শে এপ্রিল, ২০১১ সকাল ১০:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

download প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর জন্য যা জানা একান্ত কর্তব্য

প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর জন্য যা জানা
একান্ত কর্তব্য


গ্রন্থনা:
শাইখ আব্দুল্লাহ ইব্‌ন ইবরাহীম আল কার‘আওয়ী

অনুবাদ:
ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া

সম্পাদনা:
ড. মোহাম্মদ মানজুরে ইলাহী
-------------------------------------------------------------



বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
তিনটি মূলনীতি—
যা জানা প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর উপর একান্ত কর্তব্য
মূলনীতিগুলো হলো :
প্রত্যেকে ১। রব বা পালন কর্তা সম্পর্কে জানা।
২। দীন সম্পর্কে জানা।
৩। নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে জানা।
রব কে জানার পদ্ধতি :
যদি প্রশ্ন করা হয়, তোমার রব বা পালনকর্তা কে?
তখন উত্তরে বলবে: আমার রব হলেন আল্লাহ, যিনি আমাকে এবং সমস্ত সৃষ্টি জগতকে তার অনুগ্রহে লালন করছেন, তিনিই আমার একমাত্র উপাস্য, তিনি ব্যতীত আমার অপর কোন মা’বুদ বা উপাস্য নেই।
দীন জানার পদ্ধতি:
যদি তোমাকে প্রশ্ন করা হয়, তোমার দীন কী?
উত্তরে বল : আমার দীন হলো ইসলাম, যার মানে— আল্লাহর একত্ববাদকে মেনে নিয়ে সম্পূর্ণভাবে তাঁর কাছে আত্মসমর্পণ করা, তাঁর নির্দেশ অনুসরণের মাধ্যমে স্বীকার করা, এবং আল্লাহর ইবাদতে অন্য কিছুর অংশীদারিত্ব করা থেকে মুক্ত থাকা এবং যারা তা করে, তাদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করা।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জানার পদ্ধতি:
যদি তোমাকে প্রশ্ন করা হয় তোমার নবী কে?
উত্তরে বল, তিনি মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, যার পিতার নাম আবদুল্লাহ এবং দাদার নাম আবদুল মোত্তালিব, প্রপিতামহের নাম হাশিম। আর হাশিম কোরাইশ গোত্রের, কোরাইশগণ আরব— যারা ইব্রাহিম আলাইহিস্‌সালামের পুত্র ইসমাইল আলাইহিস্‌সালামের বংশধর।
দীন এর বুনিয়াদ বা ভিত্তি
দীন এর বুনিয়াদ বা ভিত্তি দুটি বিষয়ের উপর :
এক : আল্লাহর সাথে কাউকে শরিক না করে একমাত্র তাঁরই ইবাদতের নির্দেশ দেয়া, এ ব্যাপারে মানুষকে উৎসাহিত করা, যারা একমাত্র তাঁরই ইবাদত করে তাদের সাথে বন্ধুত্ব রাখা, এবং যারা তা ত্যাগ করে তাদেরকে কাফির মনে করা।
দুই : আল্লাহর ইবাদাতে তাঁর সাথে কাউকে শরীক করা থেকে সাবধান করা, এ ব্যাপারে কঠোরতা অবলম্বন করা, এবং যারা তাঁর সাথে শির্ক করে তাদের সাথে শত্রুতা পোষণ করা এবং যারা শির্ক করবে তাদেরকে কাফির মনে করা।
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ (কালেমা তাইয়েবা) মেনে চলার শর্তাবলী
এক : কালেমা তাইয়েবার অর্থ জানা।
অর্থাৎ এ কালেমার দুটো অংশ রয়েছে তা পরিপূর্ণভাবে জানা।
সে দুটো অংশ হলো:
1. কোন হক মা’বুদ নেই
2. আল্লাহ ছাড়া (অর্থাৎ তিনিই শুধু মা’বুদ)
দুই : কালেমা তাইয়েবার উপর বিশ্বাস স্থাপন করা।
অর্থাৎ সর্ব-প্রকার সন্দেহ ও সংশয়মুক্ত পরিপূর্ণ বিশ্বাস থাকা।
তিন : কালেমার উপর এমন একাগ্রতা ও নিষ্ঠা রাখা, যা সর্বপ্রকার শিরকের পরিপন্থী।
চার : কালেমাকে মনে প্রাণে সত্য বলে জানা, যাতে কোন প্রকার মিথ্যা বা কপটতা না থাকে।
পাঁচ : এ কালেমার প্রতি ভালবাসা পোষণ এবং কালেমার অর্থকে মনে প্রাণে মেনে নেয়া ও তাতে খুশী হওয়া।
ছয় : এই কালেমার অর্পিত দায়িত্ব সমূহ মেনে নেয়া অর্থাৎ এই কালেমা কর্তৃক আরোপিত ওয়াজিব কাজসমূহ শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য এবং তাঁরই সন্তুষ্টির নিমিত্তে সমাধা করা।
সাত : মনে-প্রাণে এই কালেমাকে গ্রহণ করা যাতে কখনো বিরোধিতা করা না হয়।
কালেমা তাইয়েবার যে সমস্ত শর্ত বর্ণিত হলো, তার সমর্থনে কোরআন ও হাদিস থেকে দলিল প্রমাণাদি:
প্রথম শর্ত: কালেমার অর্থ জানা। এর দলিল :
আল্লাহর বাণী:
فَاعْلَمْ أَنَّهُ لا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ
“জেনে রাখুন নিশ্চয়ই আল্লাহ ছাড়া কোন হক মা‘বুদ নেই।” [সূরা মুহাম্মাদ: ১৯]।
আল্লাহ আরও বলেন:
إِلَّا مَنْ شَهِدَ بِالْحَقِّ وَهُمْ يَعْلَمُونَ
“তবে যারা হক (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু) এর সাক্ষ্য দিবে এমনভাবে যে, তারা তা জেনে শুনেই দিচ্ছে অর্থাৎ তারা জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাবে।” [সূরা আয-যুখরুফ: ৮৬]
এখানে জেনে শুনে সাক্ষ্য দেয়ার অর্থ হলো তারা মুখে যা উচ্চারণ করছে তাদের অন্তর তা সম্যকভাবে জানে।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন : “যে ব্যক্তি এমতাবস্থায় মারা যায় যে সে জানে আল্লাহ ছাড়া কোন সঠিক উপাস্য নেই সে জান্নাতে যাবে।”

দ্বিতীয় শর্ত : কালেমার উপর বিশ্বাসী হওয়া। এর প্রমাণাদি:
আল্লাহ তা‘আলা বলেন : “নিশ্চয়ই মুমিন ওরাই যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের উপর ঈমান এনেছে, অতঃপর এতে কোন সন্দেহ-সংশয়ে পড়ে নি এবং তাদের জান ও মাল দিয়ে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করেছে। তারাই তো সত্যবাদী।” [সুরা আল-হুজুরাত: ১৫]
এ আয়াতে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের উপর ঈমান যথাযথভাবে হওয়ার জন্য সন্দেহ-সংশয়মুক্ত হওয়ার শর্ত আরোপ করা হয়েছে, অর্থাৎ তারা সন্দেহ করে নি। কিন্তু যে সন্দেহ করবে সে মুনাফিক, ভণ্ড (কপট বিশ্বাসী)।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন সঠিক মা’বুদ বা উপাস্য নেই, আর আমি আল্লাহর রাসূল। যে বান্দা এ দুটো বিষয়ে সন্দেহ-সংশয়মুক্ত অবস্থায় আল্লাহর সাক্ষাতে হাজির হবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।”
আর এক বর্ণনায় এসেছে : “কোন ব্যক্তি এ দুটি নিয়ে সন্দেহহীন অবস্থায় আল্লাহর সাক্ষাতে হাজির হবে জান্নাতে যাওয়ার পথে তার কোন বাধা থাকবে না।”
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হতে অপর এক হাদিসের বর্ণনায় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে বলেছিলেন: “তুমি এ বাগানের পিছনে এমন যাকেই পাও, যে মনের পরিপূর্ণ বিশ্বাস এর সাথে এ-সাক্ষ্য দিবে যে, আল্লাহ ছাড়া কোন সঠিক মা’বুদ নেই— তাকেই জান্নাতের সুসংবাদ প্রদান করবে।”

তৃতীয় শর্ত : এ কালেমাকে ইখলাস বা নিষ্ঠা সহকারে স্বীকার করা। এর দলীল:
আল্লাহ তা‘আলা বলেন: “তবে জেনে রাখ দীন খালেস সহকারে বা নিষ্ঠা সহকারে কেবলমাত্র আল্লাহর জন্যই।” [সূরা আয্‌-যুমার: ৩]
আল্লাহ আরও বলেন: “তাদেরকে এ নির্দেশই শুধু প্রদান করা হয়েছে যে, তারা নিজেদের দীনকে আল্লাহর জন্যই খালেস করে সম্পূর্ণরূপে একনিষ্ঠ ও একমুখী হয়ে তাঁরই ইবাদাত করবে।” [সূরা আল-বাইয়েনাহ: ৫]

হাদিস শরিফে আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “আমার সুপারিশ দ্বারা ঐ ব্যক্তিই বেশি সৌভাগ্যবান হবে যে অন্তর থেকে একনিষ্ঠভাবে বলেছে, আল্লাহ ছাড়া কোনো সত্যিকার উপাস্য নেই।”
অপর এক সহিহ হাদিসে সাহাবি উত্‌বান ইব্‌ন মালিক রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : “যে ব্যক্তি কেবলমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে لا إله إلا الله বা আল্লাহ ছাড়া হক কোন মা’বুদ নেই বলেছে, আল্লাহ তার জন্য জাহান্নাম হারাম করেছেন।”

ইমাম নাসায়ি রহমাতুল্লাহি আলাইহি তাঁর বিখ্যাত “দিন-রাত্রির যিক্‌র” নামক গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “যে ব্যক্তি মনের নিষ্ঠা সহকারে এবং মুখে সত্য জেনে নিম্নোক্ত কলেমাসমূাহ বলবে আল্লাহ সেগুলোর জন্য আকাশকে বিদীর্ণ করবেন যাতে তার দ্বারা জমিনের মাঝে কে এই কালেমাগুলি বলেছে তার প্রতি দৃষ্টি নিক্ষেপ করেন। আর যার দিকে আল্লাহর নজর পড়বে তার প্রার্থিত ও কাঙ্ক্ষিত বস্তু তাকে দেয়া আল্লাহর দায়িত্ব। সে কালেমাগুলি হলো:
لا إله إلا الله وحده لا شريك له، له الملك وله الحمد وهو على كل شيء قدير
অর্থাৎ : “শুধুমাত্র আল্লাহ ছাড়া হক কোন মা’বুদ নেই, তার কোন শরিক বা অংশীদার নেই, তার জন্যই সমস্ত রাজত্ব বা একচ্ছত্র মালিকানা, তার জন্যই সমস্ত প্রশংসা আর তিনি প্রত্যেক বস্তুর উপর ক্ষমতাবান”।

চতুর্থ শর্ত : কলেমাকে মনে প্রাণে সত্য বলে জানা। এর দলীল:
আল্লাহ তা‘আলা বলেন: “আলিফ-লাম-মীম, মানুষ কি ধারণা করেছে যে, ঈমান এনেছি বললেই তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হবে আর তাদের পরীক্ষা করা হবে না? আমি তাদের পূর্ববর্তীদের পরীক্ষা করেছি যাতে আল্লাহর সাথে যারা সত্য বলেছে তাদেরকে স্পষ্ট করে দেন এবং যারা মিথ্যা বলেছে তাদেরকেও স্পষ্ট করে দেন।” [সূরা আল-আনকাবুত: ১-৩]
আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন : “মানুষের মাঝে কেউ কেউ বলে আমরা আল্লাহ এবং পরকালের উপর ঈমান এনেছি, অথচ তারা ইমানদার নয়। তারা (তাদের ধারণামতে) আল্লাহ ও ইমানদারদের সাথে প্রতারণা করছে, অথচ (তারা জানে না) তারা কেবল তাদের আত্মাকেই প্রতারিত করছে কিন্তু তারা তা বুঝতেই পারছে না। তাদের অন্তরে রয়েছে ব্যাধি, ফলে আল্লাহ সে ব্যাধিকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন, আর মিথ্যা বলার কারণে তাদের জন্য রয়েছে কষ্টদায়ক শাস্তি।” [সূরা আল-বাকারা: ৮-১০]

তেমনিভাবে হাদিস শরিফে মু‘আয ইব্‌ন জাবাল রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “যেকোনো লোক মন থেকে সত্য জেনে এ-সাক্ষ্য দিবে যে, আল্লাহ ব্যতীত হক কোন মা’বুদ নেই আর মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর বান্দা ও রাসূল, আল্লাহ তার জন্য জাহান্নাম হারাম করেছেন।”

পঞ্চম শর্ত : এ কালেমাকে মনে প্রাণে ভালবাসা। এর দলীল:
আল্লাহ তা‘আলা বলেন : “কোনো কোনো লোক আল্লাহ ছাড়া তার অনেক সমকক্ষ ও অংশীদার গ্রহণ করে তাদেরকে আল্লাহর মত ভালবাসে, আর যারা ঈমান এনেছে তারা আল্লাহকে অত্যন্ত বেশি ভালবাসে”। [সূরা আল-বাকারা: ১৬৫]
আল্লাহ আরও বলেন: “হে ইমানদারগণ তোমাদের থেকে যদি কেহ তার দীনকে পরিত্যাগ করে তবে আল্লাহ এমন এক গোষ্ঠীকে তোমাদের স্থলাভিষিক্ত করে আনবেন, যাদেরকে আল্লাহ ভালবাসেন এবং তারাও আল্লাহকে ভালবাসেন, যারা মুমিনদের প্রতি নরম— দয়াপরবশ, কাফেরদের উপর কঠোরতা অবলম্বনকারী; তারা আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করবে, কোন নিন্দুকের নিন্দাকে ভয় করে না।” [সূরা আল মায়েদা: ৫৪]

তেমনিভাবে হাদিস শরিফে আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত আছে তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “যার মধ্যে তিনটি বস্তুর সমাহার ঘটেছে সে ঈমানের স্বাদ পেয়েছে: (এক) তার কাছে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের মহব্বত বা ভালবাসা অন্য সব-কিছু থেকে বেশি হবে। (দুই) কোনো লোককে শুধুমাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্যে ভালবাসবে। (তিন) কুফরি থেকে আল্লাহ তাকে মুক্তি দেয়ার পর সে কুফরির দিকে ফিরে যাওয়াকে আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়ার মত অপছন্দ করবে।”

ষষ্ঠ শর্ত: কালেমার হকসমূহ মনে প্রাণে মেনে নেয়া। এর দলীল:
আল্লাহর বাণী: “আর তোমরা তোমাদের প্রভুর দিকে ফিরে যাও, এবং তাঁর কাছে আত্মসমর্পণ করো।” [সূরা আয্‌-যুমার: ৫৪]
আল্লাহ আরও বলেন: “আর তারচেয়ে কার দীন বেশি সুন্দর যে আল্লাহর জন্য নিজেকে সমর্পণ করেছে, এমতাবস্থায় যে, সে মুহসিন”, [সূরা আন্‌-নিসা: ১২৫] মুহসিন অর্থ: নেককার, অর্থাৎ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সুন্নত অনুযায়ী আমল করেছে।
আরও বলেন: “আর যে নিজেকে শুধুমাত্র আল্লাহর দিকেই নিবদ্ধ করে আত্মসমর্পণ করেছে আর সে মুহসিন”, অর্থাৎ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সুন্নত অনুযায়ী আমল করেছে, “সে মজবুত রশিকে আঁকড়ে ধরেছে” [সূরা লুকমান: ২২] অর্থাৎ: لا إله إلا الله বা আল্লাহ ছাড়া কোন হক মাবুদ নেই এ কালেমাকেই সে গ্রহণ করেছে।
আরও বলেন: “তারা যা বলছে তা নয়, তোমার প্রভুর শপথ করে বলছি, তারা কক্ষনো ইমানদার হবে না যতক্ষণ আপনাকে তাদের মধ্যকার ঝগড়ার নিষ্পত্তিকারক (বিচারক) হিসাবে না মানবে, অতঃপর আপনার বিচার-ফয়সালা গ্রহণ করে নিতে তাদের অন্তরে কোন প্রকার অভিযোগ থাকবে না এবং তারা তা সম্পূর্ণ কায়মনোবাক্যে নির্দ্বিধায় মেনে নিবে।” [সূরা আন্‌-নিসা: ৬৫]

অনুরূপভাবে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “তোমাদের মাঝে কেউই ঐ পর্যন্ত ইমানদার হতে পারবেনা যতক্ষণ তার প্রবৃত্তি আমি যা নিয়ে এসেছি তার অনুসারী হবে।” আর এটাই পূর্ণ আনুগত্য ও তার শেষ সীমা।

সপ্তম শর্ত: কালেমাকে গ্রহণ করা। এর দলীল:
আল্লাহ তা‘আলা বলেন: “আর এমনিভাবে যখনই আপনার পূর্বে আমি কোন জনপদে ভয় প্রদর্শনকারী (রাসূল বা নবী) প্রেরণ করেছি তখনি তাদের মধ্যকার আয়েশি বিত্তশালী লোকেরা বলেছে: আমরা আমাদের বাপ-দাদাদেরকে একটি ব্যবস্থায় পেয়েছি, আমরা তাদেরই পদাঙ্ক অনুসরণ করবো। (ভয় প্রদর্শনকারী) বলল: আমি যদি তোমাদের কাছে বাপ-দাদাদেরকে যার উপর পেয়েছ তার থেকে অধিক সঠিক বা বেশি হেদায়েত নিয়ে এসে থাকি তারপরও (তোমরা তোমাদের বাপ-দাদার অনুকরণ করবে)? তারা বলল: তোমরা যা নিয়ে এসেছ আমরা তা গ্রহণ করতে অস্বীকার করছি, ফলে আমি (আল্লাহ) তাদের থেকে (এ কুফরির) প্রতিশোধ নেই, সুতরাং আপনি মিথ্যা প্রতিপন্নকারীদের পরিণাম-ফল কেমন হয়েছে দেখে নিন।” [সূরা আয্‌-যুখরুফ: ২৩-২৫]
আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন: “নিশ্চয়ই তারা অযথা ঔদ্ধত্য প্রদর্শন করত যখন তাদেরকে বলা হত যে, আল্লাহ ছাড়া কোন হক মা’বুদ নেই, এবং বলতো: আমরা কি পাগল কবির কথা শুনে আমাদের উপাস্য দেবতাগুলোকে ত্যাগ করবো?” [সূরা আস্‌-সাফ্‌ফাত: ৩৫-৩৭]

অনুরূপভাবে হাদিসে শরিফে আবু মুসা আশ‘আরি রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বর্ণনা করেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “আল্লাহ আমাকে যে জ্ঞান বিজ্ঞান ও হেদায়েত দিয়ে পাঠিয়েছেন তার উদাহরণ হচ্ছে এমন মুষলধারার বৃষ্টির মতো যা ভূমিতে এসে পড়েছে, ফলে এর কিছু অংশ এমন উর্বর পরিষ্কার ভূমিতে পড়েছে যে ভূমি পানি চুষে নিতে সক্ষম, ফলে তা পানি গ্রহণ করেছে এবং তা দ্বারা ফসল ও তৃণলতার উৎপত্তি হয়েছে। আবার তার কিছু অংশ পড়েছে গর্তওয়ালা ভূমিতে (যা পানি আটকে রাখতে সক্ষম) সুতরাং তা পানি সংরক্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে, ফলে আল্লাহ এর দ্বারা মানুষের উপকার করেছেন তারা তা পান করেছে, ভূমি সিক্ত করিয়েছে এবং ফসলাদি উৎপন্ন করতে পেরেছে। আবার তার কিছু অংশ পড়েছে এমন অনুর্বর সমতল ভূমিতে যাতে পানি আটকে থাকে না, ফলে তাতে পানি আটকা পড়ে নি, ফসলও হয় নি। ঠিক এটাই হলো ঐ ব্যক্তির দৃষ্টান্ত যে আল্লাহর দীনকে বুঝতে পেরেছে এবং আমাকে যা দিয়ে পাঠিয়েছেন তা থেকে উপকৃত হতে পেরেছে, ফলে সে নিজে জেনেছে এবং অপরকে জানিয়েছে (প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির ভূমি) এবং ঐ ব্যক্তির উদাহরণ যে এই হিদায়েত এবং জ্ঞান বিজ্ঞানের দিকে মাথা উঁচু করে তাকায় নি, ফলে আল্লাহ যে হিদায়েত নিয়ে আমাকে প্রেরণ করেছেন তা গ্রহণ করেনি। (তৃতীয় শ্রেণির ভূমি)।”
ইসলাম বিনষ্টকারী বস্তু সমূহ
ইসলামকে বিনষ্ট করে এমন বস্তু দশটি :
এক : আল্লাহর ইবাদাতে কাউকে শরিক বা অংশীদার করা। আল্লাহ বলেন: “নিশ্চয়ই আল্লাহ ইবাদাতে তার সাথে কাউকে শরিক বা অংশীদার মানাকে ক্ষমা করবেন না, এতদ্ব্যতীত যা কিছু আছে তা যাকে ইচ্ছা করেন ক্ষমা করবেন”। [সূরা আন্‌-নিসা: ১১৬]
আরও বলেন : “নিশ্চয়ই যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করে তার উপর আল্লাহ তা‘আলা জান্নাত হারাম করে দিয়েছেন, তার আবাস হবে জাহান্নামে, আর অত্যাচারী (শির্ককারী)-দের কোন সাহায্যকারী নেই”। [সূরা আল-মায়েদা: ৭২]
আর এই শির্ক হিসেবে গণ্য হবে কবর অথবা মূর্তির জন্য কোন কিছু জবেহ করা।

দুই : যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তার মধ্যে কোনো মাধ্যম নির্ধারণ করে তাদের কাছে কিছু চাইবে ও তাদের সুপারিশ প্রার্থনা করবে এবং তাদের উপর ভরসা করবে, সে ব্যক্তি উম্মতের সর্বসম্মত মতে কাফের হয়ে যাবে।

তিন : যে কেউ মুশরিকদের (যারা আল্লাহর ইবাদতে এবং তার সৃষ্টিগত সার্বভৌমত্বে অন্য কাউকে অংশীদার মনে করে তাদেরকে) কাফের বলবে না বা তাদের কাফের হওয়া সম্পর্কে সন্দেহ পোষণ করবে অথবা তাদের দীনকে সঠিক মনে করবে, সে উম্মতের ঐক্যমত্যে কাফের বলে বিবেচিত হবে।

চার : যে ব্যক্তি মনে করবে যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্রদর্শিত পথের চেয়ে অন্য কারো প্রদর্শিত পথ বেশি পূর্ণাঙ্গ, অথবা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শাসন-প্রণালীর চেয়ে অন্য কারো শাসন প্রণালী বেশি ভাল; যেমন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বিচার-পদ্ধতির উপর তাগুতি-শক্তির (আল্লাহদ্রোহী শক্তির) বিচার-ব্যবস্থাকে প্রাধান্য দেয় তাহলে সে কাফেরদের মধ্যে গণ্য হবে।

পাঁচ : রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে আদর্শ নিয়ে এসেছেন এর সামান্য কিছুও যদি কেউ অপছন্দ করে তবে সে কাফের হয়ে যাবে, যদিও সে (অপছন্দ করার পাশাপাশি) তার উপর আমল করে থাকে।

ছয় : রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বর্ণিত দীনের (জীবন বিধানের) সামান্যতম কিছু নিয়ে যদি কেউ ঠাট্টা করে বা দীনের কোন পুণ্য বা শাস্তি নিয়ে ‘ইয়ার্কি’ করে তবে সেও কাফের হয়ে যাবে।
তার প্রমাণ: আল্লাহ তা‘আলার বাণী: “বলুন: তোমরা কি আল্লাহ ও তাঁর আয়াত (শরয়ি বা প্রাকৃতিক নিদর্শনাবলি) এবং তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাথে ঠাট্টা করছ? তোমরা কোনো প্রকার ওজর পেশ করো না, কারণ তোমরা ঈমান আনার পরে কাফের হয়ে গিয়েছ”। [সূরা আত্‌-তাওবা: ৬৫, ৬৬]

সাত : যাদু, বান, টোনা এর দ্বারা সম্পর্ক বিচ্যুতি ঘটানো বা সম্পর্ক স্থাপন করানো— যদি কেউ এগুলো করে বা করতে রাজি হয় তবে সে কাফের হয়ে যাবে।
এর প্রমাণ কোরআনের বাণী : “তারা দু’জন (হারুত মারুত) কাউকে তা (যাদু) শিক্ষা দেওয়ার পূর্বে অবশ্যই বলে যে, আমরা তো কেবল ফিতনা বা পরীক্ষা স্বরূপ। সুতরাং তোমরা কুফরই করো না”। [সূরা আল-বাকারা: ১০২]

আট : মুশরিকদের (যারা আল্লাহর ইবাদতে বা সার্বভৌমত্বে কাউকে অংশীদার বানায় তাদের)-কে মুসলমানদের উপর সাহায্য-সহযোগিতা করা।
এর দলিল আল্লাহর বাণী: “তোমাদের থেকে যারা তাদের (মুশরিকদের)-কে মুরুব্বি বা বন্ধু মনে করবে তারা তাদের দলের অন্তর্ভুক্ত হবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা অত্যাচারী কোন জাতিকে সঠিক পথের দিশা দেন না বা অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছান না”। [সূরা আল-মায়েদা: ৫১]

নয় : যে এ-কথা বিশ্বাস করবে যে, যেমনিভাবে খিজির আলাইহিস্‌সালাম এর জন্য মুসা আলাইহিস্‌সালাম এর শরিয়তের বাইরে থাকা সম্ভব হয়েছিল তেমনিভাবে কারো কারো জন্য রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্রবর্তিত শরীয়ত থেকে বাইরে থাকা সম্ভব, সেও কাফের বলে গণ্য হবে।

দশ: আল্লাহর দীন থেকে বিমুখ হওয়া, দীন শিখতে বা দীনের আদেশ নিষেধ অনুসারে কাজ করার ব্যাপারে গুরুত্বহীন থাকে।
এর দলিল আল্লাহর বাণী: “তার চেয়ে কে বেশী অত্যাচারী যাকে আল্লাহর আয়াতসমূহ স্মরণ করিয়ে দেওয়ার পর সে তা এড়িয়ে গেল, নিশ্চয়ই আমি পাপিষ্ঠদের থেকে প্রতিশোধ নেব ”। [সূরা আস্‌-সাজদাহ: ২২]

এ-সমস্ত ঈমান বিনষ্টকারী বস্তু, ঠাট্টা করেই বলুক আর মন থেকে বলুক অথবা ভয়ে ভীত হয়েই বলুক, যেকোনো লোক এ-সমস্ত কাজের কোনো একটি করলে কাফের বলে বিবেচিত হবে। তবে যাকে জোর করে এ রকম কোন কাজ করতে বাধ্য করা হয়েছে তার হুকুম আলাদা।
এ সবগুলোই অত্যন্ত বিপজ্জনক ও অত্যধিক হারে সংগঠিত হয়ে থাকে। সুতরাং মুসলিম মাত্রই এগুলো থেকে সাবধানতা অবলম্বন করা ও এগুলো থেকে বেঁচে থাকা বাঞ্ছনীয়।
আমরা আল্লাহর কাছে তার আযাব-গজবে পড়া ও তাঁর কঠিন শাস্তিতে নিপতিত হওয়া থেকে আশ্রয় চাচ্ছি।
তাওহীদ বা একত্ববাদ এর তিন অংশ
এক: তাওহীদুর রুবুবিয়্যাহ: “সৃষ্টি জগতের সৃষ্টিতে, নিয়ন্ত্রণে, লালন পালনে, রিজিক প্রদানে, জীবিত করণে, মৃত্যু প্রদানে, সার্বভৌমত্বে, আইন প্রদানে আল্লাহকেই এককভাবে মেনে নেয়া।” এ প্রকার তাওহীদ বা একত্ববাদকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সময়কার কাফেরগণ স্বীকার করে নিয়েছিল, কিন্তু শুধু এ গুলোতে ঈমান থাকার পরেও তারা ইসলামে প্রবেশ করতে পারে নি, বরং এগুলোর স্বীকৃতি থাকার পরও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন, এবং তাদের জানমালকে হালাল বা বৈধ করে দিয়েছিলেন। এই প্রকারের তাওহীদ বা একত্ববাদ বলতে বুঝায় আল্লাহর কার্যসমূহে আল্লাহকেই একক কার্য সম্পাদনকারী হিসাবে মেনে নেয়া। তাওহীদ এর এ অংশ মক্কার কাফিরগণও যে স্বীকার করত তার প্রমাণ কোরআনের বাণী: “বলুন: আসমান ও জমিনের কে তোমাদেরকে রিজিক বা খাদ্য যোগান দেয়? অথবা কে তোমাদের শ্রবণেন্দ্রিয় ও দৃষ্টিশক্তির সার্বভৌমত্বের অধিকারী? আর কে মৃত থেকে জীবিতকে বের করে? ও জীবিতকে মৃত থেকে বের করে? এবং কে কার্যাদির সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম নিয়ন্ত্রণ করে থাকে? তারা অবশ্যই বলবে: আল্লাহ। সুতরাং বলুন: তোমরা কি তাকে ভয় পাও না ? ” [সূরা ইউনুস: ৩১] কোরআনের আরও বহু আয়াতে এ কথার প্রমাণ রয়েছে।

দুই: তাওহীদুল উলুহিয়্যাহ: অর্থাৎ “সর্বপ্রকার ইবাদত শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য সম্পাদন করা। আর ইবাদতের প্রকার সমূহের মধ্যে রয়েছে : (১) দোয়া (২) সাহায্য চাওয়া (৩) আশ্রয় চাওয়া (৪) বিপদমুক্তি প্রার্থনা করা (৫) জবেহ করা (৬) মান্নত করা (৭) আশা করা (৮) ভয় করা (১০) ভালবাসা (১১) আগ্রহ ও (১২) প্রত্যাবর্তন করা, ইত্যাদি।” তাওহীদের এ অংশেই যত বিভেদ পূর্বকাল থেকে শুরু করে বর্তমানেও চলছে। এই অংশের অর্থ হলো, বান্দার ইবাদত কার্যাদিতে এককভাবে আল্লাহকেই নির্দিষ্ট করা। যেমন: দোয়া মান্নত, পশু জবেহ, আশা, ভরসা, ভীতি, আকাঙ্ক্ষা, প্রত্যাবর্তন ইত্যাদিতে তাঁকেই উদ্দেশ্য করা।
আর এ সবগুলোই যে আল্লাহর ইবাদত তার দলিল পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে।

তিন: তাওহীদুয্‌যাত ওয়াল আসমা ওয়াস সিফাত: “আল্লাহর অস্তিত্বে বিশ্বাস এবং তার নাম ও গুণাবলীসমূহে তাকে একক স্বত্বাধিকারী মনে করা।”
আল্লাহ তা‘আলা বলেন: “বলুন: তিনি আল্লাহ একক স্বত্বা, আল্লাহ অমুখাপেক্ষী, তিনি জন্ম দেন নি, আবার তাঁকেও কেউ জন্ম দেয় নি, আর কেহ তাঁর সমকক্ষ হতে পারে না”। [সূরা আল-ইখলাস]
তিনি আরও বলেন: “আর সুন্দর যাবতীয় নামগুলো আল্লাহরই, সুতরাং তোমরা তাকে সেগুলো দ্বারা আহবান করো, আর যারা তার নামসমূহকে বিকৃত করে তোমরা তাদের ছেড়ে দাও, অচিরেই তাদেরকে তাদের কার্যাদির পরিণাম-ফল দেয়া হবে”। [সূরা আল-আ‘রাফ: ১৮০]
তিনি আরও বলেন: “তাঁর মত কোন কিছু নেই, তিনি সর্ব শ্রোতা দর্শক।” [সূরা আশ-শুরা: ১১]
তাওহীদের বিপরীত হলো শির্ক
(একত্ববাদের বিপরীতে অংশীদারিত্ব)
শির্ক তিন প্রকার : ১। বড় শির্ক, ২। ছোট শির্ক, ৩। গোপন শির্ক।
১। বড় শির্ক :
যা আল্লাহ কক্ষনো ক্ষমা করবেন না। এ শির্ক এর সাথে অনুষ্ঠিত কোন সৎকাজ আল্লাহ তা‘আলা কবুল করেন না।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন: “নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা তাঁর সাথে শির্ক করাকে ক্ষমা করবেন না, তবে শির্ক ব্যতীত (শির্কের চেয়ে নিচু পর্যায়ের) যত গুনাহ আছে তা তিনি যাকে ইচ্ছা করেন ক্ষমা করে দেবেন। আর যে আল্লাহর সাথে শির্ক করলো সে পথভ্রষ্টতায় অনেকদূর এগিয়ে গেল (বেশী বিপথগামী হলো)।” [সূরা আন্‌-নিসা: ১১৬]
তিনি আরও বলেন: “অথচ মসীহ (ঈসা আলাইহিস্‌সালাম) বলেছেন: হে ইস্‌রায়েলের বংশধরগণ! তোমরা আল্লাহর ইবাদত কর, যিনি আমার প্রভু, তোমাদের প্রভু, নিশ্চয়ই যদি কেউ আল্লাহর সাথে শরিক করে পরিণামে আল্লাহ তার উপর জান্নাত হারাম করে দিয়েছেন, তার আস্তানা হবে জাহান্নাম, আর অত্যাচারীদের কোন সাহায্যকারী নেই”। [সূরা আল-মায়েদা: ৭২]
তিনি আরও বলেন: “আর আমি তারা যা আমল করেছে সেগুলোর দিকে ধাবিত হয়ে সেগুলোকে বিক্ষিপ্ত ধূলিকণায় রূপান্তরিত করে দিয়েছি”। [সূরা আল-ফুরকান: ২৩]
আরও বলেন: “আপনি যদি শির্ক করেন তবে অবশ্যই আপনার আমলকে নষ্ট করে দেব এবং নিশ্চয়ই আপনি ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবেন।” [সূরা আয্‌-যুমার: ৬৫]
আরও বলেন: “যদি তারা শির্ক করে তবে অবশ্যই তারা যা আমল করেছে তা নষ্ট হয়ে যাবে।” [সূরা আল-আন‘আম ১৮৮]
বড় শির্ক এর প্রকারাদি
বড় শির্ক চার প্রকার :
এক: দোয়ায় শির্ক করা : এর দলিল আল্লাহর বাণী : “অতঃপর যখন তারা নৌকায় চড়ে তখন দীনকে নিষ্ঠা সহকারে একমাত্র আল্লাহর জন্য নির্দিষ্ট করে তাঁকে ডাকতে থাকে কিন্তু যখন তিনি তাদেরকে ডাঙ্গায় নিয়ে পরিত্রাণ দেন তখনই তারা তার সাথে শির্ক (অংশীদার) করে।” [সূরা আল আনকাবুত: ৬৫]

দুই: নিয়্যাত ও সংকল্পে শির্ক করা : এর প্রমাণ আল্লাহর বাণী : “যারা পার্থিব জীবন ও তার চাকচিক্য পেতে চায় আমি তাদেরকে তাদের কার্যাদির প্রতিফল তাতেই (পার্থিব জীবনেই) পরিপূর্ণভাবে দিয়ে দেব, তাদের এতে কম দেয়া হবেনা, তাদের জন্য পরকালে জাহান্নাম ছাড়া আর কিছুই থাকবে না, তারা দুনিয়ায় যা করেছে তা নষ্ট হয়ে গেছে, আর যে সমস্ত (নেক) কার্যাদি তারা করেছে তা বাতিল হয়ে যাবে।” [সূরা হুদ: ১৫, ১৬]

তিন: আদেশ, নিষেধ প্রতিপালন বা বশ্যতায় শির্ক করা : এর প্রমাণ আল্লাহর বাণী: “তারা আল্লাহ ছাড়া তাদের ‘আরবাব’ তথা আলেম, ‘আহবার’ তথা আবেদদের (পীর-দরবেশদের)-কে তাদের জন্য হালাল হারাম-কারী বানিয়ে নিয়েছে এবং মরিয়ম পুত্র মসিহ্‌-কেও, অথচ তাদেরকে শুধু এক মা’বুদ এর ইবাদত করার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল, তিনি ব্যতীত আর কোন হক মা’বুদ নেই। তার সাথে যাদের শরিক করছে তাদের থেকে তিনি কতইনা পবিত্র!” [সূরা আত্‌তাওবাঃ ৩১]
“আরবাব” শব্দের তাফসীর বা ব্যাখ্যা হলো আলেমদেরকে পাপ কাজে অনুসরণ করা, এর অর্থ তাদেরকে ডাকা নয়; কারণ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রখ্যাত সাহাবী ‘আদি ইব্‌ন হাতিম রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর প্রশ্নের উত্তরে এ প্রকার ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন। কারণ তিনি যখন বললেন : আমরা তাদের ইবাদত (উপাসনা) করি না, উত্তরে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন : “তাদের উপাসনা হলো পাপ কাজে তাদের আদেশ নিষেধ মান্য করা।”

চার: ভালবাসায় শির্ক করা: এর প্রমাণ আল্লাহর বাণী : “আর মানুষের মাঝে এমনও আছে যারা আল্লাহ ছাড়া তার অনেক সমকক্ষ (সমপর্যায়ের ভালবাসা পাওয়ার অধিকারী, ভালবাসার পাত্র) নির্ধারণ করে সেগুলোকে আল্লাহর ন্যায় ভালবাসে, অথচ যারা ইমানদার তারা আল্লাহকে সর্বাধিক ভালবাসে।” [সূরা আল-বাকারাহ: ১৬৫]

২। ছোট শির্ক:
আর তা হলো (সামান্য) লোক দেখানোর নিয়তে নেক কাজ করা।
এর প্রমাণ আল্লাহর বাণী : “সুতরাং যে আল্লাহর সাথে সাক্ষাতের আশা রাখে সে যেন নেক কাজ করে এবং তাঁর প্রভুর ইবাদতের সাথে অন্য কাউকে শরিক না করে।” [সূরা আল-কাহ্‌ফ: ১১০]

৩। গোপন (সূক্ষ্ম) শির্ক:
এর প্রমাণ হলো রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বাণী : “এ [মুসলিম] জাতির মধ্যে শির্ক অন্ধকার রাত্রিতে কালো পাথরের উপর কালো পিপড়ার বেয়ে উঠার মতই সূক্ষ্ম বা গোপন।”

শির্ক থেকে বাঁচার দোয়া:
নিম্নের দোয়া (অর্থ বুঝে বিশ্বাস-সহকারে) পাঠ করলে শির্ক গুনাহের কাফ্‌ফারা হয়ে থাকে।
اللَّهُمَّ إنِّيْ أَعُوْذُ بِكَ أَنْ أُشْرِكَ بِكَ شَيْئاً وَأَنَا أَعْلَمُ، وَأَسْتَغْفِرُكَ مِنَ الذَّنْبِ الَّذِيْ لا أَعْلَمُ.
অর্থাৎ : “হে আল্লাহ আমি জেনে-শুনে তোমার সাথে কোন কিছুকে শরিক করা থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি, আর আমার অজ্ঞাত গুনাহরাজি থেকে আমি ক্ষমা চাচ্ছি।”
কুফরির প্রকারভেদ
কুফরি দু’ প্রকার :
এক:
যা করলে ইসলাম থেকে বের হয়ে যায়।
নিম্নলিখিত পাঁচটি কারণে এ প্রকার কুফরি হয়ে থাকে:

১। মিথ্যা প্রতিপন্ন করার কারণে কুফরি : এর প্রমাণ আল্লাহর বাণী: “আর তার চেয়ে কে বেশি অত্যাচারী যে আল্লাহর উপর মিথ্যার সম্বন্ধ আরোপ করেছে, অথবা তার কাছে হক (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বা আল্লাহ ছাড়া সঠিক কোন উপাস্য নেই এ কালেমা) আসার পর তা মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে, জাহান্নাম কি কাফেরদেরই বাসস্থান নয়?” [সূরা আল আনকাবুত: ৬৮]

২। সত্য জেনেও অহংকার ও অস্বীকার করার কারণে কুফরি : এর প্রমাণ আল্লাহ তা‘আলার বাণী : “আর স্মরণ করুন যখন আপনার প্রভু আদমকে সিজদা করার জন্য ফেরেশ্‌তাদেরকে নির্দেশ দিয়েছিলেন তখন ইবলিস ব্যতীত সবাই সিজদা করেছিল, সে অস্বীকার করেছিল, এবং অহংকার বোধে গর্ব করেছিল আর কাফেরদের অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল।” [সূরা আল বাকারা: ৩৪]

৩। সন্দেহ করার দ্বারা কুফরি করা- আর তা হলো অসার ধারণার বশবর্তী হয়ে কুফরি করা : এর প্রমাণ কোরআনের বাণী : “আর সে তার বাগানে প্রবেশ করল এমতাবস্থায় যে সে তার আত্মার উপর অত্যাচার করছে, এ-কথা বলে যে, আমি মনে করি না যে, এটা (বাগান) কখনো ধ্বংস হয়ে যাবে এবং কোনোদিন কিয়ামত অনুষ্ঠিত হবে বলেও মনে করি না। আর যদি তা হয়েও যায় এবং আমাকে আমার প্রভুর কাছে ফিরে নেয়াও হয় তথাপি আমি তার কাছে ফিরে এর (বাগানের) চেয়ে আরও ভালো (বাগান) পেয়ে যাব। তার সাথী তাকে বলল: তুমি কি সেই স্বত্বার সাথে কুফরি করছ যিনি তোমাকে প্রথমে মাটি ও পরে বীর্য থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং এরপর পূর্ণ মানুষরূপে তোমাকে অবয়ব দান করেছেন? কিন্তু আমি (বলছি) সেই আল্লাহই আমার রব ও পালনকর্তা, তার সাথে কাউকে শরিক করি না।” [সূরা আল-কাহফ: ৩৫-৩৮]

৪। এড়িয়ে যাওয়ার (বিমুখ হওয়ার) কারণে কুফরি : এর প্রমাণ আল্লাহর বাণী : “আর যারা কুফরি করেছে তারা যে সমস্ত বস্তুর ভয় তাদেরকে দেখান হয়েছে সেগুলো থেকে বিমুখ হয়েছে (এড়িয়ে গেছে)।” [সূরা আল-আহকাফ: ৩]

৫। মুনাফেকি করার কারণে কুফরি : এর প্রমাণ আল্লাহর পবিত্র কালামে এসেছে : “এটা এ জন্য যে, তারা ঈমান এনেছে অতঃপর কুফরি করেছে; ফলে তাদের অন্তরের উপর সিল মেরে দেয়া হয়েছে সুতরাং তারা বুঝছে না, বুঝবেনা।” [সূরা আল মুনাফিকুন: ৩]

দুই : দ্বিতীয় প্রকার কুফরি
আর তা হলো ছোট কুফরি, যা করলে গুনাহ হলেও ইসলাম থেকে বের হয়ে যাবেনা, আর তা’ হলো আল্লাহর নেয়ামত এর সাথে কুফরি করা।

এর প্রমাণ : কোরআনের বাণী : “আল্লাহ্ তা‘আলা উদাহরণ দিচ্ছেন কোন নিরাপদ, শান্ত-স্থির জনপদের— যার জীবিকা চতুর্দিক থেকে অনায়াসে আসছিল, তখন তারা আল্লাহর নেয়ামতের সাথে কুফরি করলো, ফলে আল্লাহ তা‘আলা সে জনপদকে তাদের কার্যাদির শাস্তি স্বরূপ ক্ষুধা ও ভয়ে নিপতিত রাখল”। [সূরা আন্-নাহ্‌ল: ১১২]
মুনাফেকির প্রকারভেদ
মুনাফেকি দু প্রকার :
১। বিশ্বাসগত মুনাফেকি।
২। আমলগত (কার্যগত) মুনাফেকি।

এক : বিশ্বাসগত মুনাফেকি
এ-প্রকার মুনাফেকি ছয় প্রকার, এর যে কোন একটা কারো মধ্যে পাওয়া গেলে সে জাহান্নামের সর্বশেষ স্তরে নিক্ষিপ্ত হবে।
১। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে মিথ্যা প্রতিপন্ন করা।
২। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যা নিয়ে এসেছেন তার সামান্যতম অংশকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করা।
৩। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে ঘৃণা বা অপছন্দ করা।
৪। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যা নিয়ে এসেছেন তার সামান্যতম অংশকে ঘৃণা বা অপছন্দ করা।
৫। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর দীনের অবনতিতে খুশী হওয়া।
৬। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর দীনের জয়ে অসন্তুষ্ট হওয়া।

দুই : কার্যগত মুনাফেকি
এ ধরণের মুনাফেকি পাঁচ ভাবে হয়ে থাকে: এর প্রমাণ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বাণী:
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “মুনাফিকের নিদর্শন হলো তিনটি:
১। কথা বললে মিথ্যা বলা।
২। ওয়াদা করলে ভঙ্গ করা।
৩। আমানত রাখলে খিয়ানত করা।
অপর বর্ণনায় এসেছে :
৪। ঝগড়া করলে অকথ্য গালি দেয়া।
৫। চুক্তিতে উপনীত হলে তার বিপরীত কাজ করা।”
তাগুত এর অর্থ এবং এর প্রধান প্রধান অংশ
এ-কথা জানা প্রয়োজন যে, আল্লাহ তা‘আলা মানব জাতির উপর সর্ব প্রথম যা ফরজ করেছেন তা হচ্ছে তাগুতের সাথে কুফরি এবং আল্লাহর উপর ঈমান।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন : “আর নিশ্চয়ই আমি প্রত্যেক জাতির কাছে রাসূল পাঠিয়েছি এ কথা বলে যে, তোমরা শুধু আল্লাহর উপাসনা কর এবং তাগুতকে পরিত্যাগ কর।” [সূরা আন্‌-নাহল: ৩৬]
তাগুতের সাথে কুফরির ধরণ হলো : আল্লাহ ছাড়া অন্য সবকিছুর উপাসনা (ইবাদত) বাতিল বলে বিশ্বাস করা, তা ত্যাগ করা, ঘৃণা ও অপছন্দ করা, এবং যারা তা করবে তাদের অস্বীকার করা, তাদের সাথে শত্রুতা পোষণ করা।
আর আল্লাহর উপর ঈমানের অর্থ হলো : আল্লাহ তা‘আলাই কেবলমাত্র হক উপাস্য ইলাহ, অন্য কেউ নয়— এ-কথা বিশ্বাস করা, আর সবরকম ইবাদতকে নিষ্ঠার
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে এপ্রিল, ২০১১ সকাল ১০:৫৮
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইসলামে পর্দা মানে মার্জিত ও নম্রতা: ভুল বোঝাবুঝি ও বিতর্ক

লিখেছেন মি. বিকেল, ১৯ শে মে, ২০২৪ রাত ১:১৩



বোরকা পরা বা পর্দা প্রথা শুধুমাত্র ইসলামে আছে এবং এদেরকে একঘরে করে দেওয়া উচিত বিবেচনা করা যাবে না। কারণ পর্দা বা হিজাব, নেকাব ও বোরকা পরার প্রথা শুধুমাত্র ইসলাম ধর্মে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×