somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জামাতের নির্বাচন কৌশল ও তাদের এমপিদের দুর্নীতি - ০৪

৩০ শে নভেম্বর, ২০০৭ সকাল ৭:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজকের পর্ব জামাতে ইসলামি দলের সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক সমাজ কল্যান মন্ত্রী আলি আহসান মুজাহিদকে নিয়ে। সে জোট সরকারের আমলে টেকনোক্রেট মন্ত্রীত্ব বাগিয়ে নেয়। ১৯৯৬ এ জামানত বাজেয়াপ্ত হওয়ায় সে ২০০১ এ নির্বাচনে দাড়াতে সাহস পায় নাই।

ক. একাত্তরের কীর্তি

একাত্তরে মুজাহিদ কুখ্যাত আল বদর বাহিনীর প্রাদেশিক প্রধান (তৎকালীন পুর্ব পাকিস্তান) থাকে। সে ওই সময়ে ইসলামি ছাত্র সংঘের প্রাদেশিক প্রধানও ছিল। ৭ নভেম্বরে তাদের এক সমাবেশে মুজাহিদ চার দফা দাবি প্রকাশ করে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলোঃ হিন্দু লেখকদের বই বা তাদের ‘দালালি’ করে লেখা কোন বই কেউ রাখতে বা বিক্রি করতে পারবে না; করলে স্বেচ্ছাসেবকরা জ্বালিয়ে দেবে। ২৩ নভেম্বরে আবার জানায় যে আশেপাশেই শত্রু আছে, তাই হুশিয়ার হয়ে কাজ চালাতে হবে; তাদের মনে রাখতে হবে যে শুধু পাকিস্তানকে বাঁচাবার জন্যই এই যুদ্ধ না, ইসলামের খাতিরেই যুদ্ধ করছে তারা।


খ. ইসলামের অপব্যবহার

এইভাবেই জামাতিগুলো ইসলামের কথা বলে সাধারন মানুষকে সেই সময় থেকেই বিভ্রান্ত করছে, যা এখনো চলছে। অথচ ব্যক্তিগত জীবনে তারা নিজেরাই সৎ না। আমাদের নবী (সা.) নিজে চিনি খাওয়া ছেড়ে তারপর তা ছাড়ার উপদেশ দিয়েছিলেন আরেকজনকে। অথচ এই জামাতিগুলো মুখে ইসলাম ইসলাম বলে ফাটিয়ে দিচ্ছে, কিন্তু তাদের ব্যক্তিগত জীবনে তার লেশমাত্র পর্যন্ত দেখা যায় না, যার কিছু প্রমান আগের পোস্টে আছে, সামনে আরো দেবো।


গ. কিছু মামলা

মুজাহিদের বিরুদ্ধে ২১ আগস্ট ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার মামলা করা হয়েছে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির জন্য মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই বছরের ৩রা মে তে ২৫ লাখ টাকার চাঁদাবাজির জন্য মামলা দায়ের করেছে সিলেটের এক ব্যবসায়ী।


ঘ. চাপাবাজি

এই বছরের ৩০ জুলাইয়ে সে এনটিভিতে এক সাক্ষাতকারে বলে যে আল বদর বাহিনীর সঙ্গে তার বা জামাতের কোনো সম্পর্ক নাই এবং ৭১ সালে সে ছিল ছাত্রনেতা ফলে তেমন কোন ভূমিকা রাখার সুযোগ তার ছিল না। অথচ দৈনিক সংগ্রামের ৮ নভেম্বর ১৯৭১ এর সংস্করণে মুজাহিদের বিবৃতি আছে আল বদরের নেতা হিসেবে। ইসলামের ঝান্ডা তুলে মিথ্যা বলার আপ্রাণ চেষ্টা!


ঙ. সাবেক শিবির নেতার বয়ান

বিডি নিউজের "নিজামী, মুজাহিদের যুদ্ধাপরাধের সাক্ষ্য দিতে প্রস্তুত মিছবাহুর" শিরোনামের খবরে সাবেক ইসলামী ছাত্র সংঘ (অধুনা ইসলামী ছাত্র শিবির) নেতা মিছবাহুর রহমান বলছেন - " জামায়াত ইসলামীতে মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ও কাদের মোল্লাসহ ৪০ থেকে ৫০ জন যুদ্ধাপরাধী রয়েছেন।" এইভাবেই সত্য বেড়িয়ে আসতেছে আস্তে আস্তে।


চ. জনপ্রিয়তার নমুনা

২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপির সাথে সমঝোতার ভিত্তিতে নির্বাচন করেনি মুজাহিদ (অবশ্য ভয়ও ছিলো ১৯৯৬ তে জামানত বাজেয়াপ্ত হওয়ায়)। ফলশ্রুতিতে মন্ত্রীত্ব বাগিয়ে মুক্তিযুদ্ধকে অপমান করেছে।

নির্বাচন করলে কি হতো?

এর উত্তর পাওয়া যাবে ১৯৯৬ এর নির্বাচনের ফলাফলের দিকে তাকালে। ১৯৯৬ নির্বাচনে জামাত বিএনপির সাথে সাময়িক বিচ্ছেদ বরন করে। সেটা ছিল তাদের রাজনৈতিক খেলার অংশ। কারন বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে আওয়ামীলিগের সাথে থেকে ওরা ধারনা করেছিলো ওদের সার্বিক গ্রহনযোগ্যতা হয়তো বেড়েছে। সেই বিবেচনায় ওরা একক ভাবে নির্বাচন করে শক্তি যাচাইয়ের চেষ্টা করে। সেই নির্বাচনে জামাতের ৩ জন প্রার্থী নির্বাচিত হয়। ৩০০ আসনে প্রার্থী দিয়ে ২২৫ জন জামানত হারায়।

মুজাহিদও সেই নির্বাচনে ফরিদপুর ৩ আসন থেকে নির্বাচন করে এবং সর্বোমোট গৃহিত ভোট ১৫৪৩৩৫ ভোটের মধ্যে তার ঝুলিতে জমা পড়ে ১২৩৩৪। ফলাফল - জামানত বায়েজাপ্ত।

জনগন কর্তৃক পরাজিত এই চতুর রাজনীতিক টেবিল রাজনীতির কলাকৌশলে বাংলাদেশের মন্ত্রীত্ব করেছে ৫ বছর।


এই হলো সৎ (!) লোকের কিছু নমুনা।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে নভেম্বর, ২০০৮ সকাল ৭:৪৯
৮৭টি মন্তব্য ১টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি আর এমন কে

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

২০২৪ সালের জুলাই মাস থেকে যেই হত্যাকান্ড শুরু হয়েছে, ইহা কয়েক বছর চলবে।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪৭



সামুর সামনের পাতায় এখন মহামতি ব্লগার শ্রাবনধারার ১ খানা পোষ্ট ঝুলছে; উহাতে তিনি "জুলাই বেপ্লবের" ১ জল্লাদ বেপ্লবীকে কে বা কাহারা গুলি করতে পারে, সেটার উপর উনার অনুসন্ধানী... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৮


একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭


ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে চাঁদগাজীর নাম দেখাচ্ছে। মুহূর্তেই আপনার দাঁত-মুখ শক্ত হয়ে গেল। তার মন্তব্য পড়ার আগেই আপনার মস্তিষ্ক সংকেত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×