১
সৃষ্টি নাই, ধ্বংস নাই
সময় অবিনশ্বর, অমর।
আমি থাকি অসময়ে
সময়ের অবচেতনে
যার ঘর সংসার।
আমার সাথে থাকে
জন্ম, মৃত্যু এবং বোধ!
অমার ভেতর বাস করে
আমি, তুমি এবং তোমরা
এবং আমি সেই নশ্বর ইশ্বর
যে এক মুহূর্তে সময় নিয়ে
বিলীন হতে পারি শূণ্যে।
ইচ্ছা কিংবা অনিচ্ছায়!
কিংবা নশ্বর আমার ভেতর
অবিনশ্বর সময় বিদ্রোহ করে অ্যান্টিক্লকওয়াইজ!
২
তোমার মনের ভেতর
একটা কুকুর ডেকে উঠে অবিরাম
সে তোমার কাছ থেকে
তোমাকে পাহাড়া দেয়।
তোমার মনের ভেতর
ঢুকতে গেলেই কুকুরটা
আমাকে ক্ষত বিক্ষত করে
রক্তাক্ত করে বারবার।
তুমি জিদে কুকুর পিটাও
তারপর একবার কুকুরের
জন্য কাঁদ একবার আমার জন্য।
তোমার রূহের ভেতর তখন সূর্য ডুবে যায়
আমি গাঢ় অন্ধকারে পথ হারিয়ে কোথাও যাইনা।
৩
জোৎস্না মাখানো দুপুরে
চাঁদের কাছে সব আলো দিয়ে
নির্বাসনে চলে গেছে সূর্য।
একটি চাতক তখন পুরো সমুদ্র
পান করে অমবশ্যার চাঁদ দেখবে বলে
প্রবল তৃষ্ণায় অঘোরে ঘুমাচ্ছে!
এমন দুপুরে আমি কারো ডাক শুনিনা
না কাকের, না মানুষের, না যন্ত্রের, না মন্ত্রের
এমন দুপুরে আমার কোন দিক থাকেনা
অথচ আমি চলে যাই সব দিকে!
এমন দুপুরে আমি কোথাও থাকিনা।
৪
প্লেট ভর্তি
তৈলাক্ত, পঁচা,বাসি উন্নয়ন
চেটেপুটে খেয়ে তৃপ্তির
ঢেঁকুর তোলে বোধহীন রাষ্ট্র!
আর তার জঠর থেকে
উঠে আসা মানুষগুলো
চন্দ্রধাক্কা খেয়ে চন্দ্রাহত
হতে হতে বাজার অর্থনীতির
নামতা কষতে কষতে
ব্যাগভর্তি করে নিয়ে আসে
চেতনা, ধর্ম, পলিটিক্স, যৌনতা
ব্লা ব্লা ব্লা ব্লা ব্লা
তারপর অতৃপ্তির ঢেঁকুর তুলে
নিভে যায়! নিভে যায়!
কখনো কোথাও
কেউ কেউ জ্বলে উঠে।
৫
পৃথিবীতে মাথা রেখে ঘুমাতে যাই
আর জেগে উঠে দেখি এক আদিম গুহায়
পৃথিবী তার সব ইতিহাস আমার মগজে
লিখে রেখে নিজের সাথে দাবা খেলছে।
অথচ চাল দিচ্ছি আমি।
পৃথিবী সংকুচিত হতে হতে যখন
তোমার অবয়ব নেয় তখন
আমি বলে উঠি চেক। অথচ দাবার
বোর্ড থেকে আমার গুটিগুলো উঠে গুহা
ছেড়ে চলে যায়।
কোথায়? কার কাছে যায় তারা?
তা জানার আগেই পৃথিবীতে মাথা
রেখে আমি ঘুমাতে যাই।
জেগে উঠে দেখব? তোমাকে
৬
করোটির ভেতর পৌরাণিক অভিশাপ!ঘোর উল্টা পথে হেঁটে আবার যেখানে ফিরে আসে সেখানে এক জন্মান্ধ বৃক্ষ দাঁড়িয়ে থাকে। ছায়াহীন। তার ডালে বসে রোদ পোহায় এমন সব পাখি যাদের কোন বৈজ্ঞানিক নাম নেই। ঘোর ফিরে আসলে আমিও মাঝেমাঝে ফিরে আসি। পাখির ডানায় চড়ে কিছুটা উড়ি এদিক ওদিক। পাখিগুলো ডালে গিয়ে বসলে জন্মান্ধ বৃক্ষ তার চোখগুলো আমাকে দিয়ে দেয়। চোখগুলো পকেটে রেখে উল্টা পথে যেখানে যাই সেখানে সাপের ঠোঁটে চুমু খাওয়া যায়!