কুদ্দুছ একজন কবি। মূলত অনলাইন কবি। কোথাও তার কবিতা ছাপা হয়না। তাই সে অনলাইনেই কবিতা লিখে। কবিতা যদি ফসল হয় তবে কুদ্দুছ হচ্ছে উর্বর জমি। এবং কবি হিসাবে তার প্রসব ক্ষমতা খরগোশের চাইতেও বেশী। ইচ্ছা ঘুম বলে একটা ব্যাপার আছে। অর্থাৎ যখন ইচ্ছা তখন ঘুমিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা। কুদ্দুছের আছে যখন ইচ্ছা তখন কবিতা লিখে ফেলার ক্ষমতা। কুদ্দুছ হচ্ছে ইচ্ছে কবি। তা একদিন কুদ্দুছ সামু ব্লগে একটা নিক খুলে। নিকের নাম দ্দুছ। কু বাদ। দ্দুছ নামটার ভেতর বেশ একটা ভাব আছে। ব্লগে নিক খুলেই কয়েক সেকন্ডের মধ্যে দ্দুছ একটা কবিতা লিখে ফেলে।
“ওগো সামু
ইতি, তোমার মামু।
ঘণ্টা খানিক পর তার কবিতা পোস্টে একটা কমেন্ট আসে।
"অনবদ্য। গভীর জলের মাছ যেমন সহজে ধরা যায়না তেমনি আপনার কবিতাও ধরব ধরব করেও ধরতে পারিনি। এখানেই আপনি ইউনিক। নিঃসন্দেহে আপনার কবিতা উত্তরাধুনিক। প্রিয় কবি ব্লগে আপনাকে স্বাগতম।"
পরের তিনদিনের মধ্যেই দ্দুছ ত্রিশটা কবিতা পোস্ট করে ফেলে। তার মধ্যে কিছু কবিতা বেশ পাঠক প্রিয়তা পায়। যেমন,
সুন্দরী সামু,
সব খবর ভালা?
নিজ হাতে আমার গলায়
পড়িয়ে দাওনা মালা।
দাওনা, দাওনা, দাওনা
এ কবিতায় এক বিদগ্ধ ব্লগার মন্তব্য করেন, যে ভালোবাসা হৃদয়ে পোষণ করে আপনি সামুকে মালা পড়াতে বললেন, চোখের পানি ধরে রাখতে পারিনি ভাই। এখনো দুএক ফোঁটা ঝরছে। তবে কসম দ্দুছ ভাই, সামু আপনার গলায় মালা না পড়ালে এ ব্লগে আমি থাকবনা থাকবনা থাকবনা......
মন্তব্য পড়ে দ্দুছ খুব উত্তেজিত হয়ে পড়ে। সাথে সাথে সে লিখে ফেলে,
সামু,
তুমিই কৃষ্ণ
আমি রাঁধা না চৈতন্য
ঠিক বুঝতে পারতেছি না।
একটু বুঝিয়ে দাওনা।
এমন কেন কর!
এ কবিতায় ব্লগ কাঁপানো একজন ব্লগার মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, মানুষকে ফানা বিল্লাহ স্টেজে নিয়ে যাওয়ার এক অলৌকিক ক্ষমতা আপনার আছে। আপনার কবিতা পড়ে কিছুক্ষনের জন্য মনে হচ্ছিল সামু পরমাত্মা। আমি আত্মা।পরমাত্মা আমার কাঁধে হাত রেখে বলল, ভয় কি বেটা। চালিয়ে যা। আমিত আছি।
অল্প কিছুদিনের মধ্যেই দ্দুছ বেশ জনপ্রিয়তা পেয়ে যায়। তবে হঠাৎ করেই এক নারী ব্লগারের প্রেমে পড়ে যায় দ্দুছ। তারপর থেকে সামুতে তার আর মন নাই। দেহও নাই।
সে নারীকে উদ্দেশ্য করে একদিন সে কবিতা লিখে,
তুমি ফুল
তবে ফুটোনা
আমি এসে ফুটাবো
তার আগে ফুটোনা কিন্তু।
দ্দুছের কবিতায় সামু বন্দনার বদলে দেখা যায় নারী বন্দনা। তারপর থেকে তার পোস্ট আর প্রথম পাতায় আসেনা। দ্দুছ রাগে ক্ষোভে এবার বিদ্রোহী কবিতা লিখে ফেলে,
প্রেমিকাকে নিয়ে যাব বাড়ি
সামু তোমার সাথে আড়ি
তুমি একটা লম্পট, লুইচ্ছা
আমার সব পোস্ট দিব মুইচ্ছা!
কিন্তু সামু আর দ্দুছকে মুক্তি দেয়না। তার কিছু কিছু পোস্ট এবার ব্লগ থেকেই সরিয়ে ফেলা হয়। জমে উঠে ত্রিভুজ প্রেমের কাহিনী। সামু আর দ্দুছের কাছে পরমাত্মা না। সামু শয়তান। সামু প্রেম বুঝেনা। কবির মন বুঝেনা। সামু বলে, দ্দুছ, হয় তুমি আমার নাহয় তুমি দূরে গিয়া মর। এদিকে ব্লগ ছেঁড়ে চলে গেলে প্রেমিকার নিকের সাথে দ্দুছের আর ভাব বিনিময় হবেনা। লেখা হবেনা তাকে উদ্দেশ্য করে প্রেমের অমর কাব্য। তবে আর বেঁচে থেকে লাভ কি তার? ক্ষতি! শুধুই ক্ষতি আর ক্ষতি!
দ্দুছের মনে হয় সে শয়তানের হাতে বন্দি হওয়া বাংলা সিনেমার নায়িকা। এদিকে তার নায়িকাও সামুর কাছে অভিযোগ করেছে এই পাঁঠা কবিকে ব্যান না করলে সে আর কখনো পাঁঠার মাংস খাবেনা। আর তার জন্য দায়ী থাকবে সামু।
এমন এক সংকটময় অবস্থায় দ্দুছ আবার পোস্ট দেয়,
ছেঁড়ে দে সামু
নিক পাবি কিন্তু মন পাবিনা।
সামু কি দ্দুছকে ছেঁড়ে দেবে? কেউ কি আসবে দ্দুছকে সামুর হাত থেকে বাঁচাতে ? জানতে হলে নিয়মিত চোখ রাখুন সামুর চোখে।
বিঃদ্রঃ ইহা হয় একটি নুইসেন্স রম্য।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জুলাই, ২০২০ বিকাল ৫:৫৮