সূর্যিমামা তখন পশ্চিমাকাশে হেলে পড়েছে।
আমরা তিন বন্ধু দাঁড়িয়ে ছিলাম হাতিরঝিল ব্রিজের উপরে। ছবি তুলছিলাম। হঠাৎ কারো ডাকে পিছনে ফিরে তাকালাম।
"ভাই আমড়া খাইবেন আমড়া?"
বাচ্চা একটা ছেলে দাঁড়িয়ে আছে। বয়স আর কত হবে, ৯-১০ বছর।এমন একটা ছেলেকে আমড়া বিক্রি করতে দেখে মনের ভেতর কেমন মোচড় দিয়ে উঠলো।
যে বয়সে আমি খেলাধুলা করে বেড়িয়েছি, সেই বয়সে এই ছেলেটা জীবনযুদ্ধে নেমে পড়েছে!
আহ!কি নিষ্ঠুর বাস্তব!
মাহবুব বললো,দুইটা আমড়া বানাও।
ছেলেটা ঝটপট দুইটা আমড়া বানিয়ে দুজনের হাতে দিলো।
সেই অবস্থায় ওরসাথে একটা সেলফি নিলাম।
মাহবুব পকেট থেকে বের করে কচকচে দু'টা দশটাকার
নোট ছেলেটার হাতে গুজে দিলো।
ছেলেটা দু'টা নোট হাতে নিয়ে হতভম্ব হয়ে বলল,
"বিশ টেকা দিলেন ক্যান,দুইটা আমড়ার দামতো দশ টেকা?!"
মাহবুব হাসি দিয়ে বলল,
রেখে দাও,দশ টাকা তোমাকে আমি বখশিশ দিলাম।
ছেলেটা দাঁত বের করে একটা হাসি দিলো।
এমন হাসি কোটি টাকা দিয়েও কেনা যায় না।
আমি জিজ্ঞেস করলাম,নাম কী তোমার?
"রাসেল।"
বাসা কোথায়?
"মধুবাগ"( মগবাজার)
আর কি করো?
"ইশকুলে পড়ি"
কোন ক্লাসে?
"ফোরে"
ছেলেটার মধ্যে কেমন তাড়াহুড়া দেখতে পেলাম,তাই আর কিছু জিজ্ঞেস না করে বললাম,
আমাদের জন্য দোয়া করো।
"আইচ্ছা ভাই,ঠিক আছে" বলে একটা হাসি দিয়ে ছেলেটা চলে গেল।
আমারা ওর চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকলাম।
তখন আমার কানে বাজছে,
"ভাই আমড়া খাইবেন আমড়া?"
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৮:৫৫