somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পিএইচডি : টার্গেট যখন অস্ট্রেলিয়া

২৩ শে মে, ২০১৩ দুপুর ১:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বায়োমেডিসিন, এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স, ন্যানোটেকনলজি সহ অনেক শাখায় অস্ট্রেলিয়ার গবেষণা আন্তর্জাতিক ভাবে স্বীকৃত। অস্ট্রেলিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিভিন্ন দেশ থেকে প্রতিবছর প্রচুর পরিমানে স্টুডেন্ট নেয় আর বাংলাদেশি স্টুডেন্ট আনুপাতিক হারে অনেক বেশি। এখানকার মোটামুটি সব বিশ্ববিদ্যালয় সরকারী আর আবেদন করার নিয়ম কানুন প্রায় এক। আমি নিজে যেহেতু পিএইচডি করছি অস্ট্রেলিয়াতে, কিছু দরকারি তথ্য উপস্থাপন করছি -আশা করি কাজে লাগবে।

কেন অস্ট্রেলিয়া ?
প্রথমত, কোন কোর্স ওয়ার্ক নাই। এটা একটা বড় সুবিধা যে কোন পরীক্ষা দিতে হবেনা। আমেরিকা কানাডা তে ল্যাব এর পাশাপাশি প্রচুর ক্লাস করতে হয়, এই ঝামেলা এখানে নাই। তিন বছর পুরো গবেষণার কাজে লাগবে যে কারনে আমেরিকা কানাডার মতো ৫-৭ বছর সময় লাগেনা, তিন বছরেই ডিগ্রী !
দ্বিতীয়ত, ওয়েদার ভালো। সামার এ গরম থাকে কিন্তু বাতাসে আদ্রতা কম থাকে বলে গরমটা অত অস্বস্তিকর নয়। আর উইন্টার বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গের মতই, খুব বেশি ঠান্ডা এখানে পড়েনা। শীতকালে বৃষ্টি হয়।
তৃতীয়ত, স্কলারশিপ এর পরিমান ভালো, পার্ট টাইম জব এর দরকার পড়েনা। বছরে লিভিং এক্সপেন্স হিসেবে মোটামুটি ২৪৫০০ থেকে ২৫০০০ ডলার দিবে, খেয়ে পরে জমানো ও সম্ভব !

যেভাবে শুরু করতে হবে
প্রথম কাজ হচ্ছে সুপারভাইজর খুজে বের করা। ইউনিভার্সিটির ওয়েব সাইটে গিয়ে প্রফেসরদের প্রোফাইল দেখে সম্ভাব্য সুপারভাইজর ঠিক করতে হবে। সুপারভাইজর কে ইম্প্রেস করার জন্য দারুন একটা কভার লেটার আর একটা সিভি রেডি করতে হবে। নিজের ইংলিশ অতো ভালো না হলে অভিজ্ঞ কারো কাছে দেখিয়ে নেওয়া ভালো। মনে রাখতে হবে প্রফেসর শুধু মাত্র ইমেইল আর সিভি দেখেই কারো ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিবে। কভার লেটার এ অপ্রয়োজনীয় কথা না লিখাই ভালো। শিক্ষাগত যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা আর গবেষণার প্রতি প্যাশন- এই দিক গুলোতে গুরুত্ব দিয়ে কভার লেটার তৈরি করা উচিত। এমন সুপারভাইজর সিলেক্ট করবেন যার কাজের সাথে আপনার পূর্ব-অভিজ্ঞতার সমন্বয় আছে। ভাষা হবে বিনয়ী কিন্তু খুব কাব্যিক যেন না হয়। সুপারভাইজর কাউকে পছন্দ করলে প্রথম যে কাজ টা করে সেটা হচ্ছে একটা প্রপোসাল লিখতে বলে। এটা ও গুরুত্বপূর্ণ। প্রফেসর এর কাজের ফিল্ড আর আপনার আগ্রহের উপর ভিত্তি করে একটা প্রপোসাল লিখবেন। খুব ডিটেইল না, সংক্ষিপ্ত কিন্তু আকর্ষণীয়। প্রপোসাল পছন্দ হলে এরপর সুপারভাইজর আপনাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করতে বলবে। অস্ট্রেলিয়ার সব বিশ্ববিদ্যালয়ে অন লাইনে আবেদন করতে হয়। আর আইএলটিএস পরীক্ষা দিয়ে রাখা ও ভালো, স্কোর ৬।৫ থেকে ৭ হলেই হবে (ইউনিভার্সিটি অনুযায়ী কম বেশি হতে পারে)।

আবেদন করার পর
আবেদন করার পর আপনার আবেদন পত্রটি একটা ১০০ নম্বরের স্কোরিং সিস্টেম এর ভেতর দিয়ে যাবে। যে বিষয় গুলোর উপর ভিত্তি করে স্কোরিং হয় - আন্ডারগ্র্যাজুয়েট রেজাল্টঃ ৫০ (সরবোচ্চ), রেফরি রিপোর্ট ঃ ১০, অস্ট্রেলিয়ান সুপারভাইজরঃ ১০; মোট ৭০। বাকি ৩০ নাম্বার দুই ভাবে বিবেচনা করা হয় ঃ ১) মাস্টার্স ডিগ্রি ঃ ২৫, পাবলিকেশন ঃ৫; অথবা ২) পাবলিকেশন ঃ২০, গবেষনার অভিজ্ঞতা ঃ১০। আন্ডারগ্র্যাজুয়েট এ ৮৫% মার্কস থাকলে ৫০ এ ৫০ পাওয়া যাবে। ৭৫-৮৪% এ ৪০, ৬৫-৭৪% এ ৩০, আর এর নীচে হলে ২০। ৫০% এর নিচে গেলে কোন মার্কস নাই ! আবেদন করার সময় দেশে আপনার দুইজন সুপারভাইজর এর রেফারেন্স দিতে হয়, ঐ দুই জনের হাতে ৫ করে ১০ নাম্বার থাকে। উনারা আপনাকে কিভাবে রেটিং করবে তার উপর নির্ভর করবে ঐ ১০ নাম্বার। আর আপনার অস্ট্রেলিয়ান সুপারভাইজর ১০ এ কতো দিবে সেটা একান্তই উনার ব্যাপার ! আপনার মাস্টার্স যদি শুধু গবেষণা ভিত্তিক হয় তাহলে ২৫ এ ২৫ পাবেন, আর যদি কোর্স এবং থেসিস এর সমন্বয়ে হয় তাহলে ২০ আর শুধুমাত্র কোর্স হলে ১৫ পাবেন। পাবলিকেশন এর প্রত্যেকটির জন্য ৫ নাম্বার, তবে সেটা কোন স্বীকৃত জার্নালে হতে হবে। অভিজ্ঞতা পাঁচ বছরের বেশি হলে ১০ এ ১০, চার থেকে পাঁচ বছরের জন্য ৯, তিন থেকে চার বছরের জন্য ৮, দুই থেকে তিন বছরের জন্য ৬, এক থেকে দুই বছরের জন্য ৪ আর এক বছরের কম হলে ২ নাম্বার। এভাবে স্কোরিং করার পর প্রতিযোগিতায় যারা টিকে থাকবে তাদের কে স্কলারশিপ দেওয়া হয়।
স্কলারশিপ সমুহঃ
১।IPRS
Click This Link
২। Australia Awards Endeavour Scholarships and Fellowships
Click This Link
৩। Aus-Aid scholarship
Click This Link
এগুলো ছাড়া ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব অনেক বৃত্তি থাকে, টাকা যা দিবে মোটামুটি এগুলোর সমান।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে মে, ২০১৩ দুপুর ১:৫৮
২৫টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×