somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমরা ব্লগার...আমরা সচেতন নাগরিক

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১২ সকাল ৯:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

স্টাডি ১-

রফিক ফরিদপুরের আইনুদ্দিন শেখের ছেলে। সংসারে সে মেজো ছেলে। আরও চার ভাই এবং তিন বোন রয়েছে। জমিজমা মোটামুটি কিছুটা রয়েছে তাদের। তবে পর্যাপ্ত নয়। ভাগ্য গড়ার জন্যে ঢাকায় ইসলামপুরে একটি কাপড়ের দোকানে কাজ শুরু করে সে, এখনো করছে, মাসিক স্যালারি খুব বেশী নয়। বৃদ্ধ বাবা এখন আর উপার্জন করতে পারে না, বড় ভাই আগেই ঢাকায় এসে আলাদা হয়েছে পরিবার থেকে। ছোট তিন ভাই বেকার ঘুরাঘুরি করে। এক বছর হয়েছে বিয়ে করেছে। গত দুই মাস যাবত ঢাকায় স্ত্রীকে এনে একটি ছোট বাসা ভাড়া করে থাকছে সে। এতদিন পরিবার চলেছে তার সামান্য উপার্জনে। ঢাকায় স্ত্রীকে নিয়ে আসার পরে মাস শেষে দেশের বাড়িতে বাবা মায়ের কাছে পাঠানোর জন্যে উপার্জিত অর্থের কিছুই থাকছে না। এদিকে তার স্ত্রী সন্তানসম্ভবা। স্বল্প আয় থেকে স্ত্রীর সন্তান প্রসবকালীন সময়ের জন্যেও কোন সঞ্চয় থাকছে না। দিন শেষে মেজাজ খিটখিটে হয়ে থাকে রফিকের। কখনো দুর্ব্যাবহার করে স্ত্রীর সাথে। বাবা মায়ের জন্যে চিন্তা হয়। শুধু অসহায়ের মত সকাল থেকে রাত পর্যন্ত শত চিন্তা মাথায় নিয়ে কাজ করে সে।


স্টাডি ২-

রাসেল গত দুই বছর যাবত সিঙ্গাপুরে একটা শিপ ইয়ার্ডে কাজ করছে। গ্রামের জমিজমা বিক্রি করে প্রবাসে পাড়ি দিয়েছে সে। দেশে থাকে ইন্টারমিডিয়েট পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে, তারপরে নিজ ইচ্ছাতেই ছেড়ে দিয়েছে। বন্ধুরা সবাই যখন একে একে বিদেশে পাড়ি জমানো শুরু করে তখন তার মাথায় ভূত চাপে বিদেশ যাওয়ার। পড়ালেখা শিকেয় উঠে। অবশেষে দালালের মাধ্যমে সাড়ে চারলাখ টাকা কন্ট্যাক্টে পড়ি জমায় সিঙ্গাপুরে। শিপিয়ার্ডের কাজটা সে যতটা কঠিন ভেবেছিল, তার থেকেও কঠিন। ভারী লোহার পাত কিংবা মেশিনারি নিয়ে আটতলা দশতলা শিপের উপরে উঠানামা করতে হয়। দিন শেষে মেসে ফিরে হাত পা ছেরে দেয়। একই রুমে আরও চারজন কলিগের সাথে থাকতে হয় তাকে। ইদানিং খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের ফলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হচ্ছে, মাঝে মাঝে ভীষণ ব্যাথা উঠে। খুব সকালে ঘুম থেকে উঠে কাজে যেতে হয় তাকে, সপ্তাহে দুইদিন কার্ড কিনে দেশে ফোন করে। ছোট বোনের বিয়ে ঠিক হয়েছে। বইয়ের খরচ এবং বর পক্ষের যৌতুকের জন্যে তাকে টাকা পাঠাতে বলেছে। গত চার মাস থেকে বেতন আটকে আছে। তার কাজের পারমিট আর মাত্র আট মাস বাকি আছে। পারমিট বাড়ানোর সম্ভাবনাও তেমন নেই, শিপিয়ার্ডের অবস্থা ভালো নয়, কানাঘুষা চলছে মালিক শিপ ইয়ার্ড বিক্রি করে দিবে। এক একটি দিন ভীষণ টেনশনে কাটছে রাসেলের।


স্টাডি ৩-

হাবিব ভুঁইয়া গত সাড়ে বছর যাবত কুয়েতে চাকরি করছেন। সাড়ে নয় বছর যাবত একই মালিকের কাজ করে যাচ্ছেন একটা ফলের দোকানে। তার বয়স হয়েছে বাহান্ন। তার স্ত্রী, তিন সন্তান এবং বিধবা মা ঢাকায় একটি দুই রুমের বাসা ভাড়া করে থাকছেন। গত সাড়ে নয় বছরে হাবিব সাহেব মাত্র তিনবার দেশে আসার সুযোগ পেয়েছেন। সংসার খরচ দিয়ে তার সঞ্চয়ে এখন তেমন কিছুই নেই। বড় মেয়ে এবার এইচ এইচ সি পরীক্ষা দিবে। মেয়েকে বলেছেন পরীক্ষার পরে মেয়ের জন্যে একটি ল্যাপটপ পাঠাবেন। তার মালিক মারা যাওয়ার পরে এখন সেই মালিকের ছেলে ব্যাবসার দেখাশোনা করছে। বয়স হয়ে যাওয়ার কারনে হাবিব সাহেবের প্রতি মালিকের ছেলের সুনজর নেই। কিছুদিন পরেই তার দশ বছরের পারমিট শেষ হয়ে যাবে। হাবিব সাহেব মোটামুটি নিশ্চিত তার পারমিট আর রিনিউ করা হবে না। একেবারে দেশে ফিরে যেতে হবে তাকে। দেশে যেয়ে কোন ব্যাবসা করার মত পুঁজি তার নেই। আত্মিয় স্বজনের কাছ থেকে ধার এনে কিছু একটা দাঁড় করানোর চিন্তা করছেন তিনি। জীবনে পাওয়া নাপাওয়ার হিসেব মিলাতে যেয়ে উচ্চরক্তচাপের সৃষ্টি হয় তার। ইদানিং প্রেসারের সমস্যাটা খুব বেড়েছে।


স্টাডি ৪-

চার বছরের ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে দেড় বছর আগে দক্ষিণ কোরিয়ায় পাড়ি জমায় নজরুল। সরকারী চাকরিজীবী বাবার সঞ্চয়ের আর কিছু ধারের টাকায় তাকে পাঠানো হয় ভাগ্য পরিবর্তনের লক্ষ্যে। গত দেড় বছরে ধারের টাকা শোধ করতে আর সংসারের খরচের পরে কিছুই অবশিষ্ট নেই। রাতে কাজ থেকে ফিরে দেখা যায় দড়জার আটকে গেছে তুষারপাতের ফলে, প্রতিদিন হাতুরি দিয়ে বরফ ভেঙ্গে ঘরে ঢুকতে হয়। মাঝে মাঝে যখন ডেলিভারির কাজ করা হয়, হারের জোড়ায় জোড়ায় ব্যাথা শুরু হয়। আজকাল খুব ঘন ঘন জ্বর করে তার। কাজের জন্যে সময় করে ডক্টর দেখাতে পারছে না। প্রতিদিন আট ঘন্টা কাজের কথা থাকলেও দুর্বল শরীর নিয়ে তাকে টানা পনের ঘন্টা কাজ করতে হয়। অনেকদিন থেকে কাপড় ধোঁয়া হয় না। খাদ্য খাওয়ার কোন ঠিক ঠিকানা নেই। অতিরিক্ত শীতের কারনে বাধ্য হয়ে তার এলকোহল খেতে হয়। বর্তমানে এটা অভ্যেসে পরিনত হয়েছে। মাঝেমাঝে গভীর রাতে পরিবার পরিজনের কথা মনে করে জানালায় চেয়ে কাঁদতে থাকে নজরুল।


স্টাডি ৫-

ইকবাল বিগত সাড়ে চার বছর যাবত ইতালিতে আছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে এখনো সে থাকার লিগ্যাল পারমিট পায়নি। ২০১০ সালে ইতালি সরকারের অবৈধ প্রবাসী বৈধকরনের জন্যে শেষ বারের মত দেয়া ডিক্লেয়ারে টাকার অভাবে কাগজ জমা দিতে পারেনি সে। সামারের ছয় মাস মারে (মেলায়) বিভিন্ন তৈজসপত্র হকারি করে চলতে হয় তাকে। দেশে স্ত্রীকে শ্বশুর বাড়িতে রেখে এসেছে। এখন শ্বশুর বাড়ির লোকের তাকে উহ্য করে খোটা দেয় তার স্ত্রীকে। পেপার না থাকায় কোন কাজ জোগাড় করতে পারছে না ইকবাল। কখনো কখনো দুই আঙ্গুলের ফাঁকে আধপোড়া জ্বলন্ত সিগারেটসহ পার্কবেঞ্চে উদাস বসে থাকতে দেখা যায় ইকবালকে।


সফিক সাড়ে চার বছর আগে ইটালি হয়ে ফ্রান্সে এসেছিল। ফ্রান্সে এসে পলিটিক্যাল এসাইলাম ডিমান্ড করে সে। দুর্ভাগ্যজনক কারনে রিফিউজ হয়ে যায় তার আবেদন। গত দুই বছর যাবত তার কোন লিগ্যাল পেপার নেই। অনেক ঘুরাঘুরির পরেও কোন কাজ মিলেনি তার। পূর্বে হকারি করে দিনপাত করা গেলেও বর্তমানে পুলিশের তৎপরতায় তা আর হচ্ছে না। গত দুই মাসের বাসা ভাড়া আটকে গেছে। একই রুমে থাকতে হচ্ছে ছয়জনের। মনমালিন্য, ঝগড়া লেগেই থাকে। দেশে ফোন করা জন্যে মোবাইলের কার্ড কেনার টাকাও তার কাছে নেই। চার বছর আগের মাথা ভর্তি চুল আর নেই, মাথার অর্ধেক জাকিয়ে বসেছে টাক। মানসিকভাবে ভীষণ দ্বিধাগ্রস্থতায় জীবনযাপন করছে সে।


শহিদুল ইসলাম গত তের বছর থেকে জার্মানিতে আছেন। বর্তমানে স্ত্রী এবং দুইসন্তান নিয়ে ভালোই আছেন। বাসা ভাড়া এবং আনুসাঙ্গিক অন্যান্য খরচ বাদ দিয়ে তিনি অর্থ বের করতে পারছেন না। এদিকে ঢাকায় বুকিং দেয়া প্লটের কিস্তি তিন মাস যাবত আটকে আছে। অনেকদিন প্রবাসে থাকায় দেশের কারো সাথেই ভালো সম্পর্ক নেই যে কারো কাছ থেকে ধার করে কিস্তি চালাবে। তাছারা কিস্তির অর্থের পরিমানও কম নয়, মাসে লাখটাকা। কিছুদিন থেকেই শহিদুল ইসলাম খুব টেনশনে আছেন। স্ত্রী সন্তানের জন্যে তার সম্পদ বলতে কিস্তি চলা এই প্লটটুকোই।


স্টাডি ৬-

২০১০ সালে রাবব টিয়ার ফোরের ক্যাটাগরির আন্ডারে পড়াশোনার জন্যে পাড়ি জমায় বিলেত খ্যাত ইংল্যান্ডে। লন্ডনের একটি এ রেটেড কলেজে এডমিশন নেয় সে। মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে আশা রাবাবের স্বপ্ন ছিল পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি কাজ করে নিজেকে দেশের বাইরে স্টাব্লিশ করা। আসার পরে ছয়মাস ঘুরাঘুরি করে কোন কাজ জটেনি রাবাবের। দেশ থেকে টাকা এনে কলেজের বকেয়া ফি পরিশোধ করতে হয়েছে। এখন রাবাব একটি সুপার স্টোরে পার্টটাইম কাজ করছে। এদিকে বর্তমানে আন্ডার গ্রাজুয়েশনে আসা ছাত্রদের ওয়ার্ক পারমিট বাতিল করা হয়েছে। কাজের কারনে কলেজে অনেক এসাইনমেন্ট জমা দিতে পারেনি রাবার, সেমিস্টার রেজাল্ট খারাপ হয়েছে। ইউকে গভমেন্ট হাইলিস্কিলে মাইগ্রেশন করাও বন্ধ করেছে এক বছর হয়ে গেছে। এদিকে রাবাবের কলেজ এ রেটেড থেকে বি রেটেডে নেমে এসেছে। যেকোন সময়ে বন্ধ হয়ে যেতে পারে কলেজ। যেকোন সময়ে পড়াশোনা ইনকমপ্লিট রেখেই তাকে ফিরে যেতে হতে পারে দেশে। দেশে যেয়ে সেই গোড়া থেকে স্টাডি করার কথা ভাবতেই হিমসিম খায় রাবাব। ইউরোপের অন্যান্য দেশের অবস্থাও ভালো নয় যে কোথাও যেয়ে সেটেল হবে। বর্তমান সময়টা খুব কনফিউশনে কাটছে তার।


স্টাডি ৭-

ডিভি লটারি পেয়ে পাঁচ বছর আগে সপ্নরাজ্য আমেরিকার ফিলাডেলফিয়াতে পরিবারসহ বসবাস শুরু করেন আয়শা হামিদ। তার স্বামী হামিদ সাহেবের একটা কাজ জুটে যায় একটা সুপারশপে। বড় মেয়ে স্কুলে ভর্তি হয়, পাশাপাশি ম্যাকডোনাল্ডসে পার্টটাইম কাজ করে। মোটামুটি হাউজ ওয়াইফের ভূমিকাতেই ছিলেন তিনি। ২০০৯ সালে ইউ এস এর চরম অর্থনৈতিক মন্দার কারনে হাজার হাজার আমেরিকানের পাশাপাশি কাজ হারায় তার স্বামী। পরিবারের খরচ কমিয়ে আনার জন্যে প্রানপন চেষ্টা করে যাচ্ছে তারা। বড় মেয়ের আয়ের টাকাতেই আপাতত সংসার চলছে তাদের। আয়েশা হামিদ এবং তার স্বামী প্রানপন চেষ্টা করে যাচ্ছেন একটা কাজ ম্যানেজ করতে। সরকার থেকে যতসামান্য সম্মানি আসে তাতে খরচের টাকা হয়না। মাস শেষে পরিচিত জনের কাছ থেকে ধার করতে হয়। দেশে থাকাকালীন সোনালি সময়ের কথা চিন্তা করে আক্ষেপের নিঃশ্বাস ফেলেন হামিদ পরিবার।


স্টাডি ৮-

সুশান্ত শীল হোটেল ম্যানেজমেন্টে স্টুডেন্ট ভিসায় এপ্লাই করে অস্ট্রেলিয়ার একটি ইউনিভার্সিটিতে। পয়েন্ট বেইজড সিস্টেমে আই ই এল টি এস এবং অন্যান্য রিকোয়ারমেন্ট ফিল করে ছয় মাসের মাথায় ভিসা হয়ে যায় তার। সিডনিতে পরিচিত এক আত্মীয়ের বাসায় উঠে। কিছুদিন পরে অন্য এক জায়গায় উঠেন। সেখানে তাকে রুম শেয়ার করতে হয় আরও এক জনের সাথে। মায় কয়েকের মাথায় জুটে যায় একটি কাজ। ইউনিভার্সিটির এনুয়াল ফি দিয়ে তেমন কিছুই থাকে না সঞ্চয়ে শুধু কষ্টলদ্ধ জ্ঞান ছারা। গত এক বছরে তিনবার তাকে স্বীকার হতে হয় অস্ট্রেলিয়ার অধিবাসী ব্ল্যাকপিপলদের হয়রানীর। কালোরা রাত আবার দিনেও ছিনতাই করে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে। এদের ব্যাপারে পুলিশও তেমন ততপর নয়। এর মাঝে একবার একমাসের সমস্ত বেতনের টাকাই ছিনতাই হয়ে যায়। বাকি সব বারে মোবাইল এবং ওয়ালেট সহ কিছু অর্থ। এছারাও রয়েছে রেসিজম। অস্ট্রেলিয়াতে এইসব কারনে সৃষ্টি হয়েছে কিছু গ্রুপ বা কমিউনিটির। যেমন বাংলাদেশী কিংবা সাউথ এশিয়ান কমিউনিটির মানুষ চেষ্টা করে একই এলাকায় থাকতে। এই গ্রুপিং বা কমিউনিটির কারনে হয়রানী আরও বেড়েছে। সমস্ত গ্রুপের উপরে প্রতিহিংসার কারন হয় ইন্ডিভিজুয়াল্লি কিছু পার্সন। সুশান্ত শীল এবারে তার গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করবেন। যোগ্য চাকুরি প্রাপ্তির কনফিউশন এবং নানাবিধ কারনে সারাক্ষন দুশ্চিন্তার মাঝে থাকে সে।



#উপরের আটটি স্টাডি থেকে প্রবাসে বাঙালিদের অবস্থানের কিছু দিক তুলে ধরা হয়েছে। এখানে শুধুমাত্র কমন ব্যাপারগুলো এসেছে, এছারাও অন্যান্য অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হয় প্রবাসীদের। অনেকদিন থেকে ইচ্ছে ছিল প্রবাসের বাঙালিদের হালচাল এবং জীবনযাত্রা নিয়ে সত্য কিছু তথ্য লেখার। উপরে দেয়া তথ্যগুলো সবই বাস্তব এবং সত্য, যদিও অধিকাংশ প্রবাসী স্বীকার করেন না নিজের সঠিক অবস্থান, আর দেশে থাকা মানুষের কিছু ভুল ধারণা থেকে যায় প্রবাসীদের নিয়ে। যেহেতু বাংলা কমিউনিটি ব্লগ এখন অধিকতর শক্তিশালী এবং সচেতনতার অন্যতম মাধ্যম, সেহেতু প্রবাস জীবন এবং প্রবাসীদের সম্পর্কে সামান্য কিছু ধারনার দেয়ার উদ্দেশ্যেই এই লেখা।


▪প্রবাসে থাকা আপনার প্রিয় মানুষটির প্রতি সহনশীল হোন। তাকে কখনো মানসিক টেনশনে রাখবেন না, এতে তার স্বাভাবিকতায় ব্যাঘাত ঘটতে পারে।

▪অধিকাংশ প্রবাসী দেশে ফিরে যাওয়ার আগে চিন্তা করেন, তার আত্মীয় কিংবা পারিপার্শ্বিক মানুষেরা কি ভাববে তার সম্পর্কে। তারা হয়ত তাকে নেগলেক্ট করবে। এই ভয়েই দুরাবস্থা স্বত্বেও অনেকেই দেশে ফিরে যেতে চায়না। প্রবাস ফেরত আপনার আত্মীয় কিংবা বন্ধুটিকে সাপোর্ট দেয়ার চেষ্টা করুন। তাকে পুরো উদ্যমে নতুন করে কিছু করার সাহস প্রদান করুন।

▪সুদূরে থাকা আপনার প্রিয় মানুষটির সঠিক অবস্থা বুঝার চেষ্টা করুন। তার সাধ্য কতটুক তা বুঝতে চেষ্টা করুন।

▪আপনার প্রবাসী প্রিয়জনকে যথেষ্ট সময় দিন স্যাটল হওয়ার জন্যে। আমাদের দেশের মানুষের ধারণা বিদেশ যাওয়া মানেই প্রথম মাস থেকেই স্যালারি। প্রতিমাসে টাকা পাঠানো যেন ফরজ। এই ধারণা পাল্টাতে হবে। প্রথম দিকের সময়টা তাকে নিজের অবস্থান শক্ত করার জন্যে প্রদান করুন।

▪যারা দেশের বাইরে যেতে চান, আপনার সিদ্ধান্ত নিয়ে ভাবুন। অবশ্যই সেই দেশের অবস্থা, অর্থনৈতিক অবস্থান, সুযোগ সুবিধা খুব ভালো ভাবে জেনে পদক্ষেপ নিবেন। আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষকেই দেখা যায়, না ভেবেচিন্তে দেশের বাইরে এসে আক্ষেপ করতে। যথেষ্ট সময় নিয়ে ভাবুন যেন এই আক্ষেপ আপনাকে না করতে হয়।


সর্বশেষ এডিট : ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১২ ভোর ৬:২১
৫২টি মন্তব্য ৫১টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সৎ মানুষ দেশে নেই,ব্লগে আছে তো?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮








আশেপাশে সৎ মানুষ কেমন দেখা যায়? উনারা তো নাকি একা থাকে, সময় সুযোগে সৃষ্টিকর্তা নিজের কাছে তুলে নেয় যা আমাদের ডেফিনিশনে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বলে। আপনি জীবনে যতগুলো বসন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×