পায়েশকে কেউ ফিরনিও বলে থাকেন। উপকরণ আর প্রস্তুতপ্রণালীতে প্রায় তেমন কোন পার্থক্য নেই। যা বলছিলাম – পায়েশের স্বাধ আসলে দুধেই। আমি একান্ত বাধ্য না হলে গরুর দুধ ছাড়া পায়েশ করিনা। গরুর দুধ না পেলে মিল্কভিটা বিকল্প হিসেবে ব্যাবহার করতে পারেন। দুধ জ্বাল হতে থাকে আর তাতে সামান্য চাল সিদ্ধ হয়ে মিলে-মিশে একাকার হয়ে যাবে। ঠান্ডা হওয়ার পর দুধে আর সুগন্ধি চালে পায়েশের ঘ্রাণ আপনাকে আকর্ষন করবেই। এই আকর্ষনে পরিবেশনা ভিন্ন মাত্রা যোগ করে বরাবরই।
উপকরণঃ
দুধ - দেড় থেকে দুই লিটার
পোলাওয়ের চাল – দুই মুঠ
চিনি – ৫ কাপ (কিংবা পরিমানমতো, পায়েশ খুব বেশি মিষ্টি হলে ভাল লাগবে না)
কিশমিশ – ১৬/১৭ টা
দারুচিনি – ৩ টুকরা
এলাচ – ২/৩ টা (গোটা অথবা গুঁড়া)
তেজপাতা – ২ টা
ভাজা চীনাবাদাম অথবা পেস্তাবাদাম – ২ টেবিল চামচ
ঘি – ১ টেবিল চামচ
প্রস্তুতপ্রণালীঃ
প্রস্তুতির শুরুতেই পোলাওর চাল ধুয়ে আধাঘন্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে (এতে চাল সিদ্ধ হতে সময় কম লাগবে)। এরই মধ্যে দুধটা চুলোয় চাপিয়ে জ্বাল দিন। খেয়াল রাখবেন দুধ যেন গরম হয়ে উপচে না পড়ে। দুধ কিছুক্ষন জ্বাল হয়ে একটু ঘন হয়ে এলে এতে ভিজিয়ে রাখা চাল পানি থেকে তুলে দুধে দিয়ে দিন। ভাল করে নেড়ে দিন। চালসহ দুধ ফুটতে শুরু করবে। চুলার আঁচ একটু কমিয়ে দিয়ে এসময় হালকা হাতে নাড়তে থাকুন। চাল সিদ্ধ হতে থাকবে। মাঝে মাঝে হালকা হাতে নাড়তে হবে, নইলে পাতিলের তলায় লেগে যাবে, পুড়েও যেতে পারে। পুড়ে গেলে পায়েসের স্বাধটাই নষ্ট হয়ে যাবে।
দেখবেন এসময়ে পাতিলের তলায় দুধ ঘন হয়ে লেগে যেতে শুরু করেছে, তাই নাড়া বন্ধ করা যাবে না। চাল সিদ্ধ হয়ে এলে এবার চিনি, দারুচিনি, এলাচ, তেজপাতা দিয়ে অল্প আঁচে নাড়তে থাকুন। চিনি একবারে ৫ কাপ না দিয়ে স্বাধ (মিষ্টি) চেখে দেখে যতটা প্রয়োজন ততটা দিতে পারেন। নাড়তে নাড়তে দেখবেন পায়েশ ঘন হয়ে খুব সুন্দর ঘ্রাণ বেরিয়েছে। এবার ১ টেবিল চামচ ঘি (অথবা কাঁচা দুধ দিতে পারেন) দিয়ে, ভাল করে নেড়ে মিশিয়ে দিন। নাড়তে থাকুন, আরো মিনিট পাঁচেক চুলায় রেখে নামিয়ে ফেলুন। নামানোর ঠিক আগে কিশমিশ আর এলাচ দিতে হবে। পায়েশ তৈরি।
পরিবেশনঃ
তবে এখানেই শেষ নয়। পায়েশ পরিবেশনার জন্যে আপনার একটা প্রস্তুতি দরকার। পরিবেশনাই পায়েশকে আরো আকর্ষনীয় করে তুলবে। পরিবেশনার জন্য পায়েশ ঠান্ডা হতে দিন। ঠান্ডা পায়েশ ছোট ছোট মাটির ভাঁড়ে অথবা সুন্দর ছোট কাঁচের পাত্রে তুলে উপরে বাদাম অথবা পেস্তাবাদাম কুচি করে ছড়িয়ে পরিবেশন করতে পারেন।
চট্টগ্রাম, ২২ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (ঈদের দ্বিতীয় দিন)
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা অক্টোবর, ২০০৯ রাত ১০:১৪