আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা আজ কোথায় দাড়িয়ে? শিক্ষার মান নিয়ে অসংখ্য প্রশ্ন আছে? কিন্তু আমাদের শিক্ষকের মান? প্রশ্ন আসতেই পারে। আমার নিজের দেখা থেকেই বলছি আমি এক শিক্ষক কে দেখেছি ssc পরীক্ষার খাতা নদীতে নৌকোয় বসে দেখছেন। তাও বোর্ডে জমা দিতে শহরে আসার সময়। নিতান্ত বাধ্য হয়ে। কারণ খাতা দেখার জন্য যে টাকা দেয়া হয় তা পর্যাপ্ত নয়। আর তার হাতে ১০ মিনিট সময় নেই একটা খাতাকে ভালো ভাবে পড়ে দেখার জন্য। কদিন আগে পত্রিকায় এসেছে এক শিক্ষক তার দেহ প্রদর্শনী করে ঘুরে বেড়ান ক্লাসে। যারা মতিঝিল মডেল স্কুল এন্ড কলেজে পড়েছেন তার এই ধরণের শিক্ষক দেখেছেন। জনৈক সৈয়দ আহাম্মদ নামের এক ধর্ম শিক্ষক ছাত্রদের কাছে আদি রসের ব্যপারে কথা বলে খুব আনন্দ পেতেন। জনৈক কাশেম নামের শিক্ষক যে কি করতেন্নতা অই স্কুলের ছাত্র মাত্রই জানে। আর জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয় বা তিতুমীর কলেজের শিক্ষকদের কথা না হয় বাদ ই দিলাম। যেখানে শিক্ষক নৈতিকাতা শিক্ষা দিতে পারছে না সেখানে ভালো শিক্ষা আশা করা টা কি উলো বনে মুক্তো ছড়ানোর মতো নয়?
শিক্ষার বাজার আজ দখল করে আছে কোচিং সেন্টার আর শিক্ষক নামধারী ব্যবাসায়ীরা। সরকারি বিজি প্রেস থেকে যখন প্রশ্ন বাইরে বের হয়ে যায় তখন স্কুল কলেজে কি অবস্থা তা বলাই বাহুল্য। আর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে তো তেল মারাই সর্বশেষ কথা। কিন্তু তা হলে শিক্ষার বাস্তবিক চিত্রটি কি? বাংলাদেশ কি সত্যিই পিছিয়ে আছে? না কিছুটা এগিয়েতছে?
বাংলাদেশের শিক্ষা বোর্ডের দুর্নীতির দিকে একটু তাকাই। দেখা যাবে সার্টিফিকেট বিক্রি আর রেজিস্ট্রেশন ব্যাবসা চূরান্ত আকার ধারণ করেছে। টাকা দিলে বাঘের দুধ ও মেলে তা শিক্ষা বোর্ডে গেলে আপনি সহজেই বুঝে যাবেন। গ্রামের স্কুল গুলোর দিকে তাকান তা হলে দেখবেন গ্রামাঞ্চলে শিক্ষাথীদের জন্য যে বই বরাদ্দ দেয়া হয় তা তারা চোখেও দেখে না। কারণ নৈতিকতার মুর্ত প্রতীক শিক্ষক সহজেই এই অনৈতিক কাজ গুলো করছেন। আর গাইডবই কোম্পানির কাছ থেকে পার্সেন্টেজ খেয়ে ছাত্রদের জন্য প্রেসকাইব করছেন আজেবাজে প্রকাশনীর নিন্ম মানের পাঠ্য পুস্তক। প্রথমিক এবং মাধ্যমিক শিক্ষার জন্য যে শিক্ষক নিয়োগ করা হয় তার বিবিরণ না দেয়ায় ভালো। কারণ এইখানের দুলক্ষ টাকা খরচ করলেই পাওয়া যায় একটা চাকুরি। যার গোড়াতেই গলদ তার পরবর্তী কাজ আর কতটুকুই বা উন্নত মানের হবে তা তো না বলে দিলেই চলে। আর ঢাকা শহরে একটা নামকরা স্কুলে বা কলেজে চাক্রি নিতে পারলে মাশাল্লাহ ভালোই কামাই করা যায়। ভিকারুন্নিসা , আইডিয়াল , ঢাকা কলেজের একজন শিক্ষক কত টাকা কামাই করেন ক্লাসে পরিয়ে আর ক্ত কামাই করেন টিউশনি করে তা জানা দরকার। আর এই সব সাইনবোর্ড বিহীন টিউশনি গুলোকে ১০০% ট্যাক্সের আওতায় আন্তে পারলে হয়তো এই শিক্ষকদের দৌরাত্তা কিছুটা কমতে পারে।
আর শুধু ছাত্র শিক্ষকদের দোষ দিয়ে লাভ নেই সরকার গত ১৫ বছর ধরে শিক্ষকদের বাড়ি ভাড়া দিচ্ছে ১০০ টাকা! যা দিয়ে বস্তিতেও এক্টা ঘড় পাওয়া যায় না। সকল জায়গায় ছাত্রদের পোষাক নিয়ে কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু ভার্সিটি গুলোতে ঊড়না ছাড়া মেয়েদের যাতায়ত। প্রায় বুক খোলা জামা আর হাটু পর্যন্ত উচূঁ পাজামা কে স্বীকৃতি দেয়া হচ্ছে যা শিক্ষকদের ও নৈতিক স্খলন ঘটাচ্ছে।
সরকারের উচিৎ শিক্ষাক্ষেত্রে একটু নজর দেয়া আর আমাদের জাতীয় ঐতিহ্য অনুসারে সকল ইনিস্টিটিউশানে ড্রেসকোড নির্ধারিত করে দেয়া।আমি বোরকার কথা বলছি না। আমি শালীন পোশাক আর নৈতিক শিক্ষার কথা বলছি। কারণ প্রমথ চৌধুরী কবে শিক্ষা নিয়ে তার আক্ষেপ প্রকাশ করে গিয়েছেন সেই আক্ষেপ আজো দূর হয় নাই। এখনো ইনিস্টিটিউশন গুলোতে নতুন চিন্তার বিকাশ ঘটানো হয় না। একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে গেলে আমাদের আজ নতুন সিদ্ধান্ত নিতেই হবে।
বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা; অন্ধকারের দিকে যাত্রা...!!!
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
৬টি মন্তব্য ৪টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
বিজয়ের আগে রাজাকারের গুলিতে নিহত আফজাল

ঘটনা স্থল গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি থানার উড়িয়া ইউনিয়নের গুণভরি ওয়াপদা বাঁধ।
১৯৭১সালের ১৬ই ডিসেম্বরের কয়েক দিন আগের ঘটনা। আফজাল নামের ভদ্রলোক এসেছিলেন শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে। আমাদের পাশের গ্রামেই তার... ...বাকিটুকু পড়ুন
৫৫ বছর আগে কি ঘটেছে, উহা কি ইডিয়টদের মনে থাকে?

ব্লগের অনেক প্রশ্নফাঁস ( Gen-F ) ১ দিন আগে পড়া নিউটনের ২য় সুত্রের প্রমাণ মনে করতে পারে না বলেই ফাঁসকরা প্রশ্নপত্র কিনে, বইয়ের পাতা কেটে পরীক্ষার হলে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন
নিজামী, মুজাহিদ, বেগম জিয়াও বিজয় দিবস পালন করেছিলো!!

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বেগম জিয়ার মুরগী মগজে এই যুদ্ধ সম্পর্কে কোন ধারণা ছিলো না; বেগম জিয়া বিশ্বাস করতো না যে, বাংগালীরা পাকীদের মতো শক্তিশালী সেনাবাহিনীকে পরাজিত করতে পারে;... ...বাকিটুকু পড়ুন
১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন
ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার থেকে

১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।