একুশের বইমেলায় ভুঁইফোর প্রকাশনা যেমন বেড়েছে, তেমনি অন্যের লেখা চুরি করে বই প্রকাশ করার সংখ্যাও আৎকে ওঠার মত বেড়েছে। এরা একেবারে প্রফেশনাল চোর। ফেসবুকে আপনি লেখা পোস্ট করেছেন, আর চোর সেই লেখা নিয়ে বই প্রকাশ করেছে। এবছর সবচেয়ে বেশি চুরি হয়েছে বঙ্গবন্ধু বিষয়ক লেখা।
আরো ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হলো, যারা বিভিন্ন ধরনের সংকলন করছেন, তারাও পূর্বে প্রকাশিত সংকলন থেকে লেখা চুরি করে শর্টকাট সংকলন প্রকাশ করছেন। এরা পাঁচ-সাতটা সংকলন সংগ্রহ করে সেখান থেকে পছন্দের লেখা নিয়ে রাতারাতি সম্পাদক বনে যাচ্ছেন! মূল লেখার লেখককে (যদি জীবিত হন) পর্যন্ত এরা এসব না জানিয়ে করছেন!
আর এসব সম্ভব হচ্ছে পঠন-পাঠন লেখালেখিতে চর্চা না করেই রাতারাতি কিস্তি মাত করার খায়েস থেকে। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো, এরা শুরুতে টার্গেট করে দেশের বিখ্যাত কবি-লেখকদের সাহচার্য। কয়েকদিন মিশে কিছু ছবি তোলে। পরের বছর এদের দিয়েই নিজের চুরি করা জিনিসের কেক কাটে/মোড়ক উন্মোচন করে। আপনি জানতে পারবেন না কীভাবে এরা রাতারাতি লেখক/সম্পাদক বনে গেল!
সবচেয়ে বেশি চুরি হচ্ছে ফেসবুকে সহজে পাওয়া লেখাগুলো। আর চুরির তালিকায় সবচেয়ে উপরে কবিতা। গল্প বা উপন্যাস চুরি করার জন্য যে সময় দরকার, প্রফেশনাল এ্সব চোর ততটুকু সময় পর্যন্ত ব্যয় করতে রাজি নয়। তাও ভেতরে ভেতরে কেউ করছে কিনা, জানার উপায় নাই।
আমরা এমন একটি দেশে বসবাস করি, যেখানে চুরি, চামারি, লুটপাট, চাঁদাবাজি, দুর্নীতি এসব এখন মামুলি ব্যাপার। চোরের খনিতে বসবাস করে লেখালেখি'র মত সৃজনশীল ও মননশীল কাজেরও চুরি হবে না, সেই গ্যারান্টি এই দেশে নাই। কারণ, এই দেশে চোরদেরও বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নানাভাবে লালন-পালন করা হয়। অতএব চোরাই লেখক ও সম্পাদক থেকে সাবধান!
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা মার্চ, ২০২০ সকাল ৮:০২