somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

"হিনার জন্মদিন"

২৮ শে অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ১২:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


Writer:-RH Rimon
জন্মদিন সবার কাছেই বিশেষ একটা দিন।আর যদি হয় সেই জন্মদিনটা খুব কাছের কোন বিশেষ মানুষের তাহলে তার বিশেষত্ব আরও একটু না অনেকখানি বেড়ে যায়।সবাই চায় এই বিশেষ দিনে তার কাছের সেই বিশেষ মানুষটিকে চমকিয়ে দিতে,চায় সেই দিনটাকে ক্যালেন্ডারেরর পাতায় একটা স্মরনীয় দিন হিসাবে তুলে রাখতে।
ঘো!ঘো।ঘো ঘো!......
ফোনটা ভাইব্রেট হয়ে চলছে।মনে হয় হিনা ফোন দিয়েছে।অফিসের একটা জরুরী মিটিং চলছে তাই ফোনটা ধরতে পারচ্ছি না।হিনা বারবার ফোন দিচ্ছে তাই ফোনটা অফ করেই রাখলাম।আধা ঘন্টা পর মিটিং শেষ হলো।বের হয়ে এসে হিনাকে ফোন দিলাম কিন্তু ফোন ধরছে না।বুঝলাম রাগ করছে।আরও কয়েকবার ফোন দিলাম কিন্তু না মহারাণী ফোন ধরছেই না।অবশেষে একটাই উপায়,মেসেজ দিলাম।
"সরি চশমী!(চশমা পরে তো তার ক্ষেপানোর জন্য বা আদর করে এই নামেই ডাকি)অফিসের মিটিং-এ ছিলাম।তাই ফোন রিসিভ করতে পারি না।প্লিজ রাগ না করে থেকে আমার ফোনটা রিসিভ কর।"
মেসেজ দেওয়ার পর আবার ফোন দিলাম।মহারাণী এবার ফোনটা রিসিভ করলো।
আমি->>হ্যালো!
হিনা->>হুম।
->>এখনো রেগে আছো?
->>আমি কার কে হই?আর আমি রাগলেই বা কার কী?
->>এমন করে বলছো কেন?মিটিং-এ ছিলাম তাই ফোন ধরতে পারিনি।নাহলে তোমার ফোন ধরিনি এমন কখনও হয়েছে?
->>ফোন তো ধরই নি তার উপর ফোন বন্ধ করে রাখছো।
->>বার বার ফোন দিচ্ছিলা পাশের কলিগরা ডিস্টার্ব হচ্ছিল তাই...
->>পাশের কলিগ ডিস্টার্ব হচ্ছে বলে তুমি ফোন অফ করে রাখবা?কেন সাইলেন্ট করে রাখা যেত না?
->>আচ্ছা বাবা ভূল হয়ে গেছে।সামনে বার থেকে তাই করবো।ফোন দিছিলা কেন সেটাই তো বললা না।
->>ও হ্যাঁ!মনে আছে তো আজ বিকালে দেখা করার কথা?আজ যদি দেরী করে আসো না,তাইলে তোমার খবর আছে।প্রতিবার দুইঘন্টা সময় হাতে নিয়ে বের হই তোমার সাথে সময়টা কাটাবো বলে,আর তুমি আসোই একঘন্টা লেটে।
->>রাস্তায় জ্যাম থাকলে আমি কী করবো?
->>সেই জন্যই ফোন করে মনে করিয়ে দিচ্ছি,যেন আগেই বেরিয়ে পরো।আজ যদি লেট হয় তাহলে পারমানেন্ট ব্রেকাপ!
->>হায়!হায়!বলে কী?আচ্ছা তারাতারি যাওয়ার চেষ্ঠা করবো।
->>আচ্ছা তাইলে এখন রাখছি।বিকালে দেখা হবে।
->>ওকে বাই।
ওফ!মনে হচ্ছিল এতোক্ষণ কোন ভূ-গোল ক্লাসের লেকচারে বসে ছিলাম।এই কথা যেন আবার আপনারা হিনাকে বলে দিয়েন না।তাইলে আমাকে আর আস্ত রাখবে না।কী?আমি কে?ওহ পরিচয়ই তো দেই নি।আমি মোন।কয়েক মাস হলো একটা জবে জয়েন করছি।আর হিনা হলো আমার মনের মানুষ।মেয়েটা রাগী তবে রাগী মেয়েদের ভালোবাসা রাগের থেকেও বেশি হয়।তাইতো আমিও ওকে এতো ভালোবাসি আর ও আমাকে অনেক ভালোবাসে।ওহ!দেরী হয়ে যাচ্ছে।আপনাদের সাথে পরে কথা বলবোনি।আগে হিনার কাছে যাই।দেরী হলে না জানি কী আছে আজ কপালে।
একটু আগেই বের হয়ে পরলাম।তবুও রাস্তায় জ্যামে আটকে গেলাম।ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি সময় পেরিয়ে যাচ্ছে।রিক্সা থেকে নেমে হাটতে লাগলাম।রোদটাও খুব সুন্দর ফ্লাশ দিচ্ছে।সময় পেরিয়ে যাচ্ছে তারাতারি পৌছাতে হবে, না হলে হয়তো পর্মানেন্ট ব্রেকাপ নিশ্চিত।
অবশেষে তবুও ২০/২৫ মিনিট দেরী হয়ে গেল।পার্কে ঢুকে আমাদের পরিচিত জায়গাটায় গেলাম।দেখি হিনা বসে আছে।আমি ওর পাশে বসে হাপাতে লাগলাম।
হিনা->>এভাবে হাপাচ্ছো কেন?
আমি->>রাস্তায় জ্যাম,তাই হেটে আসলাম।
->>দেখি!কতো ঘেমে গেছো।কে হেটে আসতে বললো?
->>আরে তুমি না ধমকী দিলা সময় মতো আসতে হবে নাইলে পার্মানেন্ট ব্রেকাপ।তাইতো তারাতারি আসলাম।
->>তাই বলে এভাবে রোদের মধ্যে ঘেমে হাপিয়েও তো আসতে বলিনি।একটু দেরী হোক আমি অপেক্ষা করতে পারবো তবুও এভাবে আর কখনও আসবে না।
->>আচ্ছা।বলো হঠাৎ এতো জরুরী তলব কেনো?
->>আজ কতো তারিখ?
->>আজ তো মনে হয় ২৬ তারিখ।
->>কী মাস?
->>অক্টোবর।
->>আর ক'দিন বাকী?
->>কিসের আর কয় দিন বাকী?
->>আমি জানতাম তুমি ভূলে যাবে।সব ছেলেরাই একই।একদম কেয়ারলেস।
->>বলবা তো কী ভূলে গেছি?
->>পরশু আমার জন্মদিন। আর তুমি ভূলে গেছো?
->>ওহ!সরি সরি।আসলে কাজের এতো চাপ।নতুন জয়েন করছি তো।কাজের চাপে খেয়ালই ছিলো না।(ভোলার অভিনয় করতেছি,বুঝো নাই ব্যাপারটা।কাছের মানুষের এমন বিশেষ দিন কেউ ভূলতে পারে)
->>তা থাকবে কেন?
->ও হো!
->>কী হলো?
->>আমায় তো কালই দুই দিনের জন্য শহরের বাহিরে যেতে হবে।
->>কী??জানে আমি কতো প্লান করে রাখছি আমার জন্মদিনের দিন তোমাকে নিয়ে কতো জায়গায় ঘুরতে যাবো।
->>সরি।অফিসের আজকের মিটিং-এ আমায় সিলেক্ট করা হইছে এই কাজের জন্য।
->>মানা করা যায় না কোন ভাবে?
->>অফিসের এই প্রথম কোন কাজে আমাকে শহরের বাহিরে পাঠাচ্ছে কী করে মানা করি বলো?
->>হুমম।থাকো তুমি তোমার কাজ নিয়ে।আমার কাছে আর আসবে না।(হিনা চলে যাচ্ছে রাগ করে।আমিও ওর পিছে পিছে যাচ্ছি।)
->>একদম আমার পিছে পিছে আসবে না।যাও তুমি তোমার কাজ নিয়েই থাকো।
->>কাজেই তো যাচ্ছি।
->>আমার পিছে কেনো?
->>বা রে।আমার কাজ যেদিকে সে দিকেই তো যাচ্ছি।এখন সেই দিক তোমার যাওয়ার দিকে হলে আমার কী করার?
->>তুমি আসলেই একটা পেইন।এই রিক্সা যাবেন?
->>আমিও তো ওই দিকেই যাচ্ছিলাম কাজের জন্য,একসাথে যাই?ভাড়া আধা আধা দিবো।তোমারও টাকা বাঁচবে আমারও বাঁচবে।
->>আর এক মুহূর্ত আমার সামনে থাকলে সত্যি তোমাকে খুন করবো আমি।
->>জেলে কিন্তু অনেক মশা।এরোসল নিয়ে যেও।
->>মামা চলেন তো আপনি।পাগলের কথা শোনার ইচ্ছা আর নাই।
রিক্সা ছুটতে শুরু করলো।আমিও একটা রিক্সা নিয়ে ওর রিক্সার পিছু পিছু চললাম।বাসার সামনে এসে রিক্সা থেকে নেমে দেখে আমিও পিছে পিছে আসছি।রাগে গজ গজ করতে করতেই ভিতরে চলে গেলো।আমিও চলে আসলাম বাসায়।আসলে সত্যি কথা হলো অফিসের কোন কজে আমি বাহিরে যাচ্ছি না।পরশু হিনার জন্মদিন।ওকে সারপ্রাইজ দিতে হবে না।তার জন্যতো কিছু অগ্রিম ব্যাবস্থা করতে হবে।সেই জন্য অফিস থেকে আরও কাল পরশুর ছুটি নিয়ে নিলাম।
রাতে খাওয়া দাওয়া করে রুমে এসে ভাবছি ওকে কী করে চমকে দেওয়া যায়।মেয়েটাও তখন রাগ করে চলে গেলো।কয়েকবার ফোন দিয়েছি কিন্তু ধরেনি।কিছুক্ষণ পর হিনাই ফোন দিলো।রিসিভ করলাম।
->>হ্যালো!রাগ কমলো?
->>খুব মজা লাগে আমাকে রাগাতে?
->>মজা না,রাগলে তোমায় খুব সুন্দর লাগে।
->>থাক আর পাম দিতে হবে না।কখন যাচ্ছো?
->>এইতো কাল সকালেই রওনা দিবো।
->>ফিরবে কবে?
->>কাল পরশু ওখানেই থাকতে হবে।তারপরের দিন সকালেই রওনা দিবো।
->>ব্যাগ গুছাইছো?
->>হুমম।বলো তোমার জন্য কী আনবো?
->>আমার জন্য কিছু আনতে হবে না।তোমার মা-বাবার জন্য কিছু নিয়ে আসিও তারা খুশি হবেন।
->>তা তো অবশ্যই।তবুও তোমার কিছু লাগবে না?
->>লাগবে তো তোমাকেই কিন্তু তুমিই তো থাকছো না।যাক গে সে কথা।ঘুমিয়ে পরো।কাল সকালে না বাস।
->>হুমম।তুমি ঘুমাবে না?
->>হুমম।কাল বাসে উঠে ফোন দিবে কিন্তু।
->>আচ্ছা ঘুমাও।
->>ঠিক আছে।
ঠিক আছে বললেও আমি জানি হিনা এতো তারাতারি ঘুমাবে না।কিছুক্ষণ নিরবে চোখের জলে বালিশ ভিজিয়ে তারপর নিজের অজান্তেই হারিয়ে যাবে ঘুমের দেশে।উফ!কী মায়াবী চেহারা।মায়াবীনি তুমি আমার স্বপ্নে চলে আসো কেমন?আমি ঘুমিয়ে পরলাম।
ক্রিং!ক্রিং!ক্রিং!ক্রিং!
উফ সকাল সকাল কোন মরার কোকিল এসে ঘুম ভাঙ্গালো রে।চোখ ঘষতে ঘষতে দেখি হিনার ফোন।ঘড়িতে দেখি নয়টা বাজে।হাই টাই তুলে ঠিক স্বাভাবিক হয়ে ফোন রিসিভ করলাম যেন হিনা বুঝতে না পারে কেবল আমি ঘুম থেকে উঠলাম।
->>হ্যালো!
->>কী ব্যাপার?তোমার না বাসে উঠে ফোন দেওয়ার কথা ছিল।
->>এইতো একটু আগেই বাস ছাড়লো।
->>কতক্ষণ লাগবে যেতে?
->>ঘন্টা দু'য়েকের মতো।
->>সকালে খেয়ে বের হইছো?
->>হ্যাঁ।তুমি খাইছো?
->>উঠলাম এখুনি তো।ফ্রেশ হয়ে খাবো।
->>আচ্ছা ফ্রেশ হয়ে খেয়ে নাও।
->>হুমম।কোথায় থাকবে ওখানে গিয়ে?
->>একটা হোটেলে বুকিং দেওয়া আছে।
->>ও আচ্ছা।হোটেলে পৌছে ফোন দিও।
->>ফোন দিতে পারি কী না?ওই দিকে নাকি নেটওয়ার্কের খুব সমস্যা।তুমি চিন্তা করে না।আমি ঠিক পৌছে যাবো।
->>ঠিক আছে।পৌছে ফোন করতে পারলে জানিয়ে দিও।রাখি।
->>আচ্ছা।
ফোন রেখে দিয়ে আমি লম্বা একটা হাই তুলে বিছনা থেকে নেমে ফ্রেশ হতে গেলাম।ফ্রেশ হয়ে এসে নাস্তা করে বেরিয়ে পরলাম হিনার জন্য সারপ্রইজের ব্যবস্থা করতে।শপিং মলে গেলাম গিফট কিনতে।গিফট কিনে বেরিয়েই দেখি হিনাও শপিং মলে ঢুকছে।যেখানে বাঘের ভয় সেখানেই রাত হয়।এখন যদি ওর সামনে পরি সারপ্রাইজ প্লান তো মাটি হবেই সাথে আমাকেও সেই মাটির মধ্যে পুতে রাখবে।চাচা আপন প্রাণ বাঁচা।
কোন মতে হিনার চোখ ফাকি দিয়ে বেরিয়ে এলাম।না আর এদিকে থাকা যাবে না।ভাগ্য একবার সাথ দিয়েছে বলে বার বার দিবে এমন তে না।বাসার দিকেই চলে গেলাম।বাসায় গিয়ে গোসল দুপুরের খাওয়া শেষে আবার ভাবতে লাগলাম কী কী করা যায় শুধু মাত্র তো গিফটাই কেনা হলো।ভাবতে ভাবতেই কখন ঘুমিয়ে পরছি খেয়াল নেই।সন্ধায় উঠে দেখি হিনার ২০টা মিসকল।ফোন ব্যাক করলাম।ফোন দেওয়ার সাথে সাথেই ফোন রিসিভ করলো।ফোনের উপরেই বসে ছিলো কি না আল্লাহই জানে।
->>হ্যালো।এতো বার ফোন দিলাম ফোন ধরলা না কেনো?
->>একটু ঘুমাইছিলাম।
->>কাজের জন্য গেছো না ঘুমাইতে গেছো?
->>এটাই কাজ।মানে যে হোটেল ভাড়া নিছে সেই হোটেলে কেমন ঘুম হয় সেইটা দেখার জন্যই আসা।
->>তোমার যতোসব আজগুবি প্যাচাল।আই মিস ইউ।
->>এই এখন রাখছি হ্যাঁ।স্যার ডাকছে।পরে কথা হবে।
ফোনটা কেটে দিলাম।জানি ওর আরও মন খারাপ হবে কিন্তু এখন যতোটা মন খারাপ হবে পরে ততোটাই বেশি খুশী হবে।রাতের খাবার খেয়ে মাকে বলে বাসা থেকে বেরিয়ে পরলাম।বললাম আজ রাতপ এক বন্ধুর বাসায় থাকবো।ঘড়িতে সময় তখন ১০টা হাতে আরও দুই ঘন্টা সময় আছে।কিছু মোমবাতি,গোলাপফুল,চকলেট নিয়ে ১২টা বাজার ১৫মিনিট আগে ওর বাসার সামনে চলে আসলাম।ওর রুমটা ২য় তালায় প্রাচীঘেরা বাসার একটু পিছন সাইটে।রুমের সাথে বারান্দাও আছে।তবে হাফ রেলিং দেওয়া।আর সৌভাগ্য বসত নিচ তালাটা এখন ফাঁকা।আমি আবার প্রাচী টপকানোর এক্সপার্ট ছিলাম।কলেজে প্রাচী টপকানের কোন প্রতিযোগিতা হলে আমি শিওর ফাস্ট হতাম।যাক সে কথা এখন।প্রাচীর টপকে প্রবেশ করে দেখি ওর রুমের লাইট নেভানো।মনে হয় ঘুমিয়ে পরছে আজও কাঁদতে কাঁদতে।মোমবাতি গুলো জালিয়ে সুন্দর করে সাজালাম।বাতাস না আসলেই হয় এখন।টিংটং।ঘড়ির কাটায় এখন ১২টা।ফোন দিলাম হিনাকে।দুইবার দেওয়ার পর রিসিভ করলো।
->>হ্যালো!কী করো?
->>এইতো ঘুমিয়েছিলাম।
->>এতো তারাতারি?
->>তো আর কী করবো?
->>আমায় মিস করছো না?
->>কে তুমি যে তোমায় মিস করবো?
->>কেউ হই না তবে ঘরের লাইট বুঝিয়ে নিরবে কেনো অশ্রু দিয়ে বালিশ ভিজাচ্ছো?
->>কে বলছে তোমায়?
->>কাউকে বলতে হয় না।আমার মন তো তোমার কাছেই সেই তোমার খবর দেয়।
->>যদি এতোই খবর পাও তাইলে কেনো চলে গেলে?
->>কে বলছে আমি চলে গেছি।আমি তো তোমার কাছেই আছি।
->>তা তো দেখতেই পাচ্ছি।
->>রুমের ভিতর থেকে কি করে দেখতে পারবে?দেখতে হলে রুমের বাহিরে আসতে হবে।
->>রুমের বাহিরে?
->>হুমম।বারান্দায় চলে আসো।
হিনা বারান্দায় চলে আসলো।বারান্দায় এসে হিনা তো আবাক।শুভ জন্মদিন লেখা একটা ব্যানারের দুই পাশে দুইটা বেলুন বেঁধে উরিয়ে দিলাম হিনার বারান্দার দিকে।আর নিচেও শুভ জন্মদিন লেখা মোমবাতি তো জ্জ্বলছেই।গোলাপফুল গুলো মুখে নিয়ে(কাটা বিহীন ফুল) রেলিংবেয়ে হিনার বারান্দায় উঠে এলাম।
->>কী করছো পরে যাবে তো।এসব পাগলামির কোন মানে হয়?
->>তুমি আছো তো।শুভ জন্মদিন।এই নাও তোমার জন্য লাল গোলাপ আর তোমার পছন্দর চকলেট।
->>তুমি এখানে?তুমি না কাজে গেছিলে?
->>তোমার জন্মদিন আর আমি কাজে ব্যস্ত থাকবো তা কখনও হতে পারে?
->>মানে কী?তুমি শহরের বাহিরে যাও নি?
->>না তো।
->>তার মানে শপিং মলে তোমাকেই দেখছিলাম?
->>বলো কী?দেখে ফেলছিলে তবুও আমায়?
->>দেখছিলাম কিন্তু ভাবছিলাম আমার দেখার ভূল কারণ তুমি তো বলছিলা তুমি শহরের বাহিরে।কেনো মিথ্যা বললা?
->>তোমাকে এভাবে চমকে দেওয়ার জন্য।
->>সত্যি,আমি এখনও ভাবতেছি এসব কী কল্পনাতেই হচ্ছে নাকী বাস্তবে?
->>ম্যাডাম সব স্বপ্নের মতো লাগলেও বাস্তব।আর এখনও আসল চমক তো বাকী আছে।
->>আরও কী বাকী আছে?
হাটু গেড়ে বসে পরলাম হিনার সামনে।পকেট থেকে রিং টা বের করে হিনার সামনে ধরে বললাম,
আজকে তোমার জন্মদিন,,
‎এ যেন এক বিশেষ দিন,,
‎বিশেষ দিনে দেবার তোমার,,
‎নেই কোন বিশেষ উপহার আমার।।

‎হাটু গেড়ে দু'হাত বাড়িয়ে,,
‎বলছি একবুক ভালোবাসা নিয়ে,,
‎এই তুচ্ছ রিংটি পরে,,
‎যাবে কী বউ সেজে তুমি আমার ঘরে??
(হিনার হাতে রিংটা পরিয়ে দিলাম।ও এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলো।)
->>জানি কবিতা ভালো বলতে পারি না।আর রিংটাও বেশি দামি না তাই বলে কাঁদার কী হলো?
->>ধুর পাগল!এতো সুন্দর ভাবে তুমি প্রপোজ করবে আমি তো কল্পনাতেও ভাবি নি।আর যেটাকে তুমি তুচ্ছ রিং বলছো সেটা এখন থেকে আমার জীবনের থেকেও বেশী দামী।এই রিং এখন থেকে সব সময় এভাবেই আমার হাতে থাকবে।কখনও আমার থেকে আলাদা হতে দিবো না।আর এবারের জন্মদিনটা আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ জন্মদিন।
->>তাইলে কী নিশ্চিত হবো যে চশমীটা আমার ওয়ান টাইম সাথী
->>কিইইই
->>না না! থুক্কু থুক্কু!পার্মানেন্ট জীবন সাথী হতে রাজী আছে?
->>হুমম।
->> কী করে বুঝবো?
(হিনা আমার শার্টের কলার ধরে ওর গোলাপি কমল ঠোঁটের উষ্ণ পরশ ছুয়ে দিলো আমার ঠোঁটে।এবার আমি টাস্কি খেয়ে গেলাম)
->>এবার শিওর হইছো?
->>না আর একবার।
->>ওরে পাজি।আর হবে না।বিয়ের পর যত ইচ্ছা চাইও।
->>ঠিকাছে।অপেক্ষা থাকলাম।মাকে তোমার কথা বলছি কাল তোমাকে নিয়ে যাবো।তৈরী থোকো।
->>কালই??
->>হুমম।
->>ভয় করছে।
->>ভয়ের কী আছে?মা বাঘ না ভাল্লুক?মা তেমাকে দেখছে,পছন্দও হইছে।এখন শুধু কথা বলবে তোমার সাথে।
->>আচ্ছা ঠিক আছে।
-‎>>আচ্ছা থাকো তাইলে এখন।আমি যাই।কেউ জাগা পাইলে আবার সমস্যা হবে।
->>এতো রাতে কই যাবা এখন?বাসায় কি বলে বের হইছো?
->>বলছি এক বন্ধুর বাসায় যাবো।সেখানেই যাবো এখন।ওকে বলাই আছে আজ আসতে একটু দেরী হবে।থাকো যাই।কাল তৈরী থেকো আমি নিতে আসবো তোমায়।
->>আচ্ছা।এই সাবধানে নামো।
->>বলতে হবে না।এগলোনে এক্সপার্ট আছি।
->>তা তো দেখতেই পাচ্ছি।
প্রাচীরের উপর উঠে হিনাকে রুমে পাঠিয়ে দিয়ে যেই নামতে যাব এমনি পিছন থেকে কে যেন বলে উঠলো,ওখানে কে রে? এই সেরেছে।দারওয়ান বুঝি জাগা পেয়ে গেলো।তারাতারি দেওয়াল থেকে লাফ দিয়ে দৌড়াতে লাগলাম।পিছনে শুনতে পেলাম কয়েকজন চোর চোর করে চিল্লাচ্ছে।সে সব শুনে যেন আমার মধ্যে মিলখা সিং এর আত্না ভর করলো।দে দৌড়।দৌড়াচ্ছি তো দৌড়াচ্ছি।লোক গুলায় মনে হয় পিছে পিছে আসছে।আগে দৌড়ে নিজের জান বাঁচাই, যদি বেঁচে থাকি পরে কথা হবে।এখন শুধু ভাগ মিলখা ভাগ.......

সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ১২:৫৮
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সাজানো ভোটে বিএনপিকে সেনাবাহিনী আর আমলারা ক্ষমতায় আনতেছে। ভোট তো কেবল লোক দেখানো আনুষ্ঠানিকতা মাত্র।

লিখেছেন তানভির জুমার, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:২২



১০০% নিশ্চিত বিএনপি ক্ষমতায় আসছে, এবং আওয়ামী স্টাইলে ক্ষমতা চালাবে। সন্ত্রাসী লীগকে এই বিএনপিই আবার ফিরিয়ে আনবে।সেনাবাহিনী আর আমলাদের সাথে ডিল কমপ্লিট। সহসাই এই দেশে ন্যায়-ইনসাফ ফিরবে না। লুটপাট... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজনীতির পন্ডিত, ব্লগার তানভীর জুমারের পোষ্টটি পড়েন, জল্লাদ আসিফ মাহমুদ কি কি জানে!

লিখেছেন জেন একাত্তর, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:৪৯



সামুর রাজনীতির ডোডো পন্ডিত, ব্লগার তানভীর ১ খানা পোষ্ট প্রসব করেছেন; পোষ্টে বলছেন, ইউনুস ও পাকিসতানীদের জল্লাদ আসিফ মাহমুদ ধরণা করছে, "সেনাবাহিনী ও ব্যুরোক্রেটরা বিএনপি'কে... ...বাকিটুকু পড়ুন

নীল নকশার অন্ধকার রাত

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:১৬


কায়রোর রাস্তায় তখন শীতের হিম হাওয়া বইছিল। রাত প্রায় সাড়ে এগারোটা। দুইটা বড় সংবাদপত্র অফিস: আল-আহরাম এবং আল-মাসরি আল-ইয়াউম—হঠাৎ করেই আগুনে জ্বলে উঠলো। কিন্তু এই আগুন কোনো সাধারণ দুর্ঘটনা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদি ভাই, ইনসাফ এবং একটা অসমাপ্ত বিপ্লবের গল্প

লিখেছেন গ্রু, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৮



ইদানিং একটা কথা খুব মনে পড়ে। হাদি ভাই।

মানুষটা নেই, কিন্তু তার কথাগুলো? ওগুলো যেন আগের চেয়েও বেশি করে কানে বাজে। মাঝেমধ্যে ভাবি, আমরা আসলে কীসের পেছনে ছুটছি? ক্ষমতা? গদি? নাকি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৩২

আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে[

স্বাধীন সাংবাদিকতার কণ্ঠরোধে রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা, মব-রাজনীতি ও এক ভয়ংকর নীরবতার ইতিহাস
চরম স্বৈরশাসন বা ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রেও সাধারণত সংবাদমাধ্যমের কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার সাহস কেউ করে না। কারণ ক্ষমতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×