দিন কয়েক আগে একটি জাতীয় দৈনিকে গবেষক, প্রাবন্ধিক ও কলাম লেখক সৈয়দ আবুল মকসুদ আহমেদ 'রামদাবাদী ছাত্ররাজনীতি' শিরোনামে একটি কলাম লিখেছেন। কলামটিতে আবুল মকসুদ লিখেছেন আজকাল রামদাবাদী, জল্লাদেরা 'স্বাধীনতা', 'মুক্তিযুদ্ধের চেতনা' এ জাতীয় শব্দগুলো বেশি বলে। তিনি আরো লিখেছেন-
'স্বাধীনতা', 'মুক্তিযুদ্ধের চেতনা' এসব শব্দবন্ধ আজ প্রতিমুহূর্তে উচ্চারিত। রামদাবাদী জল্লাদদের মুখেই আজ ওসব বেশি ধ্বনিত হয়। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে আরেকটি শব্দবন্ধ: 'বাংলার মাটি'। যেন ইটখোলার মালিকদের মতো সরকারি দল ও তাদের উপসংগঠনগুলো কিনে নিয়েছে সারা বাংলার মাটি ও তাতে যা আছে তার সবই। অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে, দেশের মানুষের ভাগ্যবিধাতা সরকার আর সরকারের ভাগ্যবিধাতা ছাত্রলীগ।
প্রতিটি স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে আজ ছাত্রলীগ দুর্গ গড়ে তুলেছে। যেমন নবাব সিরাজউদ্দৌলার সরকারকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে কলকাতায় ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গ গড়ে তুলেছিলেন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কর্মচারী রবার্ট ক্লাইভ। রামদাবাদী ‘ছাত্রনেতারা’ তাদের যার যা আছে তা-ই নিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করছে। কারোরই মাফ নেই। নবযুগের বঙ্গবীরদের হাতে টাঙ্গাইলের কাদের সিদ্দিকীর নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন সেদিন। তাঁর গাড়ি চুরমার হয়েছে। তেল-গ্যাস জাতীয় কমিটির সবচেয়ে নিরীহ মিছিলে হামলা হয়েছে। টিউশন ফি বাড়ানোর প্রতিবাদে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের মিছিলে হামলা হয়েছে। বুধবার নাটোরে বিএনপির গাড়িবহরে হামলা হয়েছে। নিহত হয়েছে একজন, আহত শতাধিক। এর নাম গণতান্ত্রিক রাজনীতি।
রামদাবাদী জল্লাদ এই ছাত্রনেতারা ও কর্মীরা তাদের কীর্তির চেয়ে মহৎ। সোয়া বছরে যা ঘটেছে তা ইতিহাসের অমূল্য উপাদান। আগামীকালই যদি বামদাবাদীরা তাদের অস্ত্র সমর্পণ করে এবং শিক্ষাঙ্গনগুলো জুরিখ বা বার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো শান্তিপূর্ণ হয়ে যায়, তবু এনএসএফের মতো চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে ছাত্রলীগ।
কেবল সৈয়দ আবুল মকসুদের নয় দেশের সকল মানুষের মনের অবস্থা প্রায় একই। আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ শব্দগুলো শুনলেই মনের মধে রামদা হাতে জল্লাদের মুখ ভেসে ওঠে।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা জুন, ২০১০ দুপুর ১:৪২

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।






