১.
"...ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স পাশ দিয়ে বেড়িয়েছি প্রায় আট মাস। জিন প্রকৌশল ও জীবপ্রযুক্তি বিষয়টা দেশে নতুন। চাকরির ভবিষ্যৎ তাই ফকফকে। এটা বুঝে নিয়ে ডানে বামে বন্ধুরা স্কলারশীপ বাগিয়ে ইউরোপ-আমেরিকায় উড়াল দিচ্ছে। কিছুটা অলস আর গবেট প্রকৃতির হওয়ায় আমি এসবের ধার না ধেরে আরামসে তাদেরই কারো কারো বিয়ে খেয়ে বেড়াচ্ছি। আজকেও সেজেগুজে প্রায় নেচে নেচে বিয়ে বাড়ী গিয়েছিলাম। জবরদস্ত এক মুরগীর ঠ্যাং, দেড় প্লেট পোলাও আর দুই গ্লাস বোরহানি গিলে এখন মাতাল মাতাল লাগছে। টালমাটাল বাড়ি ফিরে বাম দিকে কাত হয়ে শুয়ে পড়েছি।
ঘুমটা জমে মাত্র ক্ষীর ভাব এসেছে, আর অমনি তড়াক্ করে উঠে বসলাম। মনের খচখচানিটা একটা বিড়াল সেজে লেজ বাগিয়ে কান চুলকে দিয়েছে। গত কয়েকদিন আলসেমির বশে অ্যাপ্লিকেশনগুলো নিয়ে আর বসা হয় নি। স্কলারশীপ তো আর বৃষ্টি না যে আকাশ থেকে টুপটপ করে কোল এসে পড়বে। কিন্তু এত রাতে বিবেকের অত্যাচার ভাল লাগে না, ধ্যাৎ! আরো কটা গুরুতর গালি দিয়ে মুখে পানির ঝাপ্টা মেরে ঘাড় সোজা করে বসলাম...।"
..এ্যাইইক্! হার্ড ব্রেক্!!! আর না বলি।
ক্লাসের তেরো জনের ভেতর বারো নম্বর রোলের প্রায় নিরেট মাথার আমি কিভাবে যেন হাতড়ে হাতড়ে একটা বৃত্তি জুটিয়ে পিএইচডি করতে জার্মানি চলে এসেছিলাম। এই গল্পটাই নিজের ভাষায় বলেছি লম্বা ম্যারাথন আকৃতির কাহিনী 'ভোঁওও...ইন্টারভিউ'-তে।
তার পুরোটা পড়তে চাইলেঃ
''স্বপ্নের সীমানা পেরিয়ে"
মাতৃভাষা প্রকাশ,
স্টল ২০১-২০২
আর
রকমারিতেও পাওয়া যাচ্ছে বইটা।
দেশে প্রায় বিনে পয়সায় পড়াশোনা করে আমরা যারা বিদেশে এসে পড়ছি আর গবেষনা করছি, তারা সবসময়ই চাই দেশকে কিছু একটা ফিরিয়ে দিতে। কিন্তু দেশের ঋন শোধ হবার না। তবুও বিদেশের মাটিতে নিজেদের অভিজ্ঞতাগুলো হাসি-ঠাট্টায় গল্পচ্ছলে শুনিয়ে ছোট ভাইবোনদেরকে একটা পথ দেখাতে চেয়েছি। তাই পৃথিবীর নানান প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা আমরা আট জন মিলে আমাদের জীবন থেকে নেয়া আট রঙের আটটা গল্প দিয়ে সাজিয়েছি এই বইটা। অষ্টব্যঞ্জন বললেও ভুল হবে না।
বইয়ের একটা লভ্যাংশ আবার সুবিধাবঞ্চিত ছাত্রছাত্রীদের সাহায্যে খরচ করা হবে। এমন চমৎকার উদ্যোগ আর হয় না। সাথে জড়িত ঝকঝকে মানুষগুলোকে ঝলমলে অভিনন্দন।
-ডঃ রিম সাবরিনা জাহান সরকার
গবেষকঃ ইন্সটিটিউট অব প্যাথোলজি, স্কুল অব মেডিসিন,
টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি মিউনিখ, জার্মানি
২৭.০২.২০২০
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ভোর ৪:১৪