somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মোহাম্মদ মোস্তফা রিপন
ক্রিটিক্যাল থিঙ্কিং এবাউট ওয়ার্ল্ড পলিটিক্স্,স্পেশালি মিনা রিজিয়ন। মেইনস্ট্রিম মিডিয়ার কিছুই বিশ্বাস করি না।

মধ্যপ্রাচ্য এবং মিনা অঞ্চলে যে কাজগুলু বাইডেন প্রশাসন করতে পারবে না।

১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকায়(মিনা অঞ্চলে) যে কাজগুলু বাইডেন প্রশাসন করতে পারবে না।
২০শে জানুয়ারি বাইডেন আমেরিকার ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার সাথে সাথে ট্র্যাম্পের চার বছরের পররাষ্ট্রনীতির পরিসমাপ্তি ঘটবে।এই চার বছরে তিনি দন্দে জড়িয়েছিলেন দীর্ঘদিনের মার্কিন মিত্রদের সাথে শুধুমাত্র মার্কিন অর্থনৈতিক স্বার্থের কারনে।কিন্তু মার্কিন যুদ্ধবাজদের কাছে মার্কিন অর্থনৈতিক স্বার্থের চেয়েও বড় স্বার্থ হল তাদের হেজিমনিক স্বার্থ।তবে যুদ্ধবাজদের প্রতিনিধি হিসেবে বিভক্ত মার্কিন সমাজে পূর্ববর্তী পররাষ্ট্রনীতি থেকে বের হয়ে আসা বাইডেনের জন্য খুব সহজ হবে না এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তিনি ব্যার্থ হবেন এটা নিশ্চিত করে বলা যায়।
বাইডেনের পররাষ্ট্রনীতি দেখভালের টিম ইতিমধ্যেই তিনি গঠন করেছেন।এখন শুধু কংগ্রেসের অনুমোদনের অপেক্ষায়।ডেমোক্রেট নিয়ন্ত্রিত কংগ্রেসে সেটা পেতেও বাইডেনকে খুব বেশি বেগ পেতে হবে না।মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকায় (মিনা অঞ্চল) যে কাজগুলু বাইডেন করতে পারবেন নাঃ
মরক্কো থেকে শুরু করে পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে আফগানিস্থান পর্যন্ত,বাইডেনকে কিছু সিদ্ধান্ত নিতে হবে যা তার জন্য সহজ হবে না।ইজরায়েলি লবির ফলে বিতর্কিত পশ্চিমা সাহারা অঞ্চলে মরোক্কোর সার্বভৌমত্বকে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আশ্চর্যজনক সিদ্ধান্তের কারণে আলজেরিয়া এবং এর মিত্র সাহারাবি আরব ডেমোক্রেটিক রিপাবলিকগুলু চরম ক্ষুব্ধ।, যারা এই অঞ্চলকে ভবিষ্যতের রাষ্ট্রের দাবি করে।
সাহারা অঞ্চল নিয়ে জাতিপুজের কয়েক দশকের মধ্যস্থতা ছিল ব্যার্থতায় পর্যবসিত।যার ফলে আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী এটা এখনো বিতর্কিত এলাকা।ইজরায়েলের সাথে মরক্কোর সম্পর্ক স্থাপনের বিনিময়ে ট্র্যাম্প প্রশাসন যে কাজটি করেছে সেখানে মার্কিন কোন স্বার্থ ছিল না।বরঞ্চ মধ্যস্থতাকারী হিসেবে মার্কিন ভুমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে।এই জায়গায় বাইডেন প্রশাসন সামনেও আগাতে পারবে না আবার পিছনেও ফিরে যেতে পারেন না।
এর পরের হটস্পট হল লিবিয়া।যেটাকে বাইডেনের গুরু সাবেক প্রেসিডেন্ট ওবামা ধংস করে দিয়েছিল।প্রেসিডেন্ট ট্র্যাম্প সেখানে কোন উল্লেখযোগ্য ভুমিকা পালন করতে পারেনি।উপরন্তু তিনি বিভ্রান্তিমূলক বার্তা প্রেরণ করেছেন।২০১২ সালে যখন খলিফা হাফতার জাতিপুঞ্জ সমর্থিত সরকারের বিরুদ্ধে ত্রিপোলি অভিযান শুরু করেছিলেন তখন ট্র্যাম্প তাকে ফোন করে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন। এখানেও বাইডেনের শুধু কথা বলা ছাড়া আর কিছুই করার নেই।২০১১ সালে যখন তার বস ওবামা লিবিয়া ধংসে নামেন তখন বাইডেন এটার বিরুধি ছিলেন।তিনি প্রশ্ন তুলেছিলেন গাদ্দাফিকে ক্ষমতা থেকে সড়ালে লিবিয়ার পরিনতি কি হতে পারে।তখনো তিনি এই প্রশ্নের উত্তর পাননি এবং ভবিষ্যতেও পাওয়ার সম্ভাবনা নেই।
এর পরের দেশটি হল মিনা অঞ্চলের মার্কিন মিত্র মিশর। রাষ্ট্রপতি ট্রাম্প একবার বলেছিলেন আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি হল তার "প্রিয় একনায়ক"।বাইডেন এখানেও কথা বলবেন কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হবে না।তিনি মানবাধিকার লঙ্ঘনের শাস্তি হিসাবে তাঁর প্রাক্তন বস ওবামার পথ অনুসরণ করতে পারেন, প্রতি বছর মিশরকে প্রদত্ত য ১.৫ মিলিয়ন ডলার সামরিক সাহায্য আটকে দিতে পারেন।এটি কায়রোকে তার মানবাধিকারের দেশীয় নীতি পরিবর্তন করতে বাধ্য করবে না।
তারপরে রয়েছে ইজরায়েল। ট্র্যাম্প সুদূর সুদান সহ বেশ কয়েকটি আরব দেশকে ইজরায়েলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার জন্য ব্ল্যাকমেইল করেছিলেন, জেরুজালেমকে এর রাজধানী হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন এবং সেখানে মার্কিন দূতাবাস স্থানান্তরিত করেছিলেন। বাইডেন এর কোনটি পাল্টাবেন না। তবে তিনি প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন (পিএলও) ওয়াশিংটন ব্যুরো পুনরায় চালু করবেন এবং ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের অনুমোদিত সংস্থাগুলিকে মানবিক তহবিল পুনরায় চালু করবেন। এর কোনটিই বর্বর ইজরায়েলীয় দখলের আওতায় থাকা বেশিরভাগ ফিলিস্তিনিদের উপকার করতে পারবে না। বিশেষত, গাজার দীর্ঘ অবরোধ অব্যাহত থাকবে।

সিরিয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে আরও পশ্চাদপসরণ ব্যতীত সেখানকার পরিস্থিতি পরিবর্তনের সরঞ্জাম মার্কিনিদের হাতে খুব কমই রয়েছে। ছোট আকারের মার্কিন সামরিক বাহিনী উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ায় মোতায়েন থাকবে, দায়েশ প্রত্যাবর্তন অব্যাহত রাখবে এবং গোলান হাইটসের উপরে ইজরায়েলের সার্বভৌমত্বের স্বীকৃতি বজায় থাকবে।বাইডেন কোন কঠোর সামরিক সিদ্ধান্ত নেবেন না, উদাহরণস্বরূপ, আবার দায়েশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা। তিনি সিরিয়ার প্রধান খেলোয়াড় তুরস্ক ও রাশিয়ার মতো অন্যদের সাথে আরও অংশীদারিত্ব স্থাপনের চেষ্টা করবেন। বাশার আল-আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞাগুলি আরো কঠোর করবেন।এবং সিরিয়ার তেল চুরি অব্যাহত থাকবে।

মার্কিন শক্তিশালী ঐতিহাসিক মিত্র সৌদি আরবের বিরুদ্ধে বাইডেন মাঝে মাঝে হুংকার দিবেন।এর বাইরে খুব বেশি কিছু করার সামর্থ্য বা ক্ষমতা তার নেই।ইরানের বিরুদ্ধে সৌদি কনসার্নের বাইরে যাওয়াও বাইডেনের পক্ষে সম্ভব নয়।মানবধিকারের কথা বলে কিছুদিন অস্র বিক্রি বন্ধ রাখলেও সেটা দীর্ঘ মেয়াদে সম্ভব নয় কারন বাইডেন প্রশাসন অস্র নির্মাতাদের নিয়ে পরিপুর্ন।চরম জায়োনিস্ট বাইডেন প্রশাসনের জন্য ইরানের বিরুদ্ধে দুর্নীতিগ্রস্থ সৌদিদের দরকার সেই সাথে সৌদিরা যে কোন সময় ইজরায়েলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ঘোষণা দিতে পারে।
ইরাক মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির একটা গুরুত্বপুর্ন জায়গা দখল করে থাকবে।ইরাকি জনসাধারন এবং রাজনৈতিক চাপের কারনে সীমিত পরিসরে সৈন্য প্রত্যাহার চলমান থাকবে।ইরান,ইরাকে মার্কিন উপস্থিতিকে আরো ভয়াবহ করে তুলবে এবং পরমানু আলোচনায় ইরান এই সুবিধাকে কাজে লাগাবে।

ইরান উপসাগরের সর্বত্র তার অস্তিত্ব জানান দিয়েছে।এর বিপরীতে বাইডেন ইরানের সাথে পরমানু চুক্তিতে ফিরে আশ্বাস দিয়েছেন।কিন্তু ইরানের দুই শত্রু সৌদি এবং ইজরায়েলের চাপের কারনে বাইডেনের পক্ষে সেটা ততটা সহজ হবে না।যদি না ইরান ব্যালাস্টিক ক্ষেপ্নাস্র সেক্রিফাইস করে।দ্বিতীয়ত হামাস,হিবুল্লাহ এবং সিরিয়াতে তার ভুমিকা থেকে সরে না আসে।যেটার ইরানের নিরাপত্তার জন্য ভয়াবহ হুমকি সৃষ্টি করবে।তাই ইরানের উপর থেকে নিকট ভবিষ্যতে অবরোধ তুলে নেওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই।কমপক্ষে ২০২২ সালের শেষের আগে।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৩:০৪
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×