শীতকাল আসলে মনটা উদাস লাগে। খুব ছোটবেলায় গাইবান্ধায় যাইতাম ট্রেনে কইরা। সকালে কুয়াশায় ঢাকা রংপুর। দুই হাত দূরের জিনিসও দেখা যায় না। এর মধ্যে রিকশায় কইরা রেলস্টেশন যাইতাম। আব্বা আমার মাফলারটা কেমনে জানি গলায় আর কানে পেচায় দিত। খুব আরাম হইত তখন। নিজে কখনও এমন কইরা মাফলার বানতে পারতাম না। আম্মা পিছের রিকশায় থেইকা বার বার উদ্বেগ জানাইতো- ঠান্ডা লাগতেছে না তো! মায়েরা এমনই। নতুন কিছু না।
রাস্তার মোরে মোরে আগুন জ্বলে আর ভাপা পিঠার দোকান। দোকান বলতে শুধু একটা চুলা, কিছু লাকড়ি আর আটা রাখার কুলা। খাইতে তেমন মন না চাইলেও দাড়ায় দেখতে ইছ্ছা করতো পিঠা বানানো। কেমন অদ্ভুত সহজ ভংগিতে একের পর এক পিঠা জমাট বাধতে থাকে গুড়া গুড়া আটা থেইকা। কি সুন্দর সাদা সাদা পিঠা আর হলুদ গুড়ের ছোপ তার মাঝে। আহ্।।।
দাদা বাড়িতে তখন ধান কাইটা ধান ভানতেছে। পলের আটিগুলা বাড়ির সামনে আসমানের সমান স্তুপ কইরা রাখা। স্তুপের মাথায় উইঠা শুইয়া থাকতাম। সাথে লাগানো একটা বড়ই গাছ ছিল। গাছের দিকে তাকায় কাটা দেখতাম। টক বড়ই খাইতে ভাল্লাগতো না।
নভেম্বর ডিসেম্বর মাস দুইটা বড় আবেগের মাস। জন্মও হইছিল নভেম্বরে। ফাইনাল পরীক্ষা শেষ হইতো এই সময়। তারপরই গাইবান্ধায় মানে নানা আর দাদা বাড়িতে ছুটি কাটানো। কই গেলো দিনগুলা?????
আর লিখতে ইচ্ছা করতেছে না। ট্রেনে কইরা রাতে ফেরার পথে গ্রামের মেলা নয়তো পল্লী গানের আসর একটা ঝলকের মত চোখে পড়তো। অদ্ভুত গান!! ভিতরে ঢুইকা কইলজায় কেমন একটা জানি মোচর দেয়.....
একটা গানের লিন্ক দিলাম
তুমি জানোনারে প্রিয়