
রাজেনঃ নমষ্কার দাদা, তা কেমন চলছে?
আনন্দঃ এইতো চলচে দাদা কোনোরকম। মা দুজ্ঞার কৃপায় বেঁচে আচি।
রাজেনঃ ওদিক শুনলাম বড়ো মাছ মাংস খাচ্চেন! মা দুজ্ঞার কৃপা ত নয় গো দাদা, মা লক্ষী...
আনন্দঃ দাদা দূর্গা হলেন বিপদনাশিনী, তাঁকে স্মরণ তো করবোই।...দাদা, ইলিশ মাছ কিনেছিলুম গেল মাসে পুরো হাফ কেজি! আজো চেটেপুটে খাচ্চি।
রাজেনঃ আঁশগুলো ফেলে দেননি ত আবার?
আনন্দঃ কি যে বলেন দাদা! আঁশ রেকে দিয়েচি পরের মাসের জন্য, হে হে...
রাজেনঃ তা তো বটেই! শুনেছিলাম ওপারের বাঙ্গালেরা নাকি আঁশটাশ ফেলে দেয়, কিরকম ব্যাপার বলুন তো!
আনন্দঃ আর বলবেন না! ওদের এক্কেবারে মোগলা রুচি! তা বাপু ইলিশ আবার অত বাচাবাচির কি আচে অ্যাঁ? তা দাদা আপনি কি করচেন?
রাজেনঃ তা চলচে একরকম। আপনার বৌদির শরীরটা ঠিক ভাল যাচ্চে না।
আনন্দঃ সেকি দাদা! কি হলোয়াবার হটাৎ? সুখবর টুখবর পাচ্চি নাকি?
রাজেনঃ আজ্ঞে, ঠিকই ধরেছেন।
আনন্দঃ তাহলেতো দাদা এবার পুরো পোয়াটাক সন্দেশ খাওয়াতেই হবে। এ আমি আগেই বলে রাখলুম!
রাজেনঃ আপনার জন্য গোটা চারেক বরাদ্দ রইল। তা ঘুরে যান না এদিক!
আনন্দঃ চারেক! আহা আহা দাদার কি দয়ার শরীর! আসবো দাদা, এসে চা-বিস্কুট খেয়ে যাবো দুপুরে কেমন?
রাজেনঃ অবশ্যই! খরচ এখন না কল্লে কবে আর করি বলুন! চা খেয়ে কিন্তু যেতেই হবে দাদা!
আনন্দঃ তা আর বলতে দাদা! আপনিও আসবেন দাদা! এখানে বিনু ময়রার দোকানে যা মালপো বানায় না! নিজেও খাবেন আমাদেরও খাওয়াবেন!
রাজেনঃ জমবে ভালো, কি বলেন? ওই বাঙালদের দেখিয়ে দেব... বলে কিনা, "আমরা কোলকেতেদের পুঁটি মাছের প্রাণ!"
আনন্দঃ ঠিকই বলেচেন, আরে বাপু এতো খরচ করলে সঞ্চয় কীভাবে হবে অ্যা? নাতি-পুতিদের ভবিষৎ দেখতে হবে না?
রাজেনঃ বেড়ে বলেচেন গো দাদা!
আনন্দঃ আরে ইলিশ মাসে একবার কিনলেই তো হয়, ওরা কীনা ফিসপ্তাহেই খাচ্চে! অপচয়ের কি একশেষ দেকেচেন!
রাজেনঃ সেই তো দেকচি! ওরা আবার কিনা রুই-কাতল এসবও খায়! এত মাছ কোথায় পায় বলুন তো দেখি?
আনন্দঃ আর বলবেন না দাদা! পদ্মার এয়াব্বড় রুই! হালদার পাংগাস, কর্ণফুলির মহাশোল, সাতক্ষীরার গলদা চিংড়ি, মাগুর, শীং আহা আহা! সব অপচয়ের অনাসৃষ্টি!
রাজেনঃ সেই তো বলচি। এই ত গতকাল শুনচিলাম পাশের বাসায়... দিনে নাকি দু'কেজি আলু খাচ্চে!
আনন্দঃ দুউউউউউউউউ কেজিইইইইই!
রাজেনঃ এদিকে আমাদের পাঁচকেজিতেই মাস পেরিয়ে যায়!
আনন্দঃ রাম! রাম!
রাজেনঃ রাম! রাম!
আনন্দঃ কী কলিকাল এলোরে বাপু!
রাজেনঃ কৃপা কর হে প্রভু!
আনন্দঃ দিন দিন আরো কতকী শুনবো! একদিন শুনবেন ওরা ফিহপ্তাতেই মাংসও খাচ্চে!
রাজেনঃ না গো দাদা, হররোজই খায়!
আনন্দঃ আঁ, ওরে আমায় কেউ ধর!!!!
রাজেনঃ এসব শুনলেই আবার বুকের বাঁ-পাশে টনটন করে ওঠে।
আনন্দঃ কেমন যেন চিনচিন করচে দাদা। আজ তবে রাকি! এমনই অসভ্যরকমের বিল করেনা শ্যালারা ফোনের! দুদণ্ড কতাও বলা যায়না।
রাজেনঃ সে আর বলতে, যত নষ্টের গোড়া এই ঢাকা শহর দাদা। পালাতে হপে দেখচি! ঘটি ডুবল বলে, রক্ষা কর মা! রক্ষা কর!!
আনন্দঃ জয় মা ভবতারিণী, হ্যালো! হ্যালো! যাচ্চলে লাইনটা কেটে গেলো!
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১১ দুপুর ১:০৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




