somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

তানজীর আহমেদ সিয়াম
সবার অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে আমি কোন ব্লগার নই মন চায় তাই লিখি তথ্য-উপাত্ত সবার সাথে শেয়ার করি ।nজব এর পাশাপাশি এয়ার টিকেট ও ট্রাভেল ভিসার ব্যাবসা করি ।nধন্যবাদn

কুড়ানো ৫৬ (চেরনোবিল-৫)

২২ শে জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১২:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
পর্ব-৫




চেরনোবিলে দুর্ঘটনা তো ঘটে গেলো। মানুষজন সরিয়ে নেয়া হলো। এখন? রেডিয়েশন তো কমছেনা। বাড়ছে তো বাড়ছেই। আগুন এমনভাবে জ্বলছে যে মনে হচ্ছে কাছাকাছি আরেকটা রিয়েক্টরে গিয়ে লাগবে। রিয়েক্টর ৩ এ যদি গিয়ে লাগে তবে সারা ইউরোপকে কেউ বাঁচাতে পারবেনা। ইতিমধ্যে বাতাসের গতির সাথে বিষাক্ত মেঘ গিয়ে বৃষ্টি হয়েছে ফ্রান্সে তার আরও দুরে বৃটেনে।

পুরো বলতে গেলে অনেক বড় হয়ে যাবে। সারাংশ হলো - সোভিয়েত সরকার পাঁচলক্ষ শ্রমিক নিয়োগ করেছে আগুন নেভানোর জন্য, তেজস্ক্রিয়তা নিয়ন্ত্রণের জন্য বিভিন্ন কৌশলে। রিয়েক্টর ৪ এর পরিশিষ্ট ছাদে গ্রাফাইট জ্বলছে, এই গ্রাফাইট পরিস্কার বা আগুনমুক্ত ঠান্ডা করতে না পারলে রেডিয়েশন স্থবির করা যাবেনা, বাড়তেই থাকবে।

এরমধ্যে টানেল খুঁড়ে পানির ব্যবস্থা করা, সাথে যেসব গ্রাফাইট অলরেডি জ্বলে গেছে বা এখনও জ্বলছে সেসব থেকে নির্গত রেডিয়েশন যেন নদীতে পৌছতে না পারে সে ব্যবস্থা করা। নদীতে যদি তেজস্ক্রিয়তা পৌঁছে তবে শেষ হয়ে যাবে অনেকগুলো দেশ কারণ নদী গিয়ে মিলিত হয়েছে ব্ল্যাক সী বা কৃষ্ণ সাগরে। কৃষ্ণ সাগর দুষিত হওয়া মানে পূর্ব ইউরোপ শেষ হয়ে যাওয়া।

প্রথমে রোবট দিয়ে কাজ করানোর চেষ্টা চালানো হয়েছিল কিন্তু লাভ হয়নি। প্রত্যেকটা রোবট অকেজো হয়ে গেছে তেজস্ক্রিয়তায়। শেষ পর্যন্ত মানুষ নামানো ছাড়া উপায় ছিলনা। রোবটগুলি দেখেছি দাড়িয়ে থেকে অনেকক্ষণ। রোবটগুলোকে আমার কাছে যন্ত্র মনে হয়নি মনে হয়েছে মানুষের ভুলের খেসারত দিতে গিয়ে মরে যাওয়া কোন প্রাণী। (প্রথম ছবি)।

যাইহোক, পাঁচ লাখের মধ্যে পঞ্চাশ হাজার শ্রমিক জানতো সাক্ষাৎ মৃত্যু ওদের জন্য অপেক্ষা করছে। তবুও ওরা গিয়েছে সরকারের নির্দেশে, মানবতার জন্য। মানবতার জন্য আত্মবলিদান। আবার অনেকে গিয়েছে টাকার জন্য। নিজে মরে গেলেও অন্তত পরিবার অনেকগুলো টাকা পাবে।

সরকার ওদের পরিবারকে কম্পেনসেশন দিয়েছে।

চেরনোবিলে যত মানুষ পশুপাখি আর গাছ মারা গেছে তেজস্ক্রিয়তায় তাদের মাটি চাপা দিয়ে উপরে সিমেন্টের ঢালাই দেয়া হয়েছে রেডিয়েশন নিয়ন্ত্রণের জন্য। প্রত্যেকটা মৃত মানুষ বা প্রানী বা গাছ ছিল বিষাক্ত। কঠিন রোগে মানুষ মারা গেলে লাশ মাটি চাপা দিলেই শেষ কিন্তু রেডিয়েশনে মানুষ বা পশু মারা গেলে তা মাটি চাপা দিলেও শেষ নয়, তেজস্ক্রিয়তা রয়ে যায় শতাব্দীর পর শতাব্দী।

রিয়েক্টর ৪ এর রেডিয়েশন কন্ট্রোল করার জন্য ৩৬টি দেশ থেকে ফান্ড সংগ্রহ করা হয়। আর্চ শেইপের একটা সিলিন্ডারের মত ঢাকনা দিয়ে রিয়েকটর ৪ কে ঢেকে রাখা হয়েছে গ্রাফাইট পরিস্কার করার পর। রেডিয়েশন নিয়ন্ত্রণ হয়েছে, এখনও আছে। (ছবিতে আমার পিছনে)।

সেই যে এলাকা থেকে সবাই সরে গেলো, সব গাছ মরে গেলো, সব প্রাণী মরে গেলো তারপর কি হলো? বলা হয়েছিল আগামী ১০০ বছর লাগবে এই এলাকা তেজস্ক্রিয়তা মুক্ত হতে, নতুন করে প্রানের সঞ্চার হতে।

তারপর ত্রিশ বছর ওখানে কেউ যায়নি। এই ত্রিশ বছরে ওখানে গড়ে উঠেছে অরণ্য, পশু আর পাখিদের স্বর্গ। এ এক বিস্ময়..


সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১২:২৩
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

লিখেছেন মিশু মিলন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×