somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

উলামায়ে ‘সূ’ বা ধর্মব্যবসায়ী কারা? কি তাদের পরিচয়?

০১ লা ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ১২:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ‘আমার উম্মতদের মধ্যে যারা উলামায়ে ‘সূ’ বা ধর্মব্যবসায়ী তারা নিকৃষ্টেরও নিকৃষ্ট।’

সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, সাবধান! নিশ্চয়ই নিকৃষ্টেরও নিকৃষ্ট লোক হলো- উলামায়ে ‘সূ’ অর্থাৎ দুনিয়ালোভী ধর্মব্যবসায়ী মাওলানারা। আর নিশ্চয়ই সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ হচ্ছেন হক্কানী-রব্বানী আলিমগণ উনারা। (দারিমী শরীফ)

বর্তমানে তাই দেখা যাচ্ছে, কিছু সংখ্যক তথাকথিত আলিম অর্থাৎ উলামায়ে ‘সূ’ বা ধর্মব্যবসায়ীদের কারণে মুসলমান উনাদের পবিত্র ঈমান ও আমল হুমকির সম্মুখীন। তাদের কারণে সাধারণ লোক মনে করে গণতন্ত্র ইসলামেরই অংশ, ছবি তোলা শরীয়তে জায়িয, হরতাল করা শরীয়তে নিষিদ্ধ নয়, টেলিভিশন দেখা ও টেলিভিশনে প্রোগ্রাম করা জায়িয, খেলাধুলা করা ও টেলিভিশনে দেখা জায়িয, বেপর্দা হওয়া, নারী নেতৃত্ব মানা ইত্যাদি জায়িয।’ নাউযুবিল্লাহ! কারণ উলামায়ে ‘সূ’রা অহরহ পেপার-পত্রিকায় নিজের ছবি ছাপাচ্ছে এবং পবিত্র ইসলাম উনার নামে হারাম টিভি চ্যানেলে প্রোগ্রাম করছে। পবিত্র ইসলাম উনার নামে গণতন্ত্র করছে, হরতাল করছে, নারী নেতৃত্ব মানছে, বেপর্দা হচ্ছে, খেলাধুলা করছে ও দেখছে। নাউযুবিল্লাহ!
অথচ এগুলো সবই পবিত্র ইসলামী শরীয়ত উনার নির্দেশ মুতাবিক কাট্টা হারাম। কিন্তু তারা বিনা দ্বিধায় এ হারাম কাজগুলো করে যাচ্ছে আর সাধারণ মানুষকে গুমরাহ বা বিভ্রান্ত করছে। মূলত এরাই হলো উলামায়ে ‘সূ’ বা ধর্মব্যবসায়ী অর্থাৎ নাহক্ব আলিম। এদের প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “হযরত যিয়াদ ইবনে হুদাইর রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, আমাকে হযরত উমর ইবনুল খত্তাব আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, আপনি বলতে পারেন কি, কোন জিনিস পবিত্র ইসলাম উনাকে ক্ষতি করবে? আমি বললাম না (আমি জানি না)। তখন তিনি বলেন, আলিমদের পদস্খলন (উলামায়ে ‘সূ’দের মনগড়া ফতওয়া ও আমল), উলামায়ে ‘সূ’ বা মুনাফিকদের মহান আল্লাহ পাক উনার কিতাব নিয়ে তর্ক-বাহাছে লিপ্ত হওয়া এবং গুমরাহ শাসকদের গুমরাহীমূলক হুকুম বা আদেশ-নিষেধ। (পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাকে ক্ষতি করবে)।” (দারিমী শরীফ)

অথচ পবিত্র ইসলামী শরীয়ত উনার ফায়সালা হলো- হারামকে হালাল জানা আর হালালকে হারাম জানা কুফরী। অনুরূপ বিজাতীয় ও বেদ্বীনি মতবাদকে পবিত্র ইসলাম উনার অংশ মনে করাও কুফরীর অন্তর্ভুক্ত। তবে কি প্রমাণিত হয় না যে, তাদের কারণে সাধারণ মুসলমানগণ উনারা কুফরী করে পবিত্র ঈমান উনাকে ক্ষতি করছে? আর তাই তো পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “আমার উম্মত উনাদের দুই সম্প্রদায়, তারা যখন ইছলাহ বা সংশোধন হবে, তখন সকল মানুষ (মুসলমান উনারা) সংশোধন হবে। আর তারা যখন পথভ্রষ্ট হবে, তখন সকল মানুষ (মুসলমান তারা) পথভ্রষ্ট হবে, তারা হলো- ১. রাজা-বাদশাহ, ২. আলিম-উলামা।

আর এদের প্রসঙ্গেই পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমার উম্মতদের মধ্যে যারা উলামায়ে ‘সূ’ তাদের জন্য আফ্সুস অর্থাৎ তারা জাহান্নামী হবে। তারা ইলমকে ব্যবসা হিসেবে গ্রহণ করতঃ তাদের যুগের শাসকদের নিকট থেকে অর্থ ও পদ লাভের প্রচেষ্টা চালিয়ে থাকে। মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাললাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এসকল উলামায়ে ‘সূ’দের বিরুদ্ধে এই বলে বদদোয়া করেন যে, “আয় আল্লাহ পাক! যারা নিজেদের ইলম দ্বারা দুনিয়াবী সরকারের সাথে ব্যবসা করতে চায় তাদের ব্যবসায় বরকত দিবেন না।” (কানযুল উম্মাল শরীফ)

, এ সকল উলামায়ে ‘সূ’ বা দুনিয়াদার তথা ধর্মব্যবাসায়ী মৌলবীদেরকে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে দাজ্জালে কাযযাব বা মিথ্যাবাদী দাজ্জাল বলে এদের থেকে উম্মত উনাদেরকে দূরে থাকার নির্দেশ মুবারক দেয়া হয়েছে। যেমন পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার ইরশাদ মুবারক হয়েছে- হযরত আবূ হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, আখিরী যামানায় কিছু সংখ্যক মিথ্যাবাদী দাজ্জাল বের হবে, তারা তোমাদের নিকট এমনসব (মিথ্যা-মনগড়া) কথা উপস্থাপন করবে, যা তোমরা কখনো শুননি এবং তোমাদের বাপ-দাদারাও শুনেনি, সাবধান! তোমরা তাদের কাছ থেকে দূরে থাকবে, তবে তারা তোমাদেরকে গুমরাহ করতে পারবে না এবং ফিতনায় ফেলতে পারবে না। (মুসলিম শরীফ)

মূলকথা হলো- যারা হারামকে হালাল ও হালালকে হারাম বলে, অহরহ হারাম কাজে মশগুল থাকে এবং দুনিয়ার লোভে হক্বকে নাহক্বের সাথে মিশ্রিত করে তারাই হচ্ছে এ পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার বর্ণনা মুতাবিক দাজ্জালে কাযযাব তথা উলাময়ে ‘সূ’। এদের ওয়ায শোনা ও এদেরকে অনুসরণ করা সম্পূর্ণ হারাম। কেননা মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ‘তোমরা ওই ব্যক্তিকে অনুসরণ করো না যার অন্তর আমার যিকির থেকে গাফিল। এবং যে ব্যক্তি নফসের অনুসরণ করে এবং যে ব্যক্তির কাজগুলো পবিত্র শরীয়ত উনার খিলাফ।’ (পবিত্র সূরা কাহাফ শরীফ, পবিত্র আয়াত শরীফ-২৮) অর্থাৎ যাদের আমল পবিত্র শরীয়ত উনার খিলাফ তাদেরকে অনুসরণ করা হারাম। কাজেই, পবিত্র ঈমান ও আমল হিফাযত করতে হলে উলামায়ে ‘সূ’ বা ধর্মব্যবসায়ীদেরকে চিহ্নিত করতে হবে এবং কঠোরভাবে প্রতিহত করতে হবে।
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সা.) পক্ষ নিলে আল্লাহ হেদায়াত প্রদান করেন

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:৪২



সূরা: ৩৯ যুমার, ২৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৩। আল্লাহ নাযিল করেছেন উত্তম হাদিস, যা সুসমঞ্জস্য, পুন: পুন: আবৃত। এতে যারা তাদের রবকে ভয় করে তাদের শরির রোমাঞ্চিত হয়।অত:পর তাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগটা তো ছ্যাড়াব্যাড়া হয়ে গেলো :(

লিখেছেন সাখাওয়াত হোসেন বাবন, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৫৭



আমি আমার ব্লগিং শুরু করি প্রথম আলো ব্লগে লেখালেখির মাধ্যমে। ব্লগটির প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। কারণ প্রথম আলো ব্লগ আমায় লেখালেখিতে মনোযোগী হতে শিখিয়েছে । সে এক যুগ আগের কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

লুঙ্গিসুট

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



ছোটবেলায় হরেক রঙের খেলা খেলেছি। লাটিম,চেঙ্গু পান্টি, ঘুড়ি,মার্বেল,আরো কত কি। আমার মতো আপনারাও খেলেছেন এগুলো।রোদ ঝড় বৃষ্টি কোনো বাধাই মানতাম না। আগে খেলা তারপর সব কিছু।
ছোটবেলায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

লিখেছেন নতুন নকিব, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:২৫

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

ছবি কৃতজ্ঞতা: অন্তর্জাল।

একবার শাইখুল হাদিস মুফতি তাকি উসমানী দামাত বারাকাতুহুম সাহেবকে জিজ্ঞেস করা হল, জীবনের সারকথা কী? উত্তরে তিনি এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা

লিখেছেন করুণাধারা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৯



এই ধাঁধার নাম সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা; নিচের লিংকে এটার ভিডিও আছে।

স্বৈরশাসকের বন্দী

এই ধাঁধাটি আমার ভালো লেগেছিল, তাই অনেক আগে আমার একটা পোস্টে এই ধাঁধাটি দিয়েছিলাম। কিন্তু সেই পোস্টে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×