somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একদিনের ছোটগল্প...

১৯ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ২:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ষষ্ঠতম সিদ্ধান্ত নিলো আইরিন। টেলিফোন করে জানিয়ে দিল ইভানকে । ইভান বরাবরের মত হু হা ছাড়া কিছুই বললো না। অতিতেও বলেনি। ইভান জানতো এটা আইরিনের রাগ মাখানো অভিমান। রাগের তাপমাত্রা নিচের দিকে নামার সাথে সাথে আইরিনও ভুলে যাবে এসব সম্পর্ক ভাঙ্গার সিদ্ধান্ত টিদ্ধান্ত। মুলকথবা আইরিন ইভানকে খুব ভালবাসে। এটা ইভান প্রকাশ না করলেও খুব ভালকরে জানে এবং অনুভব করে।
কিছুটা মিচকা আর অন্তর্মুখী স্বভাবের ছেলে ইভান। যে কোন বিষয় নিয়ে খুব সহজেই মজা করতে পারে । নিজের ভিতরের দুখগুলো একেবারেই ভিতরে রেখে দেয়। যেখানে হাতড়ে বেড়ালেও কিছু পাবার সাধ্য থাকেনা কারো । কেও তাকে বুঝতে পারবে সে সাধ্য যেনো কারো নেই। চারপাশের মানুষ ইভানকে সুখী মানুষ হিসেবেই গণনা করে। এবং সে সুখিও বটে। ইভানের যে বয়স এই বয়সে দুখি ভাব চেহেরায় ফুটে উঠলে বড্ড বেমানান দেখায়। তাই ওর চেহেরায় কখনো দুঃখ থাকেনা। থাকে অফুরন্ত সুখের ছাপ।
ফোন রেখে অতীতের মতই কিছুটা শঙ্কা আর উৎকণ্ঠায় সময় যেতে থাকলো। আইরিনের পরবর্তী ফোনের জন্য রাত পর্যন্ত ইভানকে অপেক্ষা করতে হবে। অন্তত অতীতের সব অভিজ্ঞতা সে দিকেই ইঙ্গিত প্রদান করে। আবার দ্রুত মন ভাল হয়ে গেলে বিকেলের মধ্যেই আসতে পারে ফোন। ইভান অপেক্ষায় থাকে কখন ফোন আসে আইরিনের।
দিন শেষ, রাত বাজে সারে দশটা । আইরিনের কোন ফোন নেই। ইভানের বুকের ভিতরটা খচ করে উঠে। কিছু হাড়ানোর ভয় তাকে ভাবিয়ে তুলে। চোখের কোনে জল এসে যায়। না, এমন হতে পারেনা। ও এ রকম করার মেয়ে না। এলো মেলো অনেক ভাবনা ভাবতে থাকে ইভান। এই বুঝি আইরিন ফোন দিচ্ছে, ওপাশ থেকে বলছ, ঘাধা! তোকে ছেড়ে যেতে পারলাম না। রাতে খেয়েছিস...? আয় কাল দেখা করি।
গতবছর এই সময়টা রায়ানের পাশেছিল ইভান। আজ ইভান কাওকেই যেনো পাশে পাচ্ছেনা। নিজের পৃথিবীটা খুব ছোট মনে হচ্ছে। রায়ানের কান্নাভরা মুখটি বারবার ভেসে ঊঠছে। প্রেমিকার সাথে সম্পর্ক ভেঙ্গে যাওয়ায় কি কান্নাটাই কেদেছিল সেদিন। আহ, প্রেম। আহ, চলে যাওয়া।
খুব অযৌক্তিক একোটা কারন দেখিয়ে চলে গিয়েছিল মেয়েটি। যার জন্য ইভান খুব রাগ দেখিয়েছিল রায়ানকে। যে মেয়ে এ রকম মিথ্যে অজুহাত আর কারন দেখিয়ে সম্পর্ক ভেঙ্গে দিতে পারে সে মেয়ের জন্য তুই কাদছিস, শালা হাদরাম! গল্পটা অনেকবার বলেছিল আইরিনকে। আইরিন রায়ানের জন্য অনেক দুঃখ দেখিয়ে বলেছিল মেয়েরা এমন কিভাবে পারে। খুব অবাক হয়েছিল আইরিন।
এ যুগে মেয়েদের অবাক হওয়াও অবাক হয়ে যাওয়ার মত। অল্পতেই তারা মুগ্ধ হয়ে যায়। অথবা ইমপ্রেস হয়ে যাওয়ার ভাব নিতে একটুও সময় নেয়না। পরিচিত কারো মধ্যে থেকে কেও ফোন করে তিনবেলা খাবার খেয়েছে কিনা খোজ নিল, মন খারাপ কেনো কারন জিজ্ঞেস করলো, অথবা হাসির দুটো কথা বললো তাতেই তার প্রতি গদ গদ হয়ে যাওয়া শুরু হয়ে যায়। ব্যাপক সিনেম্যাটিক ব্যাপার। নায়িকা কোন কারনে আত্মহত্যা করতে যাচ্ছে মানবতাবাদী কেও এসে তাকে বাধা দিলেন,দু চারটে সুন্দর কথা শুনালেন । ব্যাচ শুরু হয়ে যায় হাবুডুবু খাওয়া। নায়িকার অমনি তাকে জড়িয়ে ধরে গান।
কিন্তু পুরুষরা এতো সহজে মুগ্ধ হতে পারেনা। এর জন্য কিছু সময় লাগে এবং যৌক্তিক কারনও লাগে। অবশ্য কিছু ছেলেদের কথা ভিন্ন। তাদের দেখলেই মনে হয় এদের শরীরে হরমোনজনিত সমস্যা বিদ্যমান। আচার আচরণে আগাগুরা লুতুপুতু টাইপের। অল্পতেই চোখ মুখ উল্টিয়ে মুগ্ধ হয়ে যাবার ভান করায় এরা অত্যন্ত পটু। এ জাতিয় ছেলেপেলেদের দেখলে ইভানের খুব রাগ হয়। ইচ্ছে করে কানের নিচে দু খান থাপ্পর বসিয়ে মুগ্ধ হওয়ার ভাব ছুটিয়ে দিতে।





সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ২:৩১
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাফসান দ্য ছোট ভাই এর এক আউডি গাড়ি আপনাদের হৃদয় অশান্ত কইরা ফেলল!

লিখেছেন ব্রাত্য রাইসু, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫২

রাফসান দ্য ছোট ভাইয়ের প্রতি আপনাদের ঈর্ষার কোনো কারণ দেখি না।

আউডি গাড়ি কিনছে ইনফ্লুয়েন্সার হইয়া, তো তার বাবা ঋণখেলাপী কিনা এই লইয়া এখন আপনারা নিজেদের অক্ষমতারে জাস্টিফাই করতে নামছেন!

এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঁচতে হয় নিজের কাছে!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু।  লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×