ছাত্রাবাস বা ম্যাচে থাকার বিভিন্ন অভিজ্ঞতা আছে অনেকের। উচ্চশিক্ষার উদেশ্যে প্রবাসে পড়তে এসে আমার এ অভিজ্ঞতা দিনদিন বাড়ছে। ভার্সিটির থেকে খুব কাছে ১টি এর্পাটমেন্ট নিয়ে আমরা ৫জন বাঙ্গালী একসাথে থাকি। আমার পাশের রুমে রাকিব নামে এক বড় ভাই থাকে যার দৈর্ঘ্য-প্রস্থ মাশআল্লাহ 'হাউসফুল' নাটকের সুমন চাচ্চুর মত না হলেও কাছাকাছি।
উনি আবার ঢাকাইয়া, তবে শুদ্ধ ভাষায় কথা বলতে পছন্দ করেন। দোষে-গুনে মানুষ হলেও তিনি একটু অতিমাত্রায় অলস, নড়ে তো নড়ে না; চলে তো চলে না, এই অবস্থায় উনার দিন যায়। আর সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো উনি রেগে গেলে আর শুদ্ধ ভাষায় কথা বলতে পারে না।
একদিন উনার তরকারী একটু কম পড়ায় হঠাৎ করে বলতেছে, "তুমি হালায় মানুছ টা ছোট আবার রানছোও কম কইরা তরকারি, আবে বেশী কইরা না রানলে ক্যামনে তোমাগো শরীর ছাস্তো হইবো বুজবার পারতাছি না"
আমার বুজতে দেরী নেই উনি রেগে গেছেন, আমি ঠান্ডা গলায় বললাম "তরকারী তো অনেক রান্না করছি তবে মজা হওয়ায় পোলাপান একটু বেশী খেয়ে ফেলছে, যান এরপর থেকে আপনের টা বাটিতে আলাদা করে রাখবো"। শুনে উনি খুব খুশি, পরে বললাম আপনি রেগে গেলে ঢাকাইয়া ভাষায় কথা বলেন কেন ? এটা ইচ্ছা করে নাকি অভ্যাস ?
উত্তরে; তার ১ম প্রেমিকাকে রাগ করে শুদ্ধ ভাষায় কি যেন বলতে গিয়েছিল, সেই মেয়ে নাকি ডান গালে চড় মেরে বলেছিল কোনদিন যেন ঢং না করে।
এরপর থেকে উনি এটারে অভ্যাস বানায় ফেলছে।
যাই হোক, ২দিন ধরে উনার ল্যাপটপ সার্ভিস সেন্টারে থাকায় আমারটা ব্যবহার করছে। একবার বসলে আর উঠতে চাই না। রাতে তারাবী পড়ে আমি বসার আগেই বলে 'ভাই একটু আর্জেন্ট, ১০ মিন পর দিতেছি'।
কাল ক্লাস নাই, তাই ভাবছিলাম আজ রাতে "আর পারছি না গুরুর" ২য় পত্রটি নতুন করে লিখবো কিন্তু নামাজ শেষ কইরা দেখি উনি অলরেডি বইসা পড়ছে। বয়সে বড়ো বলে কিছু কইতেও পারি নাই সইতেও পারি নাই, চুপ কইরা হল-রুমের সোফায় বসে আছি তখন আর এক ফ্রেন্ড রুমে ঢুকেই বলছে, " কিরে আজও কি তোর চেয়ারের আয়ু কমতেছে ?"
রাগে আমি কইলাম, "হালায় ছরেও না, নরেও না; আর কতক্ষন ছোফায় এমনে বইয়্যা থাকবার পারি"
ফ্রেন্ডটা হাসি না ঠেকাতে পেরে আমার রুমে যেয়ে রাকিব ভাইরে কাহীনি কইয়া দিছে, তাই আর একটু আগে উনি আমার রুম থেকে বের হয়ে আস্তে করে বলছে, "এই তোমার ল্যাপটপ ছেড়ে দিছি, আমার কাজ শেষ"।
আমি লজ্জায় চুপ করে রুমে এসে এখন এই কাহীনিই লিখলাম...
(উনি মনে হয় হালকা মাইন্ড খাইছে, কি কন ??)