somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভোটের ময়দানে ধর্মের ব্যবহার নিষিদ্ধ হোক

৩০ শে নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



দেশে এখন নির্বাচনী আমেজ। প্রার্থীরা অপেক্ষায় আছেন চুড়ান্ত বাছাই ও প্রতীক বরাদ্দের জন্য। রাজনৈতিক দল,জোটও ব্যস্ত তাদের নির্বাচনী ইশতেহার চুড়ান্ত করায়। জানি না, দল ও জোটগুলো তাদের ইশতেহারে কিংবা নির্বাচনী প্রচার প্রোপাগান্ডায় এবার ধর্মকে দূরে সরিয়ে রাখবেন কি না!
বিগত নির্বাচনগুলোতে দেখা গেছে বামদলগুলো ছাড়া সব রাজনৈতিকদল বা জোট ভোটের বৈতরনী পাড়ি দিতে ধর্মকে ব্যবহার করেছেন। কেউ জোট করেছিলেন স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি ও ধর্মভিত্তিক দলের সাথে। কেউ জোট করেছিলেন সংবিধানে রাস্ট্রধর্মের প্রবর্তক ও স্বৈরাচারের সাথে। নির্বাচনের মাঠে ভোট পেতে মরিয়া হয়ে কেউ শ্লোগান দিয়েছিলেন, লাই লাহা ইলল্লাহ, ধানের মালিক তুই আল্লাহ। কেউ একই কথা ঘুরিয়ে বলেছিলেন, লাই লাহা ইলল্লাহ, নৌকার মালিক তুই আল্লাহ। আবার ধর্মভিত্তিক দলটি প্রচার করেছিল, ভোট দিলে দাড়িপাল্লায়, খুশী হবেন মহান আল্লা(হ)'য়!
এই স্বধীনতা বিরোধী গোষ্ঠিটি আবার প্রত্যন্ত অঞ্চলে ভোট চাইতে গিয়ে ভোটার স্লিপ বিতরনের সময় দরিদ্রমানুষের সরলতা ও অজ্ঞতার সুযোগ নিয়ে প্রচার করতো, দাড়িপাল্লা হচ্ছে বেহেস্তের টিকেট!
এরাই ২০১৩ সালে চাঁদে তাদের রাজাকার নেতাকে দেখা গিয়েছে বলে বগুড়া,গাইবান্ধায় হিংস্র উন্মত্ততায় মানুষ মেরেছিল,তা কিন্তু এখনো আমরা ভূলে যাইনি।
স্বাধীনতার স্বপক্ষের দাবীদার শক্তি সবসময় অসাম্প্রদায়িকতার কথা বলেন! ১৯৭২ সালের সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলেন। সাম্প্রদায়িক রাজনীতির বিষবাস্প ছড়ানোর দায়ে প্রধান বিরোধীপক্ষকে দায়ী করেন।বেশ ভাল কথা। কিন্তু ভোটের জন্য, ক্ষমতায় যাবার জন্য কিংবা সংসদে রাস্ট্রপতি নির্বাচনে রাজাকার শিরোমনির দোয়া নিতে এরাও ভুল করেননি। ইসলামী ছাত্রসংঘের নেতা,রাজাকার নিজামী ও মুজাহিদের সাথে একটেবিলেও বসতে কুন্ঠাবোধ করেননি। ১৯৯৬ সালে রাজপথের আন্দোলনে রাজাকারদের মিত্র বানিয়েছিলএবং ক্ষমতায় এসে জামালপুরের এক কুখ্যাত রাজাকার মাওলানাকে মন্ত্রীপরিষদে ঠাই দিয়েছিল। বরিশালের একজন শান্তিকমিটির নেতা, রাজাকারকে এমপি ও মন্ত্রী বানিয়েছিল। পরবর্তী সময়ে ১/১১ এর পর নির্বাচনে চট্রগ্রামের হাটহাজারীর এমপি বানিয়েছিল স্বাধীনতা বিরোধী বলে চিহ্ণিত একজনকে। এরকম অনেক উদাহরন আছে, যা বললে তালিকাই বড় হবে। ধর্মনিরপেক্ষ দাবীদার রাজনৈতিক দলটি তাদের পোস্টার,ব্যানার ইত্যাদী প্রকাশনায় লেখা এবং নেতা নেত্রী বক্তৃতা শুরু করেন মহান আল্লাহর নাম নিয়ে। ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার জন্য তেতুল হুজুর এখন মিস্টিহুজুরে পরিনত হন। আহা রাজনীতি!
অন্যদিকে বড়দলের দাবীদার অংশটি আগাগোড়াই জাতীয়তাবাদের সাথে ধর্মকে রাজনীতিতে টেনে এনেছেন। তারা সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনী দিয়ে শুরু করেছিল রাস্ট্রের ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্রহরণ।যার পরিপূর্নতা দিয়েছিল স্বৈরাচার এরশাদ অস্টম সংশোধনীর মাধ্যমে।
এই শক্তিটি রাজাকার শিরোমনিকে দেশে আসার সুযোগ করে দিয়েছিল এবং ধর্মভিত্তিক রাজনীতি পুনরায় চালু করেছিল।তার প্রতিদান তারা তুলে নিয়েছে জোটবেধে দু'দফা ক্ষমতায় এসে।তাদের পুরস্কৃত করেছিল দুই রাজাকারকে মন্ত্রীপরিষদে ঠাই দিয়ে।এরা রাস্ট্রপতি নির্বাচিত করেছিল বরিশালের শান্তিকমিটির এক রাজাকারকে। এবার নির্বাচনে স্বাধীনতা বিরোধীশক্তিটি নিষিদ্ধ থাকায় অংশ নিতে পারছে না কিন্ত ধানেরশীষ মার্কায় তাদের ২৫ জন নির্বাচন করবেন বলে ইতোমধ্যে প্রার্থীতার ফরম জমা দিয়েছেন। এ বিষয়টি জায়েজ করার জন্য বলা হয়েছে, জামায়াতের মধ্যে অনেক মুক্তিযোদ্ধা আছেন! হায় রে কলিকাল!
এই দুইদল ও তাদের জোট মুখে রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহারের বিরোধীতা করেন। আবার নির্বাচন এলেই সাধারন মানুষের ধর্মীয় আবেগ নিয়ে খেলেন। কেউ লম্বা ঘোমটা টেনে,ফুলস্লিভ ব্লাউজ পড়ে নিজেকে ধার্মিক হিসেবে জাহির করেন। মঞ্চে আদর করে বসান শুশ্মমন্ডিত কোন মাওলানা হুজুরকে।
অন্যদিকে সেই জাতীয়তাবাদীশক্তির মঞ্চকে সবসময় আলোকিত করে রেখেছিল স্বাধীনতাবিরোধী ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলের নেতারা।এবার স্বনামে না হলেও থাকবে ভোটের মাঠে ধানেরশীষের প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে।
এবারের নির্বাচনেও এই দুইদল ও তাদের জোট পরিস্কার করেনি , রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার নিষিদ্ধের। আশংকা থেকে যায় এরা যে কোনভাবে ক্ষমতায় যেতে যেকোন শক্তির সাথে অতীতের মতন হাত মেলাতে কুন্ঠাবোধ করবে না।
একজন সাধারন নাগরিক, সচেতন ভোটার হিসেবে চাই রাজনীতিতে,ভোটের ময়দানে ধর্মের ব্যবহার নিষিদ্ধ হোক,অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ে উঠুক।
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদী নামের এই ছেলেটিকে কি আমরা সহযোগীতা করতে পারি?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১০:০৪


আজ সন্ধ্যায় ইফতার শেষ করে অফিসের কাজ নিয়ে বসেছি। হঠাৎ করেই গিন্নি আমার রুমে এসে একটি ভিডিও দেখালো। খুলনার একটি পরিবার, ভ্যান চালক বাবা তার সন্তানের চিকিৎসা করাতে গিয়ে হিমশিম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভালোবাসা নয় খাবার চাই ------

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:০৬


ভালোবাসা নয় স্নেহ নয় আদর নয় একটু খাবার চাই । এত ক্ষুধা পেটে যে কাঁদতেও কষ্ট হচ্ছে , ইফতারিতে যে খাবার ফেলে দেবে তাই ই দাও , ওতেই হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতীয় ইউনিভার্সিটি শেষ করার পর, ৮০ ভাগই চাকুরী পায় না।

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৭



জাতীয় ইউনিভার্সিটি থেকে পড়ালেখা শেষ করে, ২/৩ বছর গড়াগড়ি দিয়ে শতকরা ২০/৩০ ভাগ চাকুরী পেয়ে থাকেন; এরা পরিচিত লোকদের মাধ্যমে কিংবা ঘুষ দিয়ে চাকুরী পেয়ে থাকেন। এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×