শারীরিকভাবে সে প্রথম অসুস্থতা বোধ করে গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনকালীন সময়ে। মাঝে মাঝেই বাম হাতের বাহুতে ব্যথা অনুভূত হতো। সেই ব্যথাকে কোনমতেই আমলে না দিয়ে কাজ করে গিয়েছে অবিরাম। সুজন'র নির্বাচনকালীন কাজে সে জড়িত ছিল। সুজন ডট অর্গ সাইটটি পরিচালনা করতো। সুজনের ভোটবিডি সাইটে জাতীয় সংসদের সকল প্রার্থীর তথ্য পোষ্টিং করার কাজে রাত-দিন পরিশ্রম করেছে। মোল্লারটেকে ডেভনেট কোম্পানীতে ডাটাএন্ট্রি কাজ চলার সময় আমি এবং সে পালাক্রমে ৭/৮ রাত বিনিদ্র কাজ করেছি। অসুস্থতা থাকা স্বত্বেও উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের তথ্য এন্ট্রির সময়েও কাজ করে যেতে হয়েছে। হাতের ব্যথায় প্রথম সে ডাক্তারের স্মরণাপন্ন হয় গত কোরবানী ঈদের পূর্বে। ব্যথার সাথে সাথে মাঝে মাঝেই প্রচন্ড মাত্রার প্রেসার তাকে গ্রাস করতো। উত্তরার ডাক্তার বিভিন্ন রকমের পরীক্ষাদির পর পঙ্গু হাসপাতালে যাবার পরামর্শ দেয়। পঙ্গু হাসপাতালের ডাক্তার তাকে পাঠায় বাংলাদেশ ক্যান্সার ইন্সটিটিউটে। ক্যান্সার হাসপাতাল নিশ্চিত করে সে দূরারোগ্য ক্যান্সারে আক্রান্ত। হাত কেটে ফেলার পরামর্শ দেয়। ভয়ঙ্কর এ পরামর্শ শুনতেও কষ্ট লাগে। কিন্তু হাতের ব্যথা দিনকে দিন বেড়েই চলে, ফুলে ওঠে। কিছু একটা তো করতে হবে। পপুলার, ডেল্টাতে বারংবার পরীক্ষার পরেও একই ধরনের রেজাল্ট পাওয়া যায়। এপোলো হাসপাতালে গেলে তারাও ভিন্ন কথা বলেনি।
বাংলাদেশে অনেক পরীক্ষার রিপোর্ট দেশের বাইরে ভুল প্রমানিত হয়েছে, এই ভরসাতেই এমদাদ রিপোর্টগুলিকে ততটা পাত্তা দেয়নি। মানিসকভাবে সে ছিলো পুরোমাত্রায় সতেজ। সঠিক চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যাবার সিদ্ধান্ত নেয়। আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধবের পরামর্শে ভারত যাবে বলে ঠিক করে। কলকাতার ঠাকুরপুকুরে অবস্থিত ক্যান্সার রিসার্চ ইন্সটিটিউটের অনেক নাম-ডাক আছে। সেখানেই যাবে বলে মনস্থির করে।
পরিবারের আর্থিক অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। দি হাঙ্গার প্রজেক্ট যে সংগঠনে সে কর্মরত তাদের কাছে সাহায্যের আবেদন করে। সংগঠন, আত্মীয়-স্বজন এবং বন্ধু-বান্ধবের কাছ থেকে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকার একটি তহবিল সংগ্রহ করতে সমর্থ হয়।
ভিসা জটিলতা শেষে গত ফেব্রুয়ারী মাসের ১৯ তারিখ রাতে কলকাতার উদ্দেশ্যে বাসযোগে যাত্রা করে। কলকাতার আত্মীয়ের পরামর্শে ২০ তারিখে স্থানীয় একজন ডাক্তারকে দেখায়। তিনি বাংলাদেশের সকল রিপোর্ট পর্যালোচনা করে আগের রায়ই বহাল রাখেন। কষ্ট যেন আরো বাড়তে থাকে। কলকাতার ডাক্তারদের পরামর্শ তাকে আস্বস্ত করতে পারে না। মাদ্রাজ যাবার সিদ্ধান্ত নেয়। ২১ তারিখ সন্ধ্যায় মাদ্রাজের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়।
ভেলোরের ক্রিশ্চিয়ান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল হচ্ছে চিকিৎসার ঠিকানা। ২২ তারিখ রোববার, এদিন সেখানে ছুটির দিন হওয়ায় চিকিৎসা প্রক্রিয়া একটু পিছিয়ে পড়ে। ২৩ তারিখে ডাক্তার দেখানো হয়। ২৬ তারিখে ডাক্তারদের একটি বোর্ড সমস্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর দূরারোগ্য ক্যান্সারের কথা পুনরাবৃত্তি করে। এমদাদের সকল আশা-ভরসা শেষ হয় যায়। এমদাদের আকুতি "হাতটি কেটে না ফেললে হয় না" । এর উত্তরে ডাক্তার জানায় হাতটি না কাটলে ক্যান্সার সম্পূর্ণ শরীরে ছড়িয়ে পড়বে। মৃত্যু তখন অনিবার্য। এভাবে বড়জোড় ৫ মাস পর্যন্ত টিকে থাকা যাবে। হাতটি কেটে ফেলাই একমাত্র সমাধান, যার মাধ্যমে হয়তো জীবনের ঝুঁকি থেকে রেহাই পাওয়া যেতেও পারে।
এভাবেই কেটে যায় দু'একদিন। বাবা-মা'র সাথে টেলিফোনে কথা হয়। বড় ভাই সাথেই আছে। কিন্তু তিনি কোন সিদ্ধান্ত দিতে পারেন না। ছোটভাইয়ের এ অবস্থায় তিনি যেন আরো বেশি ভেঙ্গে পড়েছেন। বাবা-মা নির্বাক। যে সন্তানের আয়ে বাবা-মা এর দুবেলা খাবার জুটতো সে আজ মৃত্যুপথযাত্রী। সহজ-সরল বাবা-মা এমদাদকে বলেছে "যেটা করলে ভালো হয় সেটাই করো বাবা"।
অবশেষে অনেক কষ্ট হলেও অগত্যা বেঁচে থাকার তাগিদে এমদাদ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, অপারেশন করে, তার ক্যান্সার আক্রান্ত হাতটি অপসারন করবে।
যে হাত দিয়ে পরিশ্রমী এমদাদ এতদিন অনেক কাজ করেছে তা কেটে ফেলতে হবে। প্রোগ্রামার এমদাদ একহাতে কিভাবে কোডিং করবে? হাত কেটে ফেলার পর এমদাদ সুস্থ হয়ে উঠবে তো? হাত কাটার পর এমন হবে না তো যে এই সিদ্ধান্ত পুরোটাই ডাক্তারদের ভুল ছিলো?
এরকম হাজারো প্রশ্নের মুখোমুখি হওয়ার পরেও ডাক্তারদের পরামর্শই মানতে হবে। এবং আরো বাস্তবতা যে, এই অপারেশনসহ কেমোথেরাপীর জন্য মাসব্যাপী এমদাদকে মাদ্রাজে অবস্থান করতে হবে। সেখানে ১০ লক্ষাধিক টাকার প্রয়োজন হবে। এই টাকার যোগান কোথা থেকে হবে?
এমদাদ তাকিয়ে আছে আমাদের দিকে। বাংলাদেশীদের প্রতি তার অগাধ ভালোবাসা এবং আস্থা। আসুন আমরা তার চিকিৎসার জন্য হাত বাড়িয়ে দেই।
উল্লেখ্য এমদাদের গ্রামের বাড়ী চুয়াডাঙ্গা জেলায়। সে ভূঁইয়া একাডেমী থেকে ডিপ্লোমা করার পর হাঙ্গার প্রজেক্ট অফিসের খন্ডকালীন কাজ হিসেবে সকল কম্পিউটার দেখাশোনার কাজ করতো। তার কাজের প্রতি আন্তরিকতা এবং শেখার প্রবল আগ্রহ দেখে হাঙ্গার প্রজেক্ট ২০০৬ সালে ফুলটাইম কর্মী হিসেবে তাকে যোগদান করার আহ্বান জানায়। সেই থেকে এমদাদ কাজ করে যাচ্ছিলো। পাশাপাশি স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ এ কম্পিউটার সায়েন্সে পড়াশুনা চালিয়ে যাচ্ছিলো।
Emdad's contact number in India: 00919 7866 34195, 00919 6790 14648
তাকে সহায়তা করতে চাইলে এই ঠিকানায় যোগাযোগ করুন:
দি হাঙ্গার প্রজেক্ট-বাংলাদেশ
৩/৭ আসাদ এভিনিউ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭, বাংলাদেশ
ফোন: ৮১১২৬২২, ৮১২৭৯৭৫
মোবাইল: ০১১ ৯১০০ ৭৪৬১ (রুবন)
ব্যাংক তথ্য :
Account Number: 21057519
Bank: The City Bank Limited, Gulshan-1
Account Holder: Nurjahan Alim
ওয়েষ্টার্ন ইউনিয়ন মানি ট্রান্সফার ব্যবহার করে টাকা পাঠানোর নিয়ম নিম্নে দেওয়া হয়েছে ৫ মার্চের আপডেটে।
আপডেট ২ মার্চ, ২০০৯
আজ এমদাদের ভাবীর সাথে কথা বলে জানা গেলো যে, আগামীকাল এমদাদ হাসপাতালে ভর্তি হতে যাচ্ছে। এবং ডাক্তারদের ঘোষনা অনুযায়ী ৪ মার্চ অপারেশন করা হবে। রাতে এমদাদ ফোন করেছিলো। ইন্ডিয়াতে টাকা পাঠানো নাকি খুব একটা সহজ নয়। আলোচনা হচ্ছিলো কিভাবে টাকা পাঠানো সম্ভব হতে পারে। যদিও এখন পর্যন্ত খুব একটা সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। দেশের এহেন ঘোর বিপদে এমদাদকে স্মরণ করবে কয়জন। কিন্তু তারপরেও পরশুদিন অপারেশন হতে যাচ্ছে। সহৃদয় ভাই-বোনদের প্রতি দ্রুততার সাথে এগিয়ে আসার জন্য আহ্বান জানানো যাচ্ছে।
আপডেট ৩ মার্চ, ২০০৯
আজকে এমদাদকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। আগামীকাল সম্ভবত অপারেশন হবে। এমদাদের ভাবীও যাবার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রাত্রে রোগীর সাথে কোন পুরুষ এলাউ করে না। এমদাদের ভাবী পাসপোর্ট তৈরির জন্য দৌড়াদৌড়ি করেছেন। শেষ পর্যন্ত পাসপোর্ট হাতে পেয়েছেন কি না এটি জানা যায় নি।
আপডেট ৪ মার্চ, ২০০৯
একটু আগে জানা গেলো এমদাদকে অপারেশন থিয়েটারে নেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ সময় ১০:৫০ মিনিটে। এমদাদ সকলের কাছে দোওয়া চেয়েছে।
আমার খুব কষ্ট লাগছে আপডেট জানাতে। বিকাল ৪টা নাগাদ এমদাদ অপারেশন থিয়েটারে ছিলো। তার অপারেশন সমাপ্ত হয়েছে। বাম হাতটি কেটে ফেলা হয়েছে....
তার বড় ভাই অপারেশন পরবর্তী ঔষধ-পত্র, ডাক্তার এসব নিয়ে ব্যস্ত। খুব একটা আপডেট জানা সম্ভব হয়নি। তার ভাবীর কাছ থেকে রাত ৮টার দিকে জানা গেছে এমদাদ বমি করেছে। অপারেশনের পর বমি করাটা নাকি ভালো লক্ষণ নয়। ভাবী কাঁদছিলেন। আমি ক্লাসে ছিলাম। কাঁদতেও পারলাম না। চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছে করে। কিছুই করতে পারছি না ভেবে অসহায় মনে হচ্ছে। আর লিখতে পারছি না...
আপডেট ৫ মার্চ, ২০০৯
আজ সকালে এমদাদ ভাইয়ের বড় ভাইয়ের সাথে কথা হলো। তিনি জানালেন এমদাদের অবস্থা খুব একটা ভালো না। তিনি ডাক্তারের সাথে কথা বলতে যাচ্ছেন। গতকালই অপারেশন হয়েছে, সমস্যা হতে পারে, এ নিয়ে আর কথা বাড়ালাম না। টাকা পাঠানোর বিষয়টা নিয়ে চিন্তায় আছি। কোন বুদ্ধি করতে পারছি না। ২০০ ইউরো হাতে এসেছে। আরো কিছু প্রতিশ্রুতি পাচ্ছি। আশা করি তারাও শীঘ্রই দিয়ে দিবেন। আলীম ভাই জানালেন, হাসপাতালের কাছেই ওয়েষ্টার্ন ইউনিয়ন মানি ট্রান্সফার আছে। সেখানে টাকা পাঠানো যেতে পারে। কিন্তু খোঁজ নিয়ে জানতে পারলাম বাংলাদেশ থেকে কোনভাবেই সম্ভব না। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি বাংলাদেশে প্রাপ্ত টাকার সমমপরিমাণ অর্থ আমাদের দিল্লী/নিউ ইয়র্ক অফিস থেকে এমদাদের কাছে পৌঁছানো হবে।
দেশের বাইরে থেকে যদি কেউ টাকা পাঠাতে চান তাদের জন্য নিয়মটা বলছি: ১. এই ঠিকানায় টাকা পাঠাতে হবে:Western Union Money Transfer, Vellore, India ২. যার নামে পাঠাবেন: MD. ABDUL ALIM ৩. উনার পাসপোর্ট নাম্বার প্রয়োজনে দিতে পারেন: A0579093 ৪. টাকা পাঠানোর পর টাকার পরিমাণ এবং কোড নাম্বারটি আমাকে জানান। আমি আলীম ভাইকে জানিয়ে দিবো। [email protected]
৫. উপরোক্ত তথ্যের মাধ্যমে এমদাদের বড় ভাই মো: আলীম টাকা পেয়ে যাবেন।
আমি কিছু বিদেশী বন্ধু হাঙ্গার প্রজেক্টের কর্মীর কাছে আবেদন করেছিলাম। একজন ইন্ডিয়ান তিনি আমেরিকায় থাকেন উনি কিছু টাকা ট্রান্সফারের জন্য ছোটভাইকে বলেছেন। ছোটভাই মুম্বাই থাকেন। এখনো টাকার পরিমাণটা জানান নি।
এমদাদের ভাবী আজ অফিসে এসেছিলেন। তিনি পাসপোর্ট তৈরি করেছেন গতকাল। ইন্ডিয়া যেতে চাচ্ছেন। হাসপাতালে রুগীর কাছে রাতে কোন পুরুষ মানুষ থাকার নিয়ম নেই। এ জন্য উনি যাবেন। অনেক কান্নাকাটি করলেন। ছোট দুধ খাওয়া বাচ্চা আছে। ছোট বাচ্চা নিয়ে যাওয়াটা ঠিক হবে কি না, এ নিয়ে আলাপ করলাম। তাছাড়া টাকা-পয়সার সংকট। অতিরিক্ত মানুষ গেলে চিকিৎসার টাকায় ঘাটতি হতে পারে এমনটা বোঝালাম আমরা। কিন্তু উনি নাছোড়বান্দা। ডলার এন্ডোর্সমেন্ট করতে সহায়তা করলাম। আজকেই ভিসার আপীল করার জন্য ভিসা সেন্টারে গেছেন। পরে আর কথা হয়নি।
আপডেট ৬ মার্চ, ২০০৯
"আজ এমদাদ কিছুটা ভালো আছে" শুনে মনটা ভালো হয়ে উঠলো। নার্সরা শরীর মুছে দিয়ে গেছে। পরক্ষণেই জানতে পারলাম আলীম ভাইয়ের হাতে একদম টাকা নেই। মাত্র ৩০০০ রূপী আছে। এ দিয়ে চিকিৎসা এবং থাকা-খাওয়া খরচ কিভাবে হবে এ নিয়ে উনি চিন্তিত হয়ে উঠেছেন। বাংলাদেশ থেকে নিয়ে যাওয়া ১ লক্ষ ২০ হাজার + কলকাতার আত্মীয়ের কাছে প্রাপ্ত ৭০ হাজার টাকা সব শেষ।
এর পূর্বেই জানতে পেরেছিলাম আমাদের ইন্ডিয়ান এবং আমেরিকান দু'জন বন্ধু (টিএইচপি কর্মী) ২০০ ডলার পাঠিয়েছে। ওয়েষ্টার্ন ইউনিয়ন এর মাধ্যমে এটাই প্রথম এমদাদের কাছে টাকা পাঠানো হলো। টাকা তোলার তথ্যাদি দিয়ে দিলাম। ঘন্টা চার পর জানতে পারলাম ঠিকমতো টাকা তোলা সম্ভব হয়েছে।
টাকা পাঠানোর পরিমাণটা আরো বেশি হলে খুব ভালো লাগতো। অন্তত চিকিৎসা প্রক্রিয়া থেমে যেন না যায় সে ব্যাপারে আমাদের সকলের সচেষ্ট থাকতে হবে।
এমদাদের ভাবী ইন্ডিয়াতে আপাতত না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভালো সিদ্ধান্ত, অন্তত কিছু বাড়তি খরচ থেকে বাঁচা গেলো।
আপডেট ৭ মার্চ, ২০০৯
গতকাল ইটালী থেকে জামান ভাই ফোন করেছিলেন। তিনি এমদাদকে কিছু সহায়তা করবেন। ২০০ ডলার পাঠাবেন। আরো জানালেন যে, এমদাদের চিকিৎসার জন্য ইটালীতে লিফলেট বিতরণ করছেন। সেখান থেকে প্রাপ্ত সহযোগিতার অর্থ এমদাদকে পাঠিয়ে দিবেন। খুবই ভালো লাগলো। সারা বিশ্বের বাঙ্গালী/ বাংলাদেশী আজ এমদাদের জন্য ভাবছে। এটা ভাবতেও মনটা কেমন যেন হয়ে যায়।
এখনো জামান ভাইয়ের সহায়তা এসে পৌছায়নি। নিশ্চয়ই আগামীকাল পাওয়া যাবে।
এমদাদের অবস্থার উন্নতি হয়েছে। ফোন করেছিলাম দুপুর ১২:৩০ মিনিটে। কথা হলো না। টয়লেট গিয়েছে। হ্যাঁ, গতকাল থেকে ডাক্তার এমদাদকে একটু-আধটু হাটাচলা করতে বলেছে। আগামী বুধবার থেকে কেমোথেরাপী শুরু হবে।
আপডেট ৮ মার্চ, ২০০৯
আজ নারী দিবস। অফিসের প্রোগ্রাম থাকায় ব্যস্ত ছিলাম। একটু আগে এমদাদ মিস কল দিয়েছিলো। কলব্যাক করলাম। শরীর ভালো আছে। জানালো ধার করে সবকিছু চালাচ্ছে। টাকার প্রয়োজন। নুতন কোন তথ্য দিতে পারলাম না। বললাম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
ইটালী থেকে জামান ভাই মেইল করলেন। দু:খ প্রকাশ করলেন দেরী করার জন্য। আগামীকাল অবশ্যই টাকা পাঠাবেন সেটি জানালেন।
আপডেট ৯ মার্চ, ২০০৯
না, আজকেও কোন টাকা পাঠাতে পারলাম না। ইটালী থেকে টাকা পাঠানোর তথ্যও এসে পৌছেনি। বাংলাদেশে সংগৃহিত ১৭,৫০০ টাকার সমপরিমাণ ডলার $২৫০ হাঙ্গার প্রজেক্টের আমেরিকা অফিস থেকে ট্রান্সফারের জন্য অনুরোধ করেছিলাম। সেটিও এখনো সম্ভব হয়নি। আজকে রাতেই এটি সম্ভব হবে বলে আশা করছি। আগামীকাল সকালে তারা টাকা পেয়ে যাবেন। আলীম ভাই আজ ভিসা এক্সটেনশন করতে গেছিলেন। আমাকে জানালেন এখানে বেশ কিছু টাকা অতিরিক্ত চলে যাচ্ছে। ভিসা এক্সটেনশন চার্জ $20 করে $40 ডলার। এছাড়াও পুলিশকে অতিরিক্ত ২০০-৩০০ রূপী দিতে হবে। আরো জানালেন প্রতিদিন ১২০০ রূপী খরচ হচ্ছে। ৮০০ রূপী শুধুমাত্র ঔধষ বাবদ + ১০০ রূপী থাকা বাবদ + ৩০০ রূপী খাওয়া বাবদ। এভাবে হয়তো আরো ১মাস থাকতে হবে। আগামীকাল থেকে কেমোথেরাপী শুরু হবে। অন্তুত ৩টি কেমো কোর্স শেষ করে আসতে হবে। কেমোথেরাপীর খরচ কেমন হবে এ সম্পর্কে ধারণা দিতে পারলেন না। কোন ধরনের কেমো ডাক্তাররা দিবেন তার উপর খরচটা নির্ভর করবে।
আপডেট ১২ মার্চ, ২০০৯
১০ তারিখ রাতে এমদাদকে হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে সে তার বড় ভাইয়ের সাথে হোটেল অবস্থান করছে। সময়মতো হাসপাতালে গিয়ে ব্যান্ডেজ পরিবর্তন করছে। মনে হচ্ছে চিকিৎসা ঠিকমতোই হচ্ছে। কিন্তু কেমোথেরাপী শুরু হয়নি। ১৬ তারিখে প্রথম কেমোথেরাপী হবে। এজন্য সিট বুকিং দেয়া হয়েছে। তার আগেই সেলাই খোলা হবে।
১০ এবং ১১ তারিখে বেশ কিছু টাকা পাওা গেছে।
এইখানে গেলে মোট সহায়তার পরিমাণ জানা যাবে
১০ তারিখ বিকালে অনলাইন ব্লগার্স কমিউনিটি'র মিটিং এ উপস্থিত ছিলাম। ব্লগার ভাইয়ের প্রতি আমার আবেদন জানালাম। মঞ্জুরুল ভাই, অরণ্য ভাইসহ প্রত্যেকেই সহায়তার জন্য আশ্বাস দিলেন।
আপডেট ২৪ মার্চ, ২০০৯
১৮ মার্চ তারিখে কেমোথেরাপী দেয়া হয়েছে। এরপর হাসপাতালে ৪দিন থাকতে হয়েছে। কেমোথেরাপী তার শরীরের সমস্ত শক্তি কেড়ে নিয়েছে। খাওয়া-দাওয়া কিছুই করতে পারছে না। বমি হচ্ছে। ডাক্তার রক্ত দেয়ার কথা ভাবছে।
আগামীকাল এমদাদের মা এবং ছোটভাই ভিসা প্রাপ্তি সাপেক্ষে মাদ্রাজের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হবে। তাদের পৌঁছার পর বড় ভাই ফিরে আসবেন।
ভেলোরের ডাক্তার ৬মাস ব্যাপী চিকিৎসা সেখানে করার পরামর্শ দিয়েছে। এতদিন ব্যাপী চিকিৎসার খরচ কিভাবে যোগান হবে সেটাই এমদাদের বাবা-মা'র একমাত্র চিন্তা।
আপডেট ১২ এপ্রিল, ২০০৯
গতকাল ২য় কেমো শুরু হয়েছে। ৪দিনব্যাপী কেমোথেরাপী চলবে। অর্থাৎ ৪দিনব্যাপী ক্যান্সার প্রতিরোধক ঔষধ সেলাইনের মাধ্যমে ক্রমাগত পুশ করা হবে। প্রথম কেমোতে এমদাদ মারাত্মকরকম অসুস্থ হয়ে পড়েছিলো। তারপর ধীরে ধীরে সে ধকল কাটিয়ে ওঠে। মা এবং ছোটভাই সেখানে পৌঁছার পর বড়ভাই ৩১ তারিখে কলকাতার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। এখন তিনি ঢাকায়।
আলীম ভাইয়ের মোবাইলে তোলা কিছু ছবি পিকাসা এলবামে তুললাম।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই এপ্রিল, ২০০৯ বিকাল ৪:৪৩