somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার ভালোবাসা

১৬ ই মার্চ, ২০০৬ ভোর ৫:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


(পাঁচটা বেড রুম, দক্ষিনমুখী জানালা, সামনে লন, ছাঁদে সুইমিং পুল - আর কি কি যোগ করা যায়? স্বপ্নের পোলাও! ঘি ঢালতে কার্পণ্য কি?)

নাঃ আসলে চেষ্টা করছি মনের গহীনে ডুব দিয়ে গোপন ভালোবাসাগুলোকে ধরতে। ভালো তো লাগে অনেক কিছুই, কিন্তু সময়ের বেড়াজাল ঠেঙ্গিয়ে টিকে থাকতে পারে ক'টি? ভালোলাগার ঠুনকো মোহ গুলি সময়ের আগুনে ঝলসাতে ঝলসাতে ভালোবাসার নিঃখাদ সোনায় পরিনত হতে পারে আর ক'টা!

একদম ছোটবেলায় ভিউকার্ড জমাতাম - রাজ্জাক, শাবানা, কবরী আর ব্রুস লীর পারিবারিক ছবি। কি যে ভালো লাগতো কার্ডগুলিকে বিভিন্ন ভাবে সাজাতে আর বার বার নেড়ে চেড়ে দেখতে সে আর বলার নয় ! কিন্তু, ক'দিন? একটা সময় পরে, কার্ডগুলিতে জমতে শুরু করলো ধুলো - তারপর হারিয়ে গেলো এক এক করে সবগুলিই - এখন একটাও নেই। জন্মালো, নতুন ভালোবাসা - স্ট্যাম্প জমানো। এর কাছ থেকে, ওর কাছ থেকে, রাস্তায় পড়ে থাকা চিঠির খাম আর পকেটের সব টাকা (পরিমানে তা খুব অল্পই) উজাড় করে শুরু হলো স্ট্যাম্প জমানো। বলতে নেই, সেই ছোটবেলায় চুরিও করেছি কয়েকটা স্ট্যাম্প। বিভিন্ন দেশের গাছ, পাখি, মানুষ কতরকমভাবে যে সাজিয়েছি, তার ইয়ত্বা নেই। ছিলো আরও কতো ভালোলাগা! সিনেমা হলে বাংলা ছবির অ্যাকশন ভালো লাগতো - টিভি পর্দায় রেসলিং'র মিথ্যা মারামারি তো দেখতেই হতো। কতোদিন রাস্তায় দাড়িয়ে, ক্যানভাসারের কানের মলম আর যৌন সন্ধি তেল বিক্রি করতে দেখেছি, তার ইয়ত্বা নেই - ভালোইতো লাগতো তখন। লাটিম ঘুরাতাম, ঘুড়ি উড়াতাম; সাতার না জানলেও পুকুর দাপাতাম। এভাবেই চলছিলো হরেক রকম ভালোলাগা নিয়ে জীবনের জয়যাত্রা।

এর ফাঁকেই, হঠাৎ করে কখন যেনো ঢুকে পড়েছিলো জীবনের প্রথম এবং এখন পর্যন্ত প্রধানতম ভালোবাসা - একেবারে সংগোপনে যেমন সকালের প্রথম আলো। সম্ভবত, তখন দ্বিতীয় শ্রেনীতে পড়ি। কোন এক পরীক্ষার পর, মা কিনে দিলো "ঠাকুরমা'র ঝুলি ও রূপকথার একশো গল্প"। সেই থেকে গল্পের গল্প হলো শুরু। বই এলো - ঝেটিয়ে বিদায় করলো ভিউকার্ড, স্ট্যাম্প আর যত্র তত্র ঘুরাঘুরি। সারাদিন বসে থাকি বই নিয়ে - রূপকথা আর দেশ বিদেশের কল্প কাহিনি। মা-বাবা আর কতো কিনে দিবে - পড়াশোনা আছে না? আমি আর আমার ছোটো ভাই, টাকা জমাতাম। স্কুলে যাবার টাকা, টিফিনের টাকা। এভাবে সপ্তাহ না ঘুরতেই নতুন কিশোর থ্রিলার, কিশোর ক্লাসিক কিংবা অনুবাদ সিরিজের একটা বই কেনার মতো টাকা জমে যেতো। কিনে নিয়ে এসে শুরু হতো পড়া। কে আগে পড়বে, এই সমস্যার সমাধানে আমরা দু'জন একসাথে পড়েছি ক'তো বই। এখনো কানে বাজে, 'কি শেষ'? কারন, শেষ হলেই পাতা উল্টে পরের পৃষ্ঠায় যাওয়া হবে। মাঝখানে বই রেখে, সর্বোচ্চ পাঁচজন পর্যন্ত একসাথে পড়েছি আমরা - আমরা তিন ভাই বোন আর দু'জন কাজিন। (ওঃ অপ্রাসঙ্গিক ভাবে জানিয়ে রাখি, 'বউ' এবং 'বই' এদুটির মধ্যে স্বরবর্ণের ক্রমানুসারেই বই আগে আসে। তাই আমার জীবনে যখনই এই দুটি একসাথে কোন দাবী জানাবে, বর্ণের ক্রমানুসারেই তারা সর্বদা গুরুত্ব পাবে।)

আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে বয়স। ভালোবাসার কেন্দ্রবিন্দুতে বসে থাকে বই যদিও স্বাভাবিকভাবেই বদলে যার তাদের চরিত্র ও ধাঁচ। একই সাথে চারপাশের খোলসে জমতে থাকে হরেক রকম ভালোলাগা। শরীরের ভিতর আস্তে আস্তে জেগে উঠে নতুন সত্ত্বা। অনেকটা সময় কেটে যেতে থাকে নগ্ন নারী দেহের কল্পনায়। সময় এবং সুযোগ পাওয়া মাত্রই ছুটে যেতাম ভিডিও ক্লাবে - লজ্জার মাথা খেয়ে অধবোদন হয়ে ভাড়া নিয়ে আসতাম দুই কিংবা তিন মাত্রার ছবি। মোহের স্বাভাবিক নিয়মেই তারপর একসময় কেটে যেতে থাকে এই ঘোর। আঠার মাসের মধ্যে প্রায় শতাধিক তিন মাত্রার ছবি দেখার অভিজ্ঞতা নিয়ে এখন আমার ভাবতেও অসহ্য লাগে এরকম কোন কিছু আবাব দেখার। একসময়ের ভালোলাগার কি লজ্জাকর পরিনতি।

আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে পরিধি, একই সাথে ঝড়ে যেতে থাকে অনাকাঙ্খিত মেদ - আমার ভালোবাসার শরীর থেকে। ক্লাস সিঙ্ েউঠে, প্রথম আমি মেয়ে সহপাঠীর দেখা পেলাম। তার আগে, মেয়ে বলতে, মা এবং বোনকেই চিনতাম। শুরু হলো, মানব সমাজের আদিম তম রহস্যের মুখোমুখী হওয়া - কেন একটা মেয়েকে হঠাৎ করে ভালো লেগে যায়?


পরবর্তী কিস্তিতে সমাপ্য

সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:২৫

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

বন্ডাই সৈকতের হামলাস্থল। ছবি: রয়টার্স

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই সৈকত এলাকায় ইহুদিদের একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সমবেত মানুষের ওপর দুই অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী অতর্কিতে গুলি চালিয়েছে। এতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমাণ নন বলা কুফুরী

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১৪



সূরাঃ ২ বাকারা, ২৫৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৫৫। আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই।তিনি চিরঞ্জীব চির বিদ্যমাণ।তাঁকে তন্দ্রা অথবা নিদ্রা স্পর্শ করে না।আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সমস্তই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিজয়ের আগে রাজাকারের গুলিতে নিহত আফজাল

লিখেছেন প্রামানিক, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:১৩


ঘটনা স্থল গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি থানার উড়িয়া ইউনিয়নের গুণভরি ওয়াপদা বাঁধ।

১৯৭১সালের ১৬ই ডিসেম্বরের কয়েক দিন আগের ঘটনা। আফজাল নামের ভদ্রলোক এসেছিলেন শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে। আমাদের পাশের গ্রামেই তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫৫ বছর আগে কি ঘটেছে, উহা কি ইডিয়টদের মনে থাকে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৮




ব্লগের অনেক প্রশ্নফাঁস ( Gen-F ) ১ দিন আগে পড়া নিউটনের ২য় সুত্রের প্রমাণ মনে করতে পারে না বলেই ফাঁসকরা প্রশ্নপত্র কিনে, বইয়ের পাতা কেটে পরীক্ষার হলে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×