somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কিছু অস্বস্তিকর বা হাস্যকর অভিজ্ঞতা

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১১ সকাল ১১:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
বিদ্যালয়



আমি তখন ক্যান্টনমেন্টের একটা কম্বাইন্ডস্কুলের নবম শ্রেনীতে পড়তাম সেখানে নিয়ম ছিল প্রতি বৃহস্পতিবার প্যারেট হবে এবং ছেলে মেয়ে সকলের সেদিনের পোশাক হবে পুরো সাদা। অনেক সাদার মাঝে হঠাৎ করে ছেলে মেয়ে আলাদা করা যেত না। তো প্যারেটের আগ মুহূর্তে আমার সবচেয়ে প্রিয় ক্লাসমেটের হাত ধরে হাঁটছিলাম। অনেকক্ষন পর হঠাৎ মনে হল আমার বান্ধবীর উচ্চতা আমার চেয়ে অনেক বেশী। হঠাৎ তার দিকে তাকিয়ে তো ভুত দেখার মত চমকে গেলাম। একি , আমি এতক্ষন একটা ছেলের হাত ধরে হাটছিলাম? একঝটকায় তাকে ছেড়ে দিয়ে যখন আমার বান্ধবিকে খুজছি তখন দেখলাম দূরে দাড়িয়ে সে দুই পাটি দন্ত বের করে হাসছে।

পরিশিষ্ট : আমি বান্ধবীর কাছে ফিরে গিয়ে যখন তাকে উত্তম অধম দেয়ায় ব্যাস্ত তখনও ছেলেটি উদাস ভাবে আমাদের দিকে তাকিয়ে ছিল।

কলেজ



কলেজে পড়ার সময় প্রক্সি ব্যাপারটা বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। যেহেতু পর্সেন্টিজের উপর একটা নির্দিষ্ট নম্বর পাওয়া যেত তাই সবার চেষ্টা ছিল হাজিরা খাতায় নিজের উপস্থিতি জাহির করা। আমার একটা বান্ধবী প্রায়ই আমার হয়ে প্রক্সি দিত এবং ওর হয়ে আমি। একদিন ওর অনুপস্থিতির কারনে আমি যথারিতী প্রক্সি দিলাম। রোল ডাকার পর ম্যাডামের সন্দেহ হয় এবং সে ছাত্রী হিসেব করে দেখেন হাজিরা খাতার উপস্থিতির চেয়ে একজন কম। আবার গুনলেন একই সংখ্যা। এরপর তিনি বল্লেন যাদের নাম ডাকব তারা উঠে দাড়াবে, আমি দেখতে চাই কে প্রক্সি দিয়েছে। আমার মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়ল। ম্যাডাম নাম ধরে ধরে ডাকছেন এবং এক এক জন উঠে দাড়াচ্ছে ঠিক সেই মুহূর্তে আমার সেই বান্ধবি পেছনের দরজা দিয়ে আমার পাশে ধপাশ করে বসে পড়েছে। আমি তাকে দেখে যেন হাতে চাঁদ পেলাম। কিছুক্ষনের মধ্যেই তার নাম ডাকা হল এবং সে যথারিতী উঠে দাড়াল। নাম ডাকা শেষ করে দেখা গেল আসলে সবাই উপস্থিত কেউ প্রক্সি দেয়নি। তাতেও ম্যাডামের মন ভরল না, এবার সে একজন একজন করে ডেকে বোর্ডের সামনে দাড় করালেন এবং দেখলেন, ভুলটা আসলে তারই। ফিসফিস করে তখন বলছিলেন, ”এমন তো হবার কথা না” যাই হোক ততক্ষনে ঘন্টা পড়ে গেছে এবং ম্যাডাম বেরিয়ে গেলেন, সেদিন আর কোন পড়া হল না।

পরিশিষ্ট : ম্যাডাম যখন বেড়িয়ে গেল তখন সব মেয়েরা আমাদের ঘিরে ধরল, ধোলাই দেয়ার জন্য নয়..... অভিনন্দন দেয়ার জন্য। কারন আমরা সেদিন কেউই পড়া শিখিনি।



বিশ্ববিদ্যালয়



ভার্সিটি লাইফ কেটেছে ঢাকার একটা সরকারী কলেজে। ঐ কলেজের এক স্যার ছিলেন অন্ধ, যিনি প্রতিবন্দি কোটায় বিসিএস করেছেন। তিনি বিশেষ পদ্ধতিতে আমাদের পাঠ দান করতেন। কিন্তু সমস্যা ছিল, ওনার ক্লাস চলাকালে অনেকেই ক্লাস থেকে বেড়িয়ে যেত কিনবা ক্লাসে বসেই পেটের যত গল্প আছে তার একটা নথিপত্র তৈরী করত। স্যরের এক একটা ধমকে কিছুক্ষনের জন্য নিরবতা আসলেও তা বেশীক্ষন স্থায়ী হতনা। একদিন ক্লাস চলাকালে যথারিতী গল্প চলছে, স্যার হঠাৎ পড়া বন্ধ করে শব্দের উৎস স্থলের দিকে আসলেন এবং দুর্ভাগ্যবশত সেদিন প্রথম সারিতে বসার কারনে ঠিক আমার বরাবর এসে দাড়ালেন আর বল্লেন দাড়াও। আমার দুইপাশে বসা দুজন (বন্ধু কেন শত্র“) অনেকটা জোর করে আমাকে দাড় করিয়ে দিল।
গল্প করছিলে কেন?
আমি না স্যার
তাইলে কে?
জানিনা (এদিক ওদিক কিছুক্ষন তকিয়ে)
তাইলে তুমিই
না স্যার আমি না
তাইলে বলতে হবে কে
জানিনা (জানলেও বলবনা)
না জানলে ক্লাস থেকে বেড়িয়ে যাও
আমি হাফ ছেড়ে বাচলাম আর বেড়িয়ে যেতে যখন উদ্যোগ নিলাম তখনই অন্য একটা ছেলে বল্ল স্যার মাফ করে দেন। স্যরের নিরব উত্তর, তুমিও বেড়িয়ে যাও।

পরিশিষ্ট : আমরা যখন বেড়িয়ে যাচ্ছিলাম তখন পুরো ক্লাস জুড়ে অট্টহাসির মহড়া চলছিল।



কর্মজীবন:



আমার একজন খুব কাছের কলিগ যে এখন ঢাকার বাইরে থাকে। আমার একটা জন্মদিনে ফোনে জানালেন, ”জন্মদিন উপলক্ষে আপনার প্রিয় কোন জিনিস কিনে টাকার পরিমানটা আমাকে জানাবেন। আমি ফ্লেক্সি লোড করে টাকাটা আপনাকে পাঠিয়ে দেব” আমি সম্মতি জানিয়ে ফোন রাখলাম। জন্মদিনের কিছুদিন পর তাকে একটা এস এম এস পাঠালাম। টাকা পয়সার ব্যাপারে মুখে বলতে লজ্জা লাগেতো তাই। এসএমএস এ লেখা ছিল, ”১০০০০০.০০ টাকা মাত্র” এরপর বলাবাহুল্য তার কোন রিপ্লাই পেলাম না।

পরিশিষ্ট : এক সপ্তাহ পর তার রিপ্লাই এল ”আমি আপনাকে একটা গিফট কিনতে বলেছিলাম, গিফটের দোকান নয়”



৬২টি মন্তব্য ৪৮টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×