তাকে নিয়ে অনেকেই আনন্দের সাথে সমালোচনার ঝড় তোলে এমনকি তার মৃত্যুও সেই সমালোচনাকে দমাতে পারেনি দেখে খুব অবাক হই । কতটা নিষ্ঠুর হলে মানুষ একটা মৃত মানুষকে তার মৃত্যুর জন্য তাকেই দায়ী করতে পারে। অভিশাপ বলে যদি কিছু থেকেও থাকে তা নিশ্চয়ই সবার জন্যই প্রোযোজ্য হবার কথা, যদি তাই হয় তবে তো পৃথিবীতে কোন খারাপ অভিশপ্ত মানুষের বেচেঁ থাকার কথা না। তাই আমরা না হয় এবার এই মৃত মানুষটাকে নিয়ে কোন সমালোচনায় না যাই।
ব্লগে অনেকেই তার নামের বানানটা ভুল লিখছে যা দেখতে খুবই দৃষ্টিকটু লাগছে। এটা নিশ্চয়ই ইচ্ছাকুত কোন ভুল না তাই আশা করছি সবাই সঠিক বানানটা ব্যবহার করবেন (হুমায়ূন আহমেদ, কপি পেষ্ট করতে পারেন)। যে মানুষটা নিজেই নিজের নাম শামসুর রহমান বদলে হুমায়ূন আহমেদ রেখেছেন তার নিশ্চয়ই এই নামটির প্রতি একটা আলাদা দূর্বলতা ছিল।
অনেকেই তার লেখাকে সস্তা বলে যাতে শিক্ষনীয় বলে কিছু নেই কিন্তু আমি নিজে বলতে পারি আমি অনেক সাইন্টিফিক, ঐতিহাসিক বা প্রাকুতিক অনেক রহস্যের তথ্য পেয়েছি তার বই থেকে। চীনের ঐতিহাসিক সৌন্দর্য নিয়ে তিনি যে ভ্রমন কাহিনী লিখেছেন তা গতানুগতিক কাটখোট্টা ভ্রমনকাহিনী থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। তার বই থেকেই জেনেছি বিগ ব্যাং কি, অন্ধকারেও কেন সমুদদ্রর ঢেউ এত স্পষ্ট দেখায়, কিভাবে আমেরিকার একটা গোটা বন প্রাকৃতিক রহস্যের কারিশমায় পাথর হয়ে যায়, এরকম শত শত তথ্য যা সব এখন মনে পড়ছেনা। তিনি যদি সস্তা লেখকও হন তাতেও কিছু যাবে আসবেনা কারন একমাত্র তার বই ই মানুষের এত কাছে আসতে পেরেছে।
তার পরিচালিত নাটক আর সিনেমা দেখে মানুষ যেভাবে হেসেছে বা কেঁদেছে এখানেই তার স্বার্থকতা। সবকিছুর মধ্যে অতি জ্ঞানীর মত শিক্ষামূলক কিছু না হাতরানোই ভাল।
সবশেষে একটা কথাই বলতে চাই, ব্যক্তিগত সমস্যা বা ছোট বড় ভুল আমাদের সবার মধ্যেই আছে তাই তার ব্যাক্তিগত কার্যকলাপের জ্যামিতিক ছক না একে বরং জাতীর প্রতি তার অবদানের কথাই মনে করি।
আজ না হোক পঞ্চাশ বছর পরে হলেও নতুন প্রজন্মই বলবে তিঁনি আসলে কি ছিলেন!!!
ছবির সূত্রঃ উইকিপিডিয়া