somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

স_লামিসা
লেখা লেখির ধরা বাধা কোন নিয়ম আমার জানা নেই, সঠিক ব্যাকরণ প্রয়োগ করা ও আমার জানা নেই, তবে নিজের মতামত আর চিন্তা প্রকাশ করতে যতটূকু সম্ভব লেখার মাধ্যমে তা বের করে আনতে পছন্দ করি।আমি স্বল্প ভাষী একজন মানুশ :)

স্তব্ধ

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


গল্পের শুরু ...
তখন থেকে যখন কল্প বাসা থেকে বেরিয়েছে,কমলাপুর রেল স্টেশনে যাবে বলে । পাশে একটা চা এর দোকানে বসে আছে । কেমন ক্লান্ত লাগছে তার, মনে হচ্ছে অনেকটা পথ সে দৌড়ে এসেছে। আশ্চর্যের বিষয়, সারাদিন পর এই মাত্র সে চা পান করছে কিন্তু, চা এর স্বাদে মুখটা কেমন তিতকুটে হয়ে আছে । চা এর দাম দিয়ে, কল্প তার ব্যাগ নিয়ে উঠে পড়লো । এখান থেকে বেশি একটা দূরে না স্টেশন, তাই হেটে পৌছাবার সিদ্ধান্ত নিলো কল্প ।
সন্ধ্যা হয়ে আসছে। মতিঝিল পেরিয়ে কমলাপুর এর দিকে একা একা এগুচ্ছে কল্প । কেমন একটা অস্বস্তি কাজ করছে তার ভেতর আর কেবল মনে হচ্ছে, কল্প শুধু হেটে চলছে অনেক সময় ধরে, কিন্তু গন্তব্যে পৌছাতে পারছে না । এমন মনে হবার কারন কি ? জানা নেই কল্প’র । কল্প হাটছে ...
বিকেলের আলো ছাপিয়ে এখন অন্ধকার হয়ে গেছে । শহরটা কেমন ছিমছাম লাগছে। দ্রুত এগুনোর চেষ্টা করছে কল্প । তবু পথ যেন শেষ হতে চায় না । কিছুদূর সামনে এগুতে ...কল্প কিছু একটা লক্ষ করলো । ২ মিটার চওড়া ফুটপাথ এর ওপর একটা কিছু পড়ে আছে এবং যার কিঞ্চিৎ উপস্থিতি কল্প কে , কেমন যেন বিব্রত করছে । বিষয়টা কি কল্প জানতে আরো কিছুদুর সামনে এগিয়ে গেল...

সামনে গিয়ে কল্প যা দেখলো, তা যেন তার সারা শরীরে শিহরন জাগিয়ে গেল । এ কি করে সম্ভব ? কিছু মুহূর্তের জন্যে তার মনে হল, সে স্বপ্ন দেখছে । কিন্তু আরো কাছে যেতেই পুরো ব্যাপারটা যে বাস্তব, তা বুঝতে আর বাকি রইলো না কিছুই ।

ফুটপাতের ওপর পড়ে আছে এক নিথর দেহ, কোন প্রকার শ্বাস- প্রশ্বাস বিহীন । মৃতদেহটি এক পাশ করে রাখা, তবে চোখ দুটো যে খোলা,তা বুঝা যাচ্ছে। একটা কাপড় দিয়ে শরিরটা ঢাকা । কল্প কি করবে বুঝতে পারছে না, কেননা আশে পাশে কাউকে দেখতে পাচ্ছে না । একবার ভাবলও কিছু করার দরকার নেই, কল্প তার মত হেটে চলে যাবে । কিন্তু কি মনে করে, মৃত দেহের আশে-পাশে বেশ কিছু কাগজ পরে থাকতে দেখে সেগুলোকে তুলে নিলো । কাগজ গুলো কে তুলে নেয়ার আরেকটা কারন হল,কাগজ গুলো কল্প’র খুব পরিচিত আর প্রিয় । শেষবার কল্প, রুমু কে এই কাগজে তার চলে যাবার কথা লিখে একটা চিঠি দিয়েছিল । যদিও রুমু সে চিঠির কোন উত্তর দেয়নি ।
কল্প কাগজগুলো তুলে নিলো । বেশ কয়েকটা কাগজ ওখানে । কল্প, একটা খুলে পড়তে শুরু করলো, এই মৃতদেহের কোন পরিচয় পাওয়া যায় কি না, সে জন্যে ।
কল্প পড়তে লাগলো ...




“ আমার তোমাকে অনেক কিছু বলার ছিল। দিন ৫ এক আগে আমার বাবা মারা গেছেন । এখন আমি সত্যি একা, তোমার অনুপস্থিতি আমাকে খুব অসহায় করে তুলছে। হয়তো তোমাকে আর ফিরে পাবো না, ফিরে পাবার আশাও করি না । তবে তোমাকে আর বিরক্ত করবো না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি । আমি চলে যাচ্ছি রুমু – কোথায় যাচ্ছি জানি না ।

যদি আমার কথা কখনও মনে পড়ে, তো একবার একটা চিঠির জবাব দিয়ো ।


-ইতি
( আমার )
রুমঝুম
এর -কল্প”

চিঠিটা পড়া শেষ করা মাত্র, সব কেমন উলট – পালট লাগতে শুরু করলো । কল্প যেন কিছুতেই কিছু মিলাতে পারছে না। এই চিঠিতো রুমু কে লিখেছিলো কল্প । হাতের লেখাও তার। এই চিঠি এখানে এল কেমন করে, তাহলে কি এখানে যে মৃতদেহ পড়ে আছে এটা রুমু’র ? না এ হতে পারে না। কল্প’র অস্থিরতা যেন বেড়েই যাচ্ছে । কল্প আর দেরি না করে, মৃত দেহের মুখের ওপর থেকে কাপড়টা সরাতেই ... এক ঝটকায় দূরে সরে গেল । এতো রুমু নয়, এত কল্প’র নিথর দেহ । ঠোঁটের কোণে ঈষদ হাসি, অথচ কোন হ্রদস্পন্দন নেই । কল্প তাকিয়ে দেখছে, তার মৃত দেহ তার দিকেই হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে ... কল্প’র সমস্ত শরির ঠান্ডা হয়ে আসছে । বুকের বামপাশে কেমন ব্যথা অনুভব করছে । কি করবে বুঝতে না পেরে এক দৌড়ে সেখান থেকে ছুটে বেড়িয়ে এলো ।
অনেক দূর ছুটে আস্তেই, সামনে একটা চা এর দোকান পেল । সেখানে বসে এক কাপ চা এর অর্ডার দিল । অস্থিরতা এখন যেন আরো তীব্র হতে লাগলো কল্প’র । চা এ চুমুক দিতেই আবারো তার কেমন তিতকুটে এক অনুভুতি এলো । মুহূর্তের মধ্যেই তার মনে পড়ে গেল, সে একটু আগেও এখানে এসেছিল । এবং এই একি ঘটনার পুনরাবৃত্তি হল প্রায় ৬ বার । কল্প চা রেখে উঠে দাড়ালো ...। আবারো হাটতে লাগলো স্টেশন এর উদ্দেশ্যে । হৃদস্পন্দন যেন বেড়েই চলছে ...। সাথে তার হাটার গতিও ...

সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:৪১
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস শুধু দেশের রাজধানী মুখস্ত করার পরীক্ষা নয়।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:১৪

"আমার বিসিএস এক্সামের সিট পরেছিলো ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এ, প্রিপারেশন তো ভালোনা, পড়াশুনাও করিনাই, ৭০০ টাকা খরচ করে এপ্লাই করেছি এই ভেবে এক্সাম দিতে যাওয়া। আমার সামনের সিটেই এক মেয়ে,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×