somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভবঘুরের ডায়েরি; সালতামামি ২০১৪! একটি ফটো ব্লগ

১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

২০১৪ বছরটা অন্য সকলের মতো আমারও মিশ্র কেটেছে। প্রাপ্তি প্রদানের হিশেব না করে অন্যদের চেয়ে আমার যে দিকটি ভাল কেটেছে তা হলো বন্ধুদের নিয়ে খুবই মজার এবং আনন্দময়ী একটি বছর কাটালাম। আমার মতো এক বছরে এতগুলো আনন্দময় সময় কেউ কাটিয়েছে বলে আমার মনে হয় না! সারা বছর ধরে এদিক-সেদিক ঘুরে বেড়ানো এবং ছোটখাটো বিষয়গুলো কে খুব হই-হুল্লুর করো কাটানো সম্ভব হয়েছে শুধুমাত্র আমার বন্ধু ভাগ্যের কারণে! প্রত্যেকটি কাজেই আমি আমার বন্ধুদের পাশে পেয়েছি।

বছরটা শুরু হয়েছে ২৪ জানুয়ারি 'আজাদ বয়েজের' পিকনিক দিয়ে। আমরা আজাদ বয়েজের বন্ধুরা মিলে সে দিন কাপ্তাই লেক, নেভী পিকনিক স্পট, কর্ণফুলী পেপার মিল এবং শেখ রাসেল পক্ষী ও বিনোদনশালা ঘুরে এলাম।


২৪ জানুয়ারি আমি আমার বন্ধুরা @ শেখ রাসেল রাসেল পক্ষী ও বিনোদনশালা

বছরের ২য় বিগ ইভেন্ট ছিল ৭ ফেব্রুয়ারি নৌ-বিহার বা জল ভ্রমণ। বন্ধু রাফির আমন্ত্রনে তাদের কুমিল্লা সমিতির সাথে আমি, ফয়সাল এবং মাহফুজ নৌ-বিহারে গেলাম।


নৌ-বিহারের বন্ধু মাহফুজ এবং ফয়সাল কে জাহাজ চালানো শিখাচ্ছি :D

নৌ-বিহারের ঐ একই সপ্তাহে কলেজ পিকনিকে আমরা ১১ ফেব্রুয়ারি রাঙ্গামাটি গেলাম। অনার্স লাইফের ৩য় বছরে এসে কলেজ বন্ধুদের সাথে প্রথম কোথাও যাওয়ার সুযোগ হলে তা আর মিস করলাম।



সামাজিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তো আমরা RED এর পক্ষ থেকে নোয়াখালী সেনবাগ থানায় প্রায় ১৩৫ জন শিক্ষার্থী কে সমগ্র বছরের জন্য শিক্ষা উপকরণ এবং স্কুল ড্রেস দিয়েছিলাম।



RED এর প্রোগ্রামে যাওয়ার পথে ফেণী বিজয় সিংহ দিঘির পাডে আমি, জয়নাল, ফয়সাল এবং মাহফুজ



এপ্রিলের ১ম সপ্তাহে ডাবল বিয়ের দাওয়াতে ৪ দিনের ট্রুরে নোয়াখালী গিয়েছিলাম।


৪ এপ্রিল ছিল চাচাতো ভাইয়ের বিয়ে এবং


৬ এপ্রিল ছিল বন্ধু মাইনু্দ্দিনের ভাইয়ের বিয়ে।

১৪ এপ্রিল বাঙ্গালীর মিলন মেলা আমাদের প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ। এই দিন সকালে কোচিং এ ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে পান্তা-ইলিশ খেলাম তার পর কলেজ বন্ধুদের সাথে কলেজ ক্যাম্পাসে জীবনের আনন্দময় কয়েক ঘন্টা কাটালাম। বিকেল ছিল আরো অসাধারণ! আজাদ বয়েজের বন্ধুরা মিলে ভাটিয়ারি গেলাম। আনন্দ, হই-হুল্লুর, সুর-বেসুরা গলাম গান গেয়ে গলা ফাটালাম।




দীর্ঘ ৬ বছর পর ফেব্রুয়ারিতে ভাগিনা রিংকু সৌদি আবর থেকে এলে ২ মাস ধরে তার সাথে দেখা হয় নি। অনেক হিশেব নিকাশকরে অবশেষে তার সাথে দেখা করা এবং ঘুরার উদ্দেশ্য ১৬ এপ্রিল কক্সবাজার গেলাম। আমরা একজন ঢাকায় থাকি আর একজন থাকি চট্টগ্রাম অথচ এতো ব্যস্ত যে ঢাকা-চট্টগ্রাম নয় একজন আর একজনের সাথে দেখার করার জন্য কক্সবাজার যেতে হলো।



কিছু মানুষ আছে যারা অন্যদের খাওয়াতে পারলেই খুশি। তাদের মধ্যে অন্যতম হলো আমাদের বন্ধু রাফি এবং তার আম্মু। ১ মে আন্টি আমাদের কে বাংলো নং ১৭ তে লাঞ্চের দাওয়াত দিয়েছিলেন। আমরাও সেই দিন তাদের বাংলো তে ‘আম উৎসব’ পালন করেছিলাম। সারা দিন বাংলো তে ক্রিকেট খেললাম, কাঁচা আমের ভর্তা খেলাম সাথে ছিল গ্রীণ ম্যাঙ্গো সেক।


বাংলো নং ১৭ তে আমরা :)

২০০৯ থেকে প্রতি বছর ঢাকায় যাওয়া অভ্যাস হয়ে গেল। এর ধারাবাহিকতায় ৮ মে তে ঢাকায় গেলাম।


৯ মে হাতিরঝিলে আমি, ফুফাতো ভাই রায়হান ও চাচাতো ভাই মারুফ


বাহারাইন প্রবাসী মামাতো ভাই কামরুল চট্টগ্রাম এলো তার সাথে মাসখানেকের ব্যবধানে ভাগিনা রিংকু আবার চট্টগ্রাম এলো। ১২ মে আমরা তিন জন মিলে বান্দরবান গেলাম।


বান্দরবান স্বর্ণ মন্দিরে আমরা তিন জন :)

কোন বন্ধুর জন্মদিন মানে আমাদের ভোজন বিলাস! বিভিন্ন কারণে বন্ধু ১১ মার্চ জয়নালের জন্মদিন, ২১ মার্চ নওশাদের জন্মদিন এবং ০৪ এপ্রিল ফয়সালের জন্মদিনে আমরা এই ভোজন থেকে বঞ্চিত ছিলাম। তাই তারা ৩ জন এবং আমিসহ চার জন মিলে জন্মদিন উৎসব পালন করলাম। এই উপলক্ষে ২৪ মে আমরা 'সি-বিচ' এ বীচ ফুটবল এবং পিকনিক এর আয়োজন করলাম। অনেক হই-হুল্লুর ও আনন্দ করে দিনটি কাটালাম।



ভবঘুরে মন নিয়ে ২৬ মে বাসা থেকে বাহির হলাম খাগড়াছড়ি যাওয়ার জন্য কিন্তু 'বি আর টি সি'র কাউন্টারে গিয়ে খাগড়াছড়ির বাসের টিকেট না পেয়ে ৫ বন্ধু কাউন্টারের উল্টা দিকের রেল স্টেশন গিয়ে সকালের প্রভাতী ট্রেনে উঠে পড়লাম। ফেণি গিয়ে নেমে পড়ি। এরপর তো বাকিটা ইতিহাস! আমার জীবনের সবচেয়ে আনন্দময় একটি দিন পার করলাম। সে দিন আমরা ফেণির বিজয় সিংহ দিঘি, ছাগলনাইয়ার বিখ্যাত 'চাঁনগাজী ভূইয়া মসজিদ', মুহুরী পজেক্ট সেচ প্রকল্প এবং নিহান পল্লী ঘুরে বেড়ালাম।


চাঁনগাজী ভূইয়া মসজিদের সামনে আমরা


মুহুরী পজেক্ট সেচ প্রকল্পে আমরা :)

৬ জুলাই ২০১৪ তে আমাদের অনার্স ৩য় বর্ষের পরীক্ষা শুরু হয়। ১ম ও ২য় বর্ষের তুলনায় কম প্রস্তুতি নিয়েও মোটামুটি ভাল একটা একাডেমীক বছর পার করলাম।


শেষ পরীক্ষার দিন পরীক্ষার হলে বন্ধু হৃদয়ের সাথে সেলফি!!!

২০ জুলাই থেকে ৩ অগাষ্ট ৪-৫টা ইফতার পার্টি, বাড়ি গিয়ে আত্মীয়-স্বজনদের সাথে ইদ উদযাপন ছিল বিগত বছরের তুলনায় অনেক উপভোগ্য। আমরা যারা মানুষজনের সাথে আড্ডাদিয়ে বেড়াই তাদের জন্য এই উৎসব গুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ।


বিভিন্ন ইফতার পার্টিতে আমি :)

১৩ অগাষ্ট পরীক্ষা শেষ হলো! এখন তো আর ঘরে বসে থাকা যায় না! এদিকে ঢাকা থেকে বন্ধু ফয়সাল এবং আফতাব গ্রুপ বায়না ধরেছে তারা কক্সবাজার যাবে। সো তাদের সাথে ২৬ অগাষ্ট কক্সবাজার গেলাম। যদিও এর আগে ২১ অগাষ্ট রাতে আমি আর জয়নাল কক্সবাজার থেকে ঘুরে এলাম।


ইনানী বিচে আমরা :)

১২ সেপ্টেম্বর বন্ধুরা মিলে খইয়াছড়া ঝর্ণা জয় করতে গেলাম। অকেটা অ্যাডভেঞ্চার টাইপের ভ্রমণ ছিল এটি। ঝর্ণা ঘুরে এসে বিকেলে 'বারয়ইয়া ঢালা জাতীয় উদ্যাণে ঘুরে বেড়ালাম। শরীরের সব শক্তি উজাড় করে সন্ধ্যায় বাসায় ফিরলাম।


খইয়াছড়া ঝর্ণায় আমরা বন্ধুরা :)

৩০ অক্টোবর আমার জন্মদিন, ৩রা নভেম্বর মোহনের ভাগনীর আকিকা ও ২রা নভেম্বর বন্ধু বায়রনের বাবার মৃত্যু উপলক্ষে মেজবান এবং ঢাকা থেকে বন্ধু ফয়সালের আগমন সব মিলিয়ে ২৯ অক্টোবর থেকে ৫ নভেম্বর পর্যন্ত ৭ দিন ব্যাপী আনন্দ উৎসব ছিল আমাদের।


জন্মদিন উৎসবে কর্ণফুলী ব্রিজে আমরা :)


জন্মদিন উৎসবে কর্ণফুলী ব্রিজে আমাদের সেলফি!

একটু সময় নিয়ে ৩রা ডিসেম্বার সায়েম ভাইসহ এবার বের হয়ে পড়লাম খাগড়াছড়ির উদ্দেশ্যে! এবার আর গাড়ি মিস হয় নি! দু'ভাই মিলে ৩ দিনে ট্রুরে ঘুরে বেড়ালাম পুরো খাগড়াছড়ি সেই সাথে সস্তায় পেযে এক গাদা বাজার নিয়ে আসলাম।


খাগড়াছড়ির রিছং ঝর্ণা

বছরের শেষ ব্লক বাস্টার ইভেন্ট ছিল ১২ ডিসেম্বর আমাদের 'রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল এন্ড কলেজ' এর ১ম পুনমিলর্নী। দীর্ঘ দু'মাস কষ্ট করে এই পুনমিলর্নী আয়োজনে সব চেয়ে বেশি পরিশ্রম করেছে বন্ধু মাইনুদ্দিন। অনেক চেষ্টার পর আমরা একটা পুনমিলর্নী করতে পেরে খুশি।


পুনমিলর্নী র্যালি তে আমরা '০৭ ব্যাচ


পুনমিলর্নী অনুষ্ঠানে অর্থ-সম্পাদক হিসেবে আমি বক্তব্য রাখছি :)

এছাড়া সারা বছর ধরে বিভিন্ন বিয়ে, গায়ে হলুদ, মেজবানি ও জন্মদিনের প্রোগ্রাম এবং আমাদের জাতীয় উৎসব গুলো যেমনঃ ২১ ফেব্রুয়ারি ভাষা শহীদ দিবস, ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস পালন, ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস পালন তো ছিল-ই!
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আইনের ফাঁকফোকর-০৩

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪২

যেকোনো চাকরির নিয়োগের পরীক্ষা চলছে। সেটা পাবলিক সার্ভিস কমিশন, বিভিন্ন সংস্থা, বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক বা উপজেলা পর্যায়ের কোনো কার্যালয়ে হতে পারে। এই নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস হতে পারে। একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

গল্পঃ অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১২

(১)
মাছ বাজারে ঢোকার মুখে "মায়া" মাছগুলোর উপর আমার  চোখ আটকে গেল।বেশ তাজা মাছ। মনে পড়লো আব্বা "মায়া" মাছ চচ্চড়ি দারুণ পছন্দ করেন। মাসের শেষ যদিও হাতটানাটানি চলছে তবুও একশো কুড়ি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সিকান্দার রাজার চেয়ে একজন পতিতাও ভালো।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৭

সিকান্দার রাজা কোকের বোতল সামনে থেকে সরিয়ে রাতারাতি হিরো বনে গেছেন! কিন্তু তাকে যারা হিরো বানিয়েছেন, তারা কেউ দেখছেন না তিনি কত বড় নেমকহারামি করেছেন। তারা নিজেদেরকে ধার্মিক বলে দাবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×