somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বরফাচ্ছাদিত রোমাঞ্চকর পর্বত-কে-২ এর নাম শুনেছেন????

০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১০ দুপুর ২:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছবিঃ কে-২
কে-২,মাউন্ট এভারেস্টের পর পৃথিবীর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পর্বত শৃঙ্গ।এর সর্বোচ্চ উচ্চতা ২৮,২৫১ ফুট।পৃথিবীতে ৮ হাজারেরও উচু যেসব পর্বতচূড়ায় মানুষ আরোহন করতে গিয়েছে,দূর্ঘটনায় মৃত্যুর সুংখ্যায় এটি তাদের মধ্যে দ্বিতীয়।পর্বতারোহীদের এর চূড়ায় উঠা অসম্ভব কষ্টসাধ্য হওয়ায় কে-২ কে বলা হয় বন্য পর্বত।কারাকোরাম রেঞ্জের একটি অংশ হলো এই কে-২ পর্বত।কারাকোরাম একটি বিশাল পর্বত সীমা যা কিনা পাকিস্তান,ভারত ও চীন সীমান্ত জুড়ে বিস্তৃত।যারা কে-২র চুড়ায় উঠতে পেরেছেন, তাদের মধ্যে প্রতি ৪ জনে ১জনমৃত্যুর মুখে পতিত হয়েছে।দূর্ঘটনায় মৃত্যুর সম্ভাবনা সবচাইতে বেশী এভারেষ্টের একটি শৃঙ্গ অন্নপূর্নায় যদিও শীত মৌসুমে যাওয়া যায়,কিন্তু কে-২ তে শীতে যাবার কথা চিন্তাও করা যায় না।


ছবিঃ কারাকোরাম অঞ্চল


১৯৫৪ সালের ৩১শে জুলাই,একটি ইতালীয় অভিযাত্রীদল সর্বপ্রথম কে-২ এর চূড়ায় উঠতে সক্ষম হয়।যদিও এই দলের নেতৃত্বে ছিলেন Ardito Desio,কিন্তু যে দুজন শেষ পর্যন্ত চূড়ায় উঠতে পেরেছিলেন তারা হলেন Lino Lacedelli এবং Achille Compagnoni ।এই দলের সাথে একজন পাকিস্তানী সদস্য ছিলেন যার নাম কর্ণেল মোহাম্মাদ আতা-উল্লাহ,যিনি ১৯৫৩ সালের আমেরিকান একটি অভিযানের সদস্য ছিলেন।এই সফল অভিযানের একটি গুরুত্বপুর্ণ ভুমিকা রেখেছিলেন ইতালীয় নামকরা পর্বতারোহী ওয়াল্টার বোনাত্তি এবং পাকিস্তানী হোঞ্জা কুলি মাহদী,যারা কিনা ২৬,০০০ ফুট পর্যন্ত Lino Lacedelli এবং Achille Compagnoni এর জন্যে অক্সিজেন বহন করে নয়ে গিয়েছিলেন।


ইতালীয় অভিযানের দীর্ঘ ২৩ বছর পর,১৯৭৭ সালের আগষ্টের ৯ তারিখ,প্রথম পাকিস্তানী নাগরিক আশরাফ আমানের সাথে জাপানী Ichiro Yoshizawa ,দিত্বীয়বারের মত কে-২ এর চূড়ায় মানুষের পা ফেলেন।এ অভিযানে তারা ইতালিয়ানদের তৈরি করা আব্রুজ্জি স্পার এর পথ অনুসরণ করেন এবং এ অভিযানের জন্য প্রায় ১৫০০ এর মত কুলি নেয়া হয়েছিলো অক্সিজেন সরবরাহের জন্যে।এর পরে অনেকে এর চূড়ায় উঠেছেন।পরবর্তীতে আরো অনেক দিক থেকে এই পর্বতে উঠেছেন।ছবিতে সেটি দেখানো হয়েছে।



যদিও এভারেষ্টের চুড়া সবচাইতে উচু,পর্বতারোহীদের জন্য কে-২ আরও অনেক বেশী দুর্গম ও বিপদজ্জনক।কারণ এর ঝড়ো আবহাওয়া এবং তুলনামুলকভাবে ভূমি থেকে খাড়া উচু হয়ে উঠে যাওয়া।সম্প্রতি এই পর্বত এবং এর সংলগ্ন শৃঙ্গে সবচাইতে সম্প্রতি বেশি প্রাণহানী ঘটেছে বলে শোনা যায়।এজন্যে এই পর্বত-শৃঙ্গ জয় করার সংখ্যা কম।জুলাই ২০১০এর হিসেব মতে,মাউন্ট এভারেষ্ট জয় করার সংখ্যা যেখানে প্রায় ২৭০০ জন,সেখানে মাত্র ৩০২ জন পেড়েছে কে-২ জয় করতে।এখন পর্যন্ত প্রায় ৭৭ জন মানুষ কে-২ জয় করার চেষ্টা করতে গিয়ে মৃত্যুমুখে পতিত হয়েছে।১৯৮৬ সালে বিভিন্ন অভিযানে প্রায় ১৩ জন পর্বতারোহী মারা গিয়েছেন যা কিনা ৮৬-এর কে-২ বিপর্যয় নামে পরিচিত,যাদের মধ্যে পাচজন ঝড়ে হারিয়ে গেছেন।২০০৮ সালের আগষ্টের ১ তারিখে,দড়ি বেয়ে একটি গিরিখাদ পার হবার সময় একটি বিশাল বরফ খন্ড ভেঙ্গে পরলে পর্বতারোহীদের একটি দল হারিয়ে যায়,যাদের মধ্যে চার জনকে উদ্ধার করা গেলেও বাকি ১১জনকে উদ্ধার করা যায়নি,যাদের মধ্যে প্রথম আইরিশ হিসেবে চূড়া জয় করা জেরার্ড ম্যাকডোনাল ও ছিলেন।


এতো কিছুর পরেও মানুষ থেমে থাকেনি, থাকবেওনা কখনো।রোমাঞ্চপ্রিয় ও সাহসী অভিযাত্রী যারা আছেন তারা যাবার চেষ্টা করে দেখতে পারেন।


তথ্যসুত্রঃ Lino Lacedelli and Giovanni Cenacchi, K2: The Price of Conquest, 2006
ছবিসুত্রঃ wikipedia
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১০ বিকাল ৪:৩২
৭টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×