গল্প ১:
গল্পটি প্রথম পাওয়া যায় এলান রগডার পো কাছ থেকে। গল্পটি ফ্রাস্নের ১৮ শতকের।
এক ধনী মেয়ের প্রেমে পড়ে এক দরিদ্র যুবক। ক্রমেই তারা খুবই ঘনিষ্ঠ হয়ে যায়। ছেলেটি মেয়েটিকে বিয়ে করতে চাইলে মেয়ের পরিবার রাজী হয় না। প্রচন্ড কষ্ট পেয়ে ছেলেটি দেশ ছেড়ে চলে যায়। মেয়েটির বিয়ে হয় এক ধনী, বদমেজাজী লোকের সাথে। লোকটি মেয়েটির সাথে খুব খারাপ ব্যবহার করত, মারত। মেয়েটির বিয়ের কয়েক বছর পর মারা যায়। প্রচলিত নিয়মেই লাশ দাফন করা হয়। এদিকে মেয়েটির প্রেমিক ছেলেটির নিজের অবস্থা উন্নতি করে দেশে আসে মেয়েটিকে বিয়ে করার জন্য। কিন্তু এসে দেখে, মেয়েটি তিন দিন আগেই মারা গেছে। শুনে ছেলেটি পাগলের মত হয়ে যায়। রাতের আধারে কবরের কাছে যায়, তারপর কবর খোড়া শুরু করে, এই ভেবে যে, একবারের জন্য হলেও সে তার প্রিয়তমাকে দেখবে। কবর খোড়ার পর যখন কফিনের ঢাকনা খুলে, তখন সে দেখে যে, মেয়েটির লাশ এখন্ও পচন ধরে নি। লাশ দেখে মনে হয় যেন, ঘুমিয়ে আছে। সে প্রচন্ড আবেগে লাশের কপালে চুমু খায় এবং সবচাইতে অবাক করা বিষয হল, মেয়েটি তখনই জেগে উঠে, যেন ঘুম থেকে উঠল। তারা দুজনেই খুব অবাক এবং খুবই খুশি হয়। কিন্তু এই খুশি তাদের জন্য অচিরেই বিপদ হিসেবে দেখা দেয়। তখন চার্চ শাসিত সমাজে মৃত ব্যক্তি কখনই জীবিত হতে পারে না। একমাত্র শয়তানই মৃত মানুষের মধ্যে বসবাস করে। ফলে মেয়েটিকে পুড়িয়ে মারার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কিন্তু কৌশলে তারা ইতালিতে পালিয়ে যায়। তারা সেখানেই তাদের বাকী জীবন কাটিয়ে দেয়।
বি: দ্র: অনেকের কাছেই অবাক লাগতে পারে যে, মৃত ব্যক্তি কিভাবে জীবিত হল। এর কারন হিসেবে বলা যায় যে, মধ্যযুগে আজকের মত এত উন্নত চিকিৎসা ছিল না। তারা অনেক টা ধারনা বশবর্তী হয়েই মানুষকে কবর দিত। পরে যখন জায়গা সংকটের কারনে লাশ স্থানান্তর করা হত, তখন দেখা যেত যে, লাশ উল্টা হয়ে আছে। মানে লাশটি কবর দেওয়ার পর আবার জীবিত হত আর ছটফট করতে করতে আবার মারা যেত। এজন্য পরে প্রত্যেক লাশের সাথে একটি করে ঘন্টা লাগানো হত, যাতে করে কেউ জীবিত হলে সে ঘন্টা বাজাতে পারে।
**************************************************
গল্প ২ ::
এই গল্পটাও ফ্রান্সের একটি উপনিবেশের। সেখানে একজন তরুন সেনা অফিসার নতুন কাজে যোগ দেয়। অফিসারটি যে বাসায় থাকত সেখানে একটি কুয়ো ছিল যেখান থেকেই সবাই পানি নিত। অফিসারটি যখন অবসারের সময়ে বাসায় থাকত তখন একটি মেয়ে পানি নিতে আসত। মেয়েটিকে দেখে অফিসারের ভাল লাগে। মেয়েটিও ছেলেটিকে পছন্দ করে। তাদের মাঝে গভীর ভালবাসার সৃষ্টি হয়। এভাবে বেশ কিছু চলতে থাকে। একদিন ফ্রান্স সরকারের একটি অতিগোপনীয় কাজে কাউকে কিছু না জানিয়ে অফিসারটি ফ্রান্সে চলে আসে। মেয়েটি তখন অফিসারকে না পেয়ে ভাবে যে, সে তাকে ফেলে চলে গেছে, আর কোনদিন আসবে না। তখন মেয়েটি সব সময় শুধু কাদত। এভাবে ২ বছর চলার পর মেয়েটি মারা যায়। এদিকে অফিসারটি কখনই মেয়েটিকে ভোলেনি। কিন্তু সে কোন ভাবেই যোগাযোগ করতে পারে নি। ৫ বছর পর অফিসার সেখাবে যায়, দেখে যে সাগর পাড়ে মেয়েটিকে কবর দেওয়া হয়েছে। অফিসারটি মেয়েটির এই পরিণতি জন্য নিজেকেই দায়ী করে।তখন অফিসার সবচাইতে অবাক করার মত কাজ করল। প্রথমে সে তার চাকরী ছেড়ে দেয়। ( এখানে বলে রাখা ভাল যে, মেয়েটির সবচাইতে বড় একটি বিষয় হল, মেয়েটি সব সময় নীল রংয়ের জিনিস পড়ত, নীল কাপড়, নীল চুড়ি এবং অন্যান্য ।) এরপর অফিসার মেয়েটির সেই নীল রংয়ের পোষাক পড়তে শুরু করে। সেই অফিসার পরে আরও ৪০ বছর বেচে ছিল, সে বিয়ে করে নি, আর এই ৪০ বছর সে মেয়েটির কবরের পাশে বসে থাকত, আর অবশ্যই নীল রংয়ের পোষাক পড়ে।