যামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহইস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, আওলাদে রসূল, মুর্শিদে আ’যম, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, কুরআন শরীফ-এর ‘সূরা দুখান’-এ শবে বরাতকে ‘লাইলাতুম মুবারাকাহ’ বা বরকতময় রাত বলা হয়েছে। আর হাদীছ শরীফ-এ ‘লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান’ বা ‘মধ্য শা’বানের রাত্র’ শা’বান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাত্র বলা হয়েছে। এটাই মূলতঃ সারাবিশ্বে শবে বরাত হিসেবে মশহুর। এ রাত মুসলমানদের জন্য দোয়া কবুলের রাত, ক্ষমা বা মাগফিরাতের রাত, তওবা কবুলের রাত, বিপদ-আপদ থেকে নাযাত পাওয়ার রাত এবং এক বছরের হায়াত-মউত ও রিযিকের ফায়ছালার রাত। (সুবহানাল্লাহ)
এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি ‘সূরা দুখান’-এ ইরশাদ করেন, ‘লাইলাতুম মুবারাকাহ বা শবে বরাতে সকল প্রজ্ঞাময় বিষয়সমূহ ফায়ছালা করা হয়।’
মুজাদ্দিদে আযম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ কিবলা আলাইহিস সালাম তিনি ‘বাইহাক্বী শরীফ’-এর হাদীছ শরীফ-এর উদ্ধৃতি উল্লেখ করে বলেন, আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, ‘এ রাত্রিতে (আগামী এক বছরে) যে সকল আদম সন্তান জন্মগ্রহণ করবে এবং ইন্তিকাল করবে তাদের তালিকা লিপিবদ্ধ করা হয়। বান্দার (এক বছরের) রিযিকের ফায়ছালা করা হয় এবং বান্দার (বিগত এক বছরের) আমলনামা মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট পেশ করা হয়।’ সুবহানাল্লাহ!
যামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহইস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, আওলাদে রসূল, মুর্শিদে আ’যম, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি হাদীছ শরীফ-এর উদ্ধৃতি উল্লেখ করে বলেন, নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, ‘নিশ্চয়ই পাঁচ রাত্রিতে দোয়া নিশ্চিতভাবে কবুল হয়। রজবের প্রথম রাত্র, মধ্য শাবানের রাত্র বা বরাতের রাত্র, ক্বদরের রাত্র এবং দু’ঈদের দু’রাত্র।’ সুবহানাল্লাহ!
যামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহইস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, আওলাদে রসূল, মুর্শিদে আ’যম, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, হাদীছ শরীফ-এ উল্লেখ আছে, কয়েক শ্রেণীর লোক তারা খালিছ তওবা না করা পর্যন্ত তাদের দোয়া কবুল হবে না বা শবে বরাত নছীব হবে না। যেমন- যাদুকর (জ্যোতিষ, গণক), শরাবখোর, সেটা যে কোন নেশা জাতীয় মাদক দ্রব্যই হোক না কেন, ব্যভিচারী, শরীয়তের কারণ ব্যতীত আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী, পিতা-মাতার অবাধ্য সন্তান, চোগলখোর (যে একজনের কথা আরেক জনের নিকট বলে বেড়ায়), শরীয়তের কারণ ছাড়াই কোন মুসলমান ভাইয়ের সাথে তিন দিনের বেশি কথা বন্ধকারী, শরীয়তের কারণ ব্যতীত মুসলমানকে হত্যাকারী, মুশরিক, গায়ক ও বাদক।
যামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহইস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, আওলাদে রসূল, মুর্শিদে আ’যম, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, যারা ইসলামের নামে বেপর্দা, ছবি, গানবাজনা, খেলাধুলা, গণতন্ত্র, ভোট-নির্বাচন, হরতাল, লংমার্চ, সুদ-ঘুষ, হারাম খাওয়া, মিথ্যা বলাসহ ইত্যাদি শরীয়তবিরোধী বা হারাম কাজে মশগুল তারাও এগুলো থেকে খালিছ তওবা না করলে ‘শবে বরাত’-এর মাগফিরাত, রহমত, বরকত, সাকিনা লাভ করতে পারবে না। কাজেই তাদেরকে অবশ্যই এ রাতে খালিছ তওবা-ইস্তিগফার করতে হবে। যদি তারা খালিছ তওবা-ইস্তিগফার করে তবে অবশ্যই মহান আল্লাহ পাক তিনি তাদেরকে ক্ষমা করে দিবেন এবং শবে বরাত-এর সকল রহমত, বরকত ও নিয়ামত দান করবেন। কেননা, মহান আল্লাহ পাক তিনি কালামুল্লাহ শরীফ-এ ইরশাদ করেন, “তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনার রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি সমস্ত গুনাহখাতা ক্ষমা করে দিবেন। তিনি ক্ষমাশীল ও দয়ালু।”
যামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহইস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, আওলাদে রসূল, মুর্শিদে আ’যম, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি হাদীছ শরীফ-এর উদ্ধৃতি উল্লেখ করে বলেন, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি বরাতের রাত্রিতে পৃথিবীর আকাশে এসে অর্থাৎ রহমতে খাছ নাযিল করে ফজর তথা ছুবহে ছাদিক হওয়া পর্যন্ত ঘোষণা দিতে থাকেন, তোমাদের মধ্যে কেউ ক্ষমাপ্রার্থী আছো কি? তাকে আমি ক্ষমা করে দিবো। কেউ রিযিক প্রার্থী আছো কি? আমি তাকে রিযিক দান করবো। কেউ বিপদগ্রস্ত আছো কি? তার বিপদ দূর করে দিবো।” সুবহানাল্লাহ!
মুজাদ্দিদে আযম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ কিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বরাতের রাত্রিতে যে ইবাদত-বন্দেগী করতে হবে তার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দিয়ে বলেন,
* প্রথমতঃ বাজামায়াত ইশার নামায আদায় করতঃ মীলাদ শরীফ পাঠ করে সংক্ষিপ্ত নছীহত করে তওবা-ইস্তিগফার করে দোয়া-মুনাজাত করবে।
* অতঃপর দুই দুই রাকায়াত করে ৪ অথবা ৬ অথবা ৮ অথবা ১০ অথবা ১২ রাকায়াত শবে বরাতের নামায পড়বে।
* অতঃপর ছলাতুত তাসবীহ-এর নামায পড়বে, যার দ্বারা মানুষের গুনাহ-খাতা ক্ষমা হয়।
* যিকির-আযকার করবে, যার দ্বারা ক্বলব বা অন্তর ইসলাহ ও ইতমিনান হয়।
* দুরূদ শরীফ পাঠ করবে, যার দ্বারা মহান আল্লাহ পাক উনার রাসুল সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সন্তুষ্টি অর্জিত হয়।
* কুরআন শরীফ তিলাওয়াত করবে, যার মাধ্যমে মহান আল্লাহ তায়ালা উনার সন্তুষ্টি অর্জিত হয়।
* সম্ভব হলে কবরস্থান যিয়ারত করবে, যার দ্বারা সুন্নত আদায় হয়।
* তাহাজ্জুদের নামায পড়বে, যা দ্বারা মহান আল্লাহ পাক উনার নৈকট্য হাছিল হয়।
* অতঃপর পুনরায় মীলাদ শরীফ ক্বিয়াম শরীফ করে খালিছ ইস্তিগফার ও তওবা করবে, যার মাধ্যমে বান্দা-বান্দির সমস্ত গুণাহ-খাতা মাফ হয়ে মহান আল্লাহ পাক উনার খালেছ সন্তুষ্টি অর্জিত হয়। অর্থাৎ শবে বরাতের বারাকাত, ফুয়ুজাত, নিয়ামত, রহমত, মাগফিরাত ও নাযাত ইত্যাদি হাছিল করা যায়।
* আর সর্বশেষ ছুবহে ছাদিকের পূর্বেই মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট দোয়া করবে অর্থাৎ আখিরী মুনাজাত করবে। যার কারণে মহান আল্লাহ পাক তিনি খুশি হবেন ও উনার নিয়ামত লাভ হবে। তবে আখিরী মুনাজাত এতটুকু পূর্বে শেষ করবে যাতে দিনে যারা রোযা রাখবে তারা যেন সাহরী খেতে পারে।
মুজাদ্দিদে আযম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ কিবলা আলাইহিস সালাম তিনি শা’বান মাসের রোযার ফযীলত সম্পর্কে হাদীছ শরীফ-এর উদ্ধৃতি উল্লেখ করে বলেন, “যে ব্যক্তি শা’বান মাসে তিনটি রোযা রাখবে মহান আল্লাহ পাক তিনি তার গুনাহখাতা ক্ষমা করে দিবেন।” সুবহানাল্লাহ!
যদি তিনটি রোযা রাখা সম্ভব না হয় তবে অন্ততঃপক্ষে শবে বরাতের পরের দিন অর্থাৎ ১৫ই শাবান। অর্থাৎ আগামীকাল ইয়াওমুল জুমুয়াতি বা শুক্রবার দিনের রোযাটি রাখবে। কেননা, হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “যে ব্যক্তি শা’বান মাসের পনের তারিখ অর্থাৎ বরাতের রোযা রাখবে, তাকে কখনো জাহান্নামের আগুন স্পর্শ করবে না।” সুবহানাল্লাহ!
হাদীছ শরীফ-এ আরো ইরশাদ হয়েছে, “শা’বান মাসের ১৫ তারিখ যারা রোযা রাখবে তারা ইফতারীর সময় তিন বার দুরূদ শরীফ পাঠ করবে। তাহলে তার পূর্বের গুনাহখাতা ক্ষমা করা হবে এবং রিযিকে বরকত দেয়া হবে।” সুবহানাল্লাহ!
মুজাদ্দিদে আযম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ কিবলা আলাইহিস সালাম তিনি শা’বান মাসের রোযার ফযীলত সম্পর্কে হাদীছ শরীফ-এর উদ্ধৃতি উল্লেখ করে বলেন, তাই প্রত্যেক মুসলমানের উচিত অত্যন্ত জওক-শওক এবং মুহব্বত ও খুলুছিয়তের সাথে শবে বরাত পালন করা। মুসলমানগণ যাতে ইতমিনানের সাথে অফুরন্ত নিয়ামতের রাত ‘পবিত্র শবে বরাত’ পালন করতে পারে এবং দিনে রোযা রাখতে পারে সেজন্য বাংলাদেশ সরকারসহ পৃথিবীর সকল মুসলিম অমুসলিম সরকারের উচিত পবিত্র শবে বরাত উপলক্ষে কমপক্ষে তিনদিন ছুটি ঘোষণা করা এবং মুসলমানগণের শবে বরাত পালনে সর্বপ্রকার সহযোগিতা ও পৃষ্ঠপোষকতা করা।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জুলাই, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:১০