somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সোনাদিয়া দ্বীপ ভ্রমণ শেষ পর্ব

০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


“সোনাদিয়া” কক্সবাজার জেলার মহেশখালি উপজেলার একটি সুন্দর দ্বীপ। এই দ্বীপটির আয়তন প্রায় ৭ বর্গ কিমি.। কক্সবাজার জেলা সদর থেকে প্রায় ১৫ কিমি উত্তর-পশ্চিমে এবং মহেশখালি দ্বীপের দক্ষিনে সোনাদিয়া দ্বীপটি অবস্থিত। একটি খাল দ্বারা এটি মহেশখালি দ্বীপ থেকে বিছিন্ন হয়েছে। তিন দিকে সমুদ্র সৈকত, সাগর লতায় ঢাকা বালিয়াড়ি, কেয়া- নিশিন্দার ঝোপ, ছোট-বড় খাল বিশিষ্ট প্যারাবন এবং বিচিত্র প্রজাতির জলাচর পাখি দ্বীপটিকে করেছে অনন্য বৈশিষ্ট্যমন্ডিত। এটি জীববৈচিত্রের দ্বীপ নামেও পরিচিতি এবং এ দ্বীপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পিপাসুদের জন্য অন্যতম পর্যটন স্থান। তবে সরকার ইদানিং সোনাদিয়ায় গভীর সমুদ্র বন্দর সহ বড় বড় প্রকল্পের পরিকল্পনা করছে, যা এখানকার জীব বৈচিত্রের জন্য হুমকী স্বরূপ।

সোনাদিয়া দ্বীপে পর্যটকদের থাকার জন্য কোনো আবাসিক হোটেল নেই। খাওয়ারও তেমন কোনো নির্দিষ্ট ব্যবস্থা নেই। স্থানীয় লোকজনকে টাকা দিলে তারা খাওয়ার ব্যবস্থা করে থাকে। আর সোনাদিয়া দ্বীপে রাত্রি যাপনের ক্ষেত্রেও ভরসা সেই স্থানীয় বাসিন্দারাই। তবে তাবু করেও ওখানে থাকা যায়, সেক্ষেত্রে স্থানীয়দের পাহাড়ার ব্যবস্থাটা অবশ্যই বাঞ্চনীয়।

সোনাদিয়া দ্বীপের মানব বসতির ইতিহাস মাত্র ১০০-১২৫ বছরের। দ্বীপটি ২টি পাড়ায় বিভক্ত। পূর্ব ও পশ্চিম পাড়া। দ্বীপের মোট জনবসতি প্রায় ২০০০ জন। পূর্ব পাড়ায় তুলনামূলকভাবে জনবসতি বেশী। মাছ ধরা এবং মাছ শুকানো, চিংড়ি ও মাছের পোনা আহরন দ্বীপের মানুষের প্রধান পেশা। কিছু মানুষ ইঞ্জিন চালিত নৌকা ও কাঠের সাধারন নৌকা এবং উহা চালানোর সহকারী হিসাবে কাজ করেও জীবিকা নির্বাহ করে। চারিদিকে নোনা পানি বেষ্টিত হওয়ায় এই দ্বীপে তেমন কোন খাদ্য শষ্য উৎপাদন করা সম্ভব হয় না। দৈনন্দিন প্রয়োজনাদি জিনিস পত্র সব মহেশখালি থেকে ক্রয় করে আনতে হয়।

এই দ্বীপে ২টি মসজিদ, ১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১টি সাইক্লোন সেন্টার, আনুমানিক ১২টি গভীর নলকূপ রয়েছে।


(২/৩) সোনাদিয়ায় প্রচুর গরু মহিষ পালন করা হয়, কিন্তু এসবের মালিক দ্বীপবাসি নয়, বাহিরের প্রভাবশালীরা।




(৪) ধান আবাদের চেষ্টাটাও সেখানে লক্ষনীয় কিন্তু বেলে মাটি আর লবন পানিতে খুব একটা সুবিধে করতে পারছে বলে মনে হয় না।


(৫) এটাও সোনাদিয়ার একটা বাড়ি।


(৬) সোনাদিয়ায় দুদিনের রোদে আমাদের সবার চামড়া পুড়ে গিয়েছিল। তাই ফেরার আগে পোড়া ঘায়ে লবনের ছিটা দিয়ে নিচ্ছিলাম :)


(৭) বালিতে পা ডুবিয়ে সাগর দেখার মজাই আলাদা।


(৮) শেষ দিনে সোনাদিয়ার জল স্থল আমাদের হাঁসি মুখেই বিদায় জানিয়েছিলো।


(৯) ছোট মানুষের লম্বা ছবি তুলেছিলাম সোনাদিয়ায়।


(১০) লাল কাকড়ার বাহিনী লেফট রাইট করছে সাগরের বালুকা বেলায়।


(১১) লাকরি সংগ্রহ করে নিয়ে যাচ্ছে একজন স্থানীয় অধিবাসি।


(১২/১৩) শেষ দিন রাতে ছিল কাকড়া আর ইলিশের বারবিকিউ।




(১৪) রাতে এতোসব মজাদার খাবারের পর সাগরের গর্জন শুনতে শুনতে ঝাউ বনের ভেতর তাবুতে নিদ্রা যাওার কোন তুলনাই হয় না। আর মজাটা আরো বাড়িয়ে দিয়েছিল শেষ রাতে হওয়া বৃষ্টি।


(১৫) ফেরার সময় ভাটা চলছিল, কিন্তু মালপত্র নেওয়ার জন্য আমাদের এটা চাই ই চাই।


(১৬) ফেরার আগে একটা ভ্রমণ বাংলাদেশের একটা সম্মিলিত ছবি।


(১৭) এবার ব্যগ গুছিয়ে ফেরার পালা।


(১৮) জেলেদের একটা নৌকা ঠেলে জলে নামাচ্ছে স্থানীয়রা।


(১৯) বিদায় সোনাদিয়া, আবার কোন দিন হয়তো দেখা হবে কিংবা হবে না। কিন্তু ক্ষণে ক্ষণেই হয়তো মনে পড়বে চমৎকার নির্জন এই দ্বীপটাকে। তবে আজকে পোষ্ট দিতে গিয়ে মনটাকে বেদনা বিধুর করে তুলেছে মাথায় গামছা বাধা লাল গেঞ্জি গায়ে দিয়ে আমাদের ট্রলারের হাল ধরে বসে থাকা বজলু ভাইয়ের জন্য। তিনি আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন না ফেরার দেশে। ভ্রমণ বাংলাদেশের যে কোন ট্যুরে উনিই সব থেকে আমাদের মাতিয়ে রাখতেন। বজলু ভাই যেখানেই থাকুক সব সময় ভালো থাকুক এই কামনা করছি।


(২০) বাঁকখালি নদির বাঁকে দেখা যাচ্ছে দুটি পথ, ডানের পথ ধরে আমরা চলে এলাম কক্সবাজারে।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই এপ্রিল, ২০২০ সকাল ১০:১৬
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দাদার দাদা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৫৫

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী।

আমার দাদার জন্মসাল আনুমানিক ১৯৫৮ সাল। যদি তার জন্মতারিখ ০১-০১-১৯৫৮ সাল হয় তাহলে আজ তার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×