হেনা ভাই বলেছিলো রাজশাহীতে আসলে অবশ্যই যেনো উনার সাথে দেখা করি। ২০১৬ সালে চাপাই নবাবগঞ্জে যাওয়ার সময় রাজশাহীতে পৌছে ওনাকে ফোন দিলাম। তখন ওখানে বেশ ঝড় তুফান হচ্ছিল। আমাদেরকে নির্ধারিত স্থানে অপেক্ষা করতে বলে ওনি খুব অল্প সময়ে কাক ভেজা হয়ে এসে আমাদেরকে ওনার বাড়িতে নিয়ে যান। দুপুরের রাজকীয় ভোজ না সেরে ওনার বাড়ি থেকে বিদায় নিতে পারিনি। এমন অতিথী পরায়ন এই পরিবারের কথা আমি জীবনেও ভুলবনা।
বেশ কিছুদিন যাবৎ ওনার অনুপস্থিতি লক্ষ করে ফোন দিয়াছিলাম, কিন্তু মোবাইল বন্ধ থাকায় কোন খোজ খবর পাচ্ছিলাম না। পরে প্রামানিক ভাই একদিন জানালো ওনি গুরুতর অসুস্থ্য, বললাম চলেন দেখে আসি। কিন্তু ওনার বাড়ির ঠিকানা জানা না থাকায় যেতে পারছিলাম না। ওনার ছেলের ম্যাসেঞ্জারে বার্তা পাঠানোর কয়েকদিন পর আমাকে ফোন দেয় এবং বলে যে, রাজশাহীতে এসে আমাকে ফোন দিলে আমি আপনাদেরকে রিসিভ করবো। প্রামানিক ভাইয়ের ছেলে রাজশাহী দেখবে বলে সেও আমাদের সাথে রওয়ানা দিলো। আর আমাদের সাথে সাথে হেনা ভাইয়ের দেখা হয়েছিলো আজ থেকে ঠিক এক মাস আগে মার্চের ৪ তারিখে।
আমাদের কাছে পেয়ে অসুস্থ্য লোকটা কি যে আবেগ প্রবণ হয়ে পড়েছিলো তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। আমাদের জড়িয়ে ধরে ওনি দীর্ঘ সময় কেঁদেছিলো। ওনার বলা কথাগুলো বুঝা যাচ্ছিলো না, তবে আমাদের কথাগুলো ঠিকই বুঝতে পারে। ওনার স্ত্রী বলেছিলো আস্তে আস্তে নাকি ওনি সেড়ে উঠবে, আর আমরাও সেই প্রত্যাশায়ই ছিলাম। দুপুরের খাবার খেয়ে যখন চলে আসছিলাম তখন সবার মনটাই ছিলো ভরাক্রান্ত, আর হেনা ভাইয়ের চোখে ছিলো বোবা কান্না।
গত রাতে যখন ওনার ছেলের নাম্বার থেকে ফোন আসে তখনই মনের ভেতর একটা কু ডাক ডেকে উঠে, অতপর সেটাই সত্যি হলো...........
এই টেবিলে বসেই হেনা ভাই লিখতেন। ২০১৬ সালে তোলা ছবি।
হেনা ভাইয়ের ড্রয়িং রুমে বসে ওনার সাথে এই ছবিটাও তুলি ২০১৬ সালে।
৪ মার্চ ২০২১ সালে তোলা ছবিতে আমি ও প্রামানিক ভাই।
ওপারে ভালো থাকুক আমাদের প্রিয় লেখক হেনা ভাই।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা এপ্রিল, ২০২১ সকাল ৯:০২